//সুধার স্বপ্ন//পর্ব -০২//
নমস্কার বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভালো আছেন ।আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।
গত পর্বে আমি আপনাদের মাঝে" সুধার স্বপ্ন" গল্পটির পর্ব -০১ শেয়ার করেছিলাম আর আজ সেই গল্পটির দ্বিতীয় পর্বটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। চলুন তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
প্রতিনিয়ত এইভাবে স্কুলের সহপাঠীদের কাছে ঠাট্টা তামাশার পাত্র হয়ে উঠলেও, মনের মধ্যে জমানো ব্যথা নিয়ে, সুধা তার স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে লড়াই করে যেতে লাগলো। ফুলের মালা আর ফুল বিক্রি করে, যেটুকু উপার্জন হচ্ছিল তা দিয়ে তার পড়াশোনা আর টুপটাক কিছু খরচা মোটামুটি ভালোই চলে যাচ্ছিল। এই ভাবেই দেখতে দেখতে, সুধা প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা থেকে খুব ভালো মানের নম্বর পেয়ে , উচ্চ স্তরের শিক্ষায় ভর্তি হল।
ফলে পড়াশোনার চাপ কিছুটা বাড়লো। এইদিকে তার বাবা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ল। দিদির বিয়ের বয়স তো আগেই হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু টাকার অভাবে সেটা আর দেওয়া হয়ে ওঠেনি। এখন সেই দিকেও বেশ জোর দিয়ে ভাবতে হচ্ছে তাদেরকে। কিন্তু এরকম নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েদের জন্য সুপাত্র পাওয়া বড়ই মুশকিল। তাই বলে তো আর , যার তার হাতে মেয়েকে তুলে দিতে পারে না তাদের পরিবার।
পাড়া-প্রতিবেশীরা কেউ এই বিষয়ে ,সামান্য সাহায্য করতে না পারলেও, খোটা দিতে কিন্তু কেউ বাকি রাখেনি। কিন্তু সেসবে কান দিয়ে কদিন চলবে? কেউ তো সাহায্য করবে না। নিজেদেরকে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হবে এই সমাজে, এই চিন্তা মাথায় নিয়েই সুধা তার পরিবারের জন্য লড়াই করতে থাকলো। পাশাপাশি নিজের জন্যও লড়াই করতে থাকলো। নতুন স্কুলে গিয়েও, সে "ফুলওয়ালি" নাম টার থেকে মুক্তি পায়নি।
কিন্তু তাতে হয়েছেটা কি? সুধাতো তার ঐ উপার্জন দিয়ে নিজের স্বপ্ন একটু একটু করে পূরণ করে ফেলছে। তার সাথে সাথে পরিবারের পাশেও দাঁড়িয়েছে , যা হয়তো ওই ঠাট্টা তামাশা করা ছেলেমেয়ে গুলো দশ বছর পরেও করে উঠতে পারবে না। মাস ছয়ের মধ্যেই সুধার দিদির জন্য সুপাত্র খুঁজে পাওয়া গেল, আর তারপরেই তাদের সাধ্যমত যথেষ্ট ধুমধাম করে তার দিদির বিয়ে দেওয়া হল।
এতদিন তার দিদি আর সে দুজন মিলে ফুলের মালা গেঁথে ফুল বিক্রি করতে নিয়ে গেলেও, এখন সে পুরোই একা হয়ে গেল। ঘরে অসুস্থ বাবা আর ঠাকুমাকে রেখে , ঘরের কাজ সামলে ,তার মায়ের পক্ষেও সম্ভব হয় না তার জন্য সময় বের করার। তবুও যতটা পারে সে তার সাধ্যমত সুধাকে সাহায্য করার চেষ্টা করে। এত পরিশ্রমের পরেও যখন সুধা তার পরিবারের সকলের মুখে একটু খাবার তুলে দিতে পারে, সকলের মুখে দেখতে পায় এক গাল হাসি, তার থেকে শান্তি সে কোথাও খুঁজে পায় না। ওইটুকু ভালো থাকার জন্যই তো এতসব।
কিন্তু সুখের পরেই যে দুঃখ আসে, তাই এই সুখ আর তার বেশিদিন সইলো না। পৃথিবীতে তার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ , তার ঠাকুমা হঠাৎ করেই তাদের ছেড়ে চলে গেল। পরিবারে সকলের সাথে সাথে, অঝরে কান্নায় ভেঙে পড়ল সুধা। তার একটা শক্তি , উৎসাহ যোগানের মানুষ, যেন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল। তারপর থেকে এখনো পর্যন্ত, এইভাবে ভেঙে পড়েছে সুধা। কিন্তু তাকে তো আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হবে, পরিবারের জন্য নিজের জন্য লড়াই করতে হবে তাকে।
পোস্ট বিবরণ | স্টোরি রাইটিং |
---|
আজ আর নয় আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তীতে আবারো নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।
সুধা চরিত্র টা কোন কাল্পনিক চরিত্র নয়। এটা বাস্তব সমাজের চিত্র। সমাজে এমন অসংখ্য সুধা রয়েছে যারা প্রতিনিয়ত জীবন সংগ্রামে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করার জন্য, একটু সুখের জন্য, একটু ভালো থাকার জন্য। বেশ ভালো লিখছেন সত্যি। দেখা যাক পরবর্তিতে কি অপেক্ষা করছে।
হ্যাঁ এরকম ,বহু সুধা রয়েছে আমাদের চারপাশে যারা প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছে। আমার লেখা "সুধার স্বপ্ন " গল্পটির এই পর্বটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে, অনেক খুশি হলাম ।ধন্যবাদ আপনাকে।
সুধার এই গল্পটা বাস্তবিক জীবনের সাথে অনেকটাই মিল। সুধার স্বপ্ন গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব পড়ে প্রথম দিকে যদিও ভালো লাগছিল, কিন্তু শেষে খুবই খারাপ লাগলো। তার দিদি র জন্য একটা ভালো সুপাত্র পাওয়া গিয়েছিল, এটা যেন ভালো লেগেছিল। কিন্তু তার ঠাকুমা তাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল, এটা জেনে অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। পরবর্তী পর্বে কি হবে তা জানার জন্যই অপেক্ষায় থাকলাম দিদি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব নিয়ে হাজির হবেন।
সুধার স্বপ্ন গল্পটার প্রথম পর্ব পড়া হয়েছিল। আজকে দ্বিতীয় পর্ব পড়ে যদিও ভালো লাগছিল, কিন্তু পরে ভীষণ খারাপ লাগলো। অবশেষে সুধার বোনকে একটা সুপাত্রের কাছে বিয়ে দিতে পেরেছে, এটা জেনেই ভীষণ ভালো লেগেছে। তাদের পরবর্তী জীবনটা বেশ সুখেই যাচ্ছিল, কিন্তু সুখ আর বেশিদিন সইলো না। তাদের সবাইকে ছেড়ে তাদের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ তার ঠাকুমা, হঠাৎ করে চলে গিয়েছিল। হঠাৎ করে তার ঠাকুমার চলে যাওয়াটা খুবই খারাপ লেগেছে।
ঘরে অসুস্থ বাবা এবং ঠাকুমাকে রেখে পরিবারেকার সামলানোটা নিঃসন্দেহে কঠিন একটি কাজ। আর প্রকৃতির নিয়ম এই যে সুখের পরে দুঃখের আগমন হয়। কিন্তু হঠাৎ করে ঠাকুরমার চলে যাওয়াটা জানতে পেরে খুবই খারাপ লাগলো আমার। যাহোক আপু, আপনার গল্পের পরবর্তী পর্বটি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
হ্যাঁ ভাই ঘরে অসুস্থ বাবা, মা আর ঠাকুমাকে রেখে সংসার চালানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেওয়াটা বড়ই কঠিন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আসলে সুধা চরিত্রটা কোন কাল্পনিক চরিত্র নয় এরকম বাস্তব উদাহরণ আমাদের বর্তমান সমাজে প্রচুর রয়েছে। তুমি সেরকমই একটা বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছ। গল্পটা পড়তে যতটা ভালো লাগছিল তার থেকে বেশি কষ্ট লাগছিল মনে মনে। সত্যিই তোমার গল্পের উপস্থাপনা অসাধারণ সুন্দর।
একদমই তাই, এরকম বাস্তব সুধার চরিত্র আমাদের আশেপাশে প্রতিনিয়তই হয়তো ঘোরাফেরা করছে। আমারও গল্পটি লেখার সময়, সুধার চরিত্রটি কল্পনা করে, অনেক বেশি খারাপ লাগছিল।