|| আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা - ৪৩ : আমার প্রথম অনলাইন ইনকামের অনুভূতি ||

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি, আমার প্রথম অনলাইন ইনকামের অভিজ্ঞতা নিয়ে। আমরা সকলেই জানি, বর্তমানে আমার বাংলা ব্লগের চলমান প্রতিযোগিতা - ৪৩ এর বিষয়বস্তু এটি। যে কোনো প্রতিযোগিতা মানেই তাতে অংশগ্রহণ করতে খুবই ভালো লাগে। আর এই প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তুটা তো পুরোটাই ভিন্ন ধরনের , তাই অংশগ্রহণের উৎসাহ আরও বেশি। চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক।


christmas-3030279_1280.webp

সোর্স


প্রথমেই বলি,আমার প্রথম অনলাইন ইনকাম কিন্তু স্টিমিট থেকে নয়। সেটা প্রথম শুরু হয়েছিল ২০২০ সাল থেকে। তখন আমি সবেমাত্র উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছি। আর তার কিছুদিনের মধ্যেই ভয়াবহ করোনা ভাইরাস চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। তখন তো স্বাভাবিকভাবেই কয়েক মাস ঘর থেকে বেরোনো পুরোপুরি বন্ধ ছিল। আর সেই ঘরে চুপচাপ বসে থাকা থেকেই শুরু হয়েছিল আমার প্রথম অনলাইন ইনকামের যাত্রা।


পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগে থেকেই, একটা টিউশন ঠিক করে রেখেছিলাম,নিজের হাত খরচ চালানোর জন্য। কিন্তু যেহেতু পরিস্থিতি ভয়াবহ ছিল,তাই কেউ কারো বাড়ি যাওয়া বা সামনাসামনি পড়াতে যাওয়া বা পড়তে যাওয়া দুটোই অসম্ভব ছিল। কিন্তু পড়াশুনা তো থেমে ছিল না, এর জন্য। সেই জন্য টিউশন পড়াও বন্ধ থাকার কথা নয়। তাই যে বাচ্চাটিকে পড়ানোর কথা ছিল, তার মা আমাকে ফোন করে বলল , তার মেয়েকে আর তার দিদির ছেলেকে অনলাইনে পড়ানো শুরু করতে আপাতত, তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পড়াতে যেতে।


woman-2667455_1280.jpg

সোর্স


বিষয়টি আমার জন্যও বেশ ভালো ছিল, তাই আমিও রাজি হয়ে গেলাম। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই পাশের বাড়ির এক বৌদি একদিন আমাকে বারান্দায় বসে ক্লাস করাতে দেখে, তার দুই মেয়েকেও পড়ানোর জন্য বললো । কিন্তু পরিস্থিতি যেহেতু স্বাভাবিক ছিল না, তাই পাশপাশি হলেও সেটাও ছিল অনলাইনে। তাই এই চারটে বাচ্চাকে অনলাইনে পড়াতে শুরু করেছিলাম । আর সবমিলিয়ে আমার মাসিক ইনকাম হয়েছিল ৯০০০ টাকা। যেটা আমার প্রথম ইনকাম হিসাবে আমার কাছে অনেক ছিল।


কিন্ত তখন যেহেতু পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না, তাই বাইরে বেরিয়ে আর ব্যাংক থেকে টাকা তুলিনি। একেবারে ৪-৫ মাস পর পুজোর আগে বেশ কিছু টাকা তুলেছিলাম। সেই টাকা দিয়ে ঘরের ঠাকুরের জন্য মিষ্টি কিনেছিলাম, যদিও সেটা আমাদের নিজেদের দোকান থেকে, তাও বাবা ওই মিষ্টির টাকাটা দিয়েছিলাম। কারণ নিজের ইনকামের টাকা দিয়ে ঠাকুরকে কিছু দিতে চেয়েছিলাম। তারপর মা,বাবা আর দাদা( যাদের ছাড়া এই পৃথিবী আমার কাছে অন্ধকার ), তাদের পছন্দ মতো জামাকাপড় কিনে দিয়েছিলাম।


girl-lying-on-the-grass-1741487_1280.jpg

সোর্স


এছাড়াও পাশের বাড়ির এক বড়মা যিনি আমাকে খুব ভালোবাসেন আমার তরফ থেকে তার জন্যও ছোট্ট একটা গিফট ছিল। আর আমার দিদাকেও তার পছন্দ মতো একটা শাড়ি কিনে দিয়েছিলাম,কারণ তার ভালোবাসাটা আমার কাছে অমূল্য। তবে আমার দাদু, ঠাকুমা, ঠাকুরদা কেউ নেই থাকলে তারাও এখান থেকে বাদ যেত না । আর সবশেষে আমার চার স্টুডেন্ট দের সাথে যেদিন দেখা হয়েছিল তাদের সবাইকে ছোটো ছোটো একটা করে পুজোর গিফট আর একটা করে চকলেট কিনে দিয়েছিলাম। আর নিজের জন্য সুন্দর একটা জামা কিনেছিলাম।


সবমিলিয়ে নিজের প্রথম রোজগারের টাকা দিয়ে কাছের সবাইকে কিছু না কিছু গিফট করতে পেরে খুব খুশি হয়েছিলাম আমি। এই অনুভুতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। সকলের কাছ থেকে যে ভালোবাসাটা, আর সকলের মুখে যে হাসিটা দেখেছিলাম, সেটা আমার কাছে অনেক বড়ো একটা পাওয়া ছিল।


আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।
Sort:  
 11 months ago 

বেশ ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি পড়ে,আসলে নিজের ইনকামের টাকা দিয়ে কাউকে কিছু দিতে পারলে বেশ আনন্দের লাগে।যাই হোক করোনার জন্য অনেকেই দেখেছি অনলাইনে এভাবে পড়াতে।সব মিলিয়ে বেশ ভালো ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে

 11 months ago 

একদমই আপু , নিজের ইনকামের টাকা দিয়ে কাউকে কিছু দিতে পারলে সত্যিই এক অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করে । ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

বিষয়টা খুব ইন্টারেস্টিং অনলাইনে টিউশনি করানো । যেহেতু অনলাইনে টিউশনি করিয়েছেন সেহেতু এটা অনলাইনে ইনকামের মধ্যেই পড়ে। আর প্রথম মাসেই চারটি বাচ্চাকে পড়িয়ে নয় হাজার টাকা স্যালারি পাওয়া সেই সময়ে বেশ ভালো এমাউন্ট। আপনার গল্পটা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দিদি।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

অনলাইনে টিউশনি করানোর অভিজ্ঞতা শুনে খুব ভালো লাগলো। তবে এরকম ইনকাম সবাই করতে পারে না। ভালো লাগলো আপনার প্রথম অনলাইন ইনকামের অনুভূতি পড়ে।ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জন্য শুভ কামনা রইল।

 11 months ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

সত্যি বলতে অনলাইন ইনকামের অনেক গুলো পোস্ট দেখলাম কিন্তু আপনার টা আমার কাছে সবচাইতে ইউনিক লেগেছে। করোনার ঐ সময়টাতে অনলাইন টিউশন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। আপনি আপনার প্রথম ইনকাম টার একেবারে উপযুক্ত ব‍্যবহার করেছিলেন। চমৎকার ছিল আপনার প্রথম অনলাইন ইনকামের অভিজ্ঞতা টা। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

আমার পোস্টটি আপনার কাছে ইউনিক লেগেছে জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই । ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

সত্যি বলতে আপু আপনার প্রথম অনলাইনে অভিজ্ঞতার কথা শুনে বেশ ভালো লাগলো। আপনি অনলাইনে টিউশনি করিয়ে ইনকাম করেছেন জেনে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আপনি অনলাইনে প্রথম মাসেই টিউশনি করিয়ে প্রায় ৯০০০ টাকা ইনকাম করেছিলেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

করোনা কালীন সময়ে চারজন বাচ্চাকে অনলাইনে পড়ানোর মাধ্যমে প্রথম মাসে ৯০০০ টাকা ইনকাম করার মধ্য দিয়ে আপনি প্রথমবারের মত অনলাইনে ইনকাম করলেন। আপনার এই ঘটনাটি পড়ে আমার অনেক ভালো লাগলো।আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।এবং আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপু।

 11 months ago 

ঘটনাটি পড়ে আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

আমার বাংলা ব্লগের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনের জন্য আপনাকে অনেক অভিনন্দন। আর প্রতিযোগিতা মানেই ভিন্ন কিছু। আপনার অনলাইন ইনকামের ধরনটিও বেশ ভিন্ন । বেশ ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি পড়ে। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।

 11 months ago 

ধন্যবাদ আপু আপনাকে, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59493.68
ETH 2649.33
USDT 1.00
SBD 2.45