জহরকুঞ্জে কয়েক ঘন্টা(১০% @shy-fox এর জন্য)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)
তারিখ-২২.১১.২০২২
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি।কয়েকদিন আগেই আমি একটা খাবারের রিভিউ পোস্ট করেছিলাম আরসালান রেস্টুরেন্টের।সেদিন কিন্তু শুধু আরসালানে খাবার খেতেই যাই নি। অনেকদিন পর দুজন মিলে বারাকপুর জহরকুঞ্জে গেছিলাম একটু ঘোরা ফেরা করতে। আর ওখানে যেহেতু প্রায় ৫-৬ বছর হল যাই নি, তাই পরিবেশটা কেমন আছে, কিছু পরিবর্তন হল কিনা সব মিলিয়ে একরকম কৌতূহলেই ভাবলাম একবার ঘুরে আসি। আমরা প্রায় দুপুর ১ টার সময় জহরকুঞ্জে গেছি। গিয়ে দেখলাম পরিবেশ একই আছে সাথে মেইনটেন্যান্সকে আরো ভালো করি হয়েছে।এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বনদপ্তরের অন্তর্গত একটা বড় অংশ জুড়ে তৈরী বাগান। ভেতরে বেশ সুন্দর ভাবে রক্ষনাবেক্ষন করা হয়।ঘাস গুলোকে একই মাপে ছাটাই করে এত সুন্দর ভাবে সাজিয়েছে যেন মনে হচ্ছিলো যে কোন গালিচা বিছান রয়েছে সমস্ত এলাকা জুড়ে। শীত কালে যদিও ফুলের প্রাচুর্য অতটা দেখা যায় না। তবে আর কিছুদিন পর গেলে কতরকম রঙ বেরঙের ফুলে যে ভরে থাকবে পার্কটা তা সত্যিই বলে বোঝানো যাবে না।

26412558-997c-4ace-90b6-2cb23e1ddbef.jfif

পার্কের যে দিকে চোখ পড়বে সেদিকেই শুধু সবুজ ঘাস।আর অপর দিকে তাকালে দেখা যাবে গঙ্গা। ব্যারাকপুরে গঙ্গার ওপারে রয়েছে হুগলী শ্রীরামপুর।গঙ্গার টলমলে জল সাথে ওপার থেকে দেখা যাচ্ছে শ্রীরামপুরে কারখানার চিমনী থেকে ধোঁয়া উঠছে।সব মিলিয়ে আপনি কিছুক্ষণ বসে হারিয়ে যেতে পারেন। আর গরমে যদিও বা সূর্যের তেজটা খুব বেশি থাকে শীতে তো হাল্কা ঠান্ডা, হাল্কা গরমে আমেজটাই আলাদা হয়ে যায়।তখন ঘন্টার পর ঘন্টা বসে গল্প করলেও আপনার এক ঘেঁষে লাগবে না। আমি আর আমার বন্ধু একটা গাছের নীচে বসলাম। অনেক ছেলে মেয়েদের জুটি আসে সেখানে। বসে আড্ডা দেয়, গল্প করে খুব সুন্দর সময় কাটায়।একরকম বলতে পারেন যেমন আদর্শ পিকনিকের জায়গা ঠিক তেমনই আদর্শ প্রেমের জায়গাও বটে।😃

আমরা যদিও চারিদিকে এত ছেলেমেয়েদের জুটি দেখে কেমন যেন নিজেদের ব্রাত্য অনুভব করছিলাম।আমরা গল্প করছিলাম আমাদের ফেলে আসা সময়গুলো নিয়ে, ভবিষ্যত নিয়ে। সময় কিভাবে চলে যায় সেই সব নিয়েই। কিন্তু এই গল্প করতে করতেই দেখি পেটটা কেমন চুঁ চুঁ করছে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৩ টে বাজে। এবার বুঝলাম যে আর থাকা যাবে না। এবার অন্ততঃ কিছু খেয়ে নিতে হবে।বেড়োনোর আগে কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম পার্কের।


c252c9be-9861-48d7-a9dd-4909239c3c17.jfif

আগেই বলেছিলাম যে জহরকুঞ্জ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বনদপ্তরের অধিনস্থ। তাই এখানে এই ভাবেই আলাদা করে ফরেস্ট রেঞ্জার অফিসারের অফিস আছে।



cb429031-d2f1-4dcf-a0f2-e29380064e25.jfif
এই হল জহরকুঞ্জে প্রকাশ পথ এবং টিকিট কাউন্টার। টিকিটমষ মূল্য ভারতীয় টাকায় ৩০/-



5efab551-612c-4f27-a0e4-b6e23390e165.jfif

এই আমি। ভাবলাম সব কিছুর ছবি তুললাম, পোজ দিয়ে নিজের ছবি না তুললে কেমন যেনো লাগে। তাই তুলে নিলাম একটা ছবি।



c85fa4df-0099-435f-8799-08c5bfdc8ded.jfif

গাছটির বিজ্ঞান সম্মত নাম আগাভে কারাট্টো। লোকাল নাম যদিও জানিনা। বাগানে থাকা মালী কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। উনিও সঠিক বলতে পারলেন না যদিও। কিন্তু বললেন এটা পাইন গোত্রীয় একটা গাছ।



20d7ad22-2fe2-4ba3-9939-0ec3f2446d24.jfif

এখানে বেশ সুন্দর করে গাছগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে টবের মধ্যে আর কিছুদিন পরই ফুলে ভরে যাবে পুরো বাগান।



7fe293f8-08c7-4a31-b22a-9cb92383d925.jfif
ছোট্ট একটা জলাশয়ের চারপাশে সবুজ ঘাস এবং সবুজ গাছপালায় ঘেরা জায়গা।



684592db-eba5-4665-8144-d2b82cf8226f.jfif
মালী কাজ করছেন বাগানে টবের পরিচর্যা আর কি!



d45ba09b-c31c-4f85-b6ff-3c92d0d60987.jfif
একটা সাইকাস গাছের চারপাশে সাজানো হয়েছে টব দিয়ে। মনোরম পরিবেশে।



82d91a95-c22c-4073-be7a-4cab87df450c.jfif

অনেক ছেলে মেয়ে এই গাছের নীচে বসে ছিলো গল্প করছিলো। তারা উঠে যাওয়ার পর একটু ফাঁকা পেয়ে ছবি তুললাম।



7ef94296-8d25-4e96-ac6a-b107b00be068.jfif
মাঝে জলাশয় চারপাশে গাছে ঘেরা। এখানে অনেক সময় স্যুটিং ও হয় এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য।



23561a9b-8b7c-4b26-a6d2-9a36c79ab485.jfif
এই গাছটার ছবি তোলার আলাদা কোন কারণ নেই। পুরো গাছটা হলুদ হয়ে আছে। সেই কারণে ছবি তোলা।



418cfa54-61f8-4e47-8284-472b1d982cf2.jfif
গুল্ম এবং লতা দিয়ে এই সুন্দর কাঠামোটা তৈরী করা হয়েছে।



5f081ab4-337a-4201-9f6c-242c4360ba5a.jfif
ব্যারাকপুরের ওই পারে শ্রীরামপুর ঘাট। কারখানার চিমনী থেকে অনর্গল ধোঁয়া নির্গমন।



স্থানজহরকুঞ্জ
তারিখ০৮.১১.২০২২
লোকেশনhttps://what3words.com/entrusted.sheep.curbed
ডিভাইসরেডমি নোট ১০ প্রো ম্যাক্স
সব মিলিয়ে জহরকুঞ্জে ঘোরা বা বসে গল্পকরা একরকম দারুণ হয়েছে। বিশেষ করে সারাদিন ঘরে বসে ব্যোর হওয়ার পরিবর্তে বরং একটু মন পরিবর্তন এবং সবুজ দর্শনএর জন্য এমন কাছে পিঠে কোন জায়গায় যাওয়াই যায়। আপনাদের কেমন লাগলো আমার কয়েক ঘন্টার ভ্রমণ বৃত্তান্ত অবশ্যই জানাবেন।আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসব নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।সকলে ভালো থাকবেন।

🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸

330c68fa-d267-405f-8d9e-8f34533fedc4.jfif

পরিচিতি

250c6bf5-0fab-4e98-b28b-2299d4f6bc0f.jfif

আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাঈ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।

330c68fa-d267-405f-8d9e-8f34533fedc4.jfif

Vote @bangla.witness as a witness

d3bda13e-40b1-47f0-ae6e-12bd9e3cafa7.jfif

OR

Set @rme as your proxy

79210fdd-a2bc-44f9-b76d-6aa43122ce75.jfif

4HFqJv9qRjVeVQzX3gvDHytNF793bg88B7fESPieLQ8dxHasrbANgiURdsJZbqzojRuxTqrn8BwVMhvjW2bszpJVcHcPW7rxPZLtrPVi9FWSiNoAnyKt4P3qfRidjbh5nr88gtri9qE2ohuC3tavoQ5nX9ihXXuBCWz.jfif

Sort:  
 2 years ago 

আপনার ঘুরে বেড়ানোর গল্পটি খুবই ভালো লাগলো পড়ে। জহরকুঞ্জ থেকে খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করে আজ আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন যা দেখে খুবই ভালো লাগলো। আজকের শেয়ার করা ব্লগের উপস্থাপনাও অনেক সুন্দর ছিল দিদি।

 2 years ago 

আপনি যান নি কখনও? বারাসত থেকে তো কাছেই।

জায়গার নামটা তো বেশ লাগলো , জহরকুঞ্জ। খুব নিরিবিলি পরিবেশ একদম। সময় কাটিয়ে নিজেকে চাঙ্গা করতে পারফেক্ট জায়গা বলা যায়। আর আপনার তো বোটানি নিয়ে বেশ ভালো এক্সপেরিয়েন্স আছে। এটা নিয়েই কি পড়াশোনা শেষ করেছেন? জানা নেই তাই জিজ্ঞেস করলাম। আর নদীর পাড় থেকে শহুরে ভিউ টা দূর্দান্ত লাগছিল।

 2 years ago 

আমার জ্যুলজি অনার্স ছিলো। বটানী সাইড সাবজেক্ট ছিলো।☺

 2 years ago 

দিদি আপনার জহর কুঞ্জে ঘুরে ফেরার গল্পটি বেশ ছিল। তার সাথে অত্যন্ত সুন্দর ছিল আপনার ফটোগ্রাফি গুলো। আর আপনার কথা কি বলবো আপনি তো বেশ মিষ্টি।

 2 years ago 

আপনি আমায় স্নেহ করেন বলেই আমায় মিষ্টি দেখেন। ধন্যবাদ দিদি।

 2 years ago 

দিদি নমস্কার
জহরকুঞ্জে ঘোরাঘুরি তো বেশ ভালোই করেছেন ৷তার সাথে ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো ৷ সত্যি এক চমৎকার পরিবেশ চারদিকটা ৷ শুধু সবুজ আর সবুজ ৷ > অনেক ছেলে মেয়েদের জুটি আসে সেখানে৷

দিদি অনেক ছেলেমেয়ের জুটি আসে ৷ শুনে খুব ভালো লাগলো ৷ তবে আপনি একা আপনিও পারতেন জুটি সহ যেতে ৷ না কি নেই!!!!
হাহাহাহাহা
দিদি মনে কিছু নিয়েন না জাষ্ট মজা করলাম আর কি ৷ অনেক ভালো লাগলো পোষ্টটি পড়ে ৷

 2 years ago 

আছে তো বটেই। 😃 ধন্যবাদ। ☺

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 64103.87
ETH 2762.96
USDT 1.00
SBD 2.65