তারিখ-১০.১১.২০২২
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি সকলে ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি।আজ একটু অন্যধরনের পোস্ট নিয়ে এলাম। আমি সাধারণত এই ধরণের পোস্ট করি না। কারণ একটাই যে সকালে ঘুম থেকে ওঠা হয় না। তাই প্রকৃতির অনেক সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত হয়ে যাই।এতে আমার আক্ষেপ নেই যে তা নয়,প্রচন্ড আক্ষেপ, আর এটা যে আমি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করি নি তা ও নয়। আসলে শেষ ৬ মাস ধরে আমার প্রতিনিয়ত নার্ভের ওষুধ চলছে এবং হাইপারটেনশনের জন্য আমার রাতে ঘুমটাও আসে না। ফল স্বরূপ ওষুধের প্রভাবে ভোর ৪-৫ সময় ঘুম আসে এবং ঘুম ভাঙে ৯-১০ টা নাগাদ। মা বাবা যদিও শুরুতে বুঝত না যে রাত জেগে কি করি,তবে পরে যখন বুঝতে পারল যে আমি ইচ্ছে করে দেরি করি না, বরং মানসিক অসুস্থতার কারণেই এটা হচ্ছে, তখন তারাও আমায় ঘুম থেকে তোলে না জোর করে।
তা সে যা ই হোক,আমি যেটা বলছিলাম যে আমি ঘুম থেকে না ওঠার কারণে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করি না দীর্ঘদিন। কিন্তু ২-৩ দিন আগে বিশেষ কাজে আমাদের বাড়ি থেকে ১৫ মিনিট দূরে একটা গ্রামের দিকে যাওয়ার প্রয়োজন হয়।আর কাটার জন্য আমার সকাল সকাল উঠতে হয়েছিলো। প্রায় সকাল ৭.৩০ সময়।হ্যাঁ আমি কাছে সেটা অনেকটাই সকাল কারণ আমি ঘুমোই ৫টার সময়। আমার বান্ধবী শম্পার বাড়িও ঠিক ওখানেই।তো কাজ করে ফিরছি দেখি শম্পা উঠোন ঝাড় দিচ্ছে।আমি পারতে ওদের বাড়ি যাই না।কারণ ওদের বাড়িতে মিনিমাম ৫-৬ টা রাস্তার কুকুরের আস্তানা। আর আমি ভীষণ পরিমাণে সাইনোফোবিক।ফলতঃ ওদের ওখানে গেলেও আমি দূরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলে চলে আসি। ও আমায় শতবার ডাকলেও ওদের বাড়িতে ঢুকি না।
কিন্তু সেদিন যখন ও উঠোন ঝাঁট দিচ্ছিলো,আমি দেখলাম ও বেশ কিছু ফুল গাছ লাগিয়েছে বাড়িতে এবং তাতে কিছু ফুলও হয়েছে।
ফুল দেখতে কারই না ভালো লাগে বলুন? আমার তো খুব ইচ্ছে যে আমি ফুল দেখব,কিন্তু কুকুরের ভয়ে ঢুকতে পারছি না। ওকে বললাম,"তুই আগে তোদের বাড়ির কুকুরগুলো কে সরা, তারপর ঢুকবো।
ও শেষে কুকুরগুলো কে সাময়িক দূর করল। আমি ঢুকলাম এবং বলতে পারেন একরকম মুগ্ধ নয়নে চেয়ে রইলাম।সেই ছবি আপনাদের সাথে ভাগ না করে নিলে তো আমার অপরাধ হবে। তাই চলে এলাম আজকে কিছু ফুলের ছবি নিয়ে।
এই হল আমাদের প্রিয় জবা। যার অবস্থান বেশীরভাগ সময়েই মা কালীর গলায় বা চরণে। এটি জবার গোলাপী প্রজাতি। এই জবা আকারে একটু বড় হয় লাল জবার তুলনায়। এর বিজ্ঞান সম্মত নাম হিবিস্কাস রোজা সাইনেনসিস।
জবা ফুল হিসেবেই সুন্দর নয়, বরং জবার অনেকগুলো আছে। চুলের জন্য ভীষণ ভালো এই ফুল।
ওনাকে কে না চেনে। উনি প্রস্ফুটিত হলেই তো আমরা শরতের আগমন বুঝি।যদিও গাছের থেকে বেশী মাটিতেই ওনাকে দেখা যায়। যদিও বিজ্ঞান সম্মত নাম নিকটান্থিস আরবর। তবে আমাদের কাছে আমাদের প্রিয় শিউলি। আমরা যখন উত্তরবঙ্গে ছিলাম তখন আমাদের একটা বড় উঠোন ছিলো, সেখানে শিউলির একটা গাছ ছিলো।আমরা উঠোনে ক্যাম্পখাট পেতে সন্ধ্যেবেলা বসতাম বাবার সাথে। আর শিউলির সুবাসে সারাটা উঠোন ভরে উঠতো।
এটি গন্ধরাজ ফুল। এই ফুল আমাদের বাড়ির ছাদে রয়েছে এই ফুলের গাছ। এই গন্ধে সারাটা ছাদ ভরে যেতো। বিজ্ঞানসম্মত নাম গার্ডেনিয়া জ্যাসমিনয়েডস। এটা জুঁই ফুলেরই একটা প্রজাতি। তবে লোকে বলে গন্ধরাজফুলের গন্ধ এত কড়া যে সাপও আকৃষ্ট হয় এই গাছের প্রতি।
একে তো সবাইই চেনেন। শুভকাজ বা অশুভ কাজ দুয়েতেই লাগে।বিয়ে বাড়িতে সুন্দর করে সেজে মাথায় একটি এর মালা ঝোলালে,সবাই তাকিয়েই থাকবে (অবশ্যই মেয়েরা, ছেলেরা নন 😄)। বিজ্ঞানসম্মত নাম আগাভ অ্যামিকা যাকে আমরা রজনীগন্ধা বলি। এর আগে যদিও রজনীগন্ধার গাছ দেখা হয় নি। এই প্রথম দেখলাম। ভালোই লাগলো।
এটি অ্যাডিনিয়াম ফুল। এই ফুলটি আমি কখনও আমি দেখি নি আগে। এর সাথে তাই আমার বিশেষ কোন স্মৃতি জড়িত নেই। অ্যাডিনিয়াম এর বিজ্ঞানসম্মত নাম। ইংরেজিতে একে ডেসার্ট রোজ বলা হয়। এর আরো কিছু ভ্যারিয়েশন হয়।
এই হল আমাদের প্রিয় পদ্ম। এটি স্থল পদ্মর ভেরিয়েশন। আমাদের উত্তরবঙ্গের কোয়ার্টারের পেছনের বাগানে একটা এই গোলাপী পদ্মের গাছ আর সাদা পদ্মের গাছ ছিলো। গোলাপী পদ্মের গাছে ভোরবেলা এই ফুল সাদা থাকতো, আর বেলা হলেই গোলাপী হয়ে যেতো। একসাথে ১০০-১২০ টা ফুল ফুটতো। কি যে ভালো লাগতো গাছটা দেখতে তা বলে বোঝাতে পারব না।
আজ অনেকগুলো ফুলের সাথে পরিচয় করালাম। আমারও অনেক অজানা তথ্য জানা হল।আশাকরি আমার এই অন্যরকম প্রচেষ্টা আপনাদের ভালো লেগেছে।অনেক ধন্যবাদ সকলকে।খুব ভালো থাকবেন।
বিষয় | ফুলের ফটোগ্রাফি |
ডিভাইস | রেডমি নোট টেন প্রো ম্যাক্স |
তারিখ | ৫. ১১.২০২২ |
স্থান | কল্যাণী |
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাঈ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
OR
Set @rme as your proxy
দারুণ তুলেছিস তো ছবিগুলোকে। শিউলি ফুল আর রজনীগন্ধার ছবি সবথেকে ভালো এসেছে।
ধন্যবাদ, আমারও ব্যাক্তিগত ভাবে ওই দুটোই ভালো লেগেছে।
আসলে এই সমস্যা এখন অনেক মানুষের রাতে ঘুম হয় না।আসলে সকালে উঠতে না পারলে অনেক কিছু মিস করা লাগে।আর কুকুরের কথা কি বলবো,আমি নিজেও অনেক ভয় পাই। সব গুলো ফুলের ফটোগ্রাফি বেশ সুন্দর হয়েছে। অনেক দিন পর গন্ধরাজ ফুল দেখতে পেলাম।আমার রজনীগন্ধা ফুল ভীষন প্রিয়।ধন্যবাদ
আমআর কিছু বিশেষ কারণে আমি আরো ভুগছি দিদি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যি দিদি বর্তমান যেন রাত জাগাটা মানুষের একটা অভ্যাস এ পরিণত হয়েছে। আপনার হয়তো সমস্যার কারণে রাত জাগেন আর অনেকে হয়তো বা ইচ্ছে করেই জাগে।যাইহোক দিদি কুকুর থেকে সাবধান থাকা অনেক ভালো। আপনার ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো চমৎকার হয়েছে। আপনি ঠিক বলেছেন শিউলি ফুল গাছ থেকে মাঠিতে দেখা যায় বেশি।আমি ও আপনার পোস্টের মাধ্যমে রজনীগন্ধা ফুলের গাছ প্রথম দেখলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক ধন্যবাদ দিদি। কিছু অশান্তির কারণেই আরো মানসিক ভাবে ভুগছি। আশাকরি কাটিয়ে উঠতে পারব।
খুব সুন্দর ফুলের ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ।সে সাথে ফুলগুলোর বৈজ্ঞানিক নামও দিয়েছেন। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্যে।
ধন্যবাদ দিদি। আমি একটু আলাদা করার জন্য বিজ্ঞান সম্মত নাম টা দিলাম।
আপনার প্রত্যেকটা ফুলের ফটোগ্রাফি আমার খুবই ভালো লেগেছে। এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ☺
তোমার ছবি গুলো খুব ভালো লাগলো। প্রতিটা ফুলই আমার প্রিয়। আমার বাড়িতে একটা গন্ধরাজ ফুলের গাছ আছে যেটা 50-60 বছরের পুরোনো। ছোটোবেলায় একসময় আমি গাছে উঠে সেটা থেকে ফুল তুলতাম। এডিনিয়াম ফুল আমার খুব ভালো লাগে। এই গাছ একটা লাগানোর খুব ইচ্ছে আছে। ধন্যবাদ।
বাহ্ ৫০-৬০ বছরের পুরোনো গাছ মানে তো অনেকটা পুরোনো। ধন্যবাদ। 🙂
অসাধারণ ফটোগ্রাফি করেছেন আপনি। আমি তো দেখেই মুগ্ধ হয়ে গেলাম। খুবই মনমুগ্ধ করছিল ফটোগ্রাফি গুলো। কুকুরের জন্য আপনি আপনার বান্ধবীর বাড়িতে যেতে চাইছেন না এটা যেন একটু হাসি পেল আমার। এখনকার যুগে কেউ কুকুরকে ভয় পায় না। ফুল দেখে আর লোভ সামলাতে পারেননি তাই ফটোগ্রাফি করার জন্য চলেই গেলেন।
হ্যাঁ আমি ভীষণ ভয় পাই দাদা। ধন্যবাদ আমার তোলা ছবি আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।
আসলে আপু এখন বেশিরভাগ দেখা যায় যে প্রায় অনেক মানুষের রাতে ঘুম হয় না। যদিও আপনার দেখছি সমস্যার কারণেই এটা হচ্ছে। আর এটা আপনার মা-বাবা বুঝতে পেরেছে এমনকি তারাও আপনাকে সকালবেলা উঠিয়ে দেন না, এটা বেশি ভালোই হয়েছে। কিন্তু যদিও কাজের কারণে সকালবেলা উঠেছেন এটাই ভালো লাগলো। আর আপনার বান্ধবীর বাড়িতে পাঁচ ছয়টা কুকুর,আমি নিজেও ভয় পেয়ে গেলাম। ভালোই হয়েছে কুকুরগুলোকে সরিয়ে আপনি ভেতরে গিয়েছেন। সত্যি যেন প্রাকৃতিক কিছু সুন্দর্য দেখলাম। গন্ধরাজ ফুল আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লাগে। আপনার হাতের ফুল গুলো দেখতে ভীষণ সুন্দর দেখাচ্ছে।
আমআর এই সমস্যা কবে শেষ হবে জানিনা দিদি। প্রার্থনা করবেন আমার জন্য। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আপনার ফটোগ্রাফি সবগুলো খুব ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করে দেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। অনেক অভিনন্দন আপনাকে।
ধন্যবাদ দিদি আপনাকে। ❤
ওয়াও! আপু আপনার ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো অনেক চমৎকার হয়েছে। আপনি ঠিক বলেছেন শিউলি ফুল গাছ থেকে মাঠিতে দেখা যায় বেশি। আমি ও আপনার পোস্টের মাধ্যমে রজনীগন্ধা ফুলের গাছ প্রথম দেখলাম। অবশ্যই কুকুর থেকে সাবধানে থাকবেন। যেহেতু আপনি আপনার সমস্যার কারণে রাত জাগতে হয় আমার মনে হয় এই ক্ষেত্রে ভালো একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে এর একটা চিকিৎসা আপনার নেওয়া উচিত। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।