আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে ভালোই আছেন।আমিও আমার মত করে ভালো থাকার চেষ্টা করছি।আসলে ভালো থাকা ব্যাপারটা হয়তো পুরোটাই আপেক্ষিক। আজ আমি যে পরিস্থিতি তে মনে করছি খারাপ আছি,সেটাই হয়তো আরেকজনের কাছে খুব ভালো থাকা। আজ আপনাদের সামনে আমি যে পোস্ট টা নিয়ে এসেছি সেটা হল প্রদীপের DIY রঙ করা। আমার এক আত্মীয়ার বাড়ি তে আগামী শুক্রবার আমার নেমন্তন্ন আছে। নেমন্তন্নের উপলক্ষ্য হল ওই বাড়ির বড় ছেলের একমাত্র মেয়ের অন্নপ্রাশন। সেই অন্নপ্রাশন উপলক্ষ্যেই খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থা আর কি!

তাহলে এবার প্রশ্ন আসছে এর সাথে মাটির প্রদীপের DIY এর কী সম্পর্ক তাই তো? আছে,আছে! সম্পর্ক বেশ গভীর আছে।আসলে তাদের বাড়িতে রীতি হল অন্নপ্রাশনে বিজোড় প্রদীপ জ্বালাতে হয় বাচ্চার মঙ্গল কামনার জন্য। বৌদি আমায় বলল , "পায়েল রঙ করা সুন্দর প্রদীপ পাচ্ছি না, তুমি একটু করে দেবে?" আমি বললাম যে, "বৌদি আমি তো এসব ছেড়েছি অনেকদিন হল, পারব কি না জানি না।"
বৌদি বলল, "পারবে তুমি জানি।"

আমার উপর যখন এই মানুষগুলো ভরসা করে, তখন কোথাও একটা মনে হয় যে আমি এখনও হয়তো পুরোপুরি হারিয়ে যাই নি। এখনও হয়তো নিজের স্বত্ত্বাটা টিকিয়ে রাখতে পারব। আবার এটাও কিন্তু ঠিক যে যখনই কেউ আপনার উপর ভরসা করবে, নির্ভরশীল হবে, তখনই আপনার দায়িত্ব দ্বিগুণ বেড়ে যাবে, যাতে করে সামনের মানুষটা কোন ভাবেই আশাহত না হয়। কখনও কখনও মনে হয় মানব জীবনটাই এমন। সবার এক্সপেক্টেশন পূরণ করতে করতেই সময় পার হয়ে গেলো।

তা সে যা ই হোক বেলাইনে চলে যাচ্ছি আবার। শুকনো শুকনো মুখ করে প্রদীপ তো কিনে আনলাম।আর রঙও একপ্রকার করলাম। কেমন হয়েছে আপনারা বলবেন অবশ্যই।নীচে রইলো উপকরণ আর প্রণালী।

যদিও ৩ টে প্রদীপ লাগবে তবুও আমি একটা অতিরিক্ত পাশে রেখে দিয়েছিলাম। আর প্রদীপ গুলোর মধ্যে একটার ভেতরে আকাশী নীল, এবং বাইরে হলুদ রঙ করলাম আরেকটার বাইরে আকাশী নীল আর ভেতরে হলুদ করলাম।

এবার ধার বরাবর V এর মত রঙ করে দিলাম লাল রং দিয়ে এবং হলুদ দিয়ে ছোট ছোট বিন্দু বানিয়ে সার্কেল করে দিলাম।

এবার ভেতরে লাল দিয়ে বড় একটা স্টার এঁকে নিলাম। লাল স্টারের চারপাশে সবুজ বিন্দু দিলাম এবং সাদা দিয়ে ঘিরে দিলাম।

তৃতীয় প্রদীপটি আমি ভেতরে লাল এবং বাইরে সাদা করেছিলাম।এই প্রদীপের বাইরের সাদা অংশে গোলাপী দিয়ে V আঁকলাম।
আর ছবি তুলতে গিয়ে হাত লেগে কৌটোটা পড়ে গিয়ে পুরো বোর্ড টা সাদা হয়ে গেলো। 🙁

এবার ভেতরে প্রথমে সবুজ এরপর হলুদ দিয়ে ডিজাইন করলাম এবং তার উপর সাদা দিয়ে ডিজাইন করে দিলাম।

ছবি তুলে বৌদিকে পাঠিয়ে ছিলাম। বৌদির তো দেখে বেশ পছন্দ হল। আমায় জিজ্ঞাসা করল যে, "পায়েল কত টাকা দেব? তুমি এত খেটে বানিয়ে দিলে!" আমি বললাম,"সব হিসেব কি টাকায় হয় বৌদি? কিছু জিনিস না হয় ভালোবাসার জন্য বরাদ্দ থাকুক।মাম্পুর জন্য আমার অনেক আশীর্বাদ রইলো। আর এটা না হয় ভেবে নাও ওকে ভালোবেসে, আশীর্বাদ করলাম।"
বৌদি আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলো, আমি আর বলতে দিলাম না। থামিয়ে দিলাম।