কোয়েলের জন্মদিনে বিশেষ মুহূর্ত(১০% @shy-fox এর জন্য)
তারিখ-১০.০১.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন।আমিও ভালোই আছি। আজকে আমি আপনাদের সামনে যে উপস্থাপনাটা নিয়ে আসলাম সেটা আমার মনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমার খুড়তুতো বোন যে আমার থেকে তিন মাসের ছোট, তার ব্যাপারে এর আগেও একটা-দুটো পোস্টে আপনারা হয়তো পড়েছেন।ওর নাম কোয়েল। গত ২৯শে ডিসেম্বর ২০২২ এ ওর জন্মদিন ছিল। আমার ১১ ই সেপ্টেম্বর আর তারপর ওর থাকে ২৯ শে ডিসেম্বর। ছোটবেলা থেকেই বন্ধু, সঙ্গী, সমস্ত গোপন কথার সাথী সবটাই ও। ছোটবেলায় একসাথে অনেক বকাঝকা খেয়েছি। অনেক রকম দুষ্টুমি করেছি। তবে ও আমার চেয়ে অনেকটাই শান্ত।
তখনও ছিল, এখনো তাই। যে কোন ডিসিশন খুব ধীর স্থির ভাবে নেয়।যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তার সুদূরপ্রসারী ফলের কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত নেয়। যেটা সত্যিই ভীষণভাবে আমাদের ইন্সপায়ার করতে পারে।আর আরেকটা ব্যাপার যেটা না বললেই নয় পড়াশোনায় সব সময় দুর্দান্ত। প্রথম ছাড়া কখনো দ্বিতীয় হয়নি স্কুলে। হয়তো তীক্ষ্ণ মস্তিষ্কের সাথে সাথে এই ধীর-স্থির স্বভাব এর জন্য দায়ী।জীবনে যদি কখনো সঠিক উপদেশ চান,ওর কাছে যেতেই পারেন। যদি কিছু না বলার হয়, মুখের উপরেই বলে দেবে "বলবো না"।আর যা উপদেশ দেবে সেটা আপনার ভালোর জন্যই দেবে। বর্তমানে আমার বোন একজন গেজেটেড অফিসার এগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্টে। আমরা বড় হওয়ার পরে কখনওই সেভাবে সবাইকে নিয়ে মজা করে জন্মদিন পালন হয়নি। কিন্তু ছোটবেলায় আমাদের দুজনেরই বেশ বড় প্যান্ডেল করেই জন্মদিন পালন হতো।
এইবার হঠাৎ করেই ওর ভাই রাতুল বায়না করে বসে ২৮ তারিখ রাত্রিবেলা যে, "দিদি তোর জন্মদিন সেলিব্রেট করব।"বোন তখন বলল, "এইভাবে হঠাৎ করে সেলিব্রেট করবো বললেই হয়? রান্নাবান্না কে করবে? এখন একদিনের মধ্যে রান্নার লোকই বা কোথায় পাবো?"রাতুল তখন বলল, "কোন ব্যাপার না।আমরা ভাই-বোনরা মিলে একসাথে রান্না করে খেয়ে নেব। খানিকটা পিকনিক টাইপের হবে।" তারপরে কোয়েল রাত্রে বেলা আমাকে মেসেজ করলো, "কালকে আমার জন্মদিন সেলিব্রেশন হবে। চলে আসিস।"
আমার তো মাথায় হাত। জন্মদিনটা পড়েছিল বৃহস্পতিবার। ফলে মার্কেট বন্ধ। উপহার কি দেবো ভাবতে পারছিলাম না।তারপরে ভাবলাম যাই মার্কেটে কিছু না কিছু দোকান তো খোলা থাকবে। অনেক ঘুরেফিরে একটা দোকান থেকে একটা স্লিং ব্যাগ কিনলাম এবং একটা চকলেট কিনলাম। সন্ধ্যে বেলায় যথাসময়ে গিয়ে হাজির ওদের বাড়ি। প্রথমে খেলাম চা আর ভেজিটেবিল চপ। তারপরে কেক কাটা হলো। আমার বোন কতটা পরিমাণে আর্জেন্টিনার ফ্যান সেটা আশা করি কেকটা দেখে বুঝতেই পারছেন। কেকটা হলো জন্মদিনের বিশেষ আকর্ষণ। বলতে পারেন এই কেকটা কাটবে বলেই সেলিব্রেশন এর কথা মাথায় এসেছে।ভাই-বোনরা গিয়ে বেলুন ফুলিয়ে টুলিয়ে দিয়েছিল। সেটাও নীল সাদা ছিল। মানে চারিদিকে আর্জেন্টিনা।
তারপরে ওকে বললাম, "মাথায় এই টুপিটা অবশ্যই পর। যাতে তোর জন্মদিন বোঝা যায়।" ও পরে নিল। তারপরে কেক কাটা হলো। দিব্যি আমরা কেক টেক খেয়ে নিলাম। এত সুস্বাদু নরম কেক বেশ ভালো লাগলো। এরপরই শুরু হয়ে গেল রান্নাবান্নার তোরজোর।প্রথমে ডাল করলাম সর্ষে এবং টমেটো ফোড়ন দিয়ে। তারপরে মাংসটা করতে হবে। সেজো কাকি অর্থাৎ কোয়েলের মা দুপুরবেলায় মাংস ম্যারিনেট করে রেখে দিয়েছিল।অবশ্যই মাটন।😋 সে মাংসটা বড় উনুনে রান্না করা হলো।আমাদের বাড়িতে এই বাসনপত্র গুলো কোখনো ভাড়া আনতে হয় না। কারণ প্রায়ই আমরা পিকনিক খেতাম বলে, আমাদের এক কাকু এগুলো সবই কিনে রেখেছিল। তাই যখনই যার বাড়িতে কোন অনুষ্ঠান হয় সেই বাসন গুলো দিয়েই করা হয়। ভালো করে মাংসটাংস রান্না করা হলো। সবাই মিলে যে যেমন পারে সেভাবে কাজ করেছিল। কেউই বসে নেই। সবকিছু শেষ করে যখন আমরা উঠলাম তখন প্রায় দশটা বাজে। কাকিমা ঘরেই কিছুটা ভাত, পটল চিংড়ি,পায়েস,চাটনি পাঁপড় রান্না করে রেখেছিলো। করার মধ্যে আমরা শুধু অল্প ভাত, ডাল, আর মাংসটাই করেছিলাম। তাও কাকিমা অর্ধেক রেডি করে দিয়ে গিয়েছিল। তারপরে খেতে বসলাম।
মেনুতে ছিল ভাত,ডাল, চিপস,পটল চিংড়ি,খাসির মাংস,চাটনি,পাঁপড়,পায়েস,ক্রিম চপ, নলেনগুঁড়ের রসগোল্লা। প্রত্যেকটা রান্না অসাধারণ হয়েছিল। ভালবেসে রান্না করলে আর ভালোবেসে খাওয়ালে তা অবশ্যই ভালো লাগে। তার পরে যখন বাড়ি ফিরলাম, প্রায় এগারোটা বাজে। পরে ওই বাসনপত্র গুলো কে ধুয়েছিল সেটা যদিও জানা নেই। হয়তো কাকু আর কাকিমা মিলেই করেছিল। কিন্তু সারাটা সন্ধ্যে থেকে রাত পর্যন্ত দারুন একটা মুহূর্ত কাটালাম সব ভাইবোনেরা মিলে। মাঝে মাঝে এরকম দিন আসলে বেশ ভালই লাগে।
আজ এখানেই শেষ করছি। কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। সকলে ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
পরিচিতি
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
প্রথমে জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাই।
আপনার খুড়তুতো বনে জন্মদিনে খুব সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। আসলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানগুলো খুবই সুন্দর হয়ে থাকে। খাওয়া দাওয়া গল্প গুজব সবার সাথে খুব সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করতে পেরেছেন। এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
অনেক ধন্যবাদ ভাই। আমি আপনার এই বার্তা ওর কাছে পৌঁছে দেব।
জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। দিদি আপনার খুরতুতো বোন কোয়েলের জন্মদিন খুব সুন্দরভাবে উদযাপন করলেন,জেনে ভাল লাগলো। গল্প,খাওয়া দাওয়া, উপহার সব মিলিয়ে বেশ সুন্দর সময় পার করেছেন।শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দিদি।অনেক অভিনন্দন রইলো আপনার জন্য।
খুবই মজা হয়েছিল। ধন্যবাদ দিদি।
আপনার খেলার সাথী এবং প্রিয় বান্ধবী কোয়েলের জন্মদিনে বেশ আনন্দ করেছেন সবাই মিলে।মাঝে মাঝে এভাবেই জন্ম দিন আসলে বেশ ভালো হয় সবাই মিলে আড্ডা দেওয়া যায় এবং খুব জমিয়ে খাওয়া দাওয়া হয়ে যায়।সবাই বেশ মজার সময় পার করেছেন এবং অনেক সুস্বাদু খাওয়া দাওয়া করেছেন।তবে কেক দেখে তো আমার লোভ সামলানো যাচ্ছে না।সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন এবং সেই মুহূর্তটি আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন অনেক ভালো লেগেছে।
ও আমার বোন আসলে। কিন্তু সমবয়সী হওয়ায় বন্ধুও বটে।
দিদি আপনার খুরতুতো বোনের জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইল ৷ আপনার বোনের জন্মদিন খুব সুন্দর ভাবে উদযাপন করেছেন যদিও হঠাৎ করেই এই জন্মদিন সেলিব্রেট করেছেন ৷ তবে ভালোই হয়েছে মজা আনন্দ খাওয়া দাওয়া ৷ আর হ্যা আপনার বোন যে বেশ আর্জেন্টিনা ভক্ত তা কেক দেখেই বোঝা যাচ্ছে ৷ ধন্যবাদ আপনাকে আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য ৷
হ্যাঁ। আমাদের বাড়ির সব ভাই বোন আর্জেন্টিনা।
প্রথমেই আপনার বোনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি আপু। সে যে আর্জেন্টিনার ফ্যান সেটা বোঝাই যাচ্ছে কেক দেখে। আসলে কেকের ডেকোরেশন দারুন লাগছে। সত্যি কথা বলতে সবার সাথে জন্মদিন উদযাপন করার আনন্দই আলাদা। অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য এবং আপনার বান্ধবী, খেলার সাথী, বোনের জন্য।
অনেক ধন্যবাদ বোন।কেক টাই আসল আকর্ষণ ছিলো।
প্রথমেই জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাই। দেখছি বেশ ভালোই মেধাবী। আপনি আপনার খুড়তুতো বোনের জন্মদিনে দেখছি বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছেন। এরকম জন্মদিন পার্টিতে বেশ ভালোই সময় কাটানো যায়। সবাই মিলে যেকোনো অনুষ্ঠানে একসাথে হলে খুবই মজা হয়। এই বিষয়টি আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। আমার কাছে কিন্তু পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে ধন্যবাদ।
ভীষণ মেধাবী। আর ভালো। ধন্যবাদ দিদি।
প্রথমে আপনার বোনের জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা। বোনকে নিয়ে সুন্দর মন্তব্য করেছেন।আপনার বোন মনে হয় আর্জেন্টিনার বেশ ভক্ত। উপহারের জন্য ব্যাগটা দারুণ হয়েছে।খাবারের মেনুতে দেখছি অনেক আইটেম।যাইহোক খাওয়া দাওয়া মিলে সময় বেশ ভালোই কেটেছে মনে হচ্ছে।
ধন্যবাদ বৌদি। ব্যাগটা আমারও খুব ভালো লেগেছে।