গল্পকথা পাঠ-'মা'- তোমার জন্য (১০% @shy-fox এর জন্য)
তারিখ-৩১.০১.২০২৩
নমষ্কার বন্ধুরা
আশা করি সকলে ঈশ্বরের আশীর্বাদে ভালো আছেন।আমিও ভালই আছি। আর আজকে অনেকদিন পরে একটা গল্প কথা পাঠ নিয়ে চলে এলাম।লিখেছেন সবজি ঘোষ।পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। জীবন যুদ্ধের গল্প নিয়ে অবশ্যই আসব একদিন। আজ বরং অন্য কথা বলি।গল্প কথাটি পাঠ করতে গিয়ে কতবার যে আমার চোখে জল এসেছে জানি না। আপনাদের শুনিয়ে আমি জানিনা কতটা অনুভব করাতে পারবো, তবুও চেষ্টা করছি এর গভীরতাতে ঢোকার। আমি জানি আমি যে পরিমানে ইরেগুলার হয়েছি, আপনারা হয়তো সবাই আমাকে ভুলে গেছেন।গুটিকতক লোক যাও আমাকে চিনে ছিল, আমার এই ইরেগুলারিটির জন্য পুরোটাই ভুলে গেছে।না কিছু উপস্থাপনা নিয়ে আসতে পারছি, না কারো উপস্থাপনাতে মন্তব্য করতে পারছি। কবে শেষ স্টিমিট খুলেছিলাম নিজের মনে নেই। কিছু না কিছু লেগেই আছে। ৮ই ফেব্রুয়ারির পর থেকে আশা করি ঠিক হবে। যুদ্ধটা অনেকটাই কমেছে। আজ নিজেকে ভীষণ হালকা মনে হচ্ছে। সব জানাবো। আপনাদের জন্য প্রার্থনা একটাই থাকবে, কোন শত্রুর জীবনেও যেন এই দিন না দেখতে হয়। ভাবলাম সবটা যখন স্বাভাবিক হয়েছে,তবে স্বাভাবিক হওয়ার পেছনে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি, তাদের দুজনের মধ্যে একজনকে নিয়ে আজকের পাঠ হোক। হ্যাঁ আর কেউই নয় আমার মা।
তবে আমার এই যুদ্ধে মা এবং বাবা দুজনেরই সমান অবদান আছে। কিন্তু আজকের গল্প কথাটি শুধু মাকে নিয়ে। অন্য কোনদিন বাবাকে নিয়ে হবে।
#হৃদমাঝারেরাখব
#সরজিৎ_ঘোষমা'কে নিয়ে গিয়ে ছিলাম মোবাইলের দোকানে।বেশ কয়েকটা দামী মোবাইল সেট দেখানোর পর দোকানের ছেলেটি বললো... -স্যার এই সেট টা নিতে পারেন।দারুণ ফিচার্স।ক্যামেরটাও দারুণ।ইন্টারন্যাল মেমরিও অনেক বেশি। -দাম কত আছে? -আপনার রেঞ্জ এর মধ্যেই।উনিশ হাজার আটশো। আমি ভালো করে দেখে নিয়ে মা'কে বলি.. -মা এটা পছন্দ তোমার? কথাটা শুনে দোকানের ছেলেটি মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে.. -কার জন্য মোবাইল নেবেন? -আমার মায়ের জন্য। -ও আচ্ছা।আগে তো বলবেন মায়ের জন্য।আমি ওই হাজার তিনেক টাকার মধ্যে সেট দিয়ে দিচ্ছি ।আসলে আমি বুঝতে পারিনি।আমি ভাবলাম আপনি ইউজ করবেন। -না না ওটাই আমার মায়ের জন্য নেব।কম দামী সেট আর বের করতে হবে না। -ওটাই মায়ের জন্য নেবেন? -তুমি ভাবতে পারনি নিশ্চয়ই যে আমি ওটা... ছেলেটি একটু লজ্জা পেয়ে বলে... -আসলে স্যার অনেক কাস্টোমার আসে।বয়স্ক মা বাবার জন্য যখন মোবাইল নেন সব থেকে কম দামীটাই বার করতে বলেন।সরি স্যার কিছু মনে করবেন না। মোবাইলটা কিনে মায়ের হাতে যখন দিই তখন মা যে কি খুশি হয়েছিল সেদিন তা বলে বোঝাতে পারব না।দোকানের ছেলেটির মতো অনেক মানুষের ধারণা বাবা মাকে এত দামী মোবাইল দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।তো পাশের বাড়ির একজন দাদা আমাকে বলেছিল.. -এত দামী মোবাইল মাকে দিয়েছিস,তোর মা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে পারবে তো?শুধু কথা বলার জন্য দামী মোবাইল কিনে ফালতু খরচ করার কোনো দরকার ছিল? ওই দাদার কথাটা সেদিন খুব খারাপ লেগেছিল।তাই ওই দাদাকে বলেছিলাম... -আমি আমার মায়ের জন্য খরচ করব এটা ফালতু হয় কি করে?মা ব্যবহার করতে পারবে না এটা কে বলছে?একজন স্বল্প শিক্ষিতা মা যদি তার ছেলেকে প্রফেসর তৈরি করতে পারে সামান্য একটা মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে না? মানুষ জনের এই রকম ধারণাই থাকে বাবা মা মানে সব থেকে কম দামী জিনিস কিনে দিলেই হবে।কিন্তু কেন?আমার মায়ের হাতে যদি একটা দামী মোবাইল থাকে সেটা দেখে আমি খুশি হব,এটাই স্বাভাবিক।বাইরের লোক কে খুশি হলো কি না হলো সেটা দেখে কাজ নেই। তবে আমার জীবনে আমার মায়ের অবদান অনেক বেশি।কারণ বাবাকে বেশিদিন পাইনি। বাবা মারা গেছেন অনেক বছর আগেই।আমার জীবনে মা একাই একশো।চাকরি পাওয়ার প্রথম দিন,কলেজে যেদিন জয়েন করলাম সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম আমার মাকে।মা তো তাকিয়ে দেখছে চারিদিক।তারপর মা আমার দিকে তাকিয়ে বলে... -এত্তো বড়ো কলেজ!তুই এতো বড়ো কলেজে পড়াবি? আমি তো ভাবতে পারছি না যে আমার ছেলে কলেজে পড়ায়। কলেজে সেদিন আমার মা'কে দেখে অনেককেই বলতে শুনেছিলাম "স্যারের মা"।এমন কথায় তো মায়ের চোখে জল এসে গিয়েছিল। আমি দেখেছিলাম মা আঁচল দিয়ে চোখটা মুছে নিচ্ছে। আমার চোখে চোখ পড়ে যেতেই মা বলেছিল.. -চোখে কি একটা পড়েছে।তাই চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে গেল। নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা মা সব সময়ই করে গেছেন। আমাকে কোনো দিনই বুঝতে দেয়নি।কলেজ থেকে বেরিয়ে যখন মেন রাস্তায় এলাম তখন বার বার কলেজটাকে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখছিল।তারপর নিজের মনেই মা বলছিল.. -আজ যদি তোর বাবা বেঁচে থাকতো,তাহলে এমন আনন্দটাও তোর বাবার সাথে ভাগ করে নিতাম। মায়ের কথা শুনে সেদিন আমিও নিজেকে আর সংবরণ করতে পারিনি।চোখের কোনটা চিক চিক করে উঠেছিল।মাকে বলেছিলাম.. -আমার জীবনের যত সার্টিফিকেট আছে এগুলো সবই তোমার প্রাপ্য।তোমার শিক্ষার মূল্য লুকিয়ে আছে আমার প্রতিটা মার্কসিট আর সার্টিফিকেটে।ওপরে আমার নামটা থাকলেও নেপথ্যে তো তুমিই।আজকে কলেজে সবাই যখন বলছিলেন "স্যারের মা",তখন তোমার জন্য গর্বে বুকটা ভরে যাচ্ছিল।তোমার মতোই তো কত মা আছেন যারা আমার মতো স্যার তৈরি করে আমাদের সমাজকে উপহার দিয়ে চলেছেন।আমি সত্যিই গর্বিত মা। এই অসম্ভব ক্ষমতা হয়তো প্রত্যেক মায়েদেরই থাকে।সন্তান মানুষ করার পিছনে মায়েদের যে কত কি ত্যাগ করতে হয় এটা প্রত্যেক মা-ই জানেন।মনে আছে আমার মাধ্যমিক পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে আমার ছোটো মামার বিয়ে হলো।আমার পরীক্ষা,তাই আমি যেতে পারব না।মাকে আমি বারবার বলেছিলাম.. -তুমি যাও মা।একটা দিন তো,আমার অসুবিধা হবে না। মা কিন্তু যাইনি।আমার তিন মাসি সবাই এসেছিল। নিজের ভাইয়ের বিয়ে।কত আনন্দ, কত হৈ হুল্লোড়।মায়ের মন খারাপ হয়তো হয়েছিল সেদিন, আমি বুঝতেই পারিনি।ছেলেকে মানুষ করার জন্য কত কি ত্যাগ করে দিয়েছিল আমার মা।আর আজ সেই দিন গুলো হয়তো মাকে ফিরিয়ে দিতে পারব না।তবে ছোটো খাটো খুশি দিয়ে যদি এতটুকুও কিছু করতে পারি, তবেই আমি সার্থক। কলেজে চাকরি পাওয়ার পর প্রথম দুর্গা পুজো।তো মা কে বললাম.. -মা পুজোতে কি নেবে বলো? মা হেসে বলে... -আমার চাওয়ার কিছু নেই। -বেশ আমি তোমাকে কুড়ি হাজার টাকা দিচ্ছি। তুমি তোমার পছন্দ মতো যা খুশি কিনো। মা একটু ভেবে বলে.. -শোন বাবা একটা শূন্য কেটে যেটা হবে ওটাই আমাকে দিস।আর বাকী টাকাটা আমার আশে পাশের গরীব মানুষ জনের জন্য কিনতে চাই।কুড়ি হাজার টাকার দু তিনটে দামী শাড়ি হয়তো কিনব। একবার পরেই আলমারিতে পুরে দেব।তাতে লাভ কি?ওই টাকা গুলো বন্দী না করে যদি মুক্ত করতে পারি তাহলে গরীব মানুষ গুলো পুজোতে পরে আনন্দ পাবে।আমি তাতেই খুশি হব। খুশি গুলোকে ভাগ করে নেওয়ার শিক্ষা মায়ের থেকেই।তাই প্রতি বছর পুজোতে কিছু গরীব মানুষের জন্য কিছু টাকা বরাদ্দ থাকে।ওদের কেনাকাটা কমপ্লিট করে তবেই নিজের জন্য কিনবে মা।চাকরি পাওয়ার পর থেকে পাঁচ বছর হলো,সেই সহযোগিতা আমিও করে যাই মায়ের সাথে। বাবা মা আমাদের জন্য সারা জীবন ধরে যা করেন আমরা তার কতটুকুই বা তাদের দিতে পারি?কিছুই পারি না।নিজেদের কত সাধ জলাঞ্জলি দিয়ে আমাদের বড়ো করেন।বাবা মা যদি ওনাদের সব সেরাটুকু আমাদের দিতে পারেন তাহলে আমরাই বা কেন নিচু মানসিকতা নিয়ে সব থেকে কম দামী মোবাইলটা কিনব?যেদিন স্মার্ট ফোনটা মায়ের হাতে দিয়েছিলাম সেদিন মা কিছুই জানত না।তবে আজ সব পারে আমার মা।ফেসবুক,হোয়াটস্যাপ,ইউটিউবে গান, ভিডিও,মুভি সব টাই করতে পারে দক্ষতার সাথে।আমি মাকে শিখিয়ে দিয়েছি সব।একটু খানি সময় যদি ওনাদের জন্য দিই তাহলে ওনারা শিখতে পারে বই কি।আমার বাড়িতে কম্পিউটার আছে। আমিই মাকে বললাম.. -তোমাকে কমপিউটারটাও শিখতে হবে। তারপর কমপিউটার ক্লাসে মা ভর্তি হয়।ছয় মাসের একটা বেসিক কোর্স করে মা নিজে কমপিউটার চালাতে পারে এখন।শুধু কমপিউটার নয়,শরীর চর্চার জন্য জিমেও যায়।আমরা চেষ্টা করলেই পারি আমাদের বাবা মাকে ভালো রাখতে।সদিচ্ছা থাকলে কি না হয়? আমাদের ভালো রাখার জন্য বাবা মা তাদের জীবনের সবটুক দিয়ে যদি একটা সুন্দর ভবিষ্যত উপহার দিতে পারে,তাহলে আমরাও ছোটো খাটো খুশি দিয়ে বাবা মায়ের জীবন টাকে আনন্দে ভরিয়ে তুলতে পারি।
যখন আমরা জীবনে উন্নতির চরম শিখড়ে পৌঁছে যাই তখন মনে হয় এটার জন্য তো সমস্ত ক্রেডিট আমারই পাওয়া উচিত। আমিই তো করেছি। খুব গভীরে তখন ভাবতে হয়। এই আমিত্বটা কি সত্যিই আমার সাথে সাজে? আমাদের মা-বাবা যদি আমাদের তৈরি না করত, তাহলে সত্যি কি আমরা পারতাম যা হয়েছি সেটা হতে,হয়তো পারতাম না। অহংকার আমাদের সব ভুলিয়ে দেয়। আমাদের উৎস, আমাদের মূল, সমস্তটাই ভুলিয়ে দিতে পারে একটা অহংকার। তাই মহাপুরুষরা বলেছেন নিজের মূল ভুলোনা। যাদের জন্য এই পৃথিবী দেখা তাদের জন্যই আমাদের কাছে সময় নেই,টাকা নেই। তাদের জন্য টাকা খরচ মানে অপচয়,অপব্যবহার।সত্যি কি তাই? একবার ভাবুন তো এই অপ্রয়োজনীয় মানুষগুলো না থাকলে,আপনি পৃথিবীতে থাকতেন?আমরা কেউ থাকতাম? আমাদের মা-বাবার অনুপস্থিতিতে তাদেরকে ছোট করার আগে অবশ্যই অতীত ভাববেন।আমরা খুব বিরক্ত বোধ করি,বাবা মাকে স্মার্ট ফোন টুকু শেখাতে। আচ্ছা ভাবুন তো আমাদের মা-বাবারাও যদি এরকমই বিরক্ত বোধ করত? আমাদের অ আ ক খ শেখাতে! কেমন হতো?এত স্মার্টলি স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারতেন? ফটফট করে ইংলিশে কথা বলতে পারতেন?
অবশ্যই ভাববেন।ভাবা প্র্যাকটিস করতে হবে আমাদের।
যখন মোবাইলের দোকানে যাব মায়ের জন্য একটা ফোন কিনতে, তখনই ভাববো অত দামী ফোন লাগবে না। জাস্ট ফোনটা রিসিভ করতে পারলেই হল,কল করতে পারলেই হলো। আরে তাদেরও ইচ্ছে করে facebook,whatsapp, youtube এগুলোর সঙ্গে পরিচিত হতে।
আপনি পরিচয়ই করাবেন না, তারা শিখবে কিভাবে?ভুলক্রমে যদি মাকে একটা স্মার্ট ফোন কিনে দিই আমরা, তারপরে তো, "তুমি এটা পারো না, এটাও শেখোনি।" এগুলো চলতে থাকে।
ভাবুন ছোটবেলায় মা ও যদি আপনাকে বলত,"তুই অ আ লিখতে পারিস না? এটাও শিখিস নি?" বড় হয়ে কি করতেন সে হাল ছেড়ে দিলে? আপনার যে মা বা বাবা সমস্ত ঝড়-ঝঞ্ঝা থেকে আপনাকে আঁকড়ে রেখেছে , তাদের জন্য সব সময়ই সস্তা জিনিস কেন বলতে পারেন?যখন সেই বাবা-মারাই সবথেকে বড় মাছের পিসটা,সবথেকে দামি জিনিসটা,সবথেকে ভালো খাবারটা আপনার জন্য তুলে রাখে?
আপনার ক্যারিয়ারে কোনটা করলে আপনি তাদের থেকেও এগিয়ে যেতে পারবেন সেটা তারা ভাবে।তবে আপনার সাফল্যের পরে তারা সব থেকে কম দামি জিনিসটা কেন পাবে বলতে পারেন?
আজ অনেকগুলো প্রশ্ন আপনাদের সামনে রাখলাম। এই প্রশ্নগুলো আমার মাথাতেও ঘোরাফেরা করে। অনেক কিছু পারি না। চাইলেও মা-বাবার জন্য করতে পারি না। এখনো বেকার বলতে পারেন। কিন্তু যদি জীবনে কিছু করতে পারি, প্রথমে তাদের জন্যই করব। তারা আমার জন্য যা করেছে আমি সে ঋণ কোনদিনই শোধ করতে পারবো না। আর আমি শোধ করতেও চাই না।শুধু চাই তাদের ভালো দেখতে। তোদের ভালো রাখতে। শেষ বয়সটা যেন কোনো রকম চিন্তা ছাড়াই তারা আনন্দের সময় কাটায়।
আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে।কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। সকলে খুব ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
পরিচিতি
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।