কৌশাম্বীর জন্য একটা বিকেল। (১০% @shy-fox এবং ৫% @abb-school এর জন্য)
নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি ঈশ্বরের আশির্বাদে ভালো আছেন। চলে এসেছি নতুন একটা ব্লগ নিয়ে।অনেকদিন ধরেই বৈশাখীর সাথে মন কষাকষি চলছিলো, কারণ ও আমায় দিদি বলে এতো ভালোবাসে তাও ওর বিয়েতে যেতে পারি নি।আমায় বলেছিলো যে ওর বিয়েতে না যাওয়ার কারণে ও আমার বিয়েতে আসবে না।
১লা সেপ্টেম্বর আমায় বলল, "দিদি আমার মেয়ের মামা ভাত, তুমি এবার আসবে তো?" আমি জিজ্ঞাসা করলাম,"কবে মেয়ের মামা ভাত?" উত্তর এলো, "১১ই সেপ্টেম্বর" মাথায় আমার আকাশ ভেঙে পড়লো। ওই দিন তো কত কাজ! কি করে যাব? এই দিকে মুখের উপর মানা করতেও কষ্ট হচ্ছে। আহা রে ৭ মাস বয়সের মাত্র ওর মেয়ে। গতকাল ওকে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ করলাম, "আমি আগামীকাল যাব কৌশাম্বী কে দেখতে।"
আজ ঘুম থেকে উঠেই মা কে জানালাম যে আমি পুচকুকে দেখতে যাব।মা বলল যা তবে নতুন জায়গা একা যাস না। সাথে কাউকে নিয়ে যা।তখনই শম্পা কে কল করলাম।বললাম যাবি আমার সাথে ব্যান্ডেল?একটা বাড়িতে যাব। ৩০ মিনিটের মত বসব।আমি জানি দুর্গাপুজো সামনে। ওর বিউটি পার্লারে অনেকটাই চাপ থাকে। তা স্বত্ত্বেও ও রাজি হয়ে গেলো।
দুজনে মিলে বেড়িয়ে পরলাম ৪.৩০ নাগাদ।টোটো ধরে পৌঁছে গেলাম কাঁচড়াপাড়া। সেখান থেকে একটু মিষ্টি নিলাম আর বাচ্চার জন্য একটা জামা নিলাম। এরপর ট্রেন ধরে পৌঁছলাম নৈহাটি স্টেশন। প্লাটফর্ম থেকে পশ্চিমে নৈহাটি চুঁচুড়া লঞ্চ ঘাটে যাব। ট্রেনে আবার একটা আঙটি আর কানের দুল কিনলাম। লঞ্চঘাটে পৌঁছে দেখি ভালোই ভিড়। যাক তাও সময় মত পেয়ে গেছি লঞ্চ।ওপারে পৌঁছে বৈশাখী কে কল করলাম যে এবার কোথায় যাব?ও বলল, "দিদি তুমি ত্রিবেনীর অটো ধরো আর বল 'লাট বাগান'যাব আমরাও কথা মত তাই ই করলাম।প্রায় ২৫ মিনিট অটো চেপে পৌঁছলাম ওর বাড়ি।
বাড়িতে গিয়ে দেখি যার জন্য এত ছোটাছুটি করে আসা সেই মহারানী ঘুমোচ্ছেন।আর কী? কোল্ড ড্রিংক খেলাম।বসে, তারপর বৈশাখী কে বললাম মেয়ে কে ডেকে তোল। ভেবেছিলাম ওইটুকু বাচ্চা হয়তো ডাকার কারণে কাঁদবে। কিন্তু একদমই উল্টো হল ব্যাপার টা। উঠেই সোনা মায়ের মুখে একগাল হাসি! বার বার আমার কোলে চলে আসছে আর আমার কুর্তির হাতা ধরে টানছে। স্বাভাবিক এটাই যে বাচ্চারা ব্রাইট রং দেখে অ্যাট্রাক্ট হয়।
এরপর এক প্লেট চাউমিন নিয়ে হাজির ওর মা। আমরা কমিয়ে দিতে বললাম যে অত খাওয়া সম্ভব না। খেয়ে দেয়ে, জল খেয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম যখন তখন বাজে সন্ধ্যা ৭টা। একটা টোটো তে চেপে চলে এলাম লঞ্চ ঘাটে। লঞ্চ টা ছাড়বে ছাড়বে করছিলো। জাস্ট কোন দিকে নই তাকিয়ে পিটি উষার মত দৌঁড় দিলাম।গিয়ে উঠলাম লঞ্চে।
রাতের নদীতে চলার অভিজ্ঞতা ছিলো না। দূর থেকে আলোগুলো যেন আরো মায়াবী মনে হয়। এরপর নৈহাটি এসে ট্রেন ধরে সোজা বাড়ি যখন পৌঁছলাম তখন বাজে রাত ৮.৩০। সারাটা পথ মাথায় বাচ্চা টির সরল হাসিমাখা মুখ টা মনে ভাসছিলো।মনে মনে এটাই ভাবছিলাম আবার কখনোও যাব ওর ওই হাসি টুকুই দেখতে।
মেয়েটি দেখতে কিউট কিন্তু দিদি। কৌশাম্বী নামটাও সুন্দর। বাচ্চার নতুন কাউকে দেখলে কোলেই আসতে চায়না। অথচ আপনাকে দেখে ঘুম থেকে উঠেই কোলে এসে পরেছে। তবে রাতে লঞ্চ দিয়ে আসার একটা অভিজ্ঞতাও হলো।
এত হাসি খুশি বাচ্চা আমি আর দেখি নি।ও যে কি করছিলো আমায় দেখার পর!
বাচ্চাটা খুব মিষ্টি।
পোস্ট বিষয়ক ট্যাগ ১ম দিকে দিবেন,এরপর অন্য ট্যাগ গুলো দিবেন।
ঠিক আছে। পরের বার থেকে তা ই করব। অনেক ধন্যবাদ। 🙂
সাধারণত একদিনের মনমালিন্য ভাঙাতে কয়েকদিনের চেষ্টা লেগে যায় । কাউকে দেওয়া কথা রাখতে গেলে হাজার কাজের ভীড় এসে ভুলিয়ে দেয় । তারপরেও আমাদের চেষ্টা রাখাতেই হয় আপন মানুষ গুলোকে তাদের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াতে । বাচ্চাদের সাথে সময় কাটাতে বেশ ভাল লাগে । আপনার এই স্বল্প সময়টাও দারুণ ভাবে উপভোগ করেছেন এটা বুঝতে পারছি । রাত্রে কি, দিনেই কখনো লঞ্চ ভ্রমণ করিনি । তাই এই সৌন্দর্য অনুভুতি কেমন হবে বলতে পারছি না ।
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য। কখনও লঞ্চ বা নৌকোতে চেপে দেখবেন রাতের বেলা। ভালো লাগবে।