তারিখ-১৭.১২.২০২২
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি সকলে ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি।এখন ভারতে তথা পশ্চিমবঙ্গে বিয়ের মরশুম চলছে।তাই কম বেশী সবাই ই একটা আধটা বিয়ের নেমন্তন্ন পাচ্ছে।আমিও পেয়েছি। আরো পাব।আজ যে বিয়ে বাড়ির কথা ভাগ করে নিচ্ছি সেটা হল আমার স্কুল জীবনের ক্লাসমেট সৌভিকের রিসেপশন পার্টি। আসলে সেই ক্লাস ফাইভ থেকেই আমরা একসাথে পড়াশোনা করেছি।দুষ্টুমিতে একে অপরকে সাহায্য করার জন্য আমরা স্কুলে অনেক শাস্তিও পেয়েছি।ক্লাস ১০ পর্যন্ত একসাথে পড়াশোনা। ১১-১২ এ ও অন্য স্কুলে চলে গেলো। কিন্তু আমাদের সায়েন্স স্ট্রিম থাকায় টিউশন ব্যাচে দেখা সাক্ষাৎ, বদমায়েশি এসব চলতই। তারপর যা হয় আর কি! বড় হওয়ার সাথে সাথে ইউনিভার্সিটি কলেজ সব আলাদা হয়ে যাওয়ায় সেরকম দেখা-সাক্ষাৎ বলতে শুধু রাস্তাতেই.।হঠাৎ করেই একদিন ফোন করলো। বলল,"শোন না ৮ই ডিসেম্বর আমার বিয়ের আর অনুষ্ঠান রিসেপশনের অনুষ্ঠান করা হচ্ছে ১১ই ডিসেম্বর আশীর্বাদ ভবনে। আসবি কিন্তু।"আমি শুধু বললাম,"আরে ভাই কংগ্রাচুলেশন! রবিবার পড়ছে কি?"উত্তরে বলল,"হ্যাঁ রে রবিবার।"
বিয়ে হয়েছে আমাদেরই পাশের পাড়ার একটি মেয়ের সাথে।সেই মেয়েটি আমার ভাইয়ের ক্লাসমেট ছিল। আমার সেজো কাকুর বাড়ির পাশেই বাড়ি। সেই সূত্রে সেজো কাকুদেরও নেমন্তন্ন ছিল। বাকি বন্ধুবান্ধবও নিমন্ত্রিত ছিল। ১১ই ডিসেম্বর বেশ পরিপাটি হয়ে যে চলে গেলাম বিয়ে বাড়ি।পরিপাটি হয়ে সাজার কারণ আরেকটা হল, বিগত এক বছরে একটাও বিয়ে বাড়ি নেমন্তন্ন পাইনি।একটু তো তাই সাজতে হতোই। শম্পাকে বলে সুন্দর করে চুল বাঁধিয়েছিলাম। তাতে গোলাপের পাঁপড়ি ও লাগিয়েছিলাম।
যাইহোক তাড়াতাড়ি গিয়ে স্টার্টার গুলো খাবো বলে সাতটা নাগাদই আমরা বান্ধবীরা মিলে চলে গিয়েছিলাম।কারণ মাথায় এটাই ছিল যে দেরিতে গিয়ে স্টার্টার খেলে, মেনকোর্স থেকে পারব না।আর সেই কারণে আগে আগে যাওয়া।গিয়ে বউয়ের সাথে সাক্ষাৎ হল গিফটও হস্তান্তর করে দিলাম। আমাকে জিজ্ঞেস করল,"ভালো আছো পায়েল দি?আমাকে কেমন সাজিয়েছে?" আমি বললাম, "হ্যাঁ ভালো আছি। তোকে ভালো লাগছে।"
তারপরে সৌভিকের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা হল।এরপরে সময় নষ্ট না করে সোজা চলে গেলাম ফুচকা খেতে। ফুচকাটা বেশ ভালোই বানিয়েছিল। তবে তিন-চারটের বেশি খাইনি। কারণ পাশেই আমাকে ফিস বল আর ফ্রাইড মোমো টান ছিল। পাশের স্টলে ফ্রাইড মোমো এক প্লেট নিলাম আর এক প্লেট স্টিম মোমও নিলাম। সকলেরই স্টিম মোমো বেশি পছন্দ হলো। যদিও আমি ফ্রাইড মোমোই বেশি পছন্দ করি।
এরপর দুপ্লেট মোমো চারজনে ভাগ করে খেয়ে, নজর পড়লো ফিস বলের দিকে।গোটা বারোটা ফিস বল তুলে নিলাম একটা প্লেটে। নানা ভয় পাবেন না।বারোটা একা খাইনি।তবে ফিশ বলগুলো এক একটা নাড়ুর সাইজের। সুতরাং কেউ যদি চুপচাপ বারোটা খায়ও,তাতে কোন অসুবিধা নেই। মোমোট যতটা সুস্বাদু লেগেছে আমার, ফিসবল তার থেকেও বেশি সুস্বাদু লেগেছে। লোটে মাছের ঝুড়ি দিয়ে ফিস বলগুলো বানানো হয়েছে।
দু প্লেট এরকম ফিসবল নিয়ে সকলে ভাগ করে খেয়ে নিলাম।এইবার মনে হল যে না পেটটা একটু ভরা ভরাই লাগছে। আর বেশি খাওয়া যাবে না।তারপরে প্রত্যেকে এক কাপ করে তন্দুরি চা নিয়ে বসে পড়লাম চেয়ারে। বন্ধুবান্ধব মিলে যথেষ্ট ফটো সেশন হলো। ছোটবেলার সবাই এক জায়গায় দেখা হয়ে গেলে যা হয় আর কি! তারপরে আমার মনে হল যে বউয়ের চারপাশের ডেকোরেশনের একটু ছবি তুলি গিয়ে।দেখলাম প্রচন্ড ভিড়। তাই বউয়ের একটা ছবি তুললাম।
ওর পাশেই ডেকোরেশন করেছিল ফুল দিয়ে একটা সুন্দর ময়ূর। সেটার ছবি তুলে নিলাম। এরপরে দেখলাম ধীরে ধীরে আমার কাকু-কাকি, ভাই-বোন সবাই আসছে।সকলে মিলে চলে গেলাম মেইনকোর্সের দিকে। তখন বাজে রাত্রে নটা। মেইনকোর্স কেমন খেলাম না খেলাম তার একটা ডিটেলস ব্লগ লিখব ফুড রিভিউ নিয়ে। খাওয়া-দাওয়া যখন শেষ হলো বাড়ির সবার সঙ্গে গল্প-টল্প করে একটা সেলফি নেওয়া তো দরকারি! তুলে নিলাম ছবি।দেখলাম এগারোটা বেজে গেছে ঘড়িতে।
এবার বাড়ি যেতে হবে। বন্ধুদের সকলকে বিদায় জানিয়ে, এগারোটা নাগাদ বাড়ির সকলের সাথে গুটি গুটি পায়ে বাড়ি চলে এলাম। অনেক শুভেচ্ছা রইল সৌভিক এবং মৌসুমীর আগামী জীবন গুলোর জন্য।আশা করব আপনারা সকলেই ওদের জন্য প্রার্থনা করবেন।
আজ এখানেই শেষ করছি বন্ধুরা। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। সকলে ভাল থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
Facebook
Instagram
YouTube
OR
Set @rme as your proxy
আপু একা একা বন্ধুর বিয়ে খেলেন,আমাদেরকে একটু বললে তো ফুচকা ও মোমো খেয়ে আসা যেত 😉।বৌ এর সাথে আপনার একটা ছবিও দিলেন না।আসলে মাঝে মাঝে একটু বেশিই সাজতে ভালো লাগে।ভালো লাগলো আপু , আপনার পোস্ট পড়ে।ধন্যবাদ
হাহা! এর পরের বার ডাকব।
দিদি, বন্ধুর বিয়েতে জমপেস খাওয়া হলো দেখছি। আপনার মুখে ফিসবলের প্রশংসা শুনেই তো ভীষণ খাওয়ার লোভ হচ্ছে। আর তান্দুরি চা সে তো আমার খুবই প্রিয়। চায়ের কথা বলতেই আমার আবার চায়ের নেশা পেয়ে যায়। যাইহোক বন্ধুর বিয়েতে খুব সুন্দর সেজেগুজে ফটোগ্রাফি করেছেন, পেট ভজন করেছেন আর সেই সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে পোস্ট উপস্থাপন করেছেন, এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
হ্যাঁ ভালোই খাওয়া দাওয়া হয়েছে।
গোটা বারোটা ফিস বলের কথা শুনে তো প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আপু। এরপর যখন সাইজ দেখলাম তখন বুঝতেই পারলাম বেশ ছোট ছোট সাইজ। তাইতো এতগুলো খাওয়া সম্ভব। তবে যাই হোক এই সময় বিয়ের মৌসুম চলছে তাই তো অনেক দাওয়াত পাওয়া যাচ্ছে। আপনি বিয়ের বাড়িতে গিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। আর আপনাকেও দেখতে সুন্দর লাগছে। মৌসুমী এবং সৌভিকের জন্য শুভকামনা রইল। তাদের দাম্পত্য জীবন যেন সুখের হয় এই প্রার্থনাই করি।
হ্যাঁ। সবাই ভাগ করে খেয়ে ছিলাম। ধন্যবাদ বোন।
শীতকাল মানেই চারদিকে বিয়ের আমেজ শুরু হয়ে যায়। বিয়ে মানেই আনন্দ আর বন্ধুর বিয়ে হলে তো কোন কথায় নেই মজা আর মজা তাও আবার ছোটবেলার বন্ধু। অনেক দিন পর বিয়ে বাড়িতে যাওয়া একটু হলেও তো সাজতে হবে খোঁপা বাঁধা সুন্দর হয়েছিল। একবারে ১২ টা ফিস বল খাওয়া বাপরে কম কথা নয়, সাইজে ছোট হোক কিন্তু সংখ্যা টা বেশি ছিল তাই একটু অবাক হয়ে গেছি। 😁বউকে দেখতে খুবই মিষ্টি লাগছে। নবদম্পতির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। সুন্দর মুহুর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ বনু।
হ্যাঁ। অনেকদিন পর বিয়ে বাড়ি পেলাম। আবার জানুয়ারি তে।
সবাই মিলে খুব সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আসলে বিয়ের মুহূর্তগুলো খুবই আনন্দের হয়। সকলের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে সময় কাটানো হয়। বিয়ে বাড়িতে সবার সাথে খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন এবং তার কিছু মুহূর্ত আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন । দেখে সত্যি খুব ভালো লাগলো। এত চমৎকার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
হ্যাঁ দাদা। ভালোই আনন্দ হয়েছে