তারিখ-২৫.০৯.২০২২
নমস্কার বন্ধুরা,
ঈশ্বরের আশীর্বাদে আশা করি সকলে ভালো আছেন।আজ একটু অন্যরকম পরিবেশন নিয়ে এলাম।আজ আপনাদের সত্যি ঘটনার অনুকরণে একটা গল্প বলতে এলাম।ঘটনাটি আমার মামাবাড়ির(আসাম-ভারতের উত্তর-পূর্ব দিকের একটি রাজ্য) ওখানে থাকা এক বৌদির থেকে শোনা। সেই বৌদির বাপের বাড়ি মেঘালয়ে।বৌদি আর দাদা একে অপর কে ভালোবেসে বিয়ে করে চলে এসেছিলো আসামে। বৌদির পড়াশোনা মেঘালয়ে একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে। একটু খোঁজ নিলে জানতে পারবেন যে মেঘালয়ের বেশীরভাগ স্কুলই ইংরেজি মিডিয়াম মিশনারী স্কুল এবং পাহাড়ের কোলে হওয়ায় যাতায়াত ব্যাবস্থা অত ভালো না। আর এই কারণেই যদি কোন বাচ্চার বাড়ি স্কুল থেকে ২-৩ কিলোমিটার দূরে হত তবে সে স্কুলের হোস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করত।
Image Source
সম্পর্কে চেরী বৌদি আমার চেয়ে বড় হলেও বয়সে আমার থেকে অনেকটাই ছোট। এক কথায় বলতে গেলে দাদার সাথে বয়সের বিস্তর ফারাক। কিন্তু ওই যাকে বলে 'প্রেম অন্ধ'। আজ যে ঘটনা বলব সেই ঘটনা বৌদির স্কুলের।বৌদি শুরুতে নিজের বাড়ির কাছাকাছি একটি স্কুলে পড়াশোনা করলেও,নবম শ্রেণীতে তাকে বাড়ি থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে একটা স্কুলে গিয়ে ভর্তি হতে হয়েছিল। কারণ বাড়ির সামনের স্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হত।
প্রথমদিন নতুন স্কুলে গিয়ে বৌদির এক বান্ধবী হয়েছিলো মিকাই নামের।কারণ আর কিছুই না চেরী বৌদি আর মিকাই একই ডরমেটরিতে থাকত আর মিকাইয়ের বেড ঠিক চেরী বৌদির নীচেই ছিলো।সেই ডরমেটরিতে এক ঘরে মোট ৯ জন থাকতে পারত। আর ডরমেটরির ঘরগুলো ছিলো একদম পর পর লাইন দিয়ে। আর প্রতিটা ঘরের মাঝে একটা করে দরজা থাকায় প্রথম ঘর থেকে শেষ ঘর দেখা যেতো এবং ইন্টারকানেক্টেড ছিলো।
প্রথমদিন স্কুলে যাওয়ার পর চেরী বৌদির মন বেশ খারাপ ছিলো।তাই দেখে মিকাই, বৌদি কে বলল, "চেরী মন খারাপ করিস না। এই স্কুলে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবি।" বলে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে জানলার দিকে তাকিয়ে একটু ভয় আর আশঙ্কা মেশানো চাপা গলায় বলল, "যদি সার্ভাইব করে যেতে পারিস তো।"
এখানে বলে রাখি মিকাই কিন্তু শুরু থেকেই এই স্কুলে পড়ে কারণ মিকাইয়ের বাড়ি ছিলো অরুনাচল প্রদেশে। মিকাইয়ের এই অন্য মনস্ক হয়ে বলা শেষ কথাগুলো বৌদি অতটা খেয়াল করল না। খেয়াল করল না বললে ভুল বলা হবে। বলতে পারেন জাস্ট পাত্তা দিলো না।
প্রথমদিনই মিকাই এতটা পরোপকারী দেখে বৌদির ওকে খুব ভালো লাগলো। এই যেমন বৌদির ওয়াড্রব গুছিয়ে দেওয়া,স্কুলে প্রেয়ার রুম, টিচার্স রুম,করিডোর, ফাংশন হল, ক্যান্টিন সবটাই মিকাই নিজে থেকেই দায়িত্ব নিয়ে বৌদি কে চিনিয়ে দিলো।
Image Source
ধীরে ধীরে চেরী বৌদি পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিলো। আরো কিছু বন্ধু ও বান্ধবী হল বৌদির তবে মিকাই ছিলো সব থেকে কাছের।একদিন চেরী আর মিকাই ক্যান্টিন থেকে লাঞ্চ করে ফাংশন হলে গিয়ে একটু বসলো দুজনে একাকী। সামনেই প্রিলিমিনারি টেস্ট সেসব নিয়ে আলোচনা চলছিলো। চেরী বলল, "আমার এবার এক্সাম কি আদেও ভালো হবে ? সব পরীক্ষা ভালো হলেও কেমিস্ট্রি পেপার ভালো যাবে না মনে হয়।" উত্তরে মিকাই বলল, "আমার তো মনে হয় কোনটাই ভালো হবে না।"
এই বলে ওরা নিজেরাই হাসাহাসি করছিলো, হঠাৎ করেই হলের পাশেই যে দরজাটা আছে তার ওপার থেকে বেশ জোড়েই একটা আওয়াজ হল।ঠিক কেউ জোড়ে ভাড়ি আসবাবপত্র সড়ালে যেমন আওয়াজ হয়।
চেরী বৌদি বলল, "আয় তো মিকাই দেখি কিসের শব্দ!"
মিকাই বিদ্যুৎ ঝটকায় উঠে দাঁড়িয়ে বলল, "না আমি তো যাবই না। তুইও যাবি না। ওটা স্টোর রুম। ওখানে যাওয়া নিষেধ। প্রিন্সিপাল জানতে পারলে আমাদের বোকবেন।হয়তো কোন আসবাবপত্র পড়ে গেছে। তাই আওয়াজ হল। এক্ষুনি চল এখান থেকে। "
মিকাই কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলল এবং এক ঝটকায় চেরী কে নিয়ে বেড়িয়ে এলো ঘর থেকে।
চেরী দেখলো মিকাইয়ের চোখে মুখে ভয়ের ছাপ।যেনো ও অনেক কিছু জানে কিন্তু লুকিয়ে যাচ্ছে।
ওই মূহুর্তে চেরী আর জোড় করল না মিকাই কে। চুপচাপ ক্লাসে চলে গেলো ওরা।
আজ এখানেই শেষ করলাম বন্ধুরা, কাল আবার পরের অংশটুকু নিয়ে আসব।সঙ্গে থাকবেন। টান টান উত্তেজনা আসছে।
(চলবে)
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
ইস আপু কোথায় এসে শেষ করলেন গল্পটা আর একটু লিখতেন ভালোই লাগছিল ।মিকাই প্রথমে যদি চেরিকে বলে দিত তাহলে তো আমরাও একটু জানতে পারতাম, মনে হচ্ছে ভৌতিক কোন কাহিনী আছে এখানে। আর প্রথম দিন থেকেই মিকাই চেরির অনেক ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছে এরকম একটা বন্ধু থাকলে আসলে ভালই হয়। খুব ভালো লাগলো আপু গল্পটি।পরবর্তী পর্ব চাই দ্রুত।
হা হা এটা কিন্তু সত্যি ঘটনা অবলম্বনে।।ধন্যবাদ আপনাকে। এই গল্প আপনার মনে ছাপ রাখতে পেরেছে সেটা অনেক বড় পাওনা আমার কাছে।
বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে, স্কুলে হয়তো কোনো ভৌতিক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হব আমরা আপনার এই গল্পের মাধ্যমে, অপেক্ষায় থাকলাম এর পরবর্তী পর্বের জন্য।
কাল আসবে। 😃বেশী লেট করলে পাঠকের ইন্টারেস্ট নষ্ট হয়ে যায়। এটা কিন্তু সত্যি ঘটনা অবলম্বনে।
গল্পে টুইস্ট রেখে দিলেন দিদি। আমার তো জানতে ইচ্ছে করছে কি হয়েছিল স্টোর রুমে? কেনইবা মিকাই চেরিকে দেখতে মানা করলো? পরের পর্বের অপেক্ষায় দিদি।
আজ রাতে আসবে।
বাহ খুব চমৎকার গল্প লিখেছেন। মিশনারী স্কুলের রহস্য প্রথম পর্ব গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। পরবর্তী গল্পের জন্য অপেক্ষা রইলাম। এত চমৎকার গল্প শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
আজ আসবে। চোখ রাখুন। রাতে আপলোড করব।