জেনারেল রাইটিং :-জীবনের গল্প
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি।
জেনারেল রাইটিং :-জীবনের গল্প
বরাবরের মতো আজও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে আজ এসেছি একটি জীবনের গল্প নিয়ে। সত্যি বলতে মানুষের জীবনের কতোই না গল্প থাকে যা কখনো লিখে প্রকাশ করা যায় না। তবে এমন কিছু গল্প থাকে যা লিখলে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আসলে কিছু কিছু কথা এখনো মনে পড়লে অনেক হাসি পায়। তবে আমার বাংলা ব্লগ এমন একটা জায়গা যেখানে আমরা শুধু জীবনের কেন আরো অনেক কিছুই মন খোলে শেয়ার করতে পারি।সত্যিই তো এমন অনেক গল্প আছে যা কখনো বলা হয় না। তবে আমার বাংলা ব্লগ এমন জায়গা যেখানে না বলা কথা প্রকাশ করা যায়।তাহলে চলুন শুরু করি আজকের পোস্ট ।
যাইহোক ঘটনাটি হলো আমার বিয়ের সময়ের। আসলে আমি যখন অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি তখন আমার বিয়ে হয়েছিল। আসলে আমার বিয়ে ঠিক হবার প্রায় দের দুই মাস পরে আমার বিয়ে হয়। তবে এখানে অনেক বড় একটা মজার ঘটনা ছিল। আমার বড় ভাসুর ও দেবর আমাকে দেখে গেল। তারপর তারা আমাকে পছন্দ করে আমাদের বাড়ির লোকজন কে তাদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বললো।আমাদের বাড়ির লোকজন ঠিক ছেলের বাড়িতে গেল।সেখানে গিয়ে আমার বড় ভাই আরো অনেক লোকজন ছিল তারা সবাই মিলে আমাদের বিয়ে ঠিক করে ফেলল।
কিন্তু আমার হাজবেন্ড এর সাথে কোন দেখা হলো না।যেহেতু বিয়ে একেবারে পাকা সেখানে আর কি বলা যায়। তবে আমার বড় জা তাদের বাসায় আমাকে কয়েক বার যেতে বলেছে। তবে আমি ও যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমার বড় ভাই নিষেধ করাতে আর যাওয়া হয়নি। তার কয়েক দিন পরে যখন আমি কলেজে গিয়েছিলাম তখন আমার হাসবেন্ডকে আমি ফোন দিয়ে দেখা করতে বললাম।সে একটা কাজে ঢাকা গিয়েছিল। যাইহোক আমাদের দুজনের মধ্যে আর দেখা হলো না।এভাবেই প্রায় এক মাস চলে গেল। আর মাত্র পনেরো দিন বাকি। আমি যখন আমার বান্ধবীদের বিয়েতে দাওয়াত দিতে ফোন করলাম। তখন আমার এক প্রিয় বান্ধবী আমাকে আমার হাজবেন্ড সম্পর্কে সকল কিছু জানলো। আমি যখন আমার হাসবেন্ডের নাম বললাম তখনই ও সবাইকে চিনলো।তবে আমাকে কিছুই বললো না।আমাকে বললো তুই তোর বরকে দেখেছিস আমি বললাম না।তখন আমার বান্ধবী বললো তুই এতো বোকা কেন। বর্তমান যুগের মেয়ে হয়ে কেউ না দেখে বিয়ে করে নাকি।আমার মন হয় তোর ছেলেটাকে দেখা উচিত। তখন আমি বললাম আমি দেখেই এখন আর কিরব, এখন আর কিছু করার সময় নেই।আমার বান্ধবী বললো তোকে আবার বলি তুই ছেলেকে দেখে বিয়ে কর।আমি বান্ধবীর কাছ থেকে আমার হাজবেন্ড সম্পর্কে জেনে সত্যি মূহুর্তে মনটা খারাপ হয়ে গেল।
তারপর আমি আমার বোনকে ঘটনা বললাম তখন আমার বোন আমার ভাইকে বললো।আমার ভাই শোনা মাত্র রাগ করলো।যাইহোক যথারীতি আমাদের বিয়ে হয়ে গেল। তবে আমার ইচ্ছে ছিল আমি আগে আমার হাজবেন্ড কে দেখব কিন্তু অনেক লোকের ভীরে আর তার দিকে তাকানো হয় নাই।তারপর চলে আসলাম শশুর বাড়িতে, সেখানে এসে আরো মহাবিপদ কাউকে চিনি না। তারপর আমাকে বসিয়ে রাখল, আর লোকজন এসে আমাকে দেখতে থাকলো। সত্যি আমার কাছে মনে হচ্ছিল আমি একাই সব কিছু খুঁজে নিই কিন্তু তা তখন আর সম্ভব হলো না। সবাই চলে যাবার পরে আমাকে আমার রুমে নিয়ে যাওয়া হলো।সেখানে কেউ ছিল না, আমাকে নেওয়া মাত্র লোকের অভাব নেই। তারপর জা সবাইকে রুম থেকে বের করে দিল। তারপর জা একটা মজার ঘটনা ঘটালো।তখন বাইরে সবাই নাচ গানে ব্যস্ত ছিল। আমি একাই রুমে বসে আছি। ইতিমধ্যে দুজন একই বয়সের একই ড্রেস পড়া ঘরে প্রবেশ করল।আমি দুজনের দিকে তাকালাম। তখন আমার বড় জা এসে বললো বলতো কোনটা তোমার হ্যাসবেন্ড। সত্যি বলতে আমি যদিও আমার হাজবেন্ডকে দেখি নাই তবে আলাদা করে চেনা কঠিন ব্যাপার ছিল। আসলে আমার হ্যাসবেন্ড এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল সাথে । তারপরে দুজনে একই শার্ট পড়া আবার হাতে মেহেদী পড়া বুঝা কঠিন ছিল। আমার জা বললো তুমি চিনতে পারলে তোমার জন্য পুরষ্কার আছে। সত্যি বলতে আমি তার ছবি অনেক আগেই দেখেছি সেটা আমার জা জানতো না। তারপর আমি বলে দিলাম তখন আমার জা আমাকে একটা থ্রি পিস দিল।সত্যি সেই ঘটনা অনেক মজার ছিল। তারপর আমার বন্ধীর কথা বললাম , তখন আমার হ্যাসবেন্ড বললো তোমার বান্ধবীর বোনের সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু আমি বিয়ে করিনি, আমি বললাম কেন তখন বললো ওরা বলেছিল মেয়ে অনার্সে পড়ে কিন্তু পড়ে শোনতে পেলাম ড্রিগিতে পড়ে, শুরুতেই যেখানে মিথ্যা বলা তারজন্য । তাই আমাদের সবারই উচিত গার্ডিয়ানরা যা করে ভালোর জন্যই করে। আশা করি গল্পটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে ।
প্রয়োজনীয় | তথ্য |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @parul19 |
ডিভাইস | redmi note 12 |
লোকেসন | ফরিদ পুর |
আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।
সত্যি বলতে মিথ্যা দিয়ে তৈরি কোন ভিত্তিই মজবুত হয় না। আপনি কিন্তু দারুন একটি বাস্তব গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সত্যি বলতে মিথ্যার কোন সম্পর্কে না জড়ানোই ভালো। সত্যের মধ্যে থাকলে জীবন হয় সুন্দর এবং সাবলীল। দারুন লেগেছে আপনার গল্পটি।
ধন্যবাদ আপু
এরকম বিয়ে অনেক আগে হতো। আর বর্তমান সময়ে ছেলে-মেয়ে একে অপরকে না দেখে কখনো বিয়ের সম্পর্কে এগোই না। যাইহোক আপনার বিয়ের গল্প পড়ে ভাল লেগেছে। আমার কাছে বিশেষ করে যখন আপনার হাসবেন্ড এবং হাজবেন্ডের বেস্ট ফ্রেন্ড একই ড্রেস পড়ে এসে আপনার সামনে হাজির ছবির স্মৃতি মনে রেখে চিনতে পেরেছেন । সর্বশেষ পুরস্কার পেয়ে গেলেন। আর বিয়ে সম্পর্কে একটি কথা বলি মেয়ে হোক বা ছেলে হোক সবারই একটা ইচ্ছা এবং পছন্দের বিষয়ে অধিকার আছে সেই জায়গায় কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। যেটা বর্তমান যুগে যথাযথ গুরুত্ব দেয়।
সাবলীল মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপু আপনার জীবনের গল্পে আপনার বিয়ের ঘটনাটি জানতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে। আমি তো আপনার পোস্ট পড়তে গিয়ে প্রথমে ভেবেই নিয়েছিলাম আপনার হাজবেন্ডের কোন সমস্যা আছে, কিন্তু না পোস্ট পড়তে পড়তে আমার ধারণা ভুলে প্রমাণিত হলো। আপনার বান্ধবী আপনাকে ভুল বুঝিয়েছিল, যাইহোক পরিশেষে সবকিছু ভালই ভালই মিটে গেছে এবং আপনি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পেরেছেন এটাই বড় কথা। আর হ্যাঁ আপু মিথ্যে দিয়ে কখনো জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করা যায় না। আপু আপনার বিয়ের মজার ঘটনাটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
দোয়া করবেন ভাইয়া বাকি জীবন যেন এভাবেই থাকতে পারি,ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপু আপনার জীবনের গল্পটি পড়লাম।খুব ভালোই লাগলো।একটু টেনশনে ছিলাম যেহেতু ভাইয়াকে আগে দেখেন নি তাই কি হয়।পরে তো জানলাম ছবিতে দেখেছিলেন।যাক গিফট হিসেবে থ্রিপিস ও পেলেন।ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো, ধন্যবাদ আপু।
আপনার জীবনের গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। বাস্তব গল্পটি পড়ে নিজের কাছে খুবই অন্যরকম লাগছে। আপনার বিয়ের ঘটনাটি বেশ দুর্দান্ত হয়েছে আপনি গিফট পেয়েছেন। এতো দুর্দান্ত জীবনে গল্পের অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
আপনার বিয়ের গল্পটা খুবই মজার ছিল আপু। আপনি ঠিক বলছেন প্রতিটি মানুষের উচিত আসলে গার্ডিয়ানের মতামতের উপর ভিত্তি করে বিয়ে করা। কারণ গার্ডিয়ানরা কখনো ভুল করে না সব সময় ভালোর জন্যই করে। তবে নিজেরা যে সিদ্ধান্ত গুলো নিয়ে থাকেন সেগুলোর মধ্যে অনেক ধরনের ভুল হয়ে থাকে। আপনার গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে অনেক মজা পেয়েছি। আসলে এমন ধরনের বিয়ে গুলো খুব সুখী হয় এবং খুবই এনজয় করা যায়।
ধন্যবাদ আপু পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য
আপনার জীবনের গল্পটি সত্যি ভীষণ ভালো লাগলো।সত্যি তো আপু ছেলে না দেখেই বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন। ভালো হয়েছে জন্য এখন কিছু মনে হচ্ছে না কিন্তুু যদি সত্যি পছন্দ না হতো তাহলে তো সারাজীবনের কান্না হয়ে যেত।তবে সৃষ্টিকর্তা সহায় ছিলো জন্য সব টা ভালোই হয়েছে।আপনার জা দুজন বরকে আপনার সামনে এনে বেশ ভালোই মজা করেছেন ভালো লাগলো হাসির ঘটনাটা। আপনার বান্ধবীর বোনকে বিয়ে করেনি জন্য এসব বলেছিলো আপনার বান্ধবী। ধন্যবাদ আপু খুব সুন্দর করে আপনার বিয়ের ঘটনাটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
জি আপু অনেক মজা হয়েছিল,ধন্যবাদ আপু।
অনেক সময় ছোটখাটো মিথ্যার জন্যও বিয়ে ভেঙ্গে যায়। তবে মিথ্যা দিয়ে শুরু করা কোনো কিছুর ফলাফল ভালো হয় না। তারা কিন্তু চাইলেই বলতে পারতো ডিগ্রিতে পড়ে। এক হিসেবে এটা আহামরি কিছুই না। যাইহোক সেই বিয়ে না ভাঙ্গলে তো আপনার সাথে বিয়ে হতো না। কিন্তু সরাসরি না দেখে বিয়ে করাটা আসলেই অন্য রকম। তবে পরিবার সবসময় আমাদের মঙ্গলের জন্যই সবকিছু করে থাকে। আপনার জা এর কাছ থেকে থ্রি পিস পুরষ্কার পাওয়ার ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং ছিলো। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।