জীবন পরিবর্তনশীল
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি আমরা আজকের পোস্ট।
জীবন পরিবর্তনশীল
বরাবরের মতো আজ ও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে আজ এসেছি বাস্তব সত্যি একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে আমাদের কার ভাগ্য কখন পরিবর্তন হয় বুঝা মুশকিল। গতকাল অনেক বছর মানে এক যুগ পরে আমার এক বড় ভাইয়ের সাথে দেখা হয়েছিল। আসলে বড় ভাই মানে স্কুলে দুই ক্লাস ওপরে পড়তো। আমরা আবার এক জায়গায় প্রাইভেট পড়তাম। ভাইয়ের নাম ছিল অচিন্ত কুমার শাহা।আসলে অচিন্ত ভাইয়ের বাাবা সেই ছোট বেলায় মারা গেছে। উনারা ছিল দুই ভাইবোন। আমরা যখন ক্লাস এইটে পড়ি উনি তখন ক্লাস টেনে পড়ে। তখন থেকে আমার সাথে বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। হঠাৎ করেই যখন ভাইয়ের সাথে দেখা হয়ে গেল তার সাথে অনেক কথা হলো। আসলে তাকে দেখে সেই পুরনো দিনের কথা অনেক মনে পড়ে গেল।আগে কেমন ছিল আর এখন কেমন। সত্যি এটা পরিবর্তন দেখে অনেক ভালো লাগল।
আসলে তার বাবা মারা যাবার পরে তাকে তার মা মানুষের বাড়ি থেকে চেয়ে পড়ালেখার খাতা কলম কিনে দিত।আর আমরা যেখানে প্রাইভেট পড়তাম সেই স্যার অচিন্ত ভাইকে ফ্রি পড়ায় তো। তবে অচিন্ত অনেক মেথাবী ছিল। সে সাইন্স এর স্টুডেন্ট ছিল। তার অনেক খরচ আমাদের প্রাইভেট টিচার দিত। আর বলতো তুই একদিন অনেক বড় হবি।তারপর অচিন্ত ভাইয়ের বোন ও কিছু খরচ দিত।আবার তার মা মানুষের কাছ থেকে টাকা জোগাড় করতো ছেলের জন্য। এভাবে তাদের গ্রামের সবাই মিলে তাকে অনেক সাহায্য করত।সবাই যতই সাহায্য করুক না কেনো মূলত অচিন্ত ভাইয়ের অবদান সবচেয়ে বেশি ছিল। আসলে টাকা থাকলে সবাই ভালো ছাত্র হতে পারে না।কিছু কিছু মেথা আল্লাহর তরফ থেকে দেওয়া। এভাবে অচিন্ত ভাইয়া এইচ এসসি পাশ করলো গোল্ডেন পেয়ে।
তবে যখন মেডিকেলে চান্স পেল।তারপর থেকে ভাইয়ের সাথে আমার আর কোন যোগাযোগ ছিল। আর হঠাৎ করে মার্কেটের ভিতর যখন তাকে দেখলাম, প্রথমে আমি অনেক সময় চেয়েছিলাম তার দিকে। ভাইয়ের সাথে ছিল তার ওয়াইফ আর একটা ছোট বাচ্চা । আসলে তাদের দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। তারপর সামনে এগিয়ে গিয়ে কথা বললাম।আমি তো বোরকা পড়া ছিলাম তাই আমাকে প্রথমে চিন্তে পাড়েনি। পরে অনেক কথা জানতে পারলাম। তারপর আমার মেয়েদের আইসক্রিম কিনে দিল। আমাকেও কিছু খেতে বললো কিন্তু আমি খায়নি।
আসলে অচিন্ত ভাইকে দেখার পরে শুধু ভাবতে লাগল। মানুষ এতোটা পরিবর্রতনশীল তা ভাবতে পারিনা।যদিও জানি মানুষ পরিবর্তনশীল কিন্তু অচিন্ত ভাইয়ের ক্ষেতে তা সম্পূর্ণ বিপরীত। আজ সে এমবিবিএস মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। আজ তার গাড়ি বাড়ি সব আছে। সত্যি তার এমন পরিবর্তন দেখে অনেক ভালো লাগলো।সত্যি মন থেকে চায়লে সব হয়। আশাকরি আপনাদের কাছে ও ভালো লাগবে।
আজ এই পর্যন্তই। গল্পটি ভালো লাগলে আবার আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্মনিয়ে নিজেকে ধন্যমনে করি।ধন্যবাদ বাংলা ব্লগে এই বাংলা সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
মানুষের জীবন পরিবর্তনশীল। কখন যে কার জীবনে কি ঘটে যায় সেগুলো একমাত্র উপরওয়ালাই জানেন। অচিন্ত্ ভাইয়ের কাহিনী গুলো আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করলে অনেক ভালো লেগেছে। তবে কষ্ট করেছেন বলে আজ খুব সুন্দর একটি জীবন পেয়েছেন। অনেকদিন পরে দেখা হলো আপনার সাথে কথা হল। বেশ ভালই লাগলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য বিষয়টি।
সত্যি অনেক ভালো লেগেছিল আপু তার সাথে কথা বলে, ধন্যবাদ আপু পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে আপু মানুষ পরিবর্তনশীল আর কোন কোন পরিবর্তন দেখলে অনেক ভালো লাগে।জেনে খুব ভালো লগলো যে ছেলেটিকে একদিন চেয়ে,চিন্তে পড়াশোনার খরচ চালিয়েছে সে আজ প্রতিষ্ঠিত।এমন অনেক আছে আমাদের চারপাশে। ওনার মায়ের কষ্ট সার্থক এবং ওনার কষ্ট ও সার্থক।ভালো থাকুক পৃথিবীতে জিবন যুদ্ধে হেরে না যাওয়া প্রতিটি মানুষ।
ধন্যবাদ আপু পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আপনার কথায় আমি একদম একমত জীবন পরিবর্তনশীল। আসলে মানুষের জীবনে কখন যে কি ঘটবে কখন কি হবে কেউ তা বলতে পারে না। আসলে আপু আমি মনে করি প্রতিটা মানুষের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে কষ্ট করতে হয় কষ্ট করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
সত্যি ভাইয়া প্রশংসনীয় মন্তব্যের জন্য