জেনারেল রাইটিং: শৈশবে সাঁতার শিখার অভিজ্ঞতা

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago

আসসালামু আলাইকুম

আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি।

শৈশবে সাঁতার শেখার অভিজ্ঞতা

people-2604217_1280.jpg

source

বরাবরের মতো আজ ও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে শৈশব জীবন সবারই অনেক মধুর হয়। আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি তখনকার ঘটনা। আসলে সাঁতার শিক্ষা আমাদের সবারই জন্য জরুরি। কিন্তু এখনকার বাচ্চারা সাঁতার শেখেনা বলেই চলে।যাইহোক আমাদের বাড়ির পাশে নদী ছিল না, ছিল পুকুর। আমাদের বাড়ির সবাই পুকুরে গিয়ে গোসল করতো। কিন্তু আমি ও আমার ছোট ভাই কখনো পুকুরে গোসল করতে যেতাম না। তাই বাবা বলতো তোমরা সাঁতার শিখতে পারবে না। তখন আমি বললাম না আমি পাড়ব। তারপর আমাদের পরিক্ষা শেষ হলেই আমারা চলে গেলাম নানু বাড়িতে। আসলে আমার নানু বাড়ির পাশেই রয়েছে নদী।


আমার সমবয়সী আমার আরো মামাতো ভাই বোন রয়েছে।ওরা আবার নদীতে ভালো সাঁতার কেটে গোসল করে । আমি ওদের বলছি, এবার কয়েকদিন থাকবো তোমাদের সাথে সাঁতার শিখব। তাই প্রতিদিন ওদের সাথে নদীতে গোসল করতে যেতাম।আমার মা আমাদের সাথে গিয়েছিল দুদিন পরে আমাকে রেখে ভাইকে নিয়ে চলে এসেছে।আমি প্রতি দিন আমার মামাতো ভাই বোনদের সাথে নদীতে সাঁতার শিখতে যেতাম।প্রথম দিকে আমার মামা আমাকে নদীতে দাঁড়িয়ে থেকে সাঁতার শিখাতো। কিন্তু দুই দিন যাবার পরে আমি ওদের সাথে একাই যেতাম।তবে সাঁতার শিখতে ওরা ও আমাকে সাহায্য করত।কয়েক দিন শিক্ষার পরে আমি সাঁতার শিখে গেলাম। আমার মামাতো বোনের নাম নিশি আমরা সব সময় এক সাথে থাকি। একদিন মামা হাঁট থেকে কিছু কটকুটি নিয়ে আসল।


প্রতি দিন নিজের মতো করে সাঁতার থাকতে লাগলাম। নিশি আর আমার মধ্যে কটকটি নিয়ে বেশ ঝামেলা বাঁধল। তাই রাগ করে নিশির সাথে গোসল করতে যায়নি।অবশ্যই দুজন এক সাথেই গিয়েছি। তারপর বেশ কিছু সময় গোসল করার পরে নিশি চলে আসবে আমি ও আসব তাই আর একটু সাঁতার দিলাম। আসলে নদীতে অনেক স্রোত ছিল তবে পানি বেশি ছিল না। আমি সাঁতার দেবার সাথে সাথে স্রোতে আমাকে নিয়ে যাচ্ছিল আমি আর সামনের দিকে এগিয়ে আসতে পারছিলাম না। এদিকে নিশি বাড়িতে চলে আসলো। আসলে নিশি ও টের পায়নি যে স্রোতে আমি চলে গেছি।আমি হাজার চেষ্টা করে ও আর এগুতে পারছিলাম না। শুধু স্রোতের সাথে ভেসে যেতে লাগলাম। আমি ভয়তে শেষ হয়ে গিয়েছিলাম। এভাবে যেতে যেতে এক নদীর ঘাট থেকে অন্য নদীর ঘাটে চলে গিয়েছে। সেই নদীর ঘাটে অনেক লোকজন গোসল করছে, সেখানে একজন আমাকে তারা তুলে ওপরে উঠালো।আর আমি ওপরে উঠার সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে গেলাম।এদিকে নিশি অনেক আগে চলে যাওয়ার পর আমাকে আর দেখেনি।তারপর মামা বাড়ির সবাই আমাকে খুঁজতে লাগলো।


তারপর উনারা আমাকে তুলে পেট থেকে পানি বের করে সুস্থ করে তুলল। আমি একটু সুস্থ হওয়ার পরে আমার মামাদের নাম বললাম। তখন উনারা আমাকে আমার মামা বাড়িতে দিয়ে গেল। সত্যি শৈশবের এ স্মৃতি গুলো সব সময় মনে পড়লে হাসি পায়।আসলে শৈশবের স্মৃতিগুলো সব সময় মধুর হয় । যাইহোক অবশেষে সাঁতার তো শিখতে পেরেছি। আশা করি আমার পোস্ট আপনাদের ভালো লাগবে
প্রয়োজনীয়তথ্য
ফটোগ্রাফার@parul19
ডিভাইসredmi note 12
লোকেসনফরিদ পুর

আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

HFcFmHBiAeR2oP8xXotf9GhVZ2UVLfizAkm26SLD9Ksq63dTYvrrycGbUPAEdikxGD2cqVMH8heE8DJW36AaZjZ4fD6Yt6w5ks6jyrVJqR...SPKhpaGF3R77N6UCcw6tHuYvyw7YjLACEvtraNkFm1AbXaoof2ZWppk6CphcwuiCL9iHDNMmYZX8Bq4y4gXniUDWXhBKVWevHte3V4qsJQhXhen8d6ttKVvadL.png

আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde1F6oRaKDis6eFNTqaET8soo8NYdtJXnEayXsg3Fx95TFkgLt1et4cn3GmnVY...ntgU63DpkYkb8a3HFVcmr9kVKAUK7GZN8yEenN3RPoyt3RkugeSBeesWqLh65DeovRdHCzQgvqVNscRmK7JWHUg3a1MT1UCEnDHbAXHQJwY5ncdm8YmiPkmd4R.gif

52k6mffrchQhs3Ssm9CLhkXcA8J5RhCbAhzzMtY9rBYwuor5owTWfK3hsfRcZnYb7wrEhskd2s8HBHr4RhMM9omL4rxSgvTJqwSSnNUzvj...be9rb7FDWzxUHqitBaapJsRqCRjhnVAThRvqhZUGBCJvV4KwGya5FG9QBW4wYrve2oc9ZtfxPSURk6a8Q2ZazNPCEtExJfp3Mm5t568RwbAgAuyAsXhtL75JLN.png

Sort:  
 9 months ago 

সাঁতার শেখার ভয়ংকর অভিজ্ঞতা আপু।আপনার হাসি পাচ্ছে কিন্তুু আমি ভয়ে কুঁকড়ে গেছি আপনার পোস্ট পড়ে।অনেক বড়ো ধরনের কিছু হয়ে যেতে পারতো।আসলে সাঁতার শেখার আনন্দে আপনি সব ভয়কে ভুলে গেছেন। ও ভয়কে জয় করতে পেরেছেন এটাই সার্থকতা। ধন্যবাদ

 9 months ago 

আসলে আপু ছোটবেলা তো বুঝতাম না যে বড় ধরনের বিপদ হতে পারত, শুধু ইচ্ছে ছিল সাঁতার শিখার। ধন্যবাদ আপু।

 9 months ago 

আপনার শৈশবের সাঁতার শেখার গল্পটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো সেই সাথে অনেকটা এক্সাইটেড কাজ করছিল যে যখন পানির স্রোত আপনাকে নিয়ে যাচ্ছিল তখন আপনি কিভাবে ছিলেন। মামাতো বোনদের সঙ্গে ঝগড়া করার পরেই হয়তো বা আপনার এরকম একটা সমস্যা হয়েছিল যার কারণে সে আপনাকে রেখেই চলে এসেছিল। যাই হোক শেষমেষ সাঁতার শিখতে গিয়ে মৃত্যু অবধি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। অবশ্যই আমাদেরকে সচেতন হওয়া উচিত, সুন্দর এই পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

আসলে ভাইয়া তখন মৃত্যুর কথা মনে ছিল না, শুধু সাঁতার শিখতে হবে এটাই ইচ্ছে ছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 9 months ago 

আপু আপনার মামা বাড়ি গিয়ে শৈশবে সাঁতার শেখার সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। আপনি আপনার মামার কাছ থেকে প্রথমে সাঁতার শিখেছেন পরে নিজে চেষ্টা করেছেন জেনে ভালো লাগলো। তবে আপনি আপনার মামাতো বোন নিশির সঙ্গে ঝগড়া করে দুজন আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন পরে নদীর স্রোতে আপনি অন্য ঘাটে চলে গিয়েছিলেন জেনে আমি তো একটু ভয় পেয়ে গেলাম। যদিও ওনারা আপনাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে জেনে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু।

 9 months ago 

আসলে আপু তখন তো আর এমন বুঝতাম না, তখন শুধু ইচ্ছে ছিল সাঁতার শিখার। ধন্যবাদ আপু।

 9 months ago 

আপনার আজকের স্মৃতিচারণ পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো, তবে এটা মারাত্মক একটা ঘটনা ছিল। নদীতে এভাবে বাচ্চাদের গোসল করা একদমই নিরাপদ নয়। যাইহোক আপনার কোন বড় ধরনের বিপদ ঘটেনি এটাই বড় বিষয়।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

জি ভাইয়া ঘটনা মারাত্মক ছিল তবে প্রতি দিন গোসল করে চলে আসতাম, তাই উনারা কিছু বলতো না।ধন্যবাদ ভাইয়া।

 9 months ago 

আমি তো শৈশব জীবনে অনেক চেষ্টা করেছি সাঁতার শেখার। কখনোই পারি নাই।অনেক এ বলতো যে পিঁপড়া খেলে সাঁতার শেখা যায়।আমার নানার বাসার পাশে পুকুর ছিল অনেক চেষ্টা করতাম তাও পারতাম না কিন্তু ধারে ধারে গোসল করতাম। বেশ ভালই লাগতো। পুকুরের মাঝখানে যেতে ভয় লাগতো প্রচুর। আপনারও দেখছি আমার মতই অবস্থা। জি সাঁতার শিখা আমাদের জন্য খুবই জরুরী কারণ কখন বিপদে আসে বলা যায় না। তাই প্রতিটা মানুষের জন্য সাঁতার শেখা জরুরী।অনেক দুঃখজনক যে আপনি এক নদীর ঘাট থেকে অন্য নদীর ঘাটে চলে গিয়েছেন।যায় হোক সৃষ্টিকর্তা আপনাকে রক্ষা করেছে । ভালো যে নদীর ঘাটে লোকজন ছিল। আপনি অজ্ঞান হয়ে গেছেন এবং তারা আপনাকে তুলে পেট থেকে পানি বের করল। সৃষ্টিকর্তার প্রতি হাজার শুকরিয়া আপনাকে রক্ষা করছে এই বিপদ থেকে।আপনার শৈশবের অভিজ্ঞতাটি শুনে অনেক কষ্ট পেলাম যাই হোক। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল

 9 months ago 

আসলে ভাইয়া বিপদ কখনো বলে কয়ে আসে না,তখন শুধু ইচ্ছে ছিল সাঁতার শেখার তাই আরকি।ধন্যবাদ আপনাকে।

 9 months ago 

আসলে যারা সাঁতার কাটতে পারেনা তাদের জন্য নদীতে এবং পুকুরে গোসল করতে অনেক কষ্ট হয়। তবে আপনি ছোটকালের নানার বাড়িতে গিয়ে সাঁতার শিখতে গিয়ে বড়ই বিপদে পড়েছেন। মামাতো বোন নিশি হয়তো আপনাকে খেয়াল করে নাই যে আপনি পানির শুতে ভেসে গেলেন। ভাগ্য ভালো অন্য ঘাটে মানুষগুলো গোসল করতেছে এই কারণে তারা দেখে আপনাকে বাঁচিয়েছে। এরকম হলে নদীর স্রোতে অনেক সময় মানুষ মারা যায়। যাইহোক ছোটকালের সাঁতার শিখার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।

 9 months ago 

আসলে আপু এখন বুঝি এমন স্রোতে মানুষ মারা যায় কিন্তু তখন ছিল শুধু সাঁতার শেখা।ধন্যবাদ আপু।

 9 months ago 

আপনার শৈশবের সাঁতার দেওয়ার স্মৃতিটা আপু বেশ ভয়ংকর ছিল। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে বাঁচিয়ে রাখছেন হয়তো আপনি সেই দিনই শেষ হয়ে যেতেন। আসলে হায়াতের বরকত বলে একটা কথা আছে। আপনার মামাতো বোন নিশি আপনার উপর খুব খারাপ করলো। এভাবে একা রেখে ফেলে যাওয়া উচিত হয়নি। কিন্তু তাকে কি আর বলব সেই তো তখন ছোট মানুষ ছিল। অবশেষে আপনি বেঁচে গেলন লাখো শুকরিয়া। গল্পটি পড়ে বেশ খারাপ লাগলো।

 9 months ago 

সত্যি আপু ঘটনা এত দূর গড়াবে নিশি জানতো না। আসলে আপু এখন বুঝি খারাপ হতে পারত। তখন ছিলাম শুধু সাঁতার শিখার জন্য অস্থির।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 66552.34
ETH 3451.80
USDT 1.00
SBD 2.65