ভালোবাসার উপহার দ্বিতীয় পর্ব
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি আমরা আজকের পোস্ট।
ভালোবাসার উপহার দ্বিতীয় পর্ব
নিলয় যখন নীলিমার সাথে কথা বলছিল, সেই মূহুর্তে নিলয়ের বাবা কথা শোনে ফেলল।তারপর নিলয়ের বাবা তার থেকে ফোন নিয়ে দেখলো অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন। নিলয়ের বাবা হ্যালো বলাতে ওপাশ থেকে নীলিমা ফোন কেটে দিল।তারপর নীলিমা চিন্তায় পড়ে গেল।নিলয়ের বাবা নিলয়কে কিছু প্রশ্ন করল,আর বললো তোমাকে আমি যেন আর কখনো অপরিচিত নম্বরে কথা বলতে শুনি না। আসলে নিলয়ের বাবা তখন ভাবতে লাগল ছোট মানুষ প্রেম ভালোবাসার কি বুঝে।যাইহোক এবার ছাড় পেলেও পরবর্তীতে আর ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। নিলয় আর কিছু যাইহোক মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে লাগল। এদিকে নীলিমা নিলয়কে আর ফোন দিতে ভয় পাচ্ছে। এভাবেই চলে গেল দুটি বছর।
এদিকে নীলিমা নিজের অজান্তেই নিলয়কে ভালোবেসে ফেলেছে। আসলে নিলয় ও নীলিমাকে অনেক ভালোবাসে। একদিন নিলয় স্কুল থেকে নীলিমার দেওয়া সেই ফোন নম্বরে ফোন দিল।সেই ফোন ছিল নীলিমার বোনের, সে ফোন রিসিভ করে নিলয়ের সাথে কথা বলতে লাগলো।তখন নীলিমার বোন বললো নীলিমা তার বাবার বাড়িতে আমি আমার শশুড় বাড়িতে। এভাবে কিছু কথা বলে নীলিমার বোন ফোন রেখে দিল।তবে সে নীলিমাকে আর বলেনি যে নিলয় ফোন দিয়েছে।এখন নীলিমা বৃত্তি পরিক্ষা দেবে, তাই সেই ভাবতে লাগলো আমার সব ভুলে বৃত্তি পেতে হবে।আসলে নীলিমা বারবার নিলয়ের ওপর অভিমান করে ভুলতে চেয়েছে কিন্তু পারেনি।শুধু ভাবতে লাগলো নিলয় কিভাবে তাকে ভুলে রয়েছে। আবার নিলয়কে ফোন দেওয়ার ও ভয় পাচ্ছে। নিলয়ের বাবা যদি ফোন ধরে।নিলয় ও বৃত্তি পরিক্ষার জন্য ব্যস্ত।নিলয়ের বাবা বলেছে বৃত্তি পেলে নিলয়কে গ্রামে নিয়ে যাবে। সেই আনন্দে নিলয় পড়াশোনায় মনযোগ দিল। নিলয় ভাবতে লাগল গ্রামে গেলে তার প্রিয় মানুষ নীলিমার সাথে দেখা হবে।এভাবে বৃত্তি পরিক্ষা শেষ হলো।কিছু দিন পরেই ঈদ।এবার নিলয়েরা গ্রামের বাড়িতে ঈদ করবে,নিলয় তো মহাখুশি। তিনটি বছর চলে গেল নীলিমার সাথে দেখা হয় না। নিলয় এবারো নীলিমার জন্য সুন্দর বড় দেখে দুটি পুতুল নিয়ে এসেছে। একটা ছেলে পুতুল আর একটা মেয়ে পুতুল।
নিলয়েরা এবার প্রায় দশদিন থাকবে কিন্তু নীলিমা তো জানে না। নিলয় নীলিমাক সারপ্রাইজ দেবে গ্রামে গিয়ে। দেখতে দেখতে ঈদ চলে এলো।নিলয় এসেই চলে গেল নীলিমার সাথে দেখা করার জন্য। নীলিমাদের বাড়িতে গেলে নীলিমা আর নিলয়ের মধ্যে অনেক অজানা কথা হলো। নিলয়কে দেখে নীলিমা তো পুরো অবাক হয়ে গেল।নীলিমার বাবা মা ভাবলো এক সাথে পড়াশোনা করে তাই হয়তো দেখা করতে এসেছে । নিলয় যখন নীলিমার কাছ থেকে বিদয় নিয়ে এলো তখন নীলিমা কান্নায় ভেঙে পড়ল। কিন্তু নিলয় নীলিমাকে বললো আবার আসবো তোমার সাথে দেখা করতে তবে এখানে নয় স্কুলে।
পরের দিন বিকেল চারটা সময় নীলিমা অনেক সেজে চলে গেল স্কুলে। নিলয় আর নীলিমা স্কুলে চারপাশে ঘুরে ঘুরে অনেক কথা বললো। নিলয় নীলিমাকে বললো আসলে আমার বাবার অনেক রাগ তাই তোমাকে ফোন দিতে পারি না। আর মাত্র দু বছর তারপর তো আমার কাছে ফোন থাকবে। বাবা বলছে আমাকে এসএসসি পরিক্ষার পরে ফোন কিনে দেবে।নীলিমাকে আরো বললো আসলে আমরা এখনো ছোট, আমাদের মনযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। নিলয় নীলিমাকে বললো আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি,তোমাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবো না।এভাবে দুজন কথা বলতে বলতে কখন যে সন্ধ্যা নেমে এলো তারা কিছুই টের পায়নি।এদিকে নিলয়কে সব জায়গায় খোঁজ করছে।সবাই ভাবছে নিলয় তো অনেক দিন গ্রামের বাইরে ছিল এলাকায় তেমন কাউকে চেনা না।তাহলে এতো সময় ধরে কোথায় গেল।এই বলে বাড়ির অন্য সবাই খোঁজ করতে বেরিয়ে পড়ল । আর নীলিমা তার বাবার কাছে বলে গিয়েছিল তার বন্ধবীর বাড়ি যাবে আসতে দেরি হতে পারে। যখন সন্ধ্যার আজান হলো তখন নিলয় বললো আমাকে নিয়ে সবাই চিন্তা করবে। এই বলে আবারো তারাতাড়ি করে নীলিমাকে নতুন পুতুলের গিফট দিল। গিফট দেওয়া শেষ হতেনা হতেই নিলয়ের বাবা নিলয়ের কাছে এসে হাজির।আর নিলয়ের বাবাকে দেখে নীলিমা অনেক ভয় পেয়ে গেল। । তারপর দুজনকে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করলো। নীলিমা যখন বললো আমরা ভালো বন্ধু। তখন নিলয়ের বাবার বুঝতে আর বাকি রইল না যে তাদের মধ্যে কিসের সম্পর্ক। নিলয়ের বাবা কোন কথা না বলে নিলয়কে জোড় করে নিয়ে চলে গেল।(চলবে)
আজ এই পর্যন্তই। গল্পটি ভালো লাগলে আবার আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্মনিয়ে নিজেকে ধন্যমনে করি।ধন্যবাদ বাংলা ব্লগে এই বাংলা সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
আপু, নিলয় ও নীলিমার গল্প পড়তে পড়তে আমার নিজের জীবনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। কেননা আমিও খুব অল্প বয়সে আপনার ভাবিকে পছন্দ করেছিলাম। আর সেই পছন্দের মানুষই আজ আমার জীবনের অর্ধাঙ্গিনী। এবং আমরা দুজনে মিলে ছেলে ও মেয়েকে সাথে করে বেশ ভালোভাবেই দিন পার করছি।যাইহোক আপু, নিলয়কে তার বাবা জোর করে নিয়ে যাওয়ার পরবর্তী সময়ে কি হলো তা জানার জন্য অধীর আগ্রহে রইলাম।
জি ভাইয়া খুব তারাতাড়ি পরবর্তী পর্ব নিয়ে আসবো, ধন্যবাদ আপনাকে।
নিলয় নীলিমার গল্পটি আপনি খুব সুন্দরভাবে শেয়ার করলেন পড়ে তো খুব ভাল লেগেছে। এই বয়সের প্রেম গুলো এমনই হয়। অবশেষে দুজনের কথা বলতে যেয়ে ধরা পড়ে গেল। কিন্তু তার বাবা তাকে কি শাস্তি দিয়েছে সেটা তো জানিনা। পরবর্তী গল্প পড়ার জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকব আপু। আপনার প্রেমের গল্প গুলো পড়ে ভাল লাগে।
ঠিক বলেছেন আপু এমন গল্প পড়তে ও লিখতে বেশ ভালো লাগে, ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
ছোটবেলার প্রেমগুলো আসলেই অন্য রকম হয়। এরমধ্যে কিছু কিছু প্রেম বড় হতে হতে শেষ হয়ে যায়, আবার কিছু কিছু প্রেম সফল হয়। তারা দুজন একে অপরের জন্য অপেক্ষা করতে করতে, শেষপর্যন্ত তাদের দেখা হলো। তবে নিলয়ের বাবার কাছে ধরা পড়েছে যেহেতু, বাসায় নিয়ে হয়তোবা বকাবকি করবে। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম আপু। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া ছোট বেলার বেশির ভাগ প্রেম ঝরে পরে,যাইহোক পরবর্তী পর্ব নিয়ে তারাতাড়ি আসব,ধন্যবাদ আপনাকে।
এই গল্পের প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম বেশ ভালো লেগেছিল। দ্বিতীয় পর্বটি পড়েও বেশ ভালো লাগলো তবে যেহেতু এখন নিলয়ের বাবা জানতে পারলো। তাই পরবর্তীতে কি ঘটেছে জানার আগ্রহ প্রকাশ করলাম। আশা করছি খুব দ্রুত পরের পর্বটিও শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ আপু।
জি আপু অনেক তারাতাড়ি পরবর্তী পর্ব নিয়ে হাজির হব, ধন্যবাদ আপু গল্পটা পড়ার জন্য।