ফিরিয়ে পাওয়া ভালোবাসা তৃতীয় বা শেষ পর্ব||১০% বেনিফিসিয়ারি লাজুক শেয়ালের জন্য
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকল কে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের পোস্টঃ
ফিরিয়ে পাওয়া ভালোবাসা
ফয়সাল ও এনির গল্প দ্বিতীয় পর্বের পর থেকে। এনির মামাী যখন ব্যাপারটা জেনে গেল তখন এনিকে ঢেকে নিয়ে সব কিছু জিঙ্গাসা করলো।এনি প্রথম না করলেও পরবর্তীতে তার মামীর কাছে সব শিকার করেছে। তার মামী এনিকে বলেছে আমি তোমাকে সাহায্য করবো তুমি যদি আমার কথা শোন। আসলে ফয়সাল অরজিনালি ভালো ছেলে। ফয়সালের বাড়ির লোকজন অনেক ভালো শুধু তার বাবা কৃষক বলে এনির পরিবার কোন দিন মেনে নেবে না। কিন্তুু ফয়সাল অনেক ভালো পড়াশোনা করে আর ভালো একটা চাকরি ও পাবে।
এনি ওর মামীকে সব বলে দিল,এনির মামী ভাবলো আসলে এই ছেলে একদিন অনেক বড় হবে। এনির মামীর সাথে ও ফয়সাল মাঝে মাঝে কথা বলে। তারপর দুজনের এইচ এসসি পরিক্ষা শেষ করলো। ফয়সাল এখন ভাবতে লাগলো আমি কিছু একটা করবো। তাহলে পড়াশোনার খরচ চালানো মুশকিল হয়ে পড়বে।কিন্তু এনি ফয়সালকে কিছুই করতে দেবে না, সে চায় ফয়সাল ভালো কোন ভার্সিটিতে চান্স পাক ভালো একটা রেজাল্ট করলে ভবিষ্যতে ভালো কিছু হতে পারবে।ফয়সাল তখন বলল আমার কোচিং করার মতো কোন টাকা পয়সা নেই। এনি বলল তোমাকে বলেছি তুমি নিজের পায় না দাঁড়ানো পর্যন্ত আমি সব খরচ বহন করবো। ফয়সাল বলল এভাবে তোমার কাছ থেকে আমি আর টাকা দিতে পারবো না। কি আর করা ফয়সাল এনির কথা মেনে নিল।
এদিকে এনির বাবা এনিকে বিয়ে দেবার জন্য উঠে পড়ে লাগল।ফয়সাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেল।এনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স এ ভর্তি হলো। ফয়সাল ভাসিটিতে প্রতি বছর ভালো রেজাল্ট করে। ফয়সালের রেজাল্ট দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার গুলো বলল ফয়সাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হলে ওকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার হিসেবে রেখে দেবে।এখন ফয়সাল বেশকিছু টিউশনি করে, ভালোই টাকা রোজগার করে।আবার কোচিং এ ক্লাস করাই। এদিকে এনির বাবা এনির বিয়ে ঠিক করে ফেলল,যদিও এনির মামী বাধা দিয়েছে কিন্তুু কিছুই করার নেই। তারপর এনি কিছুতেই বিয়েতে রাজি ছিল না।এদিকে ফয়সাল ও ভার্সিটিতে চাকরি পেল।চাকরি পাবার পরে এনির মামী এনির বাবাকে ফয়সালের কথা বলল। আসলে এনির বাবা তখন বলল ছেলেদের কথা দিয়ে দিয়েছি, বিয়ে এখানেই করতে হবে এখন আর কিছু করার নেই। ছেলে ও ভালো সোনালী ব্যাংকের এজিএম । এনির মামীর কথা শোনার পরে এনির বাবা এনিকে চোখে চোখে রাখল ।
এনির বাবার ঠিক করা ছেলের সাথে এনির বিয়ে হয়ে গেল কিন্তুু এনি মরে যাবে, তবে ফয়সালকে ছাড়া কাউকে মেনে নেবে না।এই খবর শুনে ফয়সাল এদিকে পাগলের মতো হয়ে গেল। ফয়সাল শুধু ভাবতে লাগল এতো দিন বিয়ে হলে কিছু করার ছিল না কিন্তু এখন আমি স্বয়ংসম্পূর্ণ।আমি এ আমার ভালোবাসাকে হারিয়ে ফেললাম । তাহলে এই ব্যর্থতা আমি কিভাবে মেনে নেব।এদিকে এনি বাসর রাতেই তার বরকে সব বলে দিল।আপনাকে আমি কখনো মেনে নেব না আমি ফয়সাল নামক এক ছেলেকে ভালোবাসি সেই ছোটবেলা থেকে। এনির হাসবেন্ড একথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়ল। তখন বলল তুমি আমাকে আগে বলোনি কেনো?এনি বলল বলার মতো কোন সুযোগ পায়নি তাই। বাবাকে বলেছি কিন্তু বাবাকে শোনেনি।এনি বলল আসলে আপনার জীবন নষ্ট করার জন্য আমি দ্বায়ী নয়, তিনটা জীবন নষ্ট করার জন্য আমার বাবা দ্বায়ী।
এনির হাসবেন্ড প্রতিক্ষা করলো আমি যে করেই হোক তোমাকে ফয়সালের হাতে তুলে দেব।তবে একটা কথা তুমি সবারই সামনে আমার স্ত্রী সেজে থাকবে কাউকে কিছু বুঝতে দেবে না।এই বলে এনির বর সোফাতে শুয়ে চিন্তা করতে লাগল। এভাবেই বেশ কিছু দিন চলতে লাগল।এদিকে এনি আগের থেকে বেশি করে ফয়সালের সাথে কথা বলতে থাকল।এনির বর মাঝে মাঝে ওদের কথা আড়াল থেকে শোনে কিন্তু কিছুই করার নেই। এনির হাসবেন্ড নিজে নিজে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এনিকে বুঝতে দেয়নি।এভাবে একদিন সকাল বেলা এনি ফয়সালের সাথে অনেক কথা বলছে ফোনে। সেটা শুনে অফিসে যেতে লাগল এনির হাসবেন্ড। চিন্তা করতে করতে কিভাবে যে যাচ্ছে সে বুঝতে পারেনি। হঠাৎ একটা গাড়ি এসে এনির হাসবেন্ডকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে গেল। আর লোকজন যেতে যেতেই এনির হাসবেন্ড শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো।তাই আমাদের সবারই উচিত ছেলে মেয়ে বড় হলে তাদের মতামত নিয়ে বিয়ে দেওয়া। তাহলে হয়তো কারো জীবন এমন হবে না। তারপর ফয়সাল আবার এনিকে বিয়ে করলো।আসলে এভাবে যে ফয়সাল এনিকে পাবে সে ভাবতে পারেনি।ফয়সাল চেয়েছিল যেভাবে সেভাবে পায়নি। যাইহোক অবশেষে ফয়সাল তার ভালোবাসাকে ফিরিয়ে পেল এটাই অনেক।
আজ এই পর্যন্তই। গল্পটি ভালো লাগলে আবার আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্মনিয়ে নিজেকে ধন্যমনে করি।ধন্যবাদ বাংলা ব্লগে এই বাংলা সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
যাক অবশেষে এনি ফয়সালের মিল হয়েছে এটাই বড় কথা।এনির বাবার মত মানুষদের জন্য এমন কত জীবন নষ্ট হয়।এনির স্বামী বিনা দোষে শাস্তি পেল।তবে সে অনেক ভাল মানুষ তাই এনি ফয়সালের মিলন ঘটিয়ে দিল।ধন্যবাদ আপু সুন্দর গল্পটি শেয়ার করার জন্য।
জি ভাইয়া ঠিক বলেছেন এনির বাাবর মতো মানুষের জন্য কতো মানুষের জীবন নষ্ট হয়ে যায়।তবে এনি ফয়সালের মিলন হয়েছে এটাই অনেক। ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক সুন্দর একটি গল্পের সমাপ্তি করলেন আসলে শেষটা এমন হবে ভাবতে পারিনি। ঠিক বলছেন মাঝে মাঝে মা বাবার উচিত সন্তানদের ভাল-মন্দ বিচার করা। এ ধরনের চাপাচাপি করা মোটেই ভালো নয় এর পরিণাম খুব খারাপ হয় শেষের দিকে যেটা এনির হাজবেন্ডের হয়ে গেল। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপু অনেক সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনাদের ভালো লাগলে আবার হয়তো নতুন গল্প নিয়ে আসবো।আমার গল্পটা ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপু।
যদিও ফয়সাল এনিকে অবশেষে পেয়েছে।কিন্তু এনির স্বামীর জন্য মনটা খারাপ লেগেছে।আর এনির পিতার মতো একঘেয়েমি লোকদের জন্য কতই জীবন না নষ্ট হয়েছে।যাইহোক,পরিশেষে গল্পের মিল দেখে খুবই খুবই ভালো লাগলো।আপনার গল্পটি খুবই চমৎকার হয়েছে আপু। অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া এভাবে পাশে থেকে উৎসাহ দিলে নতুন গল্প লেখার অনুপ্রেরণা পায়।ধন্যবাদ আপনাকে।
গল্পটি শেষে খুব ভাল লাগলো। এনি আর ফয়সালের মিলন ঘটলো। মিল হলে গল্প ভাল লাগে।এনির বাবার মত মানুষের জন্য অনেক জীবন নষ্ট হয় আসলে। যাক সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
জি আপু গল্পে মিলন ঘটলে বেশ ভালই লাগে। ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য।