এক অসহায় বাবার গল্প ২য় বা শেষ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামু আলাইকুম

আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি।

এক অসহায় বাবার গল্প ২য় বা শেষ পর্ব

baby-2416718_1280.jpg

Source

আজ কয়েক দিন ধরে অনেক ব্যস্ততার মধ্যে যাচ্ছে। আসলে আমরা যতই ব্যস্ত থাকি না কেন। আপনাদের মাঝে না এলে সত্যি ভালো লাগে না। আমি সব সময় চেষ্টা করি আপনাদের সাথে থাকার জন্য। আসলে আমার অন্য কাজের মধ্যে কমিউনিটির কাজ ও অন্যতম। একদিন সময় মতো পোস্ট করতে না পারলে নিজের কাছে অনেক খারাপ লাগে।তারপরেও আজ পোস্ট করতে অনেক দেরি হয়ে গেল । যাইহোক সব সময় চেষ্টা করি কমিউনিটিতে এক্টিভ থাকার জন্য।

আজ এসেছি এক অসহায় বাবার গল্পের শেষ পর্ব নিয়ে। আসলে হারুন সাহেবের স্ত্রী যখন মারা গেল তখন হারুন সাহেব একেবারে ভেঙে পড়ল।আর একেবারে একা হয়ে পড়ল। এভাবে হারুন সাহেবের হাসিমাখা মুখটা অন্ধকারে ভরে গেল। এখন হারুন সাহেব একাই বাড়িতে থাকেন। কিছু দিন পরে হারুন সাহেবের ছোট ছেলেটা ও বিয়ে করলো।আসলে বর্তমান যুগের বউরা কখনো বাড়িতে থাকতে চাই না। তবে হারুন সাহেবের ছোট ছেলে তার বাবাকে প্রথমে বাসায় নিয়ে যেতে চাইলো কিন্তু হারুন সাহেব তার নিজের বাড়ি থেকে কিছুতেই যাবে না। হারুন সাহেব নিজেই রান্না করে খায়।

একদিন হারুন সাহেব হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন হারুন সাহেবের ছোট ছেলে হারুন সাহেবকে বাসায় নিয়ে যায়। আসলে বাসায় নিয়ে গেলে হারুন সাহেব এর ছোট ছেলের বউ হারুন সাহেব এর তেমন কোন খোঁজ খবর নেয় না। আসল হারুন সাহেব তার ছেলের বউ এর অবস্থা বুঝতে পারলেন।তাই ছোট ছেলেকে বলে সে বাড়িতে চলে আসবে।তারপর হারুন সাহেব বড় ছেলের বাসায় দেখা করতে গেল। সেখানে গিয়ে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ল।তার ছেলের বউয়েরা তাকে দেখাশোনা করে না বলেই চলে। যোগালের অভাবে এক পর্যায়ে হারুন সাহেব বিছানা থেকে আর উঠতে পারলেন না।

এদিকে হারুন সাহেব এর বউ তাকে বাসা থেকে বের করার জন্য অনেক ধরনের চেষ্টা করছে।অবশেষে তাকে তার মেজ ছেলের বাসায় পাঠালো।সেখানে ও একই অবস্থা। আবার তার যাবার মতো কোন জায়গা নেই। অবশেষে তাকে তার ছেলেরা মিলে বাড়িতে দিয়ে গেল। তারপর সব ছেলে মিলে তাকে তার বাড়িতে রেখে চলে গেল। এদিকে হারুন সাহেবের মেয়ে খবর পেয়ে তাড়াতাড়ি এলো বাবার বাড়িতে। এসে দেখে তার বাবা মৃত্যুর সাথে লড়ছে।বাবা মেয়ের সাথে তেমন কোন কথা বলতে পারলো না, মেয়ে আসার কিছু সময়ের মধ্যে হারুন সাহেব মৃত্যু বরণ করলো।আসলে হারুন সাহেব এর সব কিছু থাকা সত্বেও হারুন সাহেব অনেক কষ্টে মৃত্যু বরণ করলেন।

এদিকে মৃত্যুর খবর পেয়ে তার সকল ছেলে ও ছেলের বউয়েরা চলে আসলো।এখন সবাই মিলে লাশ দাফন করার জন্য অস্হির হয়ে পড়ল। ইতিমধ্যে একটা লোক নোটিশ নিয়ে এসে হাজির হলো হারুন সাহেব এর বাড়িতে। লোকটি এসে বললো আপনার বাবার কাছে আমরা ২৫ লক্ষ টাকা পাব। এই দেনা শোধ না করলে আপনার বাবার লাশ দাফন করতে দেওয়া হবে না। এ কথা শোনে হারুন সাহেব এর ছেলেরা দেনা শোধ করতে রাজি নয়।কিন্তু হারুন সাহেব এর মেয়ে বললো আমি আমার বাবার সকল দেনা শোধ করবো আমার জীবনের বিনিময়ে। তখন লোকটি হারুন সাহেব এর মেয়ের হাতে ২৫ লক্ষ টাকা দিয়ে বললো আপনার বাবা আপনাদের জন্য রেখে গিয়েছে।আর বললো এই টাকা আপনি আপনার ভাইকে দেবেন না এর জন্য ওনারা আপনার ওপর অত্যাচার করলে আমি দেখব । এ কথা শোনে হারুন সাহেব এর ছেলেরা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। হারুন সাহেব এর মেয়ে কান্না রেখে দাঁড়িয়ে বললো বাবার টাকা প্রতি আমার কোন লোভ নেই তবে এই টাকা আমি তোমাদের ও দেব না। আমি এই টাকা গুলো এতিম খানায় দান করে দেব,তবে তোমাদের মত অমানুষদের দেব না।আসলে আমাদের সবারই উচিত বাবাকে সম্মান করা।আশাকরি আমার গল্পটি আপনার কাছে অনেক ভালো লাগবে।


প্রয়োজনীয়তথ্য
ফটোগ্রাফার@parul19
ডিভাইসredmi note 12
লোকেসনফরিদ পুর

আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

HFcFmHBiAeR2oP8xXotf9GhVZ2UVLfizAkm26SLD9Ksq63dTYvrrycGbUPAEdikxGD2cqVMH8heE8DJW36AaZjZ4fD6Yt6w5ks6jyrVJqR...SPKhpaGF3R77N6UCcw6tHuYvyw7YjLACEvtraNkFm1AbXaoof2ZWppk6CphcwuiCL9iHDNMmYZX8Bq4y4gXniUDWXhBKVWevHte3V4qsJQhXhen8d6ttKVvadL.png

আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde1F6oRaKDis6eFNTqaET8soo8NYdtJXnEayXsg3Fx95TFkgLt1et4cn3GmnVY...ntgU63DpkYkb8a3HFVcmr9kVKAUK7GZN8yEenN3RPoyt3RkugeSBeesWqLh65DeovRdHCzQgvqVNscRmK7JWHUg3a1MT1UCEnDHbAXHQJwY5ncdm8YmiPkmd4R.gif

52k6mffrchQhs3Ssm9CLhkXcA8J5RhCbAhzzMtY9rBYwuor5owTWfK3hsfRcZnYb7wrEhskd2s8HBHr4RhMM9omL4rxSgvTJqwSSnNUzvj...be9rb7FDWzxUHqitBaapJsRqCRjhnVAThRvqhZUGBCJvV4KwGya5FG9QBW4wYrve2oc9ZtfxPSURk6a8Q2ZazNPCEtExJfp3Mm5t568RwbAgAuyAsXhtL75JLN.png

Sort:  
 5 months ago 

আপনার আজকের গল্পটি পড়ে অনেক কিছু শিখতে পারলাম আপু। সত্যি মেয়েরা তার বাবাদের একটু বেশি ভালোবাসে। এরকম সুন্দর একটি শিক্ষনীয় গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

 5 months ago 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আপু।

 5 months ago 

আসলে যারা কন্যা সন্তানদের অবহেলা করে, তাদের জন্য আপনার এই পোস্টটি একটা ম্যাসেজ। হারুন সাহেবের তিনটি ছেলে অনেক কষ্ট দিলেও, মেয়েটি কিন্তু নিজের বাবাকে ভালো রাখার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছে। আসলে একটি মেয়ে চাইলেও অনেক কিছু করতে পারে না, কারণ তার নিজের সংসার রয়েছে। প্রায় প্রতিটি মেয়েকে তার স্বামীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে নিয়ে কাজ করতে হয়। হারুন সাহেবের ছেলে এবং ছেলের বউদের তো অনেক আফসোস হয়েছিল, কারণ ২৫ লাখ টাকা হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। যাইহোক এমন শিক্ষামূলক একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57979.07
ETH 3124.67
USDT 1.00
SBD 2.36