জেনারেল রাইটিংঃ শৈশব স্মৃতি আম কুড়ানো
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি।
শৈশব স্মৃতি আম কুড়ানো
বরাবরের মতো আজও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে। আসলে আমাদের সবার জীবনে শৈশবের কতোনা স্মৃতি রয়েছে। স্মৃতিগুলো মনে পড়লে এখন শুধু হাসি পায়। আসলে আমরা শৈশবে কত কিছুই না করি। কত কিছু বুঝে করি কিছু না বুঝে করি। আসলে শৈশবের মতো স্বাধীন জীবন আর কখনো হয় না। শৈশব অনেক মধুময়।যাইহোক গতকাল আমার মেয়েরা সবেদা টুকায়। আসলে আমাদের উঠানে সবেদা গাছ রয়েছে তবে সবেদা পাড়া মুশকিল। শুধু পাখিতে খেয়ে ফেলে। তাই ওর চাচা পাড়ছে আর বাচ্চারা টুকায়।হঠাৎ করেই একজনের টুকানো সবেদা আরেক জন সামলিয়ে রাখল।আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দৃশ্য গুলো দেখে সেই ছোট বেলার আম কুড়ানোর কথা মনে পড়ে গেল। আসলে আমরা শৈশবে কতো কিছু না করি।সত্যি শৈশব সব সময় সুন্দর। তাই আজ এসেছি আমার শৈশবের মধময় স্মৃতি নিয়ে। তাহলে চলুন শুরু করি আজকের পোস্ট।
আমরা ছিলাম এক সাথে চার জন। আমরা সব সময় একসাথে সকাল সকাল উঠে সব কিছু টুকাতাম।আমাদের আমের বাগান ছিল তবে গাছ গুলো ছিল ছোট,মাত্র আম ধরেছে।আর আমরা ছোট থেকেই আম পাড়া শুরু করতাম। তবে আমরা চারজন একসাথে বসে আম পেড়ে মাঠেই খেতাম। আবার আমার সহপাঠীরা ও তাদের গাছ থেকে এভাবে আম পেড়ে আনত।যাইহোক আমরা কিন্তু পড়াশোনা ও করতাম।আমরা যখন ক্লাস ফোরে পড়ি তখনকার ঘটনা। আমার গ্রাম সম্পর্কের এক চাচার অনেক আগের বড় বড় বেশ কিছু আম গাছ রয়েছে আমাদের বাগানের পাশেই।তবে সেই চাচাদের বাড়ি অনেক দূরে তাই তারা তেমন গাছের ফল নিতে আসে না।তবে তার ভাইয়ের বাড়ি পাশে তারা সব সময় আম কুড়িয়ে বা পেরে নিয়ে যায়।
তারা বাইরে কাউকে গাছ তলা যেতে দেয় না।তবে আমাদের বাগানের কাছে তাই আমরা মাঝে মাঝে সুযোগ পেলেই যায়।তবে যার বাগান সে কিছু বলে না কিন্তু তার ভাইয়ের জন্য গাছের কাছে যাওয়া যায় না। আসলে কথায় আছে না বাসের চেয়ে কঞ্চি শক্ত। এটা ঠিক এমনি ছিল। তবে একদিন চাচার ভাইয়ের বাড়িতে কোন লোক ছিল না।আকাশে অনেক মেঘ ছিল, তখন আমরা চারজন মিলে বুদ্ধি করলাম আজ যদি ঝড় হয় তাহলে আমরা আযানের সময় গিয়ে আম কুড়াব।যে আগে জাগবে আমাদের বাকি সবাইকে ডেকে উঠাবে।
ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেল ঝড়। তারপর আমরা ঝড়ে শেষে সবাই ঘুমিয়ে পড়লাম। আসলে আমার এক চাচাতো বোন আছে সে ভোর চারটার সময় আমাদের না ডেকে গিয়ে চাচার বাগানে আম কুড়ানো শুরু করলো। তারপর আমরা আযান দেবার পরপরই আরো তিনজন চলে গেলাম আম কুড়ানোর জন্য। আমরা জানি আজ চাচার ভাইয়ের পরিবারের কেউ বাড়িতে নেই। আজ আমরাই সব আম কুড়াব।তাই আমরা সরাসরি চলে গেলাম চাচাদের বাগানে। আসলে বাগান অনেক বড় আমাদের দলের একজন মানে যে আগে গিয়েছে। সে আম গুলো কুড়িয়ে কয়েক জায়গায় রেখেছে। আমরা পরে গিয়ে দেখি আম গুলো একেক জায়গায় অথচ কোন লোক নেই। আসলে ও বাড়িতে এসেছিল বস্তুা নিতে।তারপর আমরা তিন জনে তার কুড়ানো আম গুলো নিয়ে চলে আসলাম। আসলে আমরা না জেনে এনেছি। তবে কিছু ক্ষণ পরে দেখি ও কান্না করছে, আর বলছে আমি আযানের আগে থেকে আম কুড়িয়ে রাখলাম অথচ আম নেই। এদিকে আমরা তিনজন একথা শোনে শুধু হাসছি।আমরা বললাম তুই আগে এসে অনেক আম পেয়েছিলি কিন্তু আমরা কোন আম পায়নি।তারপর সে অনেক কান্না করছে তাও আমরা আমগুলো দেইনি। একজন বলে ও আমাদের থেকে আগে এসেছে এটা ওর শাস্তি। সত্যি এই ঘটনা মনে পড়লে এখনো অনেক হাসি পায়। মাঝে মাঝে বাড়িতে গেলে আমরা চারজন একসাথে হলে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। আশা করি আমার শৈশব স্মৃতি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।
প্রয়োজনীয় | তথ্য |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @parul19 |
ডিভাইস | redmi note 12 |
লোকেসন | ফরিদ পুর |
আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।
শৈশবের স্মৃতি ঘেরা, আম কুড়ানোর অনুভূতি বেশ ভালো লাগলো আপু। আপনারা না জেনে অন্য কারো কুড়ানোর আম সেগুলো নিয়ে এসেছেন জেনে আমারও হাসি পাচ্ছে। আসলে ছোটবেলায় এমনি হয়।আপনার বাচ্চাদের সফেদা কুড়ানোর দৃশ্য দেখে আপনার আম কুড়ানোর কথা মনে পড়ে গেলো।আসলে বাচ্চাদের শৈশবে নিজের শৈশব খুঁজে পাওয়া যায়।ধন্যবাদ শৈশবের স্মৃতিচারণ মূলক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আসলে শৈশবে স্মৃতিগুলো অসাধারণ। এই স্মৃতিগুলো মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। আপনার চাচাতো বোনরা মিলে আম কুড়ানোর প্ল্যান করেছিলেন এবং আপনাদের রেখেই একজন আগে সকল আম কুড়িয়ে রেখেছিল। কিন্তু সে বস্তা নেয়নি আপনারা গিয়ে সেই আমগুলো নিয়ে চলে এসেছিলেন। সেও কান্না করলে তার আম গুলো কোথায় গেলো, তারপরেও আপনারা পরবর্তীতে জেনেছিলেন। গল্পটি মজাদার ছিলো।
ছোটবেলায় আমি কুড়ানোর এমন মধুর স্মৃতি আমাদের জীবনে রয়েছে আপু। বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে আমরা আম কুড়াতে যেতাম যখন ঝড় উঠতো। যাইহোক বেশ ভালো লাগলো আপনার জীবনের সুন্দর এই ঘটনাটা জানতে পেরে।
আসলে আপু শৈশবের সুন্দর স্মৃতি গুলো আসলে ভোলার মত নয়। শৈশবে গাছ থেকে আম পেড়ে মাঠেই চারজন বসে খেতেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। আমরাও আপনার মত ঠিক এমনই করতাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে বিস্তারিতভাবে শেয়ার করার জন্য।
ছোটবেলার স্মৃতি কখন যে জাগ্রত হয়ে যায় সেটা আসলে বলা যায় না। যেমন আপনার পোস্ট পড়তে গিয়ে আমার স্মৃতি জাগ্রত হয়ে গেল। আবার আপনার মেয়ে যখন সবেদা কুঁড়াচ্ছিলো তখন আপনার এই স্মৃতিটি মনে পড়ে গেল। আসলে মজা পেলাম আপনার এই স্মৃতিময় গল্প পড়ে। বিশেষ করে আপনাদের টিমের একজন আপনাদের আগে গিয়ে আম কুড়িয়ে ফেলল। আর সে আমগুলো পরে আপনারাই নিয়ে নিলেন,এটা পড়ে অনেক হাসলাম। আর এটা ঠিক বলেছেন বাসের চেয়ে কঞ্চি শক্ত। অনেক সময় যার জিনিস সে কিছু বলে না থার্ড পার্সন এসে সেখানে নাক গলায়। যাই হোক ভালো ছিল ধন্যবাদ।
ছোটবেলার এরকম অনেক মজার স্মৃতি রয়েছে যেগুলো মনে পড়লে এখনো সত্যি ভালো লাগে। আপনার আম কুড়ানোর ছোটবেলার এই স্মৃতির কথা পরে তো, আমার নিজেরই ছোটবেলার স্মৃতির কথা মনে পড়ে গেল। আপনাদের চারজনের মধ্যে একজন খুব ভোরবেলায় চলে গিয়েছিল আর সব আম এক জায়গায় রেখেছিল। আর আপনারা আমগুলো দেখে আর কাউকে না দেখে ওইগুলো নিয়ে এসেছিলেন এটা ভেবে হাসি পেল। আচ্ছা আপু পরবর্তীতে কি কখনো আর তাকে বলা হয়নি এ বিষয়টা?? আম কুড়ালো একজনে, নিয়ে আসলেন আপনারা। সে যদিও জানতো না আপনারা নিয়ে এসেছিলেন আর কান্না করছিল। আপনারাও আর তাকে বলেন নি।
ছোটবেলায় আমরাও এরকম ভাবে আম কুড়ানোর জন্য সকাল সকাল বেরিয়ে পড়তাম। আপনারা চারজন আম কুড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেও, একজন একা একাই ভোরবেলায় চলে গিয়েছিল। যদিও সে সব আম এক জায়গায় রেখেছিল এবং বাড়িতে এসেছিল বস্তা নেওয়ার জন্য। কিন্তু আপনারা তো দেখছি কাউকে না দেখে আমগুলো নিজেদের অজান্তে নিয়ে এসেছিলেন। আর কখনো তাকে বলেন নি তার আম আপনারা নিয়ে এসেছেন। সে যখন আমের কথা বললে কান্নাকাটি করছিল, তখনই আপনারা বুঝতে পেরেছিলেন এক জায়গায় রাখা আমগুলো সে রেখেছিল।
আসলে শৈশবের স্মৃতি কখনো ভোলার মতো না। শৈশবের মতো স্বাধীন জীবন এখন আর পাওয়া যায় না। আপনার শৈশবের আম কুড়ানোর অনুভূতি পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। এরকম অনুভূতিগুলো পড়তে বেশ ভালই লাগে। আপনার শৈশবের গল্পটি বেশ মজার ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।
ছোটবেলায় আমরাও আম কুড়ানোর জন্য সকাল সকাল বের হয়ে পড়তাম৷ যখন স্কুলে যাওয়ার সময় অনেক ভোরবেলা প্রাইভেটে যেতে হতো তখন আমরা অনেকে মিলে আম কুড়াতাম। আপনারা আপ কুড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন৷ পরে একজন নিজে থেকেই সকালবেলা একা একা চলে গেল এবং সে সবগুলো আম কুড়িয়ে যখন এক জায়গা রাখল এবং বাড়িতে গেলো বস্তা আনার জন্য, তখন আপনারা এই আম নিয়ে চলে আসলেন যা আপনারা আপনাদের অজান্তেই করে ফেলেছিলেন৷ পরে যখন সে আমের কথা বলে কান্নাকাটি করছিল তৎক্ষণাৎ আপনারা সেই বিষয়টি বুঝতে পেরে গেলেন।
অনেক ধন্যবাদ খুব সুন্দর ভাবে এই আম কুড়ানোর স্মৃতি শেয়ার করার জন্য৷