দুর্ঘটনা জনক রাত ||১০% বেনিফিসিয়ারি লাজুক শেয়ালের জন্য
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকল কে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি আজকের পোস্টঃ
বুধবারের রাতের ঘটনা। আমার চাচতো ভাইয়ের ছেলে, নাম তার রাব্বানী। চাচাতো ভাইয়ের দুমেয়ে এক ছেলে। মেয়ে বড়টা বিয়ে হয়ে গেছে আর ছোট টা অনার্সে পড়ে।দুই মেয়ের অনেক পরে ছেলেটা হয়েছে। আসলে আমার ভাই বলেছিল ছেলেকে হুজুর বানাবে। আর একমাত্র ছেলে অনেক আদরে রাখে,ছেলেটা ও অনেক ভদ্র।বয়স প্রায় ১১ বছর। এবার ক্লাস ফোরে পড়ে।তবে তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়েছে। মাদ্রাসা লাইনে ক্লাস ফোরে পড়ে আরকি। তবে মাদ্রাসায় থেকে পড়াশোনা করতে হয়।মাদ্রাসা বন্ধ হলে তার বাবা সাথে করে নিয়ে আসে আাবার খুললে সাথে করে দিয়ে আসে।
তাই গত মঙ্গলবারে দিন রাব্বানীর বাবা তাকে মাদ্রাসায় সাথে করে দিয়ে এসেছে। কিন্তু রব্বানী যেতে চাইছিল না, সে শুক্রবারে যাবে।মাদ্রাসা খোলা তাই তার বাবা এক পর্যায়ে জোড় করে মাদ্রাসায় পাঠিয়ে দিল। যাইহোক মঙ্গলবারে ঠিক মতো ক্লাস করছিল। গত বুধবারে রব্বানীদের সকল ছাত্রছাএীদের আসর আযানের পর থেকে মাগরিবের আযান পর্যন্ত খেলা ধুলা করতে দেই।সেদিন ও একই ভাবে বাচ্চারা খেলছে।ইতিমধ্যে মাগরিবের আজান দিয়ে দিল।সব বাচ্চারা অজু করে মাদ্রাসায় চলে গেল। নামাজ শেষ হলে মাদ্রাসার হুজুর দেখে রব্বানী নেই। তারপর মাদ্রাসার ভিতরে সব জায়গায় খুঁজতে থাকে কিন্তু তাকে আর পাওয়া যায় না। এভাবে আধাঘন্টা পারহয়ে যায়।
তারপর মাদ্রাসার হুজুর রব্বানীর বাবাকে ফোন করে। বলে আপনার ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন সন্ধ্যা সাতটা বাজে। বাড়ির লোকজন তাড়াতাড়ি করে সবদিকে খোঁজ করতে লাগল। কিন্তু কিছুতেই তার খোঁজ মিলাতে পারছে না। এভাবে সবাই পাগলের মতো হয়ে গেল। ওর মা বাবার মুখে আর কোন কথা নেই, কি করবে তারা ভেবে পাচ্ছে না।এভাবে খোঁজতে খুঁজতে এগারোটা বেজে গেল।তারপর সবাই মিলে থানায় জিডি করে এলো। আমাদের ফরিদপুর শহর বাদ রাখেনি খুঁজতে,তারপর ও পেল না। ফেসবুকে দিয়েছে.সব আত্নীয়স্বজন দের কাছ খোঁজ নিল। কিছুতেই খোঁজ মিলাতে পারছে।আমি যখন খবরটা শুনলাম তখন সাড়ে সাতটা বাজে। তারপর থেকে সারারাত ধরে ফোন দেওয়ার তালে রয়েছি আমার মাকে বারবার ফোন করছি , পেয়েছে কি না, আসলে প্রায় সারারাত ধরে জেগে জেগে ফোন দিচ্ছিলাম সব জায়গায় ।এমন রাত যেন কারো জীবনে না আসে।আমার মনে হচ্ছিল যদি আমি এখন রব্বানীর বাড়িতে যেতে পারতাম, তাহলে মনে হয় ভালো লাগতো।
এভাবে সবাই নিঃশ্ব হয়ে ঘরে ফিরে এলো রাত একটার পরে।তারপর সবাই এক জায়গায় কান্নাকাটি করছে, কি হলো কিছু বুঝতে পারছে না। যখন রাত দুটা বাজে তখন রব্বানীর মার নাম্বারে একটা ফোন এলো অপরিচিত নাম্বার থেকে। তখন ফোনটা রিসিভ করাতেই ফোনের ওপাশ থেকে রব্বানী কথা বলল।বলল আম্মু আমি ঢাকা চলে আসছি, আর কিছু বলতে পারেনি।তারপর ওপাশ থেকে আরেক জন বলল আপনার ছেলেকে আমরা যত্ন সহকারে রেখেছি, সকালে এসে নিয়ে যাবেন।রব্বানীর মা বলল আমার মেয়ের বাসা সাভার, আমার জামাইকে পাঠিয়ে দিই এখনি দিয়ে দিন।তারা বলল ঠিক আছে নাম্বার দিয়ে পাঠিয়ে দিন দিয়ে দেব।রব্বানীর দুলাভাই সেখানে গেল, গিয়ে দেখল রব্বানী একবার চোখ খুলছে আবার চোখ বন্ধ করছে।তখন সব কিছু তাকে খুলে বলল,রব্বানীকে রাস্তার ওপর থেকে কয়েক জন লোক গাড়িতে তুলে এনেছে। পাচার করে দেবে বলো,আর সেই গাড়ি রেব ধরেছে,তাদের দুজনকে থানায় নিয়েছে।,কিন্তু রব্বানীর এখনো জ্ঞান ভালো করে ফেরেনি, শুধু ওর মার ফোন নাম্বারটা বলতে পেরেছে আরকি।তারপর রব্বানীর দুলাভাই তাকে বাসায় নিয়ে আসলো।আস্তে আস্তে রব্বানী সব মনে পড়তে লাগল,বলল আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাল মুড়ি খাই। তখনি আমাকে হাত ধরে গাড়িতে তুলে নেই, তারপর আমার দু'হাতে বেঁধে দেয়, তারপর আমার আর কিছু মনে নেই। যাইহোক অবশেষে রব্বানীকে পাওয়া গেছে এটাই অনেক বড় কথা। যার বাচ্চা আল্লাহ তার কোলে ফিরে দিয়েছে এটাই অনেক। সবাই রব্বানীর জন্য দোয়া করবেন যেন তারাতাড়ি সম্পূণ সুস্থ হয়ে উঠে। আল্লাহ কারো বাচ্চাদের ওপর যে এমন বিপদ না দেয়।
আজ এই পর্যন্তই। গল্পটি ভালো লাগলে আবার আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্মনিয়ে নিজেকে ধন্যমনে করি।ধন্যবাদ বাংলা ব্লগে এই বাংলা সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
শেষ পর্যন্ত রাব্বানী তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরে এসেছে এটাই সবার জন্য অনেক। এখন তো ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে পাচার করার জন্য তুলে নিয়ে যায়। রাব্বানী এরকম লোকদের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছে তা ই অনেক।এরকম ঘটনা তো এখনো অহরহ দেখা যাচ্ছে ছোট ছোট বাচ্চারা এখন তাদের বাবা-মায়ের কোল ছেড়ে চলে যাচ্ছে। বিভিন্ন খারাপ মানুষ তাদেরকে নিয়ে যায়। এরকম ঘটনা যেন কারো সাথে না হয় সেই কামনা করি। আর রাব্বানীর জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো সে যেন আবারো আগের মত সুস্থ হয়ে পড়ে।
জি আপু এরকম ঘটনা অনেক শুনা যায় কিন্তু নিজেদের মধ্যে কখনো ঘটেনি। তাই অনেক খারাপ লাগছিল সারা রাত ধরে। যাইহোক আপু রব্বানীকে ফিরে পাওয়া গেছে এটাই অনেক, দোয়া করবেন যেন আগের অবস্থানে ফিরে আসতে পারে।
খুব খারাপ লাগলো পড়ে আপু।যাক রব্বানী শেষ পর্যন্ত তার মায়ের কাছে আসতে পেরেছে এটাই বড় কথা।এ রকম ঘটনা খুব ঘটে আমাদের সমাজে।রব্বানী সুস্থ হয়ে উঠুক এই প্রত্যাশাই করি। ধন্যবাদ আপু শেয়ার করার জন্য।
জি আপু দোয়া করবেন যেন রব্বানী তাড়াতাড়ি আগের অবস্থানে ফিরে আসতে পারে অনেক ভয় পেয়েছো তো। ধন্যবাদ আপু
আপনার লেখা পড়ছিলাম আর আমার গা শিরশির করছিল। মনে হচ্ছিল ভয়ংকর কোন গল্প পড়ছিলাম। সব বাবা মায়ের তাদের বাচ্চাদের দেখে রাখা উচিৎ। শেষ পর্যন্ত রব্বানী কে পাওয়া গিয়েছে জেনে মনটা খুশি হয়ে গেল। এরকম ঘটনা যেন কোন বাচ্চার সাথে না হয়। তবে রেবকে ধন্যবাদ তারা বাচ্চা কে উদ্ধার করেছে। ধন্যবাদ আপু।
জি ভাই এরকম ঘটনার যেন কোন বাচ্চাদের সাথে না হয় আর সকল বাবা-মা চায় বাচ্চাদের আগলে রাখার জন্য। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমাদের সমাজে রাব্বানীর মত এ ধরনের ঘটনা অনেক ঘটতেছে। হয়তো কিছু খবর আমরা জানি, হয়তো কিছু জানিনা। আর যেটা জানি তখন হয়তো সে বাচ্চাটা বেঁচে গেছে। আর যেটা জানিনা তাহলে বুঝতেই পারছেন বাচ্চাটার কপালে কি ছিল। যাই হোক অনেক খারাপ লাগলো, তবে অবশেষে রাব্বানী যে ফিরে আসতে পেরেছে এটাই বিশাল কিছু। আর বাংলাদেশ রেব বাহিনী দ্বারা এটি সম্ভব হয়েছে। রাব্বানী সুস্থ হয়ে উঠুক এই কামনা করি। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
খুবই খারাপ লেগেছে রাব্বানীর কথাটি শুনে। আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম রাব্বানী হয়তো তার বাবা মায়ের উপরে রাগ করে কোথাও চলে গিয়েছে। কিন্তু তাকে কেউ এভাবে পাচার করার জন্য নিয়ে যাবে তারা একেবারেই ভাবতে পারিনি। এখন রাব্বানী তার বাবা-মায়ের কাছে শেষ পর্যন্ত ফিরে এসেছে এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। রাব্বানী যেন আগের মত অসুস্থ হয়ে উঠে সেই কামনা করি।
জি আপু বাবা-মার কাছে ফিরে এসেছে জেনে সবারই অনেক ভালো লাগলো। দোয়া করবেন যেন রাব্বানী আগের মত সুস্থ হয়ে ওঠে ধন্যবাদ আপু।
রাব্বানীর মত অনেক ছেলেকে এখন পাচার করার জন্য খারাপ লোকেরা নিয়ে যায়।রাব্বানীর কথা শুনে খুবই খারাপ লেগেছিল। এরকম ঘটনা তো এখন বেশিরভাগই ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের সঙ্গে ঘটে যাচ্ছে। খারাপ লোকদের হাত থেকে রাব্বানী বেঁচে গিয়েছে এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। রাব্বানী যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠে তা ই প্রত্যাশা করি। এরকম ঘটনা যেন কারো সাথে না ঘটে তা কামনা করি সব সময়।
জি ভাইয়া এরকম ঘটনা যেন কোন বাচ্চার সাথে না হয়, সেই দোয়াই করি ধন্যবাদ ভাইয়া।
পাচার জিনিসটা এখন তো সচরাচর দেখা যায় না। অনেক ছোটবেলায় শুনতাম ছেলে-মেয়েদের নাকি পাচার হয়, তবে এই ঘটনার সত্যতা আমার সামনে কখনো পড়েনি। যাইহোক শেষ পর্যন্ত র্যাবের তৎপরতায় এবং তাদের সঠিক ডিউটির কারণে ছেলেটাকে খুঁজে পাওয়া গেছে এটাই অনেক বড় কথা। আসলে এই সিচুয়েশন গুলোতে বাপ-মায়ের কি যে অবস্থা হয় সেটা চিন্তার বাইরে।
জি ভাইয়া আমি ও শুধু শুনেছি কিন্তু কখনো দেখিনি এবারই প্রথম দেখলাম , যাইহোক দোয়া করবেন রব্বানীর জন্য।
আমাদের সমাজে এইরকম ঘটনা অহর অহর ঘটছে। রব্বানীর মত ছেলে মেয়েদের ধরে নিয়ে গিয়ে প্রাচার করে দেয়। এভাবে যে কত মা-বাবার বুক খালি হয়ে গেছে। আল্লাহ পাক রব্বানীকে তার বাবা-মার কাছে ফিরে দিয়েছে এটাই অনেক আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। রব্বানীর ভাগ্য ভালো দেখে সে এবারের মতো বেঁচে গিয়েছে।