দুর্নীতিবাজদের কবলে দেশের স্বাস্থ্য খাত

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আজকে হঠাৎ করে একটা নিউজ চ্যানেলের ভিডিও দেখতে পেলাম। ভিডিওটা ছিলো আমাদের শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে। এই হাসপাতালটা নিয়ে শহরের মানুষের অভিযোগ বহুদিনের। এই হাসপাতালে গেলে মানুষ ভালো চিকিৎসা পায় না। হাসপাতালে পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্র গুলো বেশিরভাগ সময়ই নষ্ট থাকে। সেই সাথে রয়েছে দালালের উপদ্রব। সবকিছু মিলিয়ে চিকিৎসা প্রার্থী রোগীদের জন্য এই হাসপাতালে একটা নারকীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করেও এর কোন প্রতিকার হয়নি।

workout_20240428_150601_0000.png

তবে আজকের ভিডিওটি দেখে রীতিমত চমকে গিয়েছি। ভিডিওটির মাধ্যমে জানতে পারলাম হাসপাতালে কোটি কোটি টাকার দামি যন্ত্রপাতি পড়ে আছে অথচ লোক বলের অভাবে সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে না। সেই কারণে গরিব রোগীরা অল্প টাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার বেশ কিছু মেশিন পাওয়া গেলো যেগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ার কারণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দু-একটা মেশিন যাও ভালো আছে সেগুলো কিছুদিন পরপর নষ্ট হয়ে থাকে অথবা নষ্ট করা হয়। জনগণের কোটি কোটি টাকা খরচ করে কেনা মেশিন গুলো চালু করার জন্য কারো তেমন কোনো গরজ নেই। কারণ এই হাসপাতালের সাথে জড়িত অনেকেই বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে মোটা অংকের কমিশন পেয়ে থাকে। হাসপাতালে আসা রোগীদেরকে টেস্ট করার জন্য তারা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে থাকে। মূলত এই কারণেই তাদের মেশিনগুলোর ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহ নেই।

এই দুর্মূল্যের বাজারে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা এই দামী মেশিনগুলো এভাবে পড়ে থাকতে দেখে খুবই রাগ লাগছে। রিপোর্টে দেখলাম স্থানীয় এমপি তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রীর কাছে এই বিষয়ে চিঠি লিখেছেন। এই বিষয়টা দেখে ভালো লাগলো যে সংসদ সদস্য অন্তত কিছু একটা করার চেষ্টা করছেন। আবার এই মেশিনগুলোর কেনার জন্য যে দাম দেখানো হয়েছে রিপোর্টে দেখতে পেলাম মেশিনগুলোর বাজার মূল্য তার থেকে অনেক কম। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জালিয়াতি করে ভালো মেশিনের জায়গায় খারাপ মেশিন দিয়ে গিয়েছে। সর্বমোট ৫২ কোটি টাকার মেশিন অব্যবহৃত অবস্থায় অথবা নষ্ট অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কি একটা ভয়াবহ অবস্থা আপনারা চিন্তা করতে পারেন? অবশ্য এই সমস্যা যে শুধু আমাদের শহরের হাসপাতালে হয়েছে তা নয়। সরকারি বেশিরভাগ হাসপাতালের চিত্র প্রায় একই রকম। এই সমস্ত জায়গায় দুর্নীতিবাজ আর বাটপারদের দৌরাত্ম্য। আর এদিকে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ জনগণ। কিন্তু এর বিরুদ্ধে কথা বলার মত কাউকে দেখিনা। বা যারা এদিকে নজর দিলে এই অবস্থার উন্নতি হোতো তাদের ভেতরে কোন পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি না। কবে যে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত এই দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে মুক্ত হবে সেটা কেউ জানে না। এখন আমাদের সবাইকে যার যার জায়গা থেকে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। তাহলেই যদি অবস্থান উন্নতি হয়।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



ধন্যবাদ

Sort:  
 last month 

প্রত্যেকটি সেক্টর দুর্নীতিতে ভরা। বিশেষ করে মেডিকেল সেক্টর গুলোতে দুর্নীতি বেশি লক্ষ্য করা যায়। জনগণের উপকার করার কথা বলে সব কিছুর জন্য টাকা হাতিয়ে নেয়। আর দিনশেষে জনগণকে ছুটতে হয় প্রাইভেট কোন ক্লিনিকে। অসাধারণ লিখেছেন আপনি। লেখাগুলো সত্যিই অনেক ভালো লেগেছে।

 last month 

কোটি টাকার মেশিন অযত্নে অবহেলা নষ্ট হয়ে গেল। অথচ টাকার অভাবে চিকিৎসা পাচ্ছে না গরিব অসহায় মানুষগুলো। আমাদের ট্যাক্সের টাকা অর্থের অপচয় আর দুর্নীতি চারদিকে ছড়িয়ে আছে। প্রতিটি সেক্টরেই এত বেশি দুর্নীতি যা দেখার মত কেউ নেই। যারা জনপ্রতিনিধি তারাও দুর্নীতির সাথে জড়িত। দুর্নীতির কারণে ডাক্তাররা মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করছে। খুবই সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 27 days ago 

বর্তমানে আমাদের দেশের স্বাস্থ্য খাত এবং শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি দেখা যায়। সরকারি হাসপাতালে গেলে একেবারেই সেবা পাওয়া যায় না। বরং ডক্টররা তাদের চেম্বারের ভিজিটিং কার্ড হাতে ধরিয়ে দেয়। মানুষ এখন বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছে। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আর সেজন্য অনেক মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে। অথচ আমরা জানি যে, সরকারি হাসপাতালের মেশিনপত্র সবচেয়ে বেশি ভালো থাকে এবং যেকোনো ধরনের টেস্ট এর রিপোর্ট খুবই ভালো আসে। কোটি কোটি টাকার মেশিনপত্র সরকারি হাসপাতালে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এটা জেনে আসলেই খুব খারাপ লাগলো। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 65969.85
ETH 3429.28
USDT 1.00
SBD 2.68