হতাশার শেষে আশার আলো (শেষ পর্ব)
ঘটনা দুই : গতকালকে ঢাকায় গিয়েছিলাম একটা জরুরী কাজে। ঢাকা শহরের প্রবেশের পর থেকেই দেখতে পেলাম বেশ যানজট। তবে এই যানজট কিছুটা অন্যরকম। গাড়ি ঘোড়ার গতি কমে গেলেও সেগুলো একেবারে স্থবির হয়ে যাচ্ছিলো না আগেকার মতো। বরং ধীরগতিতে হলেও গাড়ি-ঘোরা সব এগোচ্ছিলো। খেয়াল করে দেখি রাস্তাঘাটে একটাও ট্রাফিক নেই। সেখানে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে আমাদের দেশের স্কুল কলেজ পড়ুয়া বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী। এই প্রচন্ড গরমের ভেতরে রোদের ভেতর দাঁড়িয়ে থেকে ট্রাফিক কন্ট্রোল করতে কি পরিমান কষ্ট হয় সেটা এসি গাড়ির ভেতর বসেও আমি খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছিলাম। ছেলে মেয়েগুলোর জন্য খুব খারাপ লাগছিলো। আবার এটা ভেবেও অনেক ভালো লাগছিলো যে এদের কারণেই আজ আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছি। এরা আমাদের বুকে নতুন আশার সঞ্চার করছে। তেমন কোনো ট্রেনিং না থাকার পরও শুধু দেশের জন্য কিছু করার স্পৃহা থেকে তারা কি অমানবিক কষ্ট করে যাচ্ছে নির্বিকার ভাবে। তবে দৃশ্যটা দেখে খুবই ভালো লাগলো।
ঘটনা তিন: ঢাকায় যাওয়ার পথে গাড়ি একটা জায়গায় পৌঁছালে হঠাৎ করে খেয়াল করে দেখলাম ফ্লাইওভারের নিচের পিলার গুলি আগে যেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পোস্টার, ব্যানার, বিভিন্ন কোম্পানির পোস্টার দিয়ে ঢাকা থাকতো। সেই পিলারগুলোকে তারা দারুন সব চিত্রকর্ম দিয়ে ভরিয়ে তুলছে। সেই চিত্রকর্মগুলো ছিল অসাধারণ সৃজনশীল। চিত্রকর্ম গুলোর মাধ্যমে তারা দেশের সমস্ত কিছু ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছিলো। কি নিবিড় মমতায় তারা কাজগুলো করছিলো। দৃশ্যটা দেখতেও ভালো লাগে। আরো একদলকে দেখতে পেলাম ফ্লাইওভারের নিচের আইল্যান্ডে যে ফাঁকা জায়গাগুলো ছিলো। সেখানে তারা বৃক্ষরোপণ করছে। যে কাজটা আমাদের দেশের সরকারের অনেক আগেই করা উচিত ছিলো। কিন্তু তারা সেই কাজ ফেলে রাখলেও আমাদের দেশের ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ এখন সেটাও নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে। এই অদম্য ছেলেমেয়েদেরকে দেখে মনে হচ্ছিলো এখন আমরা আশার আলো দেখতেই পারি। এখন শুধু প্রয়োজন সাধারণ জনতার সমর্থন। যদি সাধারণ জনতার পূর্ণ সমর্থন এরা পায় তাহলে এরা নিশ্চিত আমাদের এই দেশটাকে পরিবর্তন করে দেবে। আমরা হয়তো একদিন সত্যি কারের সোনার বাংলা দেখতে পাবো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
স্থান | ঢাকা |
আমরা আসলেই এক নতুন বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছি। সারাদেশের প্রায় সব জায়গায় ছাত্র ছাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করেছে যখন, আমার কাছে খুব ভালো লেগেছিল এই ব্যাপারটা দেখে। তাছাড়া তাদের আরও কিছু কার্যক্রম দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আশা করি আমাদের দেশটা সঠিক পথে এগিয়ে যাবে। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।