শিকড়ে ফিরে যাওয়া-গল্প (প্রথম পর্ব)

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


শাকিব মন খারাপ করে নিজের টেবিলে বসে রয়েছে। কিছুক্ষণ আগেই তার বসের সাথে বেশ কথা কাটাকাটি হয়েছে। গত মাসের টার্গেট না হওয়ার জন্য বস তাকে বেশ কিছু কথা শুনিয়েছে। বসের সাথে কথাবার্তা শেষে শাকিব তার টিমের মেম্বারদের সাথে বেশ চিৎকার চেঁচামেচি করেছে। টার্গেট করতে না পারার জন্য তাদেরকে খুব রাগারাগি করেছে। তাদের সাথে রাগারাগি করে শাকিবের মনটা খুব খারাপ হয়েছে। সেজন্য সাকিব মন খারাপ করে নিজের টেবিলে বসে রয়েছে। সাকিব মনে চিন্তা করছিলো এভাবে আর কতোদিন? এর ভেতরে পাশের টেবিলের রবিন এসে তাকে বলে সাকিব ভাই বাড়ি যাবেন না? অফিসের সময় তো শেষ। সাকিব ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখে বেশ কিছুক্ষণ আগেই তার অফিসের টাইম শেষ হয়ে গিয়েছে। শাকিব তার ব্যাগ গুছিয়ে বাসার দিকে রওনা দেয়।

My journey so far and what i got from STEEMIT_20240421_181222_0000.png

ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে তার প্রায় রাত দশটা বেজে যায়। বাসায় পৌঁছে এসে কাপড়চোপড় ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে গিয়ে বসে। তার মন খারাপ দেখে তার স্ত্রী জিজ্ঞেস করে কি ব্যাপার? অফিসে কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি? সাকিব মাথা নেড়ে স্ত্রীকে জানায় তেমন কিছু না। তারপর সে তার স্ত্রীকে বলে বাচ্চা দুটোকে ডাক দাও। সবাই মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়া করি। তার স্ত্রী জানায় বাচ্চা দুটো আগেই খাওয়া-দাওয়া করে নিয়েছে। কথাটা শুনে সাকিবের মন আরো কিছুটা খারাপ হয়ে যায়। সাকিব মনে মনে চিন্তা করতে থাকে এত পরিশ্রম করেও জীবন থেকে সে কি পেয়েছে? সাকিব ভালো বেতনে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করে। কিন্তু তার চাকরিতে বেতন ভালো হলেও কাজের প্রচুর চাপ। সাকিব সপ্তাহে মাত্র একদিন ছুটি পায়। সেই দিনটাতেও তাকে ল্যাপটপে প্রচুর কাজ করতে হয়। বলতে গেলে মাসের ৩০ দিনই তাকে কাজের ভেতরে থাকতে হয়।


তার জীবনে নিজের মতো করে কোন সময় নেই। অফিসের কাজের ফাঁকে ফাঁকে সংসারের কাজগুলোও তাকে করতে হয়। এরকম জীবন কাটাতে কাটাতে শাকিব অনেকটা হাঁপিয়ে উঠেছে। মাঝে মাঝে সে চিন্তা করে এসব কিছু ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে গ্রামে চলে যেতে পারলে ভালো হোতো। কিন্তু শহুরে জীবনে অভ্যস্ত হওয়ায় গ্রামে ফিরে যাওয়া যে সহজ হবে না সেটা সে খুব ভালই বুঝতে পারে। খাবার টেবিলে বসে সাকিব এসব কিছু চিন্তা করতে থাকে। খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে সে তার ল্যাপটপ ওপেন করে কিছু রিপোর্টের কাজ শেষ করে। তারপর সে ঘুমোতে চলে যায়। কারণ ইতিমধ্যেই তার বাচ্চাগুলো ঘুমিয়ে পড়েছে।


পরদিন সকালে ঘুম থেকে সকালে উঠেই সাকিব তার জীবনের সবচাইতে বড় সিদ্ধান্তটা নেয়। এই দিন সে সকাল সকাল অফিসে পৌঁছায়। অফিসে পৌঁছে কম্পিউটারে বসে একটি চিঠি টাইপ করে। টাইপ করে সে তার নিজের টেবিলে বসে তার বসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। পরবর্তীতে সারাদিন সাকিব অন্য আর পাঁচ দিনের মতো স্বাভাবিকভাবে তার কাজকর্ম করতে থাকে। কারো সাথেই সে চিৎকার চেঁচামেচি করে না। সন্ধ্যা সাতটার দিকে যখন এক এক করে সবাই অফিস থেকে বের হচ্ছে। তখন সাকিব সকালের টাইপ করা চিঠিটা নিয়ে তার বসের রুমে ঢুকে। রুমে ঢুকে সাকিব তার বসকে বলে বস আপনার সাথে আমার কিছু জরুরী কথা আছে। সাকিবের বস শাকিবের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে কোনো একটা সমস্যা হয়েছে। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



ধন্যবাদ

Sort:  
 4 months ago 

আপনার গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। অসমাপ্ত গল্পটি চমৎকার ভাবে তুলে ধরেছেন। বাস্তবিক প্রেক্ষাপট এর মধ্য দিয়ে গল্পটি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এভাবে টার্গেট ফিলাপ না করতে পেরে অসংখ্য মানুষই চাকরি ছেড়ে দেয়।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 61800.05
ETH 2496.29
USDT 1.00
SBD 2.64