শৈশবে নতুন বই পাওয়ার মজা

আশাকরি " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ভালো আছেন। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা এবং আপনাদের আশীর্বাদে আমিও সুস্থ আছি। আজ আপনি আপনাদের সাথে শৈশবে নতুন বই পাওয়ার মজা সম্পর্কে একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট করলাম।


image.png



লিংক

আসলে আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন স্কুলে যাওয়াটা আমাদের কাছে একটা নেশা ছিল। কেননা স্কুলে গেলে আমরা আমাদের বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবদের সাথে মিলেমিশে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করতাম। আসলে পড়াশুনার প্রতি তেমন একটা নজর না থাকলেও বন্ধুদের সাথে খেলাধুলার প্রতি আমাদের অনেকটা নেশা ছিল। আসলে ছুটির দিনগুলোতে আমাদের তেমন একটা ভালো সময় কাটতো না। কারণ ছুটির দিনগুলোতে আমরা আমাদের সেই বন্ধুগুলোকে পেতাম না। এছাড়াও আমরা যখন সবাই মিলে একসাথে স্কুলে যেতাম সেই স্কুলে যাওয়ার সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের মজা করতাম। আসলে আমাদের যখন পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত তখন আমাদের মনটা খুব খারাপ হয়ে যেত। কেননা পরীক্ষা শেষের পরে অনেকদিন স্কুল বন্ধ থাকতো। অর্থাৎ স্কুলে অনেকদিন ক্লাস হত না এবং আমরা নতুন ক্লাসে কবে উঠব সেই নিয়ে সবসময় চিন্তায় থাকতাম।


আর যখন আমরা নতুন ক্লাসে উত্তীর্ণ হতাম এবং স্কুল থেকে যখন নতুন বই আমাদের দিত তখন আমাদের আনন্দের কোন সীমা থাকত না। একটা জিনিস আপনারা কি কখনো করেছেন? আমরা যখন ছোটবেলায় নতুন বই পেতাম তখন সেই নতুন বইয়ের একটা গন্ধ আমাদের একদম পাগল করে দিতো। আসলে নতুন বইয়ের গন্ধ আমার খুব ভালো লাগতো। এছাড়াও আমাদের যখন নতুন বই দেওয়া হতো আমরা তখন অনেক আনন্দে থাকতাম কারণ নতুন বই পাওয়ার মজাটাই আলাদা। এছাড়াও সর্বপ্রথম আমাদের কাজ ছিল সেই বইগুলো বাড়িতে নিয়ে গিয়ে নতুন মলাট তৈরি করা। কেননা আমরা সেই সময় বইগুলোকে খুব যত্নে রাখতাম। এছাড়াও বইয়ের যদি কোথাও ভাঁজ হয়ে যেত সেই ভাঁজ গুলো আমরা দ্রুত ঠিক করে নিতাম।


কিন্তু আরেকটা কষ্টকর ব্যাপার হল আমাদের প্রতিদিন সব ক্লাসের সব কয়টি বই স্কুলে নিয়ে যেতে হতো। কারণ স্যাররা আমাদের বাধ্যতামূলকভাবে প্রতিটি ক্লাসের বই নিয়ে আসার জন্য বলতেন। আর যদি কোন ছাত্র সেই স্যারের ক্লাসে সেই স্যারের বইটি না নিয়ে আসতো তাহলে এর জন্য তাকে শাস্তি পেতে হতো। আসলে আমার এখনো মনে আছে যে ছোটবেলায় আমাদের বইয়ের ব্যাগের ওজন ছিল প্রায় তিন থেকে চার কেজি। আসলে শুধুমাত্র আমরা বই নিতাম না বইয়ের সাথে প্রতিটা ক্লাসের আলাদা আলাদা খাতা এবং কলম পেন্সিল তো থাকতই। আসলে আমরা ক্লাসে কিন্তু কেউ কারো বই দেখতাম না। সবাই নিজের বই খুলে পড়াশোনা করতাম এবং যখন ক্লাসে টিফিন হত তখন আমরা সবাই মিলে বই খাতা গুছিয়ে খেলাধুলা করতে মাঠে যেতাম।



আসলে এখন কোন একটি বাচ্চাকে যদি একটি নতুন মোবাইল কিনে দেয়া হয় তাহলে সে যতটা খুশি হতো তার থেকে বেশি আমরা খুশি হতাম এই নতুন বই পাওয়ার ফলে। আসলে আমাদের নতুন বই প্রথমে আমরা আমাদের মা-বাবাকে দেখাতাম। আর আরেকটা দায়িত্ব ছিল যে বইয়ের প্রথম থেকে একদম শেষ পাতা অব্দি আমরা গুনতাম। কেননা অনেক সময় বইয়ের মাঝে কিছু কিছু পেজ বাদ থাকতো। আর এজন্য সর্বপ্রথম আমরা সব কটি বইয়ের প্রথম থেকে শেষ অব্দি খুব নখদর্পণভাবে দেখতাম। আসলে আপনারা কি আরেকটা জিনিস খেলেছেন কখনো? আর এটি হলো বইয়ের ভিতরে মানুষ গোনা। এই খেলাটি একটা কমন খেলা ছিল। এই খেলাটির প্রধান বিষয়বস্তু হলো দুজন ব্যক্তিকে একজনকে জোড় সংখ্যা এবং অন্যজনকে বিজোড় সংখ্যার বইয়ের পাতা গুনতে হতো।


আর যার পাতায় বেশি সংখ্যক মানুষ থাকতো সেই কিন্তু জয়ী হত। আসলে এরকম অনেক খেলা ছিল আমাদের সময় যেগুলো আমরা ভুলে গেছি। আর আমরা নতুন বই যখন পেতাম তখন প্রথমে সেই বইগুলো বাড়িতে এসে পড়াশোনা শুরু করে দিতাম। কারণ নতুন বই পড়তে আমাদের সবার খুব ভালো লাগতো। এছাড়াও এই বইগুলো আমরা সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতাম আমাদের টেবিলের উপরে। তখন আমাদের সময় নিয়ম ছিল আমরা যখন নতুন বই পেতাম তখন আমরা আমাদের পুরাতন বইগুলো আবার স্কুলে ফেরত দিয়ে দিতাম। আসলে আমাদের স্কুলে কিন্তু সব কয়টি বই নতুন দেওয়া হতো না। বেশিরভাগ নতুন বই দিলেও কিছু বই আমাদের পুরাতন নিতে হতো।



আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে আজকের পোস্টটি । ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করতে ভুলবেন না।


আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 67271.13
ETH 3515.41
USDT 1.00
SBD 2.70