এমন ঈদ না আর আসুক

🌼 হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন? আশাকরছি সকলে ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি ।

আজকে আবারো চলে আসলাম নতুন আরও একটি লেখা নিয়ে। আশা করি আজকের লেখাটিও আপনাদের সকলেরই ভালো লাগবে।

যদি সত্যি কথা বলি সেক্ষেত্রে এইবারের মতো বাজে ঈদ আমার জীবনে সত্যিই কখনো আসেনি। কারণ এতো দুর্বিষহ একটা দিন কেটেছে এবং এখন পর্যন্ত ও তার আঁচ মোটামুটি রয়ে গিয়েছে এবং এবারের মতো ঈদ সত্যিই আমি আর কখনো কাটাইনি। অর্থাৎ এতোটা খারাপ সময় আমার জীবনে বোধহয় কখনোই আসেনি। তার অবশ্য কারণও রয়েছে এবং কারণটা আমি একটু শেয়ার করার চেষ্টা করছি। তাহলে হয়তো আপনারা বুঝতে পারবেন।

প্রথমতই আমি আমার ব্যাপারে যদি বলি। তাহলে সাধারণভাবে আমার ঈদের দিনটা কাটে খুব আরাম-আয়েসে। অর্থাৎ সকালবেলা নয়টা দশটা করে ঘুম থেকে উঠে দেখি যে আম্মু প্রায় সব রান্নাই শেষ করে ফেলেছে এবং আমি কোনো রকমে মুখ ধুয়ে এরপর মজার সব নাস্তা করতে বসি।

কিন্তু এবারের ঈদটা ছিলো আমার জন্য সম্পূর্ণই ব্যতিক্রম।কারণ তার একদিন আগে থেকেই আম্মু হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পরে এবং ঈদের আগে পর্যন্ত অর্থাৎ চাঁদরাত এও অসুস্থতা টা মোটামুটি ছিলো এবং এজন্য আমরা আসলে চাঁদরাতে তেমন কিছু প্রিপারেশন করেই রাখিনি। অর্থাৎ প্রতিবছর চাঁদরাতে কিছু রান্নাবান্নার আয়োজন আগে এগিয়ে রাখা হয়। কিন্তু আম্মু অসুস্থ থাকার কারণে ভাবলাম ঈদের দিনে সবকিছু করবে আম্মু।

কিন্তু ঈদের দিন হুট করেই সকালবেলা উঠে দেখি যে, আম্মু অসম্ভব রকমের অসুস্থ এবং এতোটাই অসুস্থ যে নুয়াইরা কে যে একটু গোসল করাবে। সে শক্তিটাও আম্মুর নেই এবং আম্মু মোটামুটি তখন প্রায় শয্যাশায়ী।আপনাদের সেই অবস্থাটা কিভাবে বর্ণনা করবো আমি জানিনা। অর্থাৎ এতোটাই খারাপ অবস্থা যে নিজের রুম থেকে আমার রুম পর্যন্ত আমাকে ডাকতে আসাটাই ওনার অনেক কষ্টের মনে হয়েছে তখন।

তো এরপর আসলে আম্মুর অবস্থা দেখে আমি তাড়াতাড়ি উঠে গেলাম এবং উঠে তো আমার মাথায় হাত। কারণ ঘরের আসলে রান্নাবান্না চ্যাপ্টারটাতে আমি মোটামুটি একেবারেই থাকি না বললেই চলে। তো হঠাৎ করেই আমি ঈদের দিন কি করবো তখন কিছুই ভেবে উঠতে পারছিলাম না এবং আসলে রান্নাবান্নার ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ কঠিন লাগে। আর তার উপর যদি ঈদের দিনের আয়োজন হয়। তাহলে তো আমার দ্বারা অসম্ভব বলা চলে।

কিন্তু সেই মুহূর্তে আসলে কিছু করার নেই। কারণ কোনো কিছু যে প্রি অর্ডার করবো সে অবস্থা ই ছিলো না। কারণ ঈদের দিন বেশিরভাগ সবই বন্ধ।তারপরে আবার কিছু করতে হবে। কারণ বাইরের বিভিন্ন মানুষ আসে। আর বাইরের বিভিন্ন মানুষকে আসলে কিছু নাস্তা তো দিতেই হয়।

সে কারণেই প্রায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আমি রান্না করলাম। যদিও খুব অল্প আইটেমই বানিয়েছিলাম। কিন্তু সেসব আইটেম মনে হয়েছে যেনো আমার কাছে পাহাড় সমান। আর এতোটা কষ্ট বোধহয় আমি আমার কোনো ঈদ এই করিনি। সেদিন আমি বানিয়েছিলাম চটপটি, নুডুলস, সুজির খেজুরি, পুডিং আর চটপটির জন্য টক। আসলে খুব সামান্যই আয়োজন করেছিলাম, আমার দ্বারা যতটুকু সম্ভব হয়েছিলো এবং বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা। সে সব আইটেমও আমি সেদিন প্রথম বারই বানিয়েছিলাম। হয়তো পুডিংটা কয়েকবার শখ করে বানানো হয়েছিলো।তবে তাও আম্মু পাশে দাঁড়ানো অবস্থায়,জিজ্ঞেস করে করে।

এরপরে আমি বিরিয়ানির সব জোগাড় করে দিয়েছিলাম এবং আম্মু জাস্ট কোনোরকমে এসে চুলায় দিয়েছিলো।এই ছিল আমাদের বাসায় ঈদের দিনের আয়োজন। আসলে সত্যি কথা বলতে, কি পরিমান খারাপ অবস্থায় যে কাটিয়েছিলাম ঈদের দিনটা আমি কখনোই ভুলবো না। কারণ এতো খারাপ একটা ঈদের দিন আমার কখনোই কাটেনি। আসলে মা অসুস্থ হলে পুরো ঘর যেনো অন্ধকার হয়ে যায়। সেটা সেদিন আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলাম।

সৃষ্টিকর্তার কাছে আমি এটাই দোয়া করি, যেনো এমন ঈদ শুধু আমার জীবনে নয়। কারো জীবনে না আসুক আর। আর আম্মুর বর্তমানে শারীরিক অবস্থা মোটামুটি বলা চলে অর্থাৎ এন্টিবায়োটিক চলছে এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ হয়নি।

আশা করছি লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে।এই প্লাটফর্ম এর এই লেখাগুলো থেকে যাবে চিরকাল সে সাথে থেকে যাবে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্যগুলোও।তাই আশা করছি আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য দেখতে পাবো।