আমাদের একটি ছুটির দিন।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমাদের জীবন এখন এতটাই ব্যস্ততম হয়ে গেছে যে, কোনদিন যদি একটু ছুটি কাটানোর ইচ্ছা করে বা কোথাও ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করে তাহলে ওই ছুটির দিনের প্লানিং একমাস আগে থেকেই করে রাখতে হয়। তারপরেও কিছু কিছু সময় আবার ছুটি পাওয়া যাবে কিনা অথবা কোন না কোন কারনে সেই দিনের প্ল্যান নষ্ট হয়ে যায় । তেমনি আমরা প্রায় তিন বছর ধরে একটি মুভি দেখার প্লানিং করে চলেছি। তিন বছর আগে বেরিয়ে ছিল সেই মুভিটার প্রথম পর্ব । এবং তিন বছর পর অর্থাৎ এ বছর ডিসেম্বর মাসে বেরিয়েছে সেই মুভির দ্বিতীয় পর্ব। আর এই মুভিটি প্রথম পর্ব দেখে আমাদের এতটাই ভালো লেগেছিল যে দ্বিতীয় পর্ব দেখার জন্য আমরা খুবই এক্সাইটেড হয়ে পড়েছিলাম। আর মনে মনে খুব রাগ হচ্ছিল যে এত দেরি করে দ্বিতীয় পর্বটি বের হচ্ছে। রাগ হলেও তো কিছু করার নেই কারণ মুভি ডিরেক্টর যখন মুভি তৈরি করবে তখনই তো তৈরি হবে তারপর যখন মুভি সিনেমা হলে ছাড়বে তখনই আমরা দেখতে পারব। তাই প্রতি বছর অপেক্ষা করতাম কবে এই মুভিটি দ্বিতীয় পর্ব ছাড়বে।
আর দেখতে দেখতে তিন বছর পেরিয়ে এ বছরই আমাদের সৌভাগ্য হল এই মুভি দ্বিতীয় পর্বটি দেখার। ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখে এই মুভিটি অর্থাৎ পুষ্পা টু রিলিজ করেছে। তারপর থেকেই আমরা অপেক্ষা করছিলাম কোন দিন দেখতে যাব। আর আমরা অনেক ভাবনা চিন্তার পর সিদ্ধান্ত নিলাম যে ডিসেম্বরের শেষের দিকেই এই মুভিটি দেখব। কারণ যেহেতু ডিসেম্বরের প্রথম দিকে মুভিটি রিলিজ করেছে সেজন্য প্রথম দিকে খুব ভিড় হবে। আর শেষের দিকে একটু হালকা হয়ে যাবে অতটাও ভিড় হবে না সেইজন্য আমরা সেই সময় ভালোভাবে মুভি দেখতে পারবো। তাই আমরা একটা ছুটির দিন নির্ধারিত করি এবং সেই দিনটিতেই মুভি দেখতে যাব বলে ভাবি। কিন্তু আমার করা সিদ্ধান্ত প্রথমবারেই সাফল্য পায় না। আর এক্ষেত্রে সেটা কোন ব্যতিক্রম হয়নি। প্রথমবার আমরা যেদিন মুভি দেখতে যাব বলে ঠিক করি সেই দিনটা কিছু কাজের জন্য আমাদের আর যাওয়া হয় না। সেই জন্য আমরা আবার পরের রবিবার ছুটির দিন যাওয়ার পরিকল্পনা করি।
এই দিনটা যেন কোন কাজ না থাকে সেই জন্য আগে থেকেই সব কাজ করে আমরা এগিয়ে রাখি। আর আগের দিন আমার বর মশাই বাড়ি ফেরার সময় মুভির টিকিট কেটে রাখে কারণ এত তাড়াতাড়ি সব টিকিট বুক হয়ে যায় যে ভালো কোন বসার সিট অবশিষ্ট থাকে না। তাই আগের দিন টিকিট কেটে রাখলে তাও একটু ভালো বসার সিট পাওয়া যায়। আর এবার যেহেতু আমরা একটু নতুন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করব বলে ভেবেছি তাই আমরা সব সময় যে বসার সিট এর টিকিট কাটি এবার আর সেই সিট বুক না করে গোল্ড প্রাইম এর সিট বুক করেছি। যেন আমরা আরাম করে শুয়ে বসে মুভি এনজয় করতে পারি। আজ রবিবার, দুপুরের মধ্যে সব কাজ তাড়াতাড়ি সেরে নিয়েছি। এবার ঝটপট রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলাম মুভি দেখার উদ্দেশ্যে। আমরা যাব ব্যারাকপুরের অতীন্দ্র সিনেমা হলে পুষ্পা টু দেখতে। ব্যারাকপুর যেহেতু আমাদের বাড়ির কাছে সেই জন্য আমরা বাইকে করেই বেরিয়ে পড়লাম। আর ১৫ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম অতীন্দ্র সিনেমা হলের সামনে।
যেহেতু ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টানদের ক্রিসমাস উৎসব আর কয়েকদিন পরেই সেই জন্য এই সিনেমা হলটিও সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। দেখে খুবই ভালো লাগছে উৎসবের আবেগ চারিদিকে। আমরা টিকিট দেখিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলাম মুভি দেখার জন্য। আমি আর আমার বরমশাই বেশ কয়েকটি নিজেদের ছবি তুলে স্মরণীয় করে রাখলাম আজকের দিনটি। কিছুক্ষণ পর মুভি শুরু হলো, যেমনটা ভেবেছিলাম ঠিক তেমনই পুষ্পা টু মুভিটি দারুন সুন্দর করেছে। পুরো মুভির মধ্যে এত হাস্যকর দৃশ্য ছিল যে হাসতে হাসতে আমাদের পেট যেন ব্যথা হয়ে গেল। মুভিটা দেখে আমাদের দুজনেরই খুবই ভালো লাগলো যা হয়তো ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তবে লাস্টে দেখলাম এর আবার পর্ব তিন বের হবে। আবার জানি না ক'বছর অপেক্ষা করে থাকতে হবে এই তিন নম্বর পর্ব দেখার জন্য। বেশ ভালো সময় কাটিয়ে আমরা মুভি দেখা শেষ করে বেরিয়ে পড়লাম বাড়ির দিকে। রাস্তায় একটি দোকানে দাঁড়ালাম কিছু জিনিস কেনার জন্য। আর আমি একটি চিপস কিনে নিলাম বাইকের পেছনে বসে যেতে যেতে খাওয়ার জন্য। অবশেষে বাড়ি পৌঁছাতে আমাদের রাত এগারোটা বেজে গেল।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।