ভালো খাদ্যের অভাব।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমাদের এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটা প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য সুষম খাদ্যের প্রয়োজন যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং আমরা ভালোভাবে বাঁচতে পারি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্য তো প্রচুর আছে যা আমরা খেতে পারি কিন্তু দেখা যায় ভালো খাদ্যের বড়ই অভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভালো খাদ্য বলতে যেসব খাদ্য আমাদের শরীরকে কোনরকম ক্ষতিগ্রস্ত করবে না এবং আমাদের সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে সাহায্য করবেন এমন খাবারই বর্তমান সময়ে খুব কম দেখা যায়। আগেকার সময়ে মাছ, মাংস, শাকসবজি প্রত্যেকটা খাদ্য উপযুক্ত জিনিসই ছিল খুবই পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। কিন্তু বর্তমান সময়ে দেখা যায় মানুষ এত ভেজাল এবং কৃত্রিম উপাদান ব্যবহার করা শুরু করেছে যে কোন খাদ্যই আর খাদ্যের উপযোগী নেই। বর্তমান সময়ের প্রত্যেকটা খাদ্যই হয়ে উঠেছে আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বর্তমানে মানুষ এত নিষ্ঠুর, লোভী এবং স্বার্থপর হয়ে উঠেছে যে কোনটা মানুষের জন্য ক্ষতি আর কোনটা উপকারী সেটা না ভেবেচিন্তেই বিভিন্ন খারাপ কাজ করে চলেছে। মাছ, হাঁস, মুরগি, ছাগল ইত্যাদি বিভিন্ন চাষ করতে গিয়ে বিভিন্ন রাসায়নিক এবং হরমোনাল ক্ষতিগ্রস্ত জিনিস ব্যবহার করছে যার ফলে এইসব অল্প সময়ের মধ্যে অনেক দ্রুত বড় হয়ে যাচ্ছে কিন্তু সেগুলো খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
আমরা বাজার থেকে কিনে এইসব মাছ মাংস খুব মজা করে রান্না করে খাচ্ছি ঠিকই কিন্তু এটা আমাদের শরীরে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রোগের কারণ। বর্তমানে যে দু মুঠো ভাত খেয়ে মানুষ সুস্থ থাকবে তার উপায়ও নেই। ধান চাষের সময় বিভিন্ন কীটনাশক যেমন ব্যবহার করা হচ্ছে তেমনি ধান থেকে চাল তৈরি করার সময় দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন কেমিক্যাল যাতে চান সুন্দর এবং চকচকে দেখতে লাগে। মাঠে বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করার সময়ও দেয়া হচ্ছে এত বেশি কীটনাশক এবং খারাপ ধরনের সার যা খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। বিভিন্ন ফল ফলাদি সঠিকভাবে পুষ্ট হওয়ার আগেই গাছ থেকে পেড়ে নিয়ে কৃত্রিমভাবে বিভিন্ন কীটনাশক দিয়ে পাকিয়ে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে যা আমরা প্রতিনিয়ত কিনে খাচ্ছি। বর্তমানে ফল-ফলাদি ও সঠিকভাবে গাছে পাকতে দিচ্ছে না বিক্রেতারা। কোনরকম একটু বড় হতে না হতেই কৃত্রিম পদ্ধতি অবলম্বন করে বিক্রি করতে পারলেই বেঁচে যায় তারা। যার ফলে এই অপুষ্ট এবং বিভিন্ন কেমিক্যাল দ্বারা পাকানো ফল ফলাদি খেয়েও আমাদের শরীরে কোনরকম ভালো কোন উপকার হচ্ছে না বরং আরো এইসব কেমিক্যাল এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তই হচ্ছে।
বর্তমানে মানুষেরা এত বেশি লোভী এবং স্বার্থপর হয়ে গেছে যে শুধুমাত্র নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এবং অর্থ লোভের কারণে প্রতিনিয়ত মানুষের বিভিন্ন ক্ষতি করার চেষ্টা করে চলেছে। শুধুমাত্র বিভিন্ন ক্ষতিকারক জিনিস মিশ্রিত করেই খাদ্যের উপকারিতা নষ্ট করছে এমনটা কিন্তু নয়। কিছু মানুষ তো আমাদের চারপাশে এমনও রয়েছে যে নিজের পড়াশোনা শিক্ষাগত যোগ্যতা জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কৃত্রিম খাদ্যের উৎপাদন করে চলেছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এবং সোশ্যাল মিডিয়া দেখলেই দেখা যায় কৃত্রিমভাবে ডিম তৈরি করা হচ্ছে বাঁধাকপি তৈরি করা হচ্ছে চাল তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন শাকসবজি সহ বিভিন্ন প্রকার মাছ মাংস ডিম অনেক কিছুই নকল ভাবে তৈরি করতে দেখা যায়। এছাড়াও নোংরা পরিবেশে এবং নোংরা ভাবে খাবার তৈরি করতে তো আমরা আমাদের চারপাশে দেখেই থাকি প্রতিনিয়ত। আগেকার সময় যেমন ভালো পুষ্টিকর এবং প্রকৃতিতে উৎপন্ন পুষ্টিকর খাবার খেয়ে আগেকার মানুষ সুস্থ থাকতো এবং দীর্ঘ বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকতো সেখানে বর্তমান পরিস্থিতিতে এইসব নকল এবং নোংরা ভাবে তৈরি করা খাবার খেয়ে প্রতিনিয়ত মানুষের রোগব্যাড়াম যেমন হচ্ছে তেমনি আয়ু কমতে থাকছে।
বর্তমানেই ভালো খাদ্যের যেমন অভাব ঘটেছে মানুষ যদি সচেতন না হয় আর এভাবেই যদি দিন চলতে থাকে তবে একটা সময় এমন আসবে যে ভালো কোন খাদ্য এই পৃথিবীতে পাওয়াই যাবে না। এছাড়াও মানুষ প্রতিনিয়ত প্রকৃতির যেভাবে ক্ষতি করে চলেছে তার ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও আবহাওয়া ভারসাম্য হীনতায় ভুগছে, যার ফলে প্রকৃতিতে উৎপন্ন বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান , গাছপালা, প্রাণী এমনিতেই অনেক বেশি খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সেখানে আমরা আমাদের কর্তব্য না বুঝে এই পৃথিবীর সবকিছু আরো খারাপ করে চলেছি এবং পৃথিবীতে থাকা সমস্ত জীব জন্তু এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতিনিয়ত ক্ষতি করে চলেছি, যা আমাদের করা একদমই উচিত নয়। আমাদের উচিত প্রকৃতির এই সম্পদ গুলি নষ্ট না করে প্রচুর পরিমাণে প্রতিনিয়ত গাছপালা লাগানো পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করা এবং পরিবেশকে সুন্দর করে তোলা। যেন আমরা এই পরিবেশে সুন্দরভাবে বাঁচতে পারি। কৃত্রিম পদ্ধতি ত্যাগ করে বিভিন্ন জীবজন্তু পশুপাখি এমনকি শাকসবজি গাছপালাকে প্রাকৃতিক ভাবেই বেড়ে উঠতে দিতে হবে, যেসব জিনিস আমাদের জন্য ক্ষতিকর সেসব জিনিস সব সময় বর্জন করে চলার চেষ্টা করতে হবে। তবেই আমরা সুন্দর এই পৃথিবীতে সুন্দর ভাবে বাঁচতে পারব।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।