অসৎ সঙ্গ।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আগেকার দিনে অনেক বয়স্ক মানুষদের দেখেছি কোন বাচ্চা দুষ্টুমি করলে বা কোন ভুল কাজ করলে তাদের বকা দিয়ে বলতো, বাড়িতে বাবা-মা কিছু শেখায় নি? আসলে কি বাবা মা কোন দুষ্টুমি কখনো ভুল কাজ করা শেখায়? বাবা-মা সব সময় চায় যে তার সন্তান একজন ভালো মানুষ হোক। সেইমতো বাবা-মার যথাসাধ্য চেষ্টা তারা করে থাকেন। কিন্তু কোন বাচ্চা শুধু তার বাবা-মার শাসনে থাকে না। প্রত্যেকেই পড়াশোনা করতে বাইরে যায় বা খেলাধুলা করতে বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে যায়। আর আজকালকার সময় তো ফোনের মাধ্যমেও অনেক বন্ধু তৈরি হয়ে যায়। তাই বাবা মা বুঝতে পারে না যে তার সন্তানেরা কাদের সাথে মিশে বা কাদের সাথে কথা বলে। সন্তানেরা যখন আস্তে আস্তে বড় হয়ে যৌবন বয়সে পা রাখে। তখন তারা নিজের আলাদা একটি জগৎ তৈরি করে নেয়। এবং তারপর তাদের জীবনে কি হয় সেটা জানা অনেকটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে।
আমার চোখের সামনে দেখা একটি ছেলে ছোটবেলা থেকে বেশ সভ্য ভদ্র এবং খুবই শান্ত স্বভাবের ছিল। সে যখন বড় হতে থাকলো তার অনেক বন্ধু হতে লাগলো, তার মধ্যে কিছু খারাপ মানসিকতার এবং কিছু ভালো মানসিকতার বন্ধু ছিল। ছেলেটির খারাপ মানসিকতার ছেলেগুলোর সঙ্গ পছন্দ হতে লাগলো। এবং সে তাদের সাথেই বেশি মেলামেশা করতে শুরু করল। কারণ তারা দিনের অর্ধেকটা সময় মজা করতে এবং ঘুরে বেড়াতেই সময় নষ্ট করত, পড়াশোনা করতে ভালো লাগতো না। ওই ছেলেটিকেও এই খারাপ মানসিকতার বন্ধুগুলো ওই একই জিনিস বোঝাতো যে জীবনে শুধু আনন্দ করতে হয় পড়াশোনা করে কি লাভ হবে। তাই ছেলেটি তাদের সাথে ঘোরাঘুরি আর দুষ্টুমি করে সময় কাটাতো। এবং যখন আরও বড় হল তখন তাদের সঙ্গে মিশে ধূমপান করতে শুরু করল। আর কিছুদিন পর দেখা গেল সে মাদকদ্রব্য গ্রহণ করতে শুরু করল।
এভাবেই সে দিনের পর দিন ধাপে ধাপে তার জীবনের অধঃপতনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলো অথচ সে এগুলোকে ঠিক বলে মনে করত। এছাড়াও সে বিভিন্ন রকমের নেশা জাতীয় জিনিস গ্রহণ করতে দ্বিধাবোধ করত না। ধীরে ধীরে তার পরিবারের সাথে সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করল। আর যেহেতু এইসব নেশা জাতীয় দ্রব্য কেনার জন্য টাকার প্রয়োজন হয় তাই সে যখন দেখলো বাড়ি থেকে আর টাকা পাওয়া যাচ্ছে না, তখন সে ঘর থেকেই চুরি করা শুরু করল। এছাড়াও বিভিন্ন কুকর্ম করা শুরু করতে লাগলো। গুরুজনকে সম্মান করা বা মেয়েদেরকে কিভাবে সম্মান করে সেটা সে ভুলেই গেল। সে পুরোই গুন্ডাদের মত আচরণ করতে লাগলো। এইসব খারাপ কাজের সঙ্গে লিপ্ত হওয়ার কারণে তার জীবনটা পুরোই নষ্ট হয়ে গেল। তাই অনেক গুণী ব্যক্তিরা বলেন যে, বন্ধুবান্ধব সবসময় ভেবেচিন্তে নির্বাচন করা উচিত।
তুমি যদি একজন ভালো মানুষ হয়ে থাকো এবং তুমি কোন খারাপ মানুষের সাথে কোন রকম কথোপকথন বা মেলামেশা কর তবে তোমাকেও সবাই খারাপ মানুষই মনে করবে। এছাড়াও একটি মানুষ যদি দীর্ঘদিন একটি খারাপ মানুষের সাথে মেলামেশা করে তাহলে সেই মানুষের প্রভাব ওই মানুষটির উপর পড়েই যায়। কোন মানুষের সাথে দীর্ঘদিন মিশলে তার খারাপ জিনিসও ভালো লাগতে শুরু করে। আর আমরা অনেক সময় নিজের অজান্তেই সে খারাপ কাজগুলি করতে শুরু করি। আর নিজের অজান্তেই আমাদের জীবনের লক্ষ্যচ্যুত হয়ে পড়ি। তাই গুরুজনেরা বলেন সব সময় সৎ মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতে। তাহলে সেই মানুষটার থেকে আমরা ভালো কিছু শিখতে পারবো। এবং জীবনে অনেক ভালো কিছু করতে পারব। এছাড়াও ভালো মানুষদের সঙ্গে মিশলে লোকজন খারাপ কথা বলতে পারবেনা।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।