মানসিক অত্যাচার।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17575788537174184671888200812707.jpg


সোর্স



আমাদের মন খুবই পবিত্র এবং নিষ্পাপ একটি জিনিস। আমরা ছোটবেলায় যখন জন্মগ্রহণ করি তখন আমাদের মন থাকে একদম সাদা কাগজের মত তারপর আস্তে আস্তে আমরা যখন বড় হতে থাকি আমরা তখন বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হই, তখন আমাদের মনে সেই অভিজ্ঞতার দাগ পড়তে থাকে। সেটা হতে পারে ভালো অভিজ্ঞতা আবার হতে পারে খারাপ অভিজ্ঞতা। আমাদের জীবনে অভিজ্ঞতার কোন শেষ থাকে না, আমরা আমাদের জীবনে প্রতিটা ক্ষেত্রে বিভিন্ন দিক থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে থাকি। কিন্তু এই অভিজ্ঞতারও একটা সীমারেখা আছে সব রকম অভিজ্ঞতা নেওয়ার ক্ষমতা আমাদের থাকে না। যেমন মানসিক অত্যাচারের অভিজ্ঞতা। এই পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছে যারা প্রতিনিয়ত মানসিক অত্যাচারের শিকার হয়ে চলেছে। আসলে আমরা শারীরিক অত্যাচার সব সময় হতে দেখে মানুষের ওপর, এবং এই অত্যাচার খালি চোখে দেখা যায়। কিন্তু মানসিক অত্যাচার এমন একটা জিনিস যা মনকে পুরো ঝাজরা করে তোলে। মানসিক অত্যাচার কখনোই চোখে দেখা যায় না। আর এই মানসিক অত্যাচার এমন একটা যন্ত্রণা যার কথা অন্যদের বললে যাদের সাথে এমন মানসিক অত্যাচার না হয় তারা কোনো ভাবেই এই কষ্টের কথা বুঝবে না। এই মানসিক অত্যাচারের ফলে আমাদের মানসিক এবং শারীরিক বিভিন্ন রকম ক্ষতি হয়ে বসে এবং আমাদের মধ্যে অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশন সহ বিভিন্ন রকম সমস্যা এবং রোগের উৎপত্তি হয়।


আসলে মানসিক অত্যাচার বাইরে থেকে দেখা যায় না আবার কোন মানুষকে দেখলে হঠাৎ করে বোঝা যায় না। এটা একান্তই গোপনীয় একটি মানসিক সমস্যা যা মস্তিষ্ক থেকে মন দুটোকেই নষ্ট করে দেয়। এই মানসিক অত্যাচার দীর্ঘদিন সহ্য করতে করতে মানুষ ডিপ্রেশনেও চলে যেতে পারে। মানসিক অত্যাচারের ফলে মানুষ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে পারে। কোন মানুষের উপর যদি মানুষের অত্যাচার চলে তবে সেই মানুষ স্বাভাবিক জীবন যাপন থেকে অনেকটাই বিচ্যুত হয়ে যায়। আসলে মানসিক অত্যাচার খুবই কষ্টকর একটি বিষয় যা না পার যায় সহ্য করতে আর না পারা যায় কাউকে বলে বোঝাতে। আর এই মানসিক অত্যাচার বিভিন্ন ধরনের মানুষ বিভিন্ন মানুষের সাথে করতে পারে। কোন বাইরের মানুষ যেমন এ মানসিক অত্যাচার করে থাকে তেমন পরিবারের মানুষও বিভিন্নভাবে মানসিক অত্যাচার করে থাকে। একটি মানুষ যখন মানসিক অত্যাচারের শিকার হয়ে যায় তখন সে সেই সব মানুষের সাথে আগের মত বা ভালোভাবে মন থেকে কোনভাবেই মেলামেশা করতে পারে না যে মানুষটি তার ওপর মানসিকভাবে অত্যাচার করে থাকে। এমনকি মানসিক অত্যাচার যদি অনেক বাড়তে থাকে এবং সেটা সহ্য সীমানার বাইরে চলে যায় সেই সময় মানুষ কোন মানুষের সাথেই মেলামেশা পছন্দ করে না এবং নিজেকে অনেক বেশি একা রাখার চেষ্টা করতে থাকে যাতে সে একটু শান্তিতে থাকতে পারে।


মানসিকভাবে অত্যাচার হতে থাকলে মানুষ প্রতিনিয়ত অনেক বেশি শান্ত হয়ে যায় এবং মানুষের শারীরিক এবং মানসিক সৌন্দর্য নষ্ট হতে থাকে। মানুষ বিভিন্নভাবে মানসিক অত্যাচার করতে পারে আসলে যে মানুষটি অন্য মানুষের উপর মানসিক অত্যাচার করছে এই অত্যাচার এমন টাইপের হয়ে থাকে যা দেখে বোঝা সম্ভব নয় এটি একদমই ভিন্ন ধরনের অত্যাচার। আর সব থেকে বেশি কষ্টের হয়ে থাকে যখন নিজের পরিবারের লোক নিজের বাবা এই মানসিক অত্যাচার করে থাকে। কারণ বাবা-মা সব সময় আমাদের কষ্ট কম করতেই সাহায্য করে কিন্তু সেখানে যদি উল্টো হয়ে আমাদের কষ্টের কারণ হয়ে বসে তবে আমাদের যাওয়ার কোন জায়গা থাকে না। অনেক সময় আমরা যখন কোন ব্যক্তির কাছ থেকে খারাপ ব্যবহার পেতেই থাকি এবং সেই ব্যক্তি আমাদের মনে দুঃখ দিতে থাকে যার ফলে আমাদের মস্তিষ্ক ব্যাহত হতে থাকে এবং আমরা সেই সব মানুষের থেকে দূরে সরতে থাকি। তবুও সেই ব্যক্তিটি কোনভাবেই বোঝার চেষ্টা করে না বা বোঝেনা যে তারা আমাদের মানসিক অত্যাচার করছে। এমনকি তাদের যদি বলা হয় বা শোধরানোর চেষ্টা করা হয় তবুও তারা এমন ভাব করতে থাকে যে তারা আমাদের সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করে না অথচ আমরাই উল্টে তাদের পরে খারাপ আচরণ এবং খারাপ ব্যবহার করি। এইসব অত্যাচারী মানুষ খুবই বুদ্ধিমান হয়ে থাকে এবং নিখুঁতভাবে তার কাজ কুবুদ্ধি ব্যবহার করে করতে থাকে।


যার ফলে এইসব ব্যক্তি তাদের নিজের দোষ না মেনে উল্টে আমাদেরকেই দোষী বলে চিহ্নিত করে দিতে পারে। আসলে এইসব ব্যক্তি খুবই স্বার্থপর এবং মতলবী হয়ে থাকে। এরা নিজের স্বার্থ ছাড়া অন্য কোন কিছুই বোঝে না যার ফলে এরা অন্যের মানুষের অশান্তির কারণ হয়ে বসে। অনেকে আবার ইচ্ছা করে বুঝেশুনে মানসিক অত্যাচার চালাতে থাকে। আসলে আমরা বাইরের মানুষ থেকে দূরে থাকতে পারলেও পরিবারের মানুষের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় খুব একটা চলতে পারি না। আর পরিবারের মানুষেরা যখন আমাদের মানসিক অত্যাচার করতে থাকে তখন আমাদের সেই মানুষটার থেকে দূরত্ব বজায় থাকা অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে পড়ে। কিন্তু আমাদের মন এবং শরীর সম্পর্কযুক্ত তাই আমাদের মানসিক অত্যাচারের ফলে মনের যে ক্ষতি হয় সেই মনের ক্ষতির প্রভাবে শরীরেরও ক্ষতি লক্ষ্য করা যায়। আর এর কারণে আমাদের জীবনে শরীরে বড়সড়ো ক্ষতি আমরা লক্ষ্য করতে পারি। তাই যেসব ব্যক্তি আমাদের মানসিক শান্তি নষ্ট করছে এবং মানসিক অত্যাচার করছে তাদের থেকে আমাদের দূরত্ব বজায় চলার চেষ্টা করতে হবে। যেন এইসব ব্যক্তি আমাদের মানসিক অত্যাচার করতে না পারে। নিজে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে হবে মানসিক এবং শারীরিকভাবে অনেক বেশি সুস্থ থাকার। কারণ আমরা মানসিকভাবে সুস্থ থাকলে তবেই শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পারবো এবং সুন্দরভাবে বাঁচতে পারব।


আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Coin Marketplace

STEEM 0.08
TRX 0.30
JST 0.035
BTC 109561.83
ETH 3847.28
USDT 1.00
SBD 0.52