দুর্গাপূজা ২০২৪। পর্ব : - ০২
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমরা কল্যাণী আইটিআই মোড়ের দুর্গা প্রতিমা দর্শন করে আবার হাঁটা শুরু করলাম। এবার যাবো আশেপাশের অন্য মন্ডপ গুলি দেখতে । আমরা আবার সেখানকার পুলিশদের জিজ্ঞাসা করে নিলাম কাছাকাছি পূজা মন্ডপ কোথায় আছে? তার নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সেই দিকে হাঁটা শুরু করলাম। কাছাকাছি আরেকটি সুন্দর মণ্ডপ আমরা দেখতে পেলাম। এই মন্ডপ ছিল সম্পূর্ণ সোনালী রঙের। এবং উপরের দিকে ছিল অনেকগুলি জাহাজ বা নৌকা। ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখলাম মাথার উপরে সুন্দর একটা বেশ বড় ঝুমুর। তার আলোতেই চারিদিকটা আলোকিত রয়েছে। আর চারিদিকে সুন্দর কিছু নকশা করা ছিল।
আমরা প্রতিমা দর্শন করে বেরিয়ে এসে দেখি সামনে একটি খাবারের দোকান। সেখানে চিকেন শর্মা পাওয়া যাচ্ছিল। আমি এর আগে কখনো চিকেন শর্মা খাইনি। তাই ভাবলাম আজকে একটু খেয়ে দেখি কেমন খেতে। আবেগে আপ্লুত হয়ে চিকেন শর্মা কিনে তো নিলাম, কিন্তু এর স্বাদ এতটাই খারাপ তা আমি আগে জানতাম না। আর এই চিকেন শর্মার ভেতরে কিছু একটা দিয়েছিল যার ঘ্রাণটা খুবই খারাপ। আমি জানিনা এটা খেতে এমনই নাকি পূজোর সময় বলে একটু খারাপ হয়েছে খেতে। যাইহোক তারপর আমরা আবার আস্তে আস্তে হেঁটে গেলাম অন্য একটি মণ্ডপের দিকে। চারপাশে বিভিন্ন রকমের জিনিস পত্রের দোকান বসেছে। আর আমার নজর পড়লো সেদিকেই থাকা কানের দুলের দিকে। বিভিন্ন রকমের সুন্দর সুন্দর কানের দুল ছিল সেখানে। আমি দেখতেই যাব এমন সময় দেখি আমার হাতটা ধরে উল্টোদিকে কেউ টান দিচ্ছে। তাকিয়ে দেখি আমার বড় মশাই, আমাকে সেই দুল গুলো দেখতে দেবেনা বা কিনে দেবে না সেই জন্য টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। আসলে আমার কাছে অনেক কানের দুল আছে সেগুলো আমি পড়ে শেষ করতে পারি না। তারপরেও আমার নতুনত্ব কানের দুল কিনতে খুব ভালো লাগে। সে বলল আগে বাড়িতে যে কানের দুল আছে সেগুলো পড়ে নষ্ট করো তারপর আরো কিনে দেবো। এ কথা বলেই সে আমাকে নিয়ে মণ্ডপের দিকে হাঁটা শুরু করল।
আমরা রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় সুন্দর লাইটিং দেখতে পেলাম। একটু হেঁটেই পৌঁছে গেলাম আরেকটি মণ্ডপের কাছে। এই মন্ডপ টি কিসের আদলে তৈরি করা আমি জানিনা। কিন্তু আমার কাছে এটি কার্টুনের ডিজনিল্যান্ড এর মত লাগছিল। ভেতরে ঢুকতেই একটু থমথমে পরিবেশ। চারিদিকে ড্রাগন এর মত বড় বড় সাপ হা করে আছে। এবং দৈত্যের মতো একটি মাথা আছে যার সামনে থেকে একটি সাপ বেরিয়ে এসেছে। যেকোনো ছোট বাচ্চা এখানে আসলে হয়তো একটু ভয় পেয়ে যেতে পারে। আমরা চারিদিকটা ভালো করে দেখে মায়ের প্রতিমা দর্শনে এগিয়ে গেলাম। অপরূপ সুন্দর প্রতিমা করেছে মায়ের। মায়ের মুখে সুন্দর মিষ্টি হাসি দেখে মনটা ভরে গেল।
বেশকিছু মন্ডপ রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে রাস্তার পাশেও দেখতে পেলাম। মন্ডপগুলি দেখতে গিয়ে অনেকটা পথ হাঁটা পড়ে গেছে। এবার পা টাও অনেক ব্যথা করা শুরু করেছে। তাই ভাবলাম এবার বাড়ির দিকেই যাওয়া যাক। আর প্রায় এক ঘন্টা পরেই সকালের প্রথম ট্রেন। এই প্রথম ট্রেনটা ধরেই বাড়ি ফিরব ভাবলাম। সেই মতো স্টেশনে এসে ট্রেনের অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিন্তু যেই প্রথম ট্রেন এসে আমাদের স্টেশনে দাঁড়ালো, এত পরিমান ভিড় ট্রেন দেখে আমরা আর উঠতেই পারলাম না। প্রতিটা স্টেশনে এতটাই পরিমাণ ভিড় ছিল যে ট্রেনগুলো সব ভোরেই আসছিল। ভেতরে একটুও পা ফেলার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না । আমরা প্রায় পাঁচ ছয়টি ট্রেনে উঠতে না পেরে ছেড়ে দিলাম। স্টেশনে বসে থাকতে থাকতেই ভোরের আলো ফুটে গেছিল। ট্রেনের ভিড় টাও এবার একটু কমে গেছে। তাই আমরা পরবর্তী ট্রেনে উঠে পড়লাম। অনেক কষ্টের পর অবশেষে বাড়িতে পৌঁছে গেলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
পুজো দেখতে যাবার অভিজ্ঞতা আপনি শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে। পরিবেশ ভালই লাগলো। কানের দুলের স্টক থাকা সত্ত্বেও কানের দুলের প্রতি লোভ এ যেন মেয়েদের জন্মগত অধিকার। চিকেন শর্মা ভালোই হয় আমি জানি না আপনি কেন অন্যরকম গন্ধ পেয়েছেন, এমনি দোকান থেকে কিনে আমি যতবারই খেয়েছি বেশ ভালই লেগেছে। পুজোর সময় বা মেলায় ভিড়ের মধ্যে বলে হয়তো অন্যরকম কিছু মিশিয়ে ছিল। বুঝতে পারছি না।