বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ২৩

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।


IMG_20230104_082547.jpg


তো আমরা গোপালগঞ্জ ছাড়ার পর অনেকটা সময় পার হয়ে গেল। তো গাড়িতে বসে বসে আমি আমার ফোনে গান শুনছিলাম। কিন্তু গান তো আর শোনার উপায় নেই। সবাই মিলে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা করছিলাম এবং সামনে যেসব ব্যানার গুলো আসছিল সেসব ব্যানারের ছবি তুলছিলাম। অর্থাৎ যেসব ব্যানারে দূরত্ব লেখা রয়েছে সেইসব ব্যানারের ছবিগুলো আমি তুলতে লাগলাম। একটা ব্যানার গেলে আমি কাকাকে জিজ্ঞাসা করি যে আমাদের আর কত কিলোমিটার যেতে হবে।


IMG_20230104_082826.jpg


আসলে জার্নিটা অনেক দীর্ঘ সময় হতে চলছিল। তাই গাড়িতে বসে বসে মাঝে মাঝে আবার আমি একটু মজার মজার কথাও বলছিলাম। তো ব্যানারে দেখতে পেলাম ঢাকা আর মাত্র ৯০ কিলোমিটার। বাংলাদেশের একটা সিস্টেম ভালো লেগেছে যে তারা প্রায় প্রতি তিন চার কিলোমিটার অন্তর অন্তর পোস্টে কিলোমিটার দিয়ে দিত। যাইহোক আমিও গননা করে নিতাম কতদূর পথ এসেছি কতটা সময়ে।



IMG_20230104_083721.jpg


তো কিছুক্ষণ পর কাকিমা পিছন থেকে একটা সেদ্ধ ডিম আমাকে দিল। তো তখন আমি সিদ্ধ ডিমটা খাওয়ার জন্য উপরের আবরণটা ফেলে দিচ্ছিল। যেহেতু আমাদের সাথে গাড়ির ড্রাইভার ও ছিল তাই উনাকে ফেলে আমরা খাচ্ছি এই জিনিসটা আমার একটু খারাপ লাগছিল। তাই আমি ড্রাইভার দাদাকে একটা রাস্তার পাশে ভালো জায়গা দেখে দাঁড়াতে বললাম এবং রাস্তার পাশে একটা সেভ জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভারকেও আমরা খাবার দিলাম।


IMG_20230104_083938.jpg


তো খাবার দাবার শেষ করে আমরা আবার পুনরায় রওনা দিলাম। তার প্রায় মিনিট চল্লিশ পর আমরা বড় রাস্তাতে এসে পৌছালাম। রাস্তাটা অনেক চওড়া ছিল। কিন্তু রাস্তা চওড়া থাকলেও গাড়ির গতিবেগ বেশি করা যাচ্ছিল না কুয়াশার কারণে। তখন ড্রাইভার দাদাকে জিজ্ঞাসা করলাম পদ্মা সেতু আর কত দূরে আছে?


IMG_20230104_090035.jpg


ড্রাইভার দাদা তখন আমাকে বলল পদ্মা সেতু যেতে আমাদের এখনো প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগবে। তো যাই হোক আমি বাইরের আবহাওয়াটাকে উপভোগ করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর আমরা সামনে একটা বড় ব্যানার দেখতে পেলাম। সেখানে লেখা ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক। তখন ড্রাইভার দাদা আমাদের বলল এখানেই পদ্মা সেতুর টোল দিতে হবে আমাদের।


IMG_20230104_090116.jpg


আসলে আমার একটু ভুল ধারণা হয়েছে যে এখানেই পদ্মা সেতুর টোল দিতে হবে। আসলে না এটা মহাসড়কের টোল দিতে হবে এবং এই মহাসড়কের টোল দেওয়ার পর আমাদের আরো প্রায় ১৫ মিনিট সামনে এগিয়ে যেতে হবে।


IMG_20230104_090314.jpg

কিছুক্ষণ পর দূর থেকে দেখতে পেলাম পদ্মা সেতুর টোল। তো আমি ড্রাইভার দাদাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে এই পদ্মা সেতুর কত টাকা দেওয়া লাগে। যাইহোক উনি আমাকে একটা এমাউন্ট বলেছিলেন সেটি এখন আমার আর মনে নেই।



IMG_20230104_093308.jpg


তো আমি খুব এক্সাইটেড ছিলাম। কারণ এই পদ্মা সেতু নিয়ে সারা বাংলাদেশে অনেক গর্ববোধ করে এবং টোল শেষ হবার পর আমরা আস্তে আস্তে পদ্মার ব্রিজের উপরে উঠতে লাগলাম।


IMG_20230104_095830.jpg


আসলে অনেক বেশি কুয়াশা থাকার কারণে আমরা পদ্মা নদীটি দেখতে পারছিলাম না ঠিক ঠাক করে। যাই হোক মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু পদ্মা সেতু দিয়ে পার হতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছিল।


IMG_20230104_100411.jpg


কারণ এই পদ্মা সেতু বাংলাদেশ নিজ প্রচেষ্টায় তৈরি করেছিল। এটি বাংলাদেশের জন্য খুবই একটা গর্বের বিষয়। যাইহোক পদ্মা শুধু পার করে আমরা অনেকটা দূরে চলে আসলাম।


IMG_20230104_100425.jpg


ঢাকায় ঢোকার আগে আমাদের পুনরায় আরেকটা নদী পার হতে হল। নদীটির নাম আমার জানা ছিল না। আপনাদের কারো জানা থাকলে কমেন্ট অবশ্যই জানাবেন।


IMG_20230104_101433.jpg


তো নদীটির পার করে আমরা প্রথম ঢাকায় প্রবেশ করলাম। আসলে ঢাকা থেকেও আমাদের অনেকটা পথ জার্নি করতে হবে। তো সামনে এগোতে আমি একটা ব্যানারে দেখতে পেলাম যে বাঁদিকে রূপগঞ্জ যাওয়ার রাস্তা।


IMG_20230104_101600.jpg


তো ঢাকায় ঢুকতেই আমার চোখে একটা হস্তকর্ম দেখতে পেলাম। আমার মনে হয় এটি মুক্তিযুদ্ধের একটা ভাস্কর্য। আমাদের সকলেরই জানা আছে যে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের বহু লোক প্রাণ হারিয়েছিল।


IMG_20230104_102516.jpg


তো আমরা সামনে এগোতে এগোতে রাস্তার দুপাশে বড় বড় ইটের ভাটাও দেখতে পেলাম। আসলে বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। আর এজন্য নদীর পাশে বড় বড় ইট কারখানা গড়ে উঠেছে।


তো রাস্তায় যেতে যেতে বাংলাদেশের আরেকটি বাস দেখতে পেলাম যেটি বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্য ধরে রাখে। হ্যাঁ বাংলাদেশের দ্বিতল বিশিষ্ট সেই বাসটির কথাই বলছি। আসলে আমি অনেক নাটকে বাংলাদেশের ঢাকা শহরে এই ধরনের বাস দেখেছি। আজ ভাগ্যক্রমে বাসটির দেখা পেলাম আমি।



IMG_20230104_102656.jpg


তো কিছুক্ষণ পর আমরা আবারো কিছু খেয়ে নিলাম এবং খাবারদাবার শেষ করতে করতে আমরা বাংলাদেশের নরসিংদী জেলায় প্রবেশ করলাম। কিন্তু এই নরসিংদী জেলা হতে সিলেটের দূরত্ব এখনও ২১০ কিলোমিটার।



তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।


সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 55971.81
ETH 2362.70
USDT 1.00
SBD 2.32