জল দূষণ।
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আসলে আজ আমি যাদের সম্পর্কে কথা বলবো তারা আমার ভগবান। আসলে আজ আমি জল দূষণ সম্পর্কে আমার কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমরা সকলে জানি জলের অপর নাম জীবন। জল ছাড়া আমাদের অস্তিত্ব অকল্পনীয়। জল ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত বেঁচে থাকতে পারিনা। এই পৃথিবীর সব প্রাণী জলের উপর নির্ভরশীল। আমাদের পৃথিবীতে অধিকাংশ স্থান জুড়ে রয়েছে জলের আঁধার। পৃথিবীতে ভূপৃষ্ঠের সংখ্যা খুবই কম। আমাদের শরীরের বেশিরভাগ স্থান জুড়ে রয়েছে জল। এই পৃথিবীর উদ্ভিদ থেকে শুরু করে সকল প্রাণী প্রতিনিয়ত জলের প্রয়োজন হয়।
আসলে জল ছাড়া এক মুহূর্ত থাকা সম্ভব নয়। আর আমরা সৃষ্টির সেরা জীব হয়েও এই জলকে দূষিত করছি বিভিন্নভাবে। আসলে পৃথিবীর বেশিরভাগ রোগ জলের মাধ্যমে ছড়ায়। তাইতো এই দূষিত জল গ্রহণ করে বিভিন্ন প্রাণী মারা যায়।
মানুষ খুবই স্বার্থপর। যে জল আমাদের জীবন বাঁচায় সেই জলকেই মানুষ বিভিন্নভাবে দূষিত করে। এছাড়া মানুষ দিন দিন জলের আধান নষ্ট করে ফেলছে। অর্থাৎ বিভিন্ন পুকুর ভরাট করে বসবাস উপযোগী জমি তৈরি হচ্ছে। এর ফলে জলের আধার দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে মহামারী বন্যা। আর ফলে প্রতিবছরই জল দূষিত হচ্ছে।
এছাড়াও বহু মানুষ মৃত জীবজন্তুর জলে ফেলে দেয়। এর ফলে জল দূষিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন রোগ জীবাণু জলে মিশে যাচ্ছে। আর এর ফলে নদীর জল ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে যাচ্ছে। আর এই জল দূষণের ফলে পেটের রোগ হৃৎপিণ্ডের রোগ বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়। পেট্রো রাসায়নিক শিল্পে, পলিথিন ওপ্লাস্টিক শিল্পে, জ্বালানি শিল্পে, খনিজ তেল পরিশোধন শিল্পের ব্যবহার্য পদার্থ জলের নিক্ষেপ করার ফলে জল দূষিত হয়।
এছাড়াও বর্তমানে চাষের ক্ষেতে বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক সার, কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে জলের বিভিন্ন প্লাঙ্কটন নষ্ট হয়ে যায়। আর এর ফলে জল দূষিত হয়।
এছাড়া বিভিন্ন বড় বড় কলকারখানা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠে এবং কলকারখানা থেকে দূষিত বর্জ্য পদার্থ এইসব নদীতে ফেলে দিচ্ছে। ফলে এই নদীর জল সমুদ্রে মহাসমুদ্রে পতিত হচ্ছে। প্রতি বছর বহু সংখ্যক জলজ প্রাণী এই জল দূষিত হওয়ার কারণে মারা যাচ্ছে। এই জল দূষিত হলে প্রধানত জলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়।
আর অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে জলে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রাণী অক্সিজেনের অভাবে মারা যায়। এর ফলে আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও গাছ কাটার ফলে দেশের উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বৃষ্টির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। আগের কার মানুষ বৃষ্টির জল ধরে খেত। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসিড বৃষ্টি হওয়ার কারণে সেই জলও বসবাস অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। এই বৃষ্টির জল দূষিত হওয়ার প্রধান কারণ হলো কলকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া।
মানুষের এই কুকর্মের কারণে সারা পৃথিবী ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে পৃথিবী থেকে বহু প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও মানুষের সৃষ্টি পলিথিন জলে খেলার ফলে জলের গতি মুখ পরিবর্তন হচ্ছে। দিনদিন নদীর ছোট হতে হতে খালে পরিণত হচ্ছে। আর এর ফলে বিভিন্ন প্রাণী, মাছ ইত্যাদি সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
এখনো সময় আছে আমাদের এই সকল বদ অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করে নদীকে রক্ষা করতে হবে এবং নদীর জল যাতে দূষিত না হয় সেজন্য কোন বর্জ্য পদার্থ নদীতে ফেলা যাবে না। আর সরকারকে কঠোর হস্তে এসব কলকারখানাগুলোকে বন্ধ করতে হবে। অথবা কলকারখানা গুলোকে অন্য কোন জায়গায় পরিবর্তন করে নিয়ে যেতে হবে।
আমরা মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। তাই আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব আরেকবার প্রমাণ করে হাতে হাত লাগিয়ে জল দূষণকে নির্মূল করতে হবে। আর আবারও বলতে হবে মানুষের দ্বারা সবই সম্ভব। তাই জল দূষণ সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
মানুষ প্রতিনিয়ত যেভাবে পরিবেশ দূষিত করছে এভাবে এক সময় পরিবেশ মারাত্মকভাবে ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। তখন মানুষেরও বেঁচে থাকা বেশ কষ্টকর হয়ে যাবে। এখনই তো বৃষ্টি কমে গিয়ে গরমের পরিমাণ যত বেড়ে গিয়েছে তার ফল রীতিমতো আমরা ভোগ করতে শুরু করেছি। জানিনা এর থেকে পরিত্রাণ কবে পাওয়া যাবে। খুব ভালো লাগলো দাদা আপনার লেখাগুলো পড়ে।
মানুষ যদি এখনো বুঝতে না পারে তাহলে সত্যিই এই পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে।