খাবার নামক বিষ খাচ্ছি।
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আসলে আজ খাবার সম্পর্কে আমার কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আসলে বেঁচে থাকার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত সবসময় লড়াই করি। আসলে পৃথিবীতে শুধুমাত্র মানুষ একাই নয় সকল প্রাণীরা বেঁচে থাকার জন্য সব সময় লড়াই করতে থাকে। আসলে মানুষের জীবনে খাদ্য, বস্ত্র আর বাসস্থান এই তিনটি জিনিস যদি থাকে তাহলে হয়তোবা মানুষের তেমন কোন জিনিসের আর কোন প্রয়োজন নেই। আসলে মানুষের এই তিনটি চাহিদা হলো মৌলিক চাহিদা। আর এই মৌলিক চাহিদা এক এক প্রাণীদের ক্ষেত্রে এক এক ধরনের। আসলে মানুষ এত পরিশ্রম করে এত ইনকাম করে তার পিছনে একটি কারণ হলো তারা সঠিকভাবে এই মৌলিক চাহিদাগুলো সমাজ থেকে পূরণ করতে পারে যাতে। আমার কাছে মনে হয় এই তিনটি চাহিদার ভিতর সবথেকে মূল্যবান চাহিদাটি হলো খাদ্যের চাহিদা। আসলে অন্যান্য চাহিদাগুলো না হলেও মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে। কিন্তু খাদ্যের চাহিদা যদি মানুষ পূরণ করতে না পারে তাহলে তারা কখনোই বেঁচে থাকতে পারবে না।
আসলে সকল কিছুর মূলেই রয়েছে খাদ্য। আমাদের পৃথিবীতে খাদ্যের তুলনায় মানুষের সংখ্যা অতিরিক্ত হারে বেশি। এই বেশি সংখ্যক মানুষের জন্য প্রয়োজন হয় অতিরিক্ত খাদ্য। আসলে প্রাচীনকালে মানুষের সংখ্যা কম ছিল এবং খাদ্যের পরিমাণ বেশি ছিল। কিন্তু দিন দিন দ্রুত হারে মানুষের সংখ্যা এত বৃদ্ধি পাচ্ছে যে দুটোই যেন মনে হচ্ছে বিপরীত মুখে হচ্ছে। অর্থাৎ আগে যেমন খাদ্য বেশি ছিল মানুষ কম ছিল। আর এখন খাদ্য কমছে এবং মানুষ বাড়ছে। আর অতিরিক্ত মানুষের জন্য প্রয়োজন হয় অতিরিক্ত খাদ্য। আর অতিরিক্ত খাদ্যের জন্য বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে কৃষি পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বহুকাল থেকে। আসলে এখানে আমি হাইব্রিড জাতের খাদ্যের কথা বলছি। এই হাইব্রিড জাতের খাদ্য বাজারে আসার ফলে খাদ্যের পরিমাণ অনেকটা বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
আগেকার সময়ে আমরা এক বিঘা জমি হতে যে পরিমাণ ধান পেতাম সেই তুলনায় এখনকার সময়ে ওই এক বিঘা জমি হতে আমরা পূর্বের প্রায় চার পাঁচগুণ বেশি ধান পেয়ে থাকি। অর্থাৎ এই খাইব্রিজ জাতীয় খাদ্য যদি বাজারে না আসতো তাহলে আমাদের পৃথিবীতে খাদ্য অভাব অর্থাৎ খাদ্য সংকট দেখা দিত। আর খাদ্য সংকটের ফলে আমরা মানুষ প্রায় পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যেতাম। আসলে বিজ্ঞানের একটি বড় আবিষ্কার হলো এই হাইব্রিড জাতীয় ফসল উৎপাদন। কিন্তু একদিক থেকে কিন্তু খাদ্যের গুণাগুণ মান অনেকটা কমে গেছে এই হাইব্রিড জাতীয় খাদ্য উৎপাদনের ফলে। অর্থাৎ খাদ্যের গুণাগুণ অনেকটা কমে গেছে এই হাইব্রিড জাতীয় ফসলের। আসলে বর্তমান সময়ে অতিরিক্ত ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকেরা জমিতে বিভিন্ন প্রকার সার, কীটনাশক ব্যবহার করে থাকে।
আসলে এই সার এবং কীটনাশক ব্যবহারের ফলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও ফসলের গুনাগুন কমে যায় এবং ফসলে বিভিন্ন বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। আর এই বিষক্রিয়ার ফলে বিভিন্ন উপকারী পোকামাকড় পৃথিবী থেকে দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ আমরা কেঁচো কে প্রাকৃতিক নাঙ্গল বলে থাকি। কিন্তু অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটি থেকে এই কেঁচো মারা যায়। ফলে মাটির ভিতরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যায়। এছাড়াও ফলের ভিতরে বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ব্যবহারের ফলে ফলের উৎপাদন কিন্তু খুব বেশি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এসব কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক রোগের সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ এই ফলমূল যখন মানুষ খায় তখন মানুষের শরীরে এই কীটনাশকের বিষক্রিয়ে দেখা যায়।
আসলে আগে মানুষের গড় বয়স কিন্তু অনেক বেশি ছিল। কিন্তু দিন দিন এসব কীটনাশক জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে মানুষের গড় আয়ু দিন দিন কমে যাচ্ছে। এছাড়াও মানুষের শরীরে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন নতুন রোগের জীবাণু। আসলে মানুষ এখন কীটনাশক ছাড়া খাবার কোথাও খুঁজে পায় না। আসলে এখন সেই মাদার গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এখানে মাদার গাছ বলতে কিন্তু অরিজিনাল গাছকে বোঝানো হচ্ছে। হাইব্রিড গাছকে বোঝানো হচ্ছে না। এছাড়াও এসব হাইব্রিড জাতের ফসলের ফলে অনেক প্রাচীন ফসল আমাদের পৃথিবী থেকে এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আর দিন দিন যদি আমরা এভাবে চলতে থাকি তাহলে হয়তো বা আমরা আর বিশুদ্ধ খাবার কখনোই পাবো না। এছাড়াও মশলা শিল্পেও বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম মশলা প্রবেশ করেছে। আসলে বাজার থেকে আমরা এখন আর সেই বিশুদ্ধ খাবারের কথা দিন দিন ভুলে যেতে চেষ্টা করছি।
তাইতো এখনকার সময় মানুষ খাদ্য সম্পর্কে অনেকটা বেশি সচেতন হয়ে গেছে। অর্থাৎ মানুষ যেখানে পারছে সেখানেই বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি উৎপাদন করছে। এছাড়াও বাড়ির ছাদের উপরে মানুষ বিভিন্ন ধরনের ফসল তৈরি করছে। এখন শিক্ষিত মানুষরাও কৃষকদের মতো বাড়ির ছাদে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি উৎপাদন করে। আসলে কোন উপায় নেই কিন্তু। কারণ কৃষিজ এই পণ্য অর্থাৎ কাঁচামাল বেশিদিন টাটকা রাখার জন্য কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা সেইসব কাঁচামালে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করে। যার ফলে সেসব কাঁচামাল বহুদিন একদম টাটকা সতেজ থাকে। কিন্তু এসব সবজি যদি আমরা বাড়িতে খাই তাহলে এই কীটনাশক আমাদের শরীরে প্রবেশ করে মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে এমনকি এসব খাবার খাওয়ার ফলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়। তাইতো বর্তমানে খাদ্য সম্পর্কে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।
আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
সব বিষ।খাদ্যের মাধ্যমে আমাদের শরীরে নিরব ঘাতক বিষ ঢুকে যাচ্ছে। আমরা সবাই নিরুপায় কিচ্ছু করার নেই।সবজি কিনে খাওয়া মানে বিষ কিনে খাওয়া।তাই তো আমাদের খাদ্যে নিরাপত্তার দায়িত্ব কিছু হলেও আমাদেরকে নিতে হবে।বাড়ির ছাদে কিংবা আঙ্গিনায় সবজি চাষ করে কিছু টা হলেও বিষ খাওয়া থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।