বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ৩৭steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।


IMG_20230107_102833.jpg


যেহেতু আগের দিন সাদা পাথরের ওই জায়গাটিতে আমাদের বেশি কষ্ট হয়েছিল। তাই আমরা সেদিন খুব টায়ার্ড ছিলাম। তাই বাড়িতে এসে পরের দিন প্ল্যান করলাম যে বাইরে আজ কোথাও ঘুরতে বের হব না। তাই আমরা সিলেটের আশেপাশে মার্কেট গুলোতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের কেনাকাটা করতে লাগলাম। যেহেতু সিলেটের চা বিখ্যাত। তাই আমরা অনেক প্রকারের চা কিনে নিলাম। যদিও অন্যান্য জায়গা অপেক্ষায় এখানে চায়ের দামটা একটু বেশি। আর জ্যেঠুর বাড়ির থেকে সবাই বলে দিয়েছিল যে আসার সময় তোরা চা নিয়ে আসবি।


IMG_20230107_102804.jpg


তাই আমরা প্রায় ১০ কেজির মত চা কিনলাম। আসলে অনেক মানুষকে এই চা দিতে হবে। আর এজন্য আমরা অনেক বেশি চা কিনে নিলাম। তো সেদিন আমরা বাড়িতে বসেই বাইরের বিভিন্ন ধরনের খাবার খেলাম। এরপর আমাদের পরের দিন প্লান হলো যে আমরা সিলেটের ভিতর হযরত শাহাজালাল এর মাজারে যাব। আসলে এই জায়গাটি নাকি সিলেটের একটি বিখ্যাত জায়গা। এখানে বাংলাদেশের অনেক গুণী ব্যক্তিদের কবরস্থান রয়েছে।


IMG_20230107_102906.jpg


IMG_20230107_102911.jpg


যেহেতু আমরা এদিন শুধুমাত্র এই এক জায়গাতেই যাব তাই আমরা একটু দেরি করেই বাড়ি থেকে বের হলাম। আসলে বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে জ্যাম অনেক বেশি। তাই আমাদের এই অল্প পথ আসতে অনেকটা সময় লেগে গেল। এই মাজারের অনেকটা আগে আমাদের গাড়ি পার্কিং করতে হয়েছিল। যেহেতু মাজারের সামনে রাস্তায় এই গাড়ির প্রবেশ নিষেধ তাই আমাদের পায়ে হেঁটে মাজারের দিকে যেতে হয়েছিল এবং এই মাজারে যাওয়ার রাস্তার দু'পাশে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রীর দোকান গড়ে উঠেছে।


IMG_20230107_102936.jpg


বিশেষ করে মুসলিম ভাইদের জন্য বিভিন্ন ধরনের নামাজের জিনিসপত্র এখানে পাওয়া যায়। আমরা সবাই মিলে তাই সামনের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। দূর থেকে দেখতে পেলাম যে এই হযরত শাহজালাল এর মাজার এর প্রধান গেট। আসলে গেটটি কিন্তু একদম রাস্তার মুখে অবস্থিত। তাই এই রাস্তায় প্রবেশের প্রথম থেকেই আমরা এই গেটটি দেখতে পেলাম। আসলে এই মাজারে যাওয়ার রাস্তাটি কিন্তু খুবই পরিষ্কার। একটা বিখ্যাত জায়গার প্রবেশের রাস্তা পরিষ্কার হবে না এমন তো কখনো হয় না।


IMG_20230107_102945.jpg


এরপরে আমি বাদে সবাই মিলে এই প্রধান গেটের সামনে দাঁড়িয়ে একটা ছবি তোলার জন্য আমাকে অনুরোধ করল। আসলে আমার এই ঘুরতে আসার পুরো সময়টাই এদের ছবি তুলতে তুলতে পার হয়ে গেছে। যদিও আমি এদের সবার ছবি তুলে আমি নিজে একটা সেলফি নিয়ে নিলাম। আসলে আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করছি যে বাংলাদেশের এমন একটা মাজারে আমি ঘুরতে পেরে। আসলে এই মাজারে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল লোক এই মাজার পরিদর্শন করতে আসে।


IMG_20230107_103001.jpg


মাজারের প্রথম ঢুকেই দেখি প্রধান বিল্ডিংয়ের পাশে কয়েকটা বিল্ডিং এর উপরে অগণিত কবুতর। আসলে এই দৃশ্যটা আমার মন কেড়ে নিল। আমরা সবাই জানি এই কবুতরকে পবিত্রতার প্রতীক বলে ধরা হয়। আর এমন একটা পবিত্র জায়গায় এত কবুতর দেখে আমার খুবই ভালো লাগছিল। এরপর আমরা হেঁটে কবুতরের প্রধান জায়গাটিতে গেলাম। আসলে এখানে একটি বড় খাঁচার ভিতর কবুতরের জন্য খাবারের শস্য দেওয়া ছিল। আসলে এটি মাজারের কর্তৃপক্ষের একটি ভালো উদ্যোগ।


IMG_20230107_103002.jpg


এখানে এই কবুতর নির্ভয়ে তাদের খাবার গ্রহণ করতে পারে। যদিও এখানকার কবুতরগুলো কিন্তু মোটেও কোন মানুষকে ভয় পায় না। কারণ এখানকার মানুষ এইসব কবুতরের কোন ক্ষতি করে না। বরঞ্চ এদের যত্নের কোন ত্রুটি রাখেনা। আমরা অনেক কাছে গেলাম কবুতরের। আসলে এখানে বিভিন্ন ধরনের কবুতর আমরা দেখতে পেলাম। এই কবুতর কিন্তু দিন দিন সংখ্যায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।


IMG_20230107_103003.jpg


এরপর কবুতরের খাওয়া শেষ হয়ে গেলে তারা ঝাঁকে ঝাঁকে যখন উড়ে যাচ্ছিল তখন সত্যিই আমার খুব ভালো লাগছিল। তাই আমি দ্রুত আমার পকেট থেকে ফোনটি বের করে এই উড়ন্ত পায়রার ছবিটি তোলার জন্য চেষ্টা করলাম। যদিও ছবিগুলো ভালো হয়নি। তবুও আমি চেষ্টা করেছি এই উড়ন্ত কবুতরের ভালো একটা ছবি তোলার জন্য।


20230107_103102.jpg

IMG_20230107_103134.jpg


এরপর আমরা আরেকটু ভিতরে ঢুকতে গিয়েই দেখি যে একটা ঘরের ভিতরে বড় বড় পাত্র রয়েছে। আসলে এই পাত্র গুলো এতই বড় যে এই এক এক পাত্রের ভিতরে প্রায় ১০০ থেকে ২০০ লোকের খাবার অনায়াসেই তৈরি করা যায়। আসলে এই পাত্রগুলোতে এখনো খাবার তৈরি করা হয়। মুসলিম ভাইয়েদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এখানে এই পাত্রতে খাবার তৈরি করে গরিব মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়। যদিও কোন ব্যক্তি মানত করে তাহলে তারাও তাদের পয়সায় এই পাত্রের তৈরি খাবার গরিব মানুষের মাঝে বিতরণ করতে পারবে।


ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 14/11/2022


তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।


সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 11 months ago 

বাংলাদেশের সিলেটের এই পর্বটা আমার কাছ বেশ দারুণ লেগেছে দাদা। হযরত শাহজালাল এর মাজারে আমার কখনো যাওয়া হয়নি। এবং আপনার পোস্টের মাধ‍্যমেই প্রথম দেখলাম। এবং এই মাজারের কবুতর এর পাশাপাশি কিন্তু অনেক বড় সাইজের কচ্ছপও আছে। এবং সিলেট থেকে দেখছি অনেক টা চা কিনেছেন।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

সেই দীর্ঘদিন ধরে আপনি এক এক করে আমাদের মাঝে বাংলাদেশ ভ্রমণের পর্বগুলো দেখিয়ে চলছেন। বাংলাদেশ ভ্রমণ করতে এসে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আপনি ক্যামেরা বন্দি করেছিলেন এবং সেই সমস্ত জায়গার ফটোগ্রাফি গুলো এবং বেড়ানোর অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে এভাবেই তুলে ধরছেন। আজকে ৩৭ তম পর্ব দেখতে পেরে বেশ ভালো লাগলো। মাঝে মাঝে মনে হয় ক্যামেরাটা হয়তো আপনি হাত থেকে কখনোই সরান নেই যেখানেই গেছেন সবগুলা ক্যামেরা বন্দি করার চেষ্টা করেছেন। পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.031
BTC 60380.95
ETH 2623.05
USDT 1.00
SBD 2.55