মায়ের পূজা। কবিতা নং :- ৫৬
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা এবং আপনাদের আশীর্বাদে আমিও সুস্থ আছি। দেখতে দেখতে আজ আপনি আপনাদের সাথে আমার লেখা কবিতা পোস্ট করলাম । আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আসলে আমরা বাঙালি হিন্দুরা সারা বছর এই মায়ের আসার জন্য অপেক্ষায় থাকি। আসলে আমি দুর্গাপূজার কথা বলছি। বাঙালি অপেক্ষা করে এই দুর্গাপূজার জন্য। আসলে দুর্গাপূজা আমাদের বাঙালির একটা আবেগের পূজা। বাঙালি পুরো বছরটাই অপেক্ষা করে কখন এই দুর্গাপূজা আসবে। আসলে শুধু বয়স্করাই নয় ছেলে মেয়ে বাচ্চাকাচ্চা থেকে সবাই এই পুজোর জন্য মেতে ওঠে। তাই পুজোকে ভিত্তি করে তারা নতুন জামা কাপড় কেনা শুরু করে পুজোর প্রায় এক মাস আগে থেকে। কারণ আমরা ছোটবেলা থেকেই জানি যে সারা বছর কোন জামা কাপড় না পেলেও পুজোর সময় আমরা নতুন জামা কাপড় পাবো।
তাই সারা বছর বিশেষ করে আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন অপেক্ষা করতাম কবে পুজো আসবে আর আমাদের তখন নতুন জামা কাপড় হবে। পুজোর আগেই চারিদিকে যখন কাশফুল ফোটে তখন মনে হয় পুজোর গন্ধ এসে গেছে। আসলে কাশফুল যখন ফোটে তখন আমরা সবাই বুঝতে পারি যে আর কিছুদিনের মধ্যেই পুজো শুরু হয়ে যাবে। আর এজন্যই আমরা বাঙালিরা এই পূজোতে সবথেকে বেশি আনন্দ করি। আসলে পুজোর প্রায় এক মাস আগে থেকেই বিভিন্ন প্রস্তুতি চলে এই পুজোকে লক্ষ্য করে।
এছাড়াও বড় বড় মন্দির গুলো সাজসজ্জায় মেতে উঠে। আসলে আমাদের কলকাতাতে প্রতিবছর বিভিন্ন বড় বড় পূজা অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন জায়গাতে। আরেকটা বিষয় যে পৃথিবীর সব জায়গার ভিতরে আমাদের কলকাতায় দুর্গাপূজার জন্য বিখ্যাত। কারণ আমাদের কলকাতার মতো এই দুর্গাপূজো আর কোথাও অনুষ্ঠিত হয় না এবং এরকম বড় পূজা আর কোথাও দেখা যায় না। যদিও এই পুজোর জন্য বহু লোকজন পরিশ্রম করে বিভিন্ন বড় বড় মন্দিরের থিম তৈরি করে। আসলে আমাদের কলকাতাতে পুজোর প্রায় তিন চার মাস আগে থেকে পুজোর কাজকর্ম শুরু করে দেয় বাঙালিরা।
এই সময়ে আমরা যখন স্কুলে যেতাম তখন দেখতাম স্কুলের মাঠে অনেক বাঁশ দিয়ে এই পুজো মন্দির তৈরির জন্য কাজকর্ম চলছে। আমরাও স্কুলের টিফিনের সময় এই বাঁশের স্তম্ভের ভিতর দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করতাম এবং বাঁশ দিয়ে উপরে ওঠার চেষ্টা করতাম। আসলে বড় হলেও সেই পুজো আসলে আবার শৈশবের কথা মনে পড়ে। কারন আমরা এখন থেকে শৈশবে এই পূজাকে বেশি উপভোগ করতাম এবং বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করতাম। এছাড়া ওই পূজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় মেলার সৃষ্টি হয়। মেলায় গিয়ে বন্দুক কেনা এটা তো আমাদের একটা কমন জিনিস। আসলে বন্দুক কিনে সারাদিন ওই বন্দুক নিয়ে বন্ধু-বান্ধবের সাথে খেলা করে বেড়াতাম।
আর যখন পূজো আসতো তখন আমরা ভোরে উঠে স্নান করে নতুন জামা কাপড় পড়ে সারাদিন পূজা মন্ডপে ঘুরে বেড়াতাম। তখন আমাদের হাতে হয়তোবা বেশি টাকা ছিল না। কিন্তু আনন্দ ছিল প্রচুর। আমরা সারাদিন মেলার ভিতরে দৌড়াদৌড়ি করতাম এবং বিভিন্ন খাবার-দাবার কিনে খেতাম। অবশ্য মা-বাবা প্রতিদিন আমাদের টাকা দিতেন এবং আমরা সেই টাকা একদিনের ভিতর শেষ করে ফেলতাম। আসলে কোন খাবার কিনতে গেলে আমরা চার পাঁচ জন এর খাবার একসাথে কিনতাম। এছাড়াও সবাই মিলে এক জায়গায় বসে খেতাম এবং বিভিন্ন ধরনের গল্প করতাম। আসলে বাঙ্গালীদের জীবনে মনে হয় দুর্গা পূজা সব থেকে একটি বড় আনন্দের দিন।
✠ মায়ের পূজা ✠
পুজোর গন্ধ শেষ হলেও,
মা তোমাকে ভুলি নাই।
আছো সবার হৃদয়ের মাঝে,
তোমাকে ছাড়া কোন গতি নাই।
তুমি মাগো জগদ্ধাত্রী,
তুমি এই পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা।
তোমায় ছাড়া গাছের পাতাও,
মোটেও নড়ে চড়ে না।
এই পৃথিবীতে অন্যায় অবিচার,
যখন যায় খুব বেড়ে।
তুমি আসো প্রলয় রূপে,
মা কালী রূপে ধরা ধামে।
তোমার মাগো বহুরূপ,
সব রূপেই তুমি আমাদের মা।
তোমায় ছাড়া নিজেদের অস্তিত্ব,
কখনো ভাবতে পারিনা।
মায়ের মত তুমি আদর করো,
অন্যায় পথে গেলে শাসন করো।
ন্যায় অন্যায়ের জ্ঞান দাও,
কিন্তু অবহেলা করো না।
এই পৃথিবীর সকল সুখ,
মাগো তোমার আঁচলের পরশে।
তুমি যদি মা ভালো না বাসো,
তাহলে ঘৃণা করবে সবাই আমারে।
সারা বছর অপেক্ষায় থাকি,
কখন আসবে তুমি মা।
তোমার আশায় প্রহর কাটে না,
তুমি কি থেকে যেতে পারো না।
সারা বছরের একটি সময়ে,
তোমার আসার সময় হলে।
পৃথিবী যেন প্রাণ ফিরে পায়,
তোমার চরণের স্পর্শ পেয়ে।
এক এক রূপে এই পৃথিবীতে,
তুমি বারবার আসো ফিরে।
তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকবো,
আমরা সারা বছর ধরে।
আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে আজকের পোস্টটি । ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করতে ভুলবেন না।
আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
আপনার কবিতা পড়ে খুব ভালো লাগলো। বেশ সুন্দর কবিতা লিখেছেন। আপনি ঠিক বলেছেন এই পৃথিবীতে অন্যায় অবিচার যখন যায় খুব বেড়ে তখন প্রলয় রূপে মা দুর্গা। কবিতাটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।