বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ৩৮steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।


IMG_20230107_103153.jpg



আসলে এই হযরত শাহজালাল মাজারে প্রায় প্রতিদিন হাজার হাজার লোকের সমাগম দেখা যায়। এখানে শুধু মুসলিম নয় এখানে সকল ধর্মের লোকরা এই মাজারে আসে তাদের মনোকামনা পূরণের জন্য। আসলে আমার মনে হয় কোন ধর্মের ভিতরে কোন বাঁধা রাখা উচিত নয়। কারণ ধর্ম কিন্তু সবার। আসলে এইসব মহান ব্যক্তিদের জন্যই এখনো পৃথিবীতে শৃঙ্খলার ভিতরে রয়েছে। আমি একটা জিনিস দেখে অবাক হলাম যে এখানে মুসলিম লোক থেকে অন্যান্য ধর্মের লোকের সংখ্যা একটু বেশি। কারণ সব ধর্মের মানুষ চেষ্টা করে এইসব পবিত্র জায়গা আসার জন্য।



IMG_20230107_103251.jpg


এরপরে এই মাজারের সবচেয়ে একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হল মাজারের ভিতরের একটা বড় পুকুর। এই পুকুরের ভিতরে অনেক বড় বড় মাছ রয়েছে। আসলে লোকের মুখে কথা শোনা আর নিজের চোখে দেখার ভিতরে অনেকটা পার্থক্য রয়েছে। প্রথমে আমি পুকুরের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ পর পাশেই আমরা এই পুকুরটিকে দেখতে পেলাম। প্রথম অবস্থায় পুকুরে এসে আমার একটু মন খারাপ হয়ে গেল।

IMG_20230107_103337.jpg


কারণ এই পুকুরে নাকি অনেক মাছ রয়েছে কিন্তু আমি প্রথম অবস্থায় একটা মাছও দেখতে পেলাম না। আসলে আমাদের সাথে সবাই মন খারাপ করে চারিদিকটা ঘুরে দেখতে লাগলো। হঠাৎ করে কিছুক্ষণ পর আমি একদল লোককে পুকুরের একসাইডে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। তারা সবাই মিলে জোরে জোরে চিৎকার করছে এবং আনন্দের অনেকটা লাফালাফি করছে। কারণ পুকুরের ওই সাইডটাতে যখন রোদের আলো পড়েছিল তখন মাছগুলো জলের গভীর হতে ওই রোদের আলোতে ভেসে উঠেছিল।

IMG_20230107_103405.jpg



আসলে আমরাও তখন আর নিজেরা সেই জায়গায় স্থির থাকতে পারলাম না। দৌড়ে ঐ লোকেদের কাছে চলে গেলাম। গিয়ে দেখে প্রথম আমি আমার নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কারণ এই ধরনের মাছ এত বড় আমি এর আগে কখনো দেখিনি। অনেকে আবার পাশ থেকে বলছিল যে এই মাছগুলো নাকি গজাল মাছ। আসলে এই পুকুরে বহু বছর থেকে এই মাছগুলো রয়েছে। আসলে কোন মানুষ এই ধরনের মাছ শিকার করে না। তাই ক্রমশ এই মাছের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এই পুকুরে।

IMG_20230107_103803.jpg



এরপর আমরা সবাই মিলে ওই মাছগুলো দেখতে লাগলাম। আসলে এখানে বড় মাছের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। যদিও এখানে প্রচুর সংখ্যক ছোট ছোট এই মাছের পোনা রয়েছে। পাশ থেকে একজন বলছিল যে, এই পুকুরে নাকি অল্প কয়েকটা মাছ থেকে এত মাছের উৎপত্তি হয়েছে। আসলে এই পবিত্র জায়গায় এমন সুন্দর একটি পুকুর সেখানে এই মাছরা নিজের আনন্দে ঘুরে বেড়ায় এবং খাবার খায়। এরপরে আমরা পাশে দুজন ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখলাম।



IMG_20230107_103811.jpg



আসলে এসব ব্যক্তিরা পাশে কতগুলো ছোট ছোট মাছ নিয়ে সেই সব মাছ প্রায় তিন খন্ড করে বিক্রি করছিল। আসলে এই বড় মাছগুলো এসব ছোট ছোট মাছ খেয়ে থাকে। তাই তারা পাশে বসে এই ছোট মাছ বিক্রি করছিল এবং বিভিন্ন ধরনের লোক সেখান থেকে বাটি বাটিতে করে মাছ কিনে এই মাছগুলোকে খাওয়াচ্ছিল। আসলে এখানে একটা প্রবাদ রয়েছে যে, আপনার হাতের খাবার যদি এই বড় মাছগুলো খায় তাহলে আপনার নাকি মনোকামনা সব পূরণ হবে। মানুষ তার মনোকামনা পূরণের জন্য এই মাছগুলোকে খাওয়ানো চেষ্টা করে।

IMG_20230107_103814.jpg

আসলে আমার মনেও একটু কৌতুহল জাগলো। কিন্তু একটা জিনিস অবাক হলাম যে এই মাছগুলো এত বেশি দামে বিক্রি করছিল যে সাধারণ লোকেরা অনেকেই এই মাছগুলো কেনা থেকে দূরে সরে আসছিল। আসলে এই জিনিসটা আমার কিন্তু তেমন একটা ভালো লাগলো না। কারণ এই লোকগুলো পুরোটাই ব্যবসা করছিল। কারণ তারা প্রতিটা বাতিতে দুই থেকে তিন পিস পুটি মাছ কেটে কেটে বিক্রি করছিল। এছাড়াও প্রতি বাতির মূল্য ছিল ত্রিশ থেকে চল্লিশ টাকা। এটা শুনে আপনারা হয়তোবা অবাক হবেন।



IMG_20230107_104152.jpg



যাইহোক আমি উনাদের কাছ থেকে দুবাটি মাছ কিনলাম। এরপরে আমি এক এক পিস করে মাছ এই পুকুরে ফেলতেই মাছগুলো একদম হালুম করে সেই ছোট ছোট মাছগুলো খেয়ে ফেলছিল। আসলে একদিকে আমারও খুব ভালো লাগছিল। এদিকে তো আমার গিন্নি খুব খুশি। সে যখন মাছগুলোকে খাবার দিচ্ছিল সেও মনে মনে তার মনোকামনা পূরণের জন্য প্রার্থনা করছিল। যাইহোক আমাদের দেওয়া মাছ সবটাই খেয়ে নিল সেই বড় মাছগুলো। এরপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আমরা ওই মাজারের অন্যদিকে যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম।


ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 14/11/2022


তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।


সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 11 months ago 

আজকে আপনি আমাদের বাংলাদেশ ভ্রমণের বিশেষ একটি পর্ব নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন যেখানে শাহজালালের মাজারে বিশেষ বিশেষ পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন ফটোগ্রাফি এবং বর্ণনার সাথে। অবশ্য আমিও শুনেছি এ পুকুরে অনেক মাছ রয়েছে অনেকে ওখান থেকে ফটোগ্রাফি করে আনে এবং অনেক গল্প শোনায় আমাদের মাঝে। তবে প্রথম অবস্থায় মন খারাপ হলেও পরবর্তীতে মাছের দৃশ্য লোকজন যখন দেখেছিল এবং আনন্দ করছিল রোদের জায়গায় হয়তো এতে অনেকের মনের আনন্দ পূর্ণ হয়েছিল মাছ দেখতে পেরে। আর ওখানে সব সময় মানুষ চলাচল করে এটা শুনেছিলাম যেহেতু পীরের মাজার।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.031
BTC 60460.59
ETH 2624.41
USDT 1.00
SBD 2.55