সোর্স


আসলে বিভিন্ন মানুষের জীবনে বিভিন্ন ধরনের স্মৃতি সব সময় থেকেই থাকে। কোন কোন মানুষের জীবনে এই স্মৃতি সুখের আবার কোন মানুষের জীবনে এই স্মৃতি দুঃখের। ব্যক্তি ভেদে এক এক ব্যক্তিদের জন্য এক এক ধরনের স্মৃতি সব সময় থেকে যায়। আসলে সোজা কথায় বলতে গেলে এক এক শ্রেণী অর্থাৎ যারা ধনী তাদের স্মৃতি একরকম, যারা মধ্যবিত্ত তাদের স্মৃতি আর একটু কম এবং যারা গরীব তাদের স্মৃতিও পুরো সম্পূর্ণ আলাদা।


আসলে পৃথিবীতে এমন কোন লোক নেই যার জীবনে কোন স্মৃতি নেই। আসলে স্মৃতি আমাদের বাঁচতে শেখায় এবং সামনে এগিয়ে যেতেও শেখায় এবং মানুষ বেঁচে থাকে এই স্মৃতি নিয়ে সারা জীবন। স্মৃতি ছাড়া জীবন একদম শূন্য। স্মৃতির জন্যই মানুষ কাজের উদ্দম পায় এবং কাজ করে আরো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করে। আবার কিছু কিছু স্মৃতি রয়েছে যেগুলো মনে পড়লে মানুষ আর সামনে এগোতে পারে না।


আমি প্রথমে ধনী শ্রেণীর লোকেদের স্মৃতি নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। আসলে ধনী শ্রেণীর লোকেদের আমার মনে হয় দুঃখের স্মৃতি থেকে আনন্দের স্মৃতিটাই বেশি থাকে। কারণ তারা জন্মের সময় তারা সোনার চামচ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তাদের জীবনে দুঃখ বলতে কিছুই থাকে না। না থাকে তাদের জীবনে অভাব, না থাকে কোন দুঃখ বেদনা। তাই এদের পুরনো স্মৃতি সব সময় মধুর হয়। আর এই মধুর জন্য তাদের কখনো কোন সময় কোন খারাপ স্মৃতি থাকে না।


এছাড়াও তাদের জীবনে কোনদিনও তাদের মা-বাবা তাদের কোন রকমের কষ্ট অনুভব করতে দেয় না। কারণ তারা পূর্ব পুরুষ থেকেই ধনী। তাই সেই সব পরিবারে কখনোই দুঃখ দুর্দশা দেখা দেয় না। তাই তাদের স্মৃতিতে দুঃখের রেশ থাকে না। এছাড়াও তাদের পিতা-মাতারা তাদের জন্য সামনে আরো সুন্দর দিনের জন্য নতুন কিছু রেখে যায়। আর আমার মতে ধনী শ্রেণীর লোকেদের জীবনে তাই দুঃখের স্মৃতি কখনোই থাকে না। যদিও সবার ক্ষেত্রে এক রকম নয়। কোন কোন ধনী শ্রেণীর লোকেদের আবার খারাপ স্মৃতিও থাকে।


এবার আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের কথায় আসা যাক। আমার মনে হয় একদিকে যেমন মধ্যবিত্ত পরিবারে দুঃখের স্মৃতি থাকে আবার অন্যদিকে সুখেরও স্মৃতি থাকে। এই মধ্যবিত্ত পরিবারে দুঃখের স্মৃতি অপেক্ষা সুখের স্মৃতি অনেক কম থাকে। কারণ তাদের কষ্ট অবশ্যই করতে হয় কিন্তু সেই রকম কষ্ট কখনোই করতে হয় না। এসব পরিবারের সংসার খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার মত জীবিকা নির্বাহ করে। তাই ছোট ছোট সুখের স্মৃতি থাকলেও এসব ফ্যামিলিতে কিন্তু দুঃখের স্মৃতিও বেশ রয়েছে।


আমার মনে হয় এই মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকেরা কখনোই তাদের কষ্ট তারা বাইরের লোকের কাছে শেয়ার করতে পারেনা। কারণ তাদের দুঃখের কথা যদি বাইরের লোক জানতে পারে তাহলে তাদের মান সম্মান নষ্ট হয়ে যাবে। আর এসব পরিবারের লোকরা খুব সেনসিটিভ হয়। এদের বুক ফাটে তবুও মুখ ফাটেনা। অর্থাৎ এরা যতই কষ্ট পাক না কেন এরা কিন্তু বাইরে সেটা কখনোই প্রকাশ করে না। এই দুঃখ এবং আনন্দের সময় তারা নিজেরাই নিজেদের ভিতরে রেখে দেয় এবং বাইরের লোকেদের কাছে এরা সবসময়ই ভালো থাকে আনন্দ থাকে এটাই প্রকাশ করে।


একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়েও আসলে আমার জীবনেও কিন্তু অনেক ধরনের দুঃখের স্মৃতি রয়েছে। আমরা সাধারণত এইসব দুঃখের স্মৃতি কখনোই কারো সাথে শেয়ার অথবা বলতে পারি না। কারণ আমরা সমাজে চাই আমরা সমাজে একজন ভালো পরিবার হিসেবে বেঁচে আছি। যদিও আমাদের মা-বাবা আমাদের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করে এবং অনেক দুঃখের সময় পার করে। তাই এসব পরিবারের মা-বাবা ও তাদের সন্তানের কাছে তাদের দুঃখের স্মৃতি কখনোই শেয়ার করে না।


এবার আমরা একদম গরিব পরিবারের কথায় আসা যায়। আসলে আমার মনে হয় এই গরিব শ্রেণীর লোকেদের জীবনে কোনদিনও কোন সুখের স্মৃতি থাকে না। এর কারণ হলো এরা সব সময়ই তাদের প্রতিটা সময় দুঃখের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করে। যদিও তারা তাদের সংসারের উন্নতির জন্য সর্বক্ষণ চেষ্টা করে তবুও তাদের এইসব পরিশ্রম বৃথা হয়ে যায় তাদের সংসার চালানোর জন্য। আর এদের জীবনে সুখের স্মৃতি একদম শূন্য থাকে। আমার মনে হয় গরীব শ্রেণীর লোকেদের জীবনে পুরোটাই কিন্তু দুঃখের স্মৃতি।


একটা গরীব পরিবারের সন্তান জন্মগ্রহণ করে দুঃখের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও তো গরিব পরিবারের সব সময় অভাব অনটন লেগেই থাকে। তাদের প্রতিদিনের খাবারের জন্য প্রতিদিন পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়াও তাদের এই বাইরের সমাজের সাথে সবসময় লড়াই করতে হয় বেঁচে থাকার জন্য এবং তাদের পরিবারকে সঠিকভাবে চালনা করার জন্য। তাই এদের পুরো জীবনটা কিন্তু কেটে যায় এই দুঃখের স্মৃতি বইতে বইতে। তবুও তারা এই দুঃখকে কাটিয়ে উঠতে সব সময় প্রাণপণ চেষ্টা করে।


আমরা সাধারণত আমরা আশেপাশের গরিব পরিবারগুলো দেখতে পাই যে তারা কিভাবে তাদের সংসার এবং দিন যাপন করে। তাদের সন্তানদেরও আমরা দেখতে পাই তারা অবহেলিত হয়ে সমাজের মাঝে ঘুরে বেড়ায়। আসলে এইরকম দুঃখের স্মৃতি তাদের উদ্দীপনা জায়গায় আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তাই অন্যান্য শ্রেণীর লোকেদের অপেক্ষায় এদের মনবলটা অনেক বেশি থাকে এবং তাদের সবসময় চেষ্টা থাকে যে তারা সমাজে এই দুঃখ দুর্দশা কাটিয়ে উঠে সুন্দর মুহূর্ত কাটানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করে।


আমরা সমাজে বিভিন্ন মনীষীদের দেখতে পাই যারা এসব গরিব পরিবারের মধ্য থেকে উঠে রয়েছে আর সমাজে শিক্ষিত শ্রেণী হয়ে সমাজকে চালনা করছে। এসব ব্যক্তিদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে আমরা জানতে পারি যে তাদের ছোটবেলার স্মৃতিটা কত দুঃখের ছিল। কিন্তু তারা আজ যতই ভালো সময় অতিবাহিত করে না কেন তাদের কিন্তু সেই পুরনো দিনের দুঃখের স্মৃতি সব সময় মনে থাকে। আর এই দুঃখের স্মৃতি তাদের আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সব সময় উদ্দীপনা যোগায়।


এছাড়াও আমার মনে হয় স্মৃতি কিন্তু অবশ্যই ভালো। সেটা ভালো কিংবা খারাপ হোক। কারণ এই স্মৃতির থেকে আমরা শিক্ষা নিয়ে আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার মত অনুপ্রেরণা পাই। তাইতো আমরা অবশ্যই আমাদের এই খারাপ স্মৃতি গুলো থেকে বাইরে বেরিয়ে আসার জন্য অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করব। নিজেদের পরিবারকে অবশ্যই সমাজের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হিসেবে গণ্য করার জন্য আমরা সবসময় চেষ্টা করব।

আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।

সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

ধন্যবাদ সবাইকে।