গরু এবং মহিষের খামার। পর্ব: অন্তিম পর্ব।
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আসলে আজ গরু এবং মহিষের খামারে গিয়ে আমার কিছু অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
বাইরে রোদের তেজ প্রতিনিয়ত বাড়তে শুরু করেছে। তাই আমি গরুর গোয়াল ঘরের এক কোনে গিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। আর পুরো বিষয়টা আমি এক জায়গায় বসে দাঁড়িয়ে দেখতে শুরু করলাম। একজন বয়স্ক মহিলাকে দেখলাম যে উনি মোটরের জল দিয়ে গরুর এবং মহিষের পুরো শরীরটা ধুয়ে দিচ্ছেন। আসলে এভাবে এনারা প্রতিদিন প্রায় দুবেলা করে পুরো গরুর জায়গাটা পরিষ্কার করেন। আসলে গরমের সময় যেহেতু আমাদেরও গরম লাগছে। তেমনি এসব পশুদেরও অনেক বেশি গরম লাগে। তাই দিনে দুবার করে এনারা গরুর গায়ে জল দিয়ে দেন।
আসলে প্রথম অবস্থায় আমি ভেবেছিলাম যে ভদ্র মহিলার বয়স মনে হয় একটু কম, না হলে এত কাজ কি করে তিনি করছেন। আসলে পরবর্তীতে বুঝতে পারলাম যে ওনার অনেক বেশি বয়স এবং এত বেশি বয়সেও তিনি এখনো একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষের মতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আসলে আগেরকার মানুষেরা যেমন ভেজাল ছাড়া খাবার খেতো তেমনি তারা অনেক বেশি কঠোর পরিশ্রম করতো। আসলে এসব কারণের জন্য তারা এখনো এই শেষ বয়সে এসেও অনেক বেশি কঠোর পরিশ্রম করতে পারে। যদিও উনার মত কাজ কিন্তু আমরা অনেকেই করতে পারব না।
এরপরে দাদা চলে এলেন আমাকে গরুর দুধ দেওয়ার জন্য। উনি একটা বালতি নিয়ে এসে আমি যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম আমার পাশের একটা গরুর দুধ দোয়াতে শুরু করলেন। আসলে গরুর দুধ দোয়ানো একটা কৌশলের ব্যাপার। আসলে আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি করবো ভেবে উঠতে না পেরে ওনার গরুর দুধ দোয়ানো দেখছিলাম। প্রথমে উনি গরুর মুখের সামনে একটু খাবার রাখলেন এবং চুপচাপ গিয়ে পিছনে বসে দুধ দোয়াতে শুরু করে দিলেন। তাই পাঁচ থেকে সাত মিনিট লাগলো একটা গরুর থেকে দুধ বের করতে। আসলে উনি প্রায় প্রতিদিনই এরকম গরুর দুধ বের করতে প্রায় সারাদিন কেটে যায়।
আসলে আপনারা দেখতে পারছেন যে মহিষগুলোকে সকালবেলার খাবার খাইয়ে অন্য একটা জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে। কারণ ওদের যদি সারাদিন খেতে দেওয়া হয় তাহলে খাবারের ঘাটতি পড়ে যাবে। কারণ মহিষ প্রয়োজনের অতিরিক্ত বেশি খাবার খেতে পারে। এজন্য তাদের দিনের একটা টাইমে খাবার দেওয়া হয় এবং বাকি টাইমে অন্য একটা জায়গায় রেস্ট করানো হয়। আবার যখন দুধ দোয়ানোর টাইম হয় তখন তাদের সামনে ছোট ছোট পাত্রে খাবার রেখে দুধ দোয়ানো হয়। যাতে করে তারা দুধ দোয়ানোর সময় বেশি নড়াচড়া করতে না পারে।
এছাড়াও আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তার পাশের একটি বাঁশের ছাউনির উপরে দেখতে পেলাম একটি সাদা বক। আসলে বকটির কোন ভয় ভীতি বলতে কিছুই নেই। এছাড়াও এখানে চারিপাশে আমি অনেকগুলো বক দেখতে পেলাম। এই বকগুলো এই গরু এবং মহিষের গোবরের উপরের যেসব পোকা থাকে সেসব পোকা খেয়ে এখানে বেঁচে থাকে। আর এজন্য এসব বক এখানেই থেকে যায় এবং মানুষ এদের কোন ক্ষতি করে না বলে তারা মানুষের অনেক কাছে থাকে। আবার মাঝে মাঝে দেখতে পেলাম যে আমার পাশ দিয়ে বক একদম এক হাত দূর দিয়ে হেঁটে চারদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আসলে অনেক সময় হয়ে গেল দুধ দোয়াতে। যাই হোক প্রায় পনেরো মিনিট পর ওনার দুধ বের করা হয়ে গেলে তখন উনি আমাকে ডাক দিলেন যে এখানে বোতল নিয়ে চলে এসো। যাইহোক আমি ওনার কথা মতন বোতল নিয়ে ওনার কাছে গেলাম এবং বোতলের মুখগুলো খুলে দিয়ে ওনাকে সাহায্য করতে লাগলাম। কারণ ওই দাদা আমার জন্য এই গরমের মাঝে আবার পুনরায় দুধের সংগ্রহ করেছেন। যাইহোক আমি আর বেশি দেরি না করে ওখান থেকে চলে আসলাম কারণ বাইরের রোদের পরিমাণ অনেক বেশি। যাইহোক আমি বাইকে করে আবার পুনরায় বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আর এটি হল গরু এবং মহিষের খামারের শেষ পর্ব।
ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 27/04/2024
আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
যখন কোন জিনিষের সঠিক ভাবে যত্ন করা হয়,তখন সে গুলো আমাদেরকে লাভমান করে। তারা গরু ও মহিষকে সঠিক ভাবে সেবা যত্ন করে বিধায় গরু মহিষ গুলো এত সুন্দর। আর আপনিও সরাসরি নিজে দাড়িয়ে থেকে দুধ নিয়ে আসলেন। এই দুধে কোন জামেলা নেই। খাটিঁ দুধ পেলেন। আপনার অনুভূতি দারুন ছিল। ধন্যবাদ।
কথাটা শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই ঠিক ভাইয়া যে এখনকার মানুষের থেকে আগেকার মানুষ অনেক বেশি শক্ত পূক্ত।তার প্রমাণ আপনি হয়তো নিজেই পেয়ে গেছেন ঐ মহিলার কর্ম ক্ষমতা দেখে। তবে বক যে মানুষের এত কাছাকাছি ঘুরে বেড়াচ্ছে এটা শুনে বেশ অবাক হলাম। সে যাই হোক প্রাণীদের ক্ষতি না করলে তারাও বন্ধুর মতোই থাকতে পছন্দ করে। আর অনেকদিন পরেই আবার মহিষ দেখতে পেলাম আপনার মাধ্যমে। গরু ও মহিষের খামার এর অন্তিম পর্বে সুন্দর কিছু দৃশ্য তুলে ধরেছেন আপনি বেশ ভালো লাগলো।
আজকে আপনি আমাদের মাঝে গরু এবং মহিষের খামারের একটি বৃদ্ধ মহিলার কঠোর পরিশ্রমের কিছু দৃশ্য তুলে ধরেছেন যেটা দেখে খুবই ভালো লাগলো। সত্যি বলতে গরু মহিষের খামার অনেক লাভজনক হয়ে থাকে । এবং সে সাথে অনেক ভালো একটা কর্মস্থল। আমার নিজেরও ইচ্ছা রয়েছে ভবিষ্যতে আমি এমন একটা খামার দিব।
আপনার এই বিষয়ের আগেও পোস্ট আমি দেখেছি ভাইয়া। আজকেও ঠিক তেমনি সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন আপনি। অনেক অনেক ভালো লাগলো আপনার আজকের এই করুন মহিষের খামার বিষয়ে পোস্ট দেখে।
অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া সুন্দর এই পোস্ট দেখে। বক পাখিটা আরো ভালো লাগলো। কারণ তার এত সুন্দর সাহস। যাই হোক মানুষ তার চেষ্টার মধ্য দিয়ে সাফল্য অর্জন করে। আপনি এখানে দুধ আনতে জান এটা জেনে ভালো লাগলো। আর পাশাপাশি গরু এবং মহিষের খামারের বর্ণনা শেয়ার করেছেন। এই থেকে অনেক কিছু জানলাম।