বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ২১
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।
বাংলাদেশে গিয়ে খুব মজা করছিলাম কয়েকটা দিন। এরমধ্যে জেঠুর দূর সম্পর্কের আত্মীয়র বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানের নেমন্তন্ন ছিল। তো আমারও কখনো দেখা ছিল না বাংলাদেশের গ্রামের বিয়ের অনুষ্ঠান। আমার গিন্নি ও খুব এক্সাইটেড ছিল। কারণ সেও কখনো বাংলাদেশের কোন বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়নি কখনও। যাই হোক বিয়ে বাড়ির ওই অনুষ্ঠানের বৌভাতের দিন আমরা সবাই মিলে রওনা দিলাম।
অবশ্য ঐদিন আমরা সবাই খুব এক্সাইটেড ছিলাম। এর প্রধান কারণ হলো আমরা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে ওই বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে যাব। আরেকটা দিক হলো বাংলাদেশ কিন্তু নদীমাতৃক দেশ। বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় এই নদীর মাধ্যমে যাওয়া আসা করা যায়। আর ওই অনুষ্ঠান বাড়িতে যেতেও আমাদের নদী মাধ্যমে যেতে হয়েছিল।
যাইহোক অনুষ্ঠানের দিনে আমরা রেডি হয়ে নিলাম তাড়াতাড়ি। আরেকটা শখ ছিল আমার ইঞ্জিন চালিত নৌকা চালানো। যাইহোক চেষ্টায় ছিলাম ঐ দিন ইঞ্জিন চালিত নৌকা চালাবো আমি। অবশ্য মনের ভিতরে সন্দেহ ছিল যে নৌকার চালক আমাকে চালাতে দেবে কিনা।
তো টাইম মতোই ইঞ্জিন চালিত নৌকা ঘাটে এসে পৌঁছালো। আমরা সবাই এক এক করে ওই নৌকায় উঠে যে যার জায়গায় বসে পড়লাম। আমি কিন্তু ভাই নৌকার চালকের কাছে গিয়ে বসলাম। প্রথম অবস্থায় প্রায় অর্ধেক পথ আমি ওই নৌকা চালকের চালানো দেখছিলাম। কিন্তু আমার সাহস হচ্ছিল না যে উনার নৌকা আমি চালাবো। তাই আমি ওনার নৌকা চালানো ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলাম।
!
তো কয়েক ঘণ্টার পর আমরা ওই বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে গিয়ে পৌঁছালাম। কপাল আমার এতই খারাপ যে সেদিন মোবাইল চার্জ দিতে আমি ভুলে গিয়েছিলাম। যাইহোক মোবাইলের চার্জ প্রায় শেষ হয়ে গেল। তাই অনুষ্ঠান বাড়ির আর কোন ছবি আমি তুলতে পারলাম না। আসলে আমি হতবাক যে, গ্রাম অঞ্চলের অনুষ্ঠানগুলো এখনো সামাজিক রীতিনীতি পালন করে অনুষ্ঠিত হয়। এক এক শ্রেণীর লোকেদের জন্য এক এক ধরনের আয়োজনের বন্দোবস্ত থাকে। তো আমাদের জন্য একটা আলাদা স্থানে বাড়ির লোকেরা টেবিল চেয়ার পেতে দিয়েছিল।
আসলে ভাই বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটা লোকের মন মানসিকতা খুবই সুন্দর। কারণ তারা আমাদের যেভাবে যত্ন করলো নিজেকে ভিআইপি মনে হচ্ছিল। তাদের যত্নে আমি খুবই খুশি। কোন কিছু চাওয়ার আগেই আমরা সবকিছু পেয়ে যাচ্ছিলাম। যাইহোক কিছুক্ষণ পর খাবার আয়োজন করা হলো। আমরা সবাই খেতে বসে গেলাম। কারণ আমাদের আরো অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে বাড়ির দিকে যেতে হবে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে।
আর খাবারের স্বাদ এক কথায় অসাধারণ। এই খাবারে কৃত্রিমতার ছোঁয়া একদম নেই বললেই চলে। তাদের দেওয়া প্রতিটা খাবার আমার কাছে এক কথায় অসাধারণ লেগেছে। তো পেট ভরে খেলাম। আসলে এরকম খাবার আমি কোনদিনও খাইনি। যাইহোক খাবার দেবার শেষ করে আমরা একটু রেস্ট নিলাম।
কিছুক্ষণ পর আমরা বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। এতটুকু সময়ে নৌকার চালকের সাথে আমার বেশ ভাব জমে উঠল। তারপর আমি উনাকে বললাম আজ আমি যাওয়ার সময় আপনার নৌকাটি চালাতে চাই। উনি প্রথম অবস্থায় বললেন আপনি মনে হয় পারবেন না। তখন আমি বললাম একবার তো দিয়ে দেখেন পারি কিনা দেখা যাবে।
যাইহোক প্রথম অবস্থায় উনি আমার পাশে বসে রইলেন। আমি কিন্তু তখন নৌকাটি চালাচ্ছিলাম। প্রথম কিছুক্ষণ আমার চালানো উনি দেখলেন। তারপর উনি বুঝে গেলেন যে আমিও চালাতে পারি। সত্যি কথা বলতে এর আগে কখনো আমি ইঞ্জিন চলিত নৌকা চালাইনি। তখন উনি আমাকে বললেন দাদা আপনি তো বেশ ভালই চালান।
একটা ব্যাপার হলো আমি কোন কিছু একবার দেখলে মোটামুটি ওই জিনিসটা শিখেই যাই। যাইহোক আমাদের বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছতে অনেকটা সময় লেগে গেল। বাড়ি আসতে আসতে আমাদের প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। তো বাড়ি এসে আমরা সবাই রেস্ট নিয়ে সেদিনের মত ঘুমিয়ে পড়লাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Xiaomi
ক্যামেরা মডেল : M2007J20CI
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 18/10/2022
আসলে বাংলাদেশের এই পর্বটিতে আমার খুব ভালো লাগছিল। কারণ নিজের শখ অনুযায়ী আমি প্রথম ইঞ্জিন নৌকা চালাতে পেরেছিলাম। সত্যিই বাংলাদেশের মানুষ অনেক ভালো। আবারো ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশের সকল মানুষকে।
তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
নৌকায় করে বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে যাওয়া ব্যাপারটি ভাবতেই বেশ ভালো লাগছে। অনেকদিন নৌকায় ওঠা হয় না। বাংলাদেশে এসে আপনি দারুন সময় কাটিয়েছেন বোঝাই যাচ্ছে দাদা। আর সাথে যেহেতু বৌদি ছিল তাহলে তো সময়টা আরো দারুন কেটেছে। দাদা আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম আপনি বাংলাদেশে এসে অনেক আনন্দ পেয়েছেন। আপনারা যেই এলাকায় বেড়াতে গিয়েছেন সেখানে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় চলাচল করতে হয় জেনে ভালো লাগলো। নৌকা দিয়ে চলাচল করতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আপনারা বিয়ে বাড়িতেও ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে গিয়েছেন তার মানে অনেক মজা হয়েছে। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।
ভাই আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ, আর তাই নদীপথে নৌকা করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে খুব সহজেই যাওয়া যায়। যাই হোক, ইঞ্জিন চালিত নৌকায় কয়েক ঘন্টা ভ্রমণের পরে আপনারা সেই বিয়ের বাড়িতে উপস্থিত হয়েছেন এবং সেখানে ভিআইপি মেহমান হিসেবে সুন্দর সময় পার করেছেন শুনে খুবই ভালো লাগলো। আর হ্যাঁ ভাই, আপনিও যে ইঞ্জিন চালিত নৌকা চালাতে পারেন এটা সত্যিই খুবই আনন্দের বিষয়। বাংলাদেশ ভ্রমণ নিয়ে আপনার সুন্দর অনুভূতি টুকু শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।