শৈশব। কবিতা নং :- ৪৮steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা এবং আপনাদের আশীর্বাদে আমিও সুস্থ আছি। আজ আমি আমার লেখা একটা কবিতা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


image.png



সোর্স


আসলে আমার মনে হয় বর্তমানে এইসব শিশুরা যেসব সময় কাটাচ্ছে সেই সময় অপেক্ষা আমাদের সময়টা অনেক মধুর ছিল। অর্থাৎ আমাদের শৈশবকাল অনেক ভালো ছিল এখনকার বাচ্চাদের শৈশবকাল অপেক্ষা। তখনকার সময়ে এত ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতির প্রচলন ছিল না। আসলে এই আধুনিক যুগ হতে তখনকার সময়টা অনেক বেশি ভালো ছিল। কারণ তখনকার মানুষের ভিতরে সব সময় ভালোবাসা থাকতো। এছাড়াও তারা সবাই মিলেমিশে একসাথে বসবাস করত। কারো মনে কখনো কোন অহংকার ছিল না।


আসলে যেসব ছেলে মেয়েরা শৈশবকালে গ্রামের দিকে বড় হয়েছে তাদের জীবনটা সবথেকে বেশি মধুর ছিল। কারণ তারাই একমাত্র তাদের শৈশব সময়টা পুরোটাই আনন্দের ভিতর কাটিয়েছে। কারণ তারা এই আধুনিকতার থেকে পিছিয়ে থাকলেও তারা সব সময় মিলেমিশে থাকার চেষ্টা করত এবং একে অপরের সহযোগিতায় সবসময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিত। তারা কখনো একে অন্যের ক্ষতি চাইত না।


আসলে আমাদের শৈশবকালে এসব মোবাইল অথবা আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকার কারণে আমরা একে অন্যের সাথে সব সময় মিলেমিশে থাকতাম এবং বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করতাম মাঠেতে। স্কুল থেকে আমরা বাড়িতে ফিরে পুকুরে গিয়ে স্নান করতাম এবং স্নান করা শেষে আমরা দুপুরের দিকে একটু ঘুম পড়তাম। আসলে এই দুপুরের সময়টাতে আমাদের ঘুম কখনোই হতো না। কারন আমরা সবসময় চিন্তা করতাম যে কখন আমরা খেলাধুলা করতে যাব।


আসলে বর্তমান সময়ের মতো বিকেল বেলাতে আমরা সবাই মাঠে খেলাধুলা করতে যেতাম। কিন্তু বর্তমানকালের শিশুরা মাঠে খেলাধুলা করতে অবশ্যই যায় কিন্তু সেই খেলাধুলা পুরোটাই মোবাইল ফোনে বন্দী থাকে। অর্থাৎ তাদের খেলাধুলা সব মোবাইল ফোনেই হয়ে থাকে। মাঝে মাঝে দেখা যায় কোন মাঠে একদল বালক বসে বসে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ধরনের গেম খেলে। আসলে আমাদের সময় আমরা যখন মাঠে খেলাধুলা করতে যেতাম তখন সবাই মিলে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করতাম।


তখনকার সময়ে আমাদের একটা ফুটবল কেনার মত সামর্থ্য না থাকলেও সবাই মিলে চেষ্টা করে একটা ফুটবল কিনে সেই ফুটবল নিয়ে আমরা মাঠে খেলাধুলা করতাম। আসলে এখন কিন্তু অনেকের ফুটবল কেনার সমর্থ্য আছে কিন্তু খেলার লোকের অভাব। অর্থাৎ এখন সবকিছু সহজলভ্য হলেও আপনি খেলাধুলার মতো বন্ধুবান্ধব আর কোথাও পাবেন না। এছাড়াও আমরা যখন স্কুলে যেতাম তখন আমরা সবাই দলবেঁধে একসাথে স্কুলে যেতাম। স্কুলে যাওয়ার পথে বিভিন্ন ধরনের মজার মজার গল্প করতাম।


ঝড়, বৃষ্টি, খরা কোন কিছুই আমাদের স্কুল যাওয়া থেকে বন্ধ করতে পারত না। যেকোনো দুর্যোগেই আমরা স্কুলে গিয়ে সবাই মিলে ক্লাস করতাম এবং বিভিন্ন ধরনের মজা করতাম। আর আমরা সবসময় আমাদের শিক্ষকদের সম্মানের চোখে দেখতাম। এছাড়াও শিক্ষকদের প্রতি আমাদের প্রচুর ভয় থাকত। কারণ ক্লাসে পড়াশোনা না করলে শিক্ষকদের মারের হাত থেকে কেউ আমাদের রক্ষা করতে পারতো না। আর তখনকার শিক্ষকেরা ছিল সম্মান পাবার যোগ্য। তারাও তাদের ছাত্রকে সবসময় সন্তানের চোখে দেখতেন এবং তাদের সঠিক শিক্ষাদানের জন্য তারাও প্রচুর পরিশ্রম করতেন।


এছাড়াও গ্রামের সকল লোকেরা বিকেলবেলাতে চায়ের দোকানে আড্ডা দিত এবং বিভিন্ন ধরনের গল্পগুজব করতো। সারাদিনের পরিশ্রমের শেষে তারা যখন এই চায়ের দোকানে বসে বিভিন্ন ধরনের গল্প করত তখন তাদের প্রায় সকল দুঃখ কষ্ট একদম দূর হয়ে যেত। তারা সব সময় একে অন্যের বিপদে আপদে সবসময় এগিয়ে আসতো। এছাড়াও কোন মানুষ অন্য মানুষের ক্ষতি সাধন করত না। যতটা সামর্থ্য থাকতো ততটাই একে অন্যকে সাহায্য করতো। আর এসব কৃষকেরা সবসময় কঠোর পরিশ্রম করে মাঠের সোনার ফসল ফলাতো।


✠ শৈশব ✠


শৈশবের সেই সময়টা,
এখন তো আর নেই।
কত ভালো ছিলাম আমরা,
মিলেমিশে একসাথে সবাই।


মোবাইল তখন ছিল না,
ছিল না ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি।
সবাই মিলে একসাথে,
করতাম আমরা চড়ুইভাতী।


বিকেলবেলা সবাই মিলে,
খেলাধুলা করতাম মাঠেতে।
বিভিন্ন ধরনের খেলা করতাম,
সবাই হাতে হাত রেখে।


ধর্মের কোন ভেদাভেদ ছিল না,
ছিল না কোন ঝামেলা।
কোন অনুষ্ঠান হলে পরে,
হত বিভিন্ন ধরনের মেলা।


ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই,
বসবাস করতাম একসাথে।
সবাই মিলে গল্প করতাম,
দোকানে চায়ের আড্ডাতে।


সোনার ফসল ফলাতো কৃষক,
সারাদিন রোদে পুড়ে।
তবুও মুখে হাসি থাকতো,
সারাদিন কষ্টের পরে।


নদী-নালা, খাল-বিল ,
ছিল বিভিন্ন মাছে পরিপূর্ণ।
বর্ষাকাল এলে পরে,
মাছ ধরার আনাগোনা চলতো।


হাঁটু সমান কাদার ভিতর দিয়ে,
যেতাম স্কুলে সবাই একসাথে।
গুরুজনদের সম্মান করতাম,
ছিলাম মা-বাবার অনেক আদরের।


আশাকরি কবিতাটি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।



তো দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

11-20-04-359_512.gif

সবাইকে ধন্যবাদ।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 last year 

শৈশব কে নিয়ে খুব সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন আপনি। কবিতার প্রতিটি লাইন একদম বাস্তব। বেশ ভালো লাগলো আপনার কবিতাটি পড়ে। তাছাড়া পোষ্টের লেখাগুলো পড়ে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। এটা একদম ঠিক বলেছেন আপনি, গ্রামের ছেলে মেয়েরা আধুনিকতার দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও তাদের শৈশব গুলো অনেক বেশি রঙিন হয়। ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর একটি কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

দাদা আপনি আজকে আমাদের মাঝে শৈশবকে কেন্দ্র করে দারুন একটি কবিতা লিখে শেয়ার করেছেন। ঠিক বলেছেন দাদা আপনি শৈশবের সেই সময় গুলো সত্যি সবাই একসাথে মিলেমিশে খেলাধুলা করতাম দারুন ছিল এখন সেই সময় আর খুঁজে পাওয়া যায় না। কৃষকদের প্রতি আমাদের সম্মান প্রদর্শন করা উচিত কারণ অতি কষ্টের মাধ্যমে তাদের পরিচিত ফসল আমরা পেয়ে থাকি। ধন্যবাদ দাদা শৈশবকে কেন্দ্র করে এত সুন্দর একটি কবিতা শেয়ার করার জন্য।

 last year 

অতীতের স্মৃতি কে ঘিরে আজকে আপনি আমাদের মাঝে দারুন একটি কবিতা রচনা করে শেয়ার করেছেন। আপনার কবিতা আবৃত্তি করে আমার সত্যি অনেক অনেক ভালো লেগেছে। যেখানে মাছ ধরার সেই ভালোলাগার মুহূর্তগুলো তুলে ধরেছেন আপনি। আসলে সেই দিনগুলো ছিল অনেক মধুর স্বাধীন ভাবে আমরা ঘুরতে ফিরতে পারতাম অনেক কিছু করতাম। সেদিনের চলাচলের ছিল না কোন লিমিট। অতীতের স্মৃতি পুনরায় মনে করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

বর্তমান যুগের ছেলেদের শৈশবকাল এবং আমাদের শৈশবকালের মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে। আমাদের দিনগুলো কত মধুময় ছিল। আর এখনকার ছেলেরা ঘরে বসে মোবাইলে পেছনে সময় বের করে। যাইহোক ভাই আপনি শৈশব নিয়ে খুব চমৎকার একটি কবিতা লিখেছেন। আপনার লেখা কবিতাটি পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে। এত সুন্দর একটি কবিতা লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

আশা করি ভালো আছেন ভাই। আপনার আজকের কবিতা পড়ে সত্যি খুব ভালো লাগলো। বিশেষ করে কবিতার ছন্দ গুলো যখন পড়ছি তখন শৈশবে মাঝে হারিয়ে গেলাম। আসলে শৈশবের সেই সোনালী দিন গুলো কথা এখনো মনে পড়লে হৃদয় শিউরিত হয়ে উঠে। এখনো হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে শৈশবের সেই সুন্দর মুহূর্ত গুলোর মাঝে। তবে শৈশবের সেই সোনালী মুহূর্তগুলো আর কখন আমাদের জীবনে ফিরে আসবে না। শৈশবে কত চমৎকার মুহূর্ত অতিবাহিত করেছি তা বলে বুঝানো সম্ভব নয়। আপনার কবিতার প্রতিটি ছন্দ সত্যি হৃদয় ছুয়ে গেলো ‌। এত দুর্দান্ত কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 last year 

একেবারে শতভাগ সত‍্য বলেছেন ভাই। শৈশব যাদের গ্রামে কেটেছে তারাই সেটা উপভোগ করতে পেরেছে। আমরা সারাদিন খেলাধুলা পুকুরে বা নদীতে গোসল করা এবং বিকেলে মাঠে গিয়ে খেলা এগুলো নিয়ে পড়ে থাকতাম। কী দূরন্তই না ছিল আমাদের শৈশব। কিন্তু এখনকার ছেলেমেয়েরা ফোন এবং ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস থেকে বেরই হতে পারে না। আপনার কবিতা টা খুব ভালো লেগেছে ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

দাদা খুব চমৎকার একটি কবিতা লিখেছেন। বরাবরই আপনি খুব সুন্দর কবিতা লেখেন। আজকেও তার ব্যতিক্রম নয়। খুব ভালো লাগলো আপনার কবিতাটি পড়ে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65847.68
ETH 2679.11
USDT 1.00
SBD 3.08