ভয়ানক এক বৃষ্টির রাত। শেষ পর্ব।

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আসলে আজ ভয়ানক এক বৃষ্টির রাত সম্পর্কে আমার কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


image.png



সোর্স


এরপরে যখন আমি মেইন রোডে উঠে গেলাম তখন শুরু হলো বিপদ। আমরা সবাই জানি যে বড় বড় হাইওয়েতে রাস্তার দু'পাশে গার্ড দেওয়া থাকে। যাতে বাইরের কোন পশু এই রাস্তার মাঝখানে চলে না আসে। আমি প্রায় পাঁচ মিনিট হাইওয়েতে বাইক চালাতে শুরু করলাম। তখন হঠাৎ করে আমি বুঝতে পারলাম যে চারিদিকে অনেক জোরে হাওয়া ছেড়েছে। যাই হোক আমি দ্রুত আমার বাইকের স্পিড অনেক বেশি কমিয়ে দিলাম। কারণ বাইরে এত জোরে হওয়া হচ্ছে যে আমি এই বেশি হওয়ার ভেতরে জোরে বাইক চালাতে পারছিলাম না। এর কিছুক্ষণ পর সেই ভারী আকারে আবার বৃষ্টি শুরু হল। আর এই হাইওয়ের মাঝে কোন দোকানও ছিল না। আর আমি যে বাইকটা রেখে রাস্তার পাশে গিয়ে দাঁড়াবো তারও কোন উপায় ছিল না। কারণ রাস্তার দু'পাশে উঁচু গার্ড ছিল।


তখন আমি খুব একটা বিপদে পড়লাম। কারণ আমার পিঠে রয়েছে ল্যাপটপের ব্যাগ। তাই আমি দ্রুত ব্যাগ হতে ব্যাগের রেইন কভারটি বের করে ব্যাগটি মুড়ে দিলাম। এরপর আমি আস্তে আস্তে আমার বাইকের ইন্ডিকেটর জ্বালিয়ে সামনের দিকে এগোতে শুরু করলাম। কিন্তু যত সময় যেতে লাগল ততই বৃষ্টি এবং ঝড়ের পরিমাণ আরও বেশি হতে শুরু করল।


এমন একটা সময় এল যে আমি আর সামনের দিকে রাস্তা মোটেও দেখতে পাচ্ছিলাম না এবং এই হাওয়ার ধাক্কায় আমি মাঝে মাঝে আমার ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলছিলাম। আসলে এমন অবস্থাতে জীবন মৃত্যুর সম্মুখীন আমি হয়ে গেলাম। কারণ আমি পারছি না রাস্তার এক সাইডে দাঁড়াতে আর পারছিনা সামনের দিকে এগোতে। সত্যিই আমার মনে তখন ভয় চলে এলো। তখন আমি কি করবো বুঝতে না পেরে আমি আস্তে আস্তে বাইক চালিয়ে বাড়ির দিকে যেতে লাগলাম।


এদিকে এমন বৃষ্টি এবং হাওয়ার জন্য প্রায় সব গাড়িই বন্ধ ছিল। আর আমি যখন বাইক চালাচ্ছিলাম তখন বৃষ্টির ফোঁটা গুলো মনে হচ্ছিল যে আমার শরীরের ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে। অর্থাৎ বৃষ্টির ফোঁটা গুলো এত ভারী ছিল যে আমার শরীরে যখন সেই বৃষ্টির ফোঁটা গুলো পড়ছিল মনে হচ্ছিল কেউ আমার শরীরের ভিতরে সুচ ঢুকিয়ে দিচ্ছে। যাইহোক আমি কোনভাবে আর কোন জায়গাতে অপেক্ষা না করে সামনের দিকে এগোতে শুরু করলাম। যেহেতু আমি সামনের কোন কিছুই দেখতে পারছিলাম না তাই আমি রাস্তার মাঝ বরাবর যে সাদা দাগ ছিল সেই সাদা দাগ দেখে আন্দাজ এর সামনের দিকে এগোতে শুরু করলাম। এদিকে মাঝে মাঝে এত জোরে হাওয়া হচ্ছিল যে আমাকে কিছুক্ষণের জন্য গাড়ি রাস্তার মাঝে দাঁড় করিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছিল।

আসলে কোনমতে আমি সেদিনের মতো বাড়ি পৌঁছাতে পারলাম। এদিকে যখন আমি বাড়ি পৌছালাম তখন আমার গিন্নি টেনশনে মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কারণ এত ঝড়ের ভিতরে আমি কিভাবে বাড়িতে ফিরলাম সে শুধুমাত্র আমি নিজেই জানি। সেদিনের এই রাতটা মোটেও ভোলার নয়। কারণ এই রাতে আমার মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল যে আমি যদি কোনভাবে এই বৃষ্টির ভিতর এক্সিডেন্ট করি তাহলে আমাকে এই রাস্তার উপরে একা একা পড়ে থাকতে হবে। আসলে আমার মনোবলের জন্যই আমি সেদিন বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছিলাম।



আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।



সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।



11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। আমার ভাষা হলো বাংলা। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 5 months ago 

এমন একটা ভয়ংকর রাতের সম্মুখীন আমিও হয়েছিলাম ভাইয়া। চারিপাশে মেঘের গর্জন মাঝেমধ্যে বাজ পড়ছে আর জোরে বৃষ্টি দাঁড়িয়ে রয়েছে রাস্তার উপর মাত্র দুইজন মানুষ। হঠাৎ বড় একটি গাছের ডাল ভেঙে পড়লো সামনে। এমন ভয়ানক সময়ের সম্মুখীন যারা হয়েছে তারাই উপলব্ধি করতে পারবে বিষয়টা। তবে আপনার এই ঘটনায়িত পূর্বে একদিন পড়েছি আজকের শেষ পর্ব পড়লাম। বিস্তারিত ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদবিস্তারিত ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 5 months ago 

মাঝে মধ্যে এমন সব পরিস্থিতে আমাদের পড়তে হয়, সেখানে কারো হাত থাকেনা। তেমনি এক ভয়াবহ ঝড়-বৃষ্টিতে পড়েছিলেন আপনি। আশার কথা যথাযথ ভাবে পরিস্থিতি সামলিয়ে, আপনি সুস্থ্য ভাবে বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন। এধরণেরপরিস্থিতিতে মনোবল শক্ত রাখা ভিষণ জরুরি। পোস্টটি ভালো লেগেছে। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 5 months ago 

আপনার পোস্ট পড়ে আমারো ভয় লেগেছিল। আসলে অনেক বৃষ্টি আর বজ্রপাতের সময় বাইরে থাকলে মহাবিপদ। সত্যি ভারি বৃষ্টির সময় রাস্তায় কিছুই দেখা যায় না। আর এমন দিনের কথা সবারই মনে থাকে। এরকম রাত কখনো ভুলবার নয়। ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 5 months ago 

বৃষ্টির সময়ে যদি বাইক চালানো হয় তাহলে ঐ বৃষ্টির ফোটা এমনভাবে শরীরে আঘাত করে মনে হয় সুচ ফুটছে। এটা আমিও খেয়াল করেছি। সত্যি ঐ রাতে আপনি বেশ ভোগান্তিতে পড়েছিলেন। প্রথমত রাত তারপর হাইওয়ে কোথাও দাঁড়ানোর জায়গা নেই। এইরকম খারাপ রাত ভোলার মতো না এককথায়।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

এই গল্পের প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম৷ আজকের এই পর্ব পড়েও খুবই ভালো লাগলো৷ বৃষ্টির রাতে বাইরে থাকা একেবারেই ঠিক নয়৷ সেই বৃষ্টির রাতে যদি বজ্রপাত হতে থাকে তাহলে আরো অনেকটাই ভয়ানক হয়ে উঠে৷ এরকম বিপজ্জনক স্থানে আমাদের অবস্থান করা উচিত নয়৷ আর এত ভারী বৃষ্টি হলে রাস্তায় কিছু দেখা যায় না৷ এরকম ঘটনাগুলো সকলেরই মনে থেকে যায়৷ ধন্যবাদ এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59325.16
ETH 2609.11
USDT 1.00
SBD 2.41