বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ৪২steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।


IMG_20230107_125518.jpg


যেহেতু আগের দিন আমরা সিলেটের বিভিন্ন চায়ের বাগানে অনেক ঘোরাঘুরি করেছিলাম। তাই আমরা সেই দিনটা পুরোই ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম। আসলে বাইরের রোদ এত বেশি ছিল যে আমরা সবাই একদম ঘেমে একাকার হয়ে গেছিলাম। আসলে এইসব জায়গায় ঘুরতে কিন্তু খুব ভালো লাগে। আমরা সবাই মিলে খুব মজা করছিলাম এবং আশেপাশের রাস্তার পাশের দোকান থেকে বিভিন্ন ধরনের খাবার কিনে খাচ্ছিলাম। যদিও আমি আগে বলেছি বাংলাদেশের প্রায় সব ধরনের অলিগুলির খাবার আমার কাছে খুবই বেশি পছন্দের। বিশেষ করে বাংলাদেশের ঝাল মুড়ি এক কথায় অসাধারণ। এদিকে আমার গিন্নিকে নিয়ে প্রতিদিন ঘুরতে গেলে তাকে একবার না একবার ঝালমুড়ি কিনে খাওয়াতেই হবে। যদিও আমি ওই লোকেদের কাছে ঝাল মুড়ির এই বিশেষ স্বাদের রহস্যটা জানতে চাইলে তারা বলল এটি তারা ঘরের নিত্য প্রয়োজনীয় উপকরণ থেকে তৈরি করে।


IMG_20230107_125533.jpg


আসলে একটানা এত ঘুরাঘুরি করতে করতে আমরা খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। তাই আমরা মাঝে একদিন একটু বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। এছাড়াও সিলেটে বিভিন্ন বাজারে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের কেনাকাটা করলাম পরের দিন। এছাড়াও দুপুরবেলা আমার সেই কাকার বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করলাম আমরা সবাই মিলে। যেহেতু ঘরোয়া অনুষ্ঠানে সবাই মিলে আমরা খুব আনন্দ ফুর্তি করতে লাগলাম এবং বিকালের দিকে বাইরে থেকে বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড কিনে আনলাম। আসলে পরিবারের সবাই একসাথে মিলে গল্প করতে খুবই মজা লাগছিল আমাদের। আর এই গল্প করতে করতে কখন যে রাত হয়ে গেছে তা আমরা বুঝতে পারিনি।



IMG_20230107_144047.jpg


তো পরের দিন কাকা প্ল্যান করল যে আমরা মাধবকুণ্ড ইকো পার্কে ঘুরতে যাব। অর্থাৎ এই জায়গাতে ছোট বড় অনেক ধরনের পাহাড় দেখা যায়। একটা সুবিধা হল সরকারি গাড়ি থাকার কারণে আমাদের কোন জায়গায় বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় না। আসলে আমরা একটু সকাল সকাল সবাই রেডি হয়ে গেলাম। রেডি হয়ে যাবার পথে আমরা প্রায় এক ঘন্টা পর আমাদের প্রথম চোখে বাঁধলো ছোট একটি পাহাড়। এই পাহাড়ের গা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গাছপালা দেখা যায়। এছাড়াও আমরা দেখতে পেলাম যে কোন একজন ব্যক্তি এই পাহাড়ের ঢালু গায়ে আনারসের চাষ করেছেন।


IMG_20230107_144208.jpg


আরেকটু এগোতেই আমরা দেখতে পেলাম বিভিন্ন ধরনের ফলের একটি বাগান। আসলে পাহাড়ে অঞ্চলে এই সব ধরনের ফল কিন্তু খুব ভালো হয়। এছাড়াও এই বাগানে বিভিন্ন ধরনের ড্রাগন ফ্রুটসের গাছ রয়েছে। প্রথমত বাগানের মালিক একটু ভয় পেয়ে গেল আমাদের দেখে। তারপরে পরবর্তীতে আমরা ওনাকে আশ্বাস দিলাম যে আমরা ওনার বাগানটি শুধুমাত্র একটু দেখার জন্য গাড়িটা রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়েছিলাম। এরপরে চলে গেলাম আমাদের সেই গন্তব্যস্থল মাধবকুণ্ড। আসলে এখানে গাড়ির পার্কিংয়ের চার্জ আমাদের দিতে হয়নি। কারণ সরকারি গাড়ি বলে তার কোন পার্কিং খরচ লাগে না।


IMG_20230107_144511.jpg


এরপর কাকা এই বন বিভাগের প্রধান গেটের পাশে টিকিট কাউন্টার হতে যখন টিকিট কাটতে গেল তখন ওই টিকিটের কাউন্টারের একজন লোক কাকাকে চিনতে পারায় আমাদের টিকিটের কোন পয়সা নিল না। আসলে সিলেট অঞ্চলে কাকার পরিচিতি অনেক ব্যাপক। তাই আমরা টিকিট ছাড়াই এই বন বিভাগের ভিতরে প্রবেশ করলাম। আসলে এই স্থানটি খুবই ঠান্ডা একটি স্থান। কারণ চারিদিকের এত পাহাড় এবং গাছপালা এই স্থানটিকে একদম ঠান্ডা করে রেখেছে। প্রথমে আমরা প্রবেশ করার মুখে আমাদের স্বাগতম জানালেন ওখানের স্থানীয় কর্মকর্তাগণ। এরপর আমরা ভেতরের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম।


IMG_20230107_144655.jpg


আসলে এই বনের এক সাইডে রয়েছে খাড়া পাহাড় এবং অন্য সাইডে রয়েছে জলের একটি ছোট নদী। অর্থাৎ এই ছোট নদী দিয়ে পাহাড়ের গা দিয়ে বয়ে আসা জল ঢালু জমির দিকে নেমে যাচ্ছে। আসলে এখানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই বন বিভাগটি ঘুরে দেখার জন্য খুব সুন্দর রাস্তা তৈরি করে রেখেছিলেন এবং রাস্তার পাশে রেলিং দিয়ে দিয়েছিলেন যাতে কোন ধরনের বড় দুর্ঘটনা না ঘটে। আসলে আমার একটি বোনের পায়ে সামান্য অসুবিধা থাকায় আমাদের হেঁটে যেতে একটু দেরি হচ্ছিল। যদিও আমরা আস্তে আস্তে হাঁটার সময় চারিদিকের প্রাকৃতিক পরিবেশটা খুবই উপভোগ করছিলাম।


IMG_20230107_145303.jpg


এরপর অনেকটা পথ হাঁটার পর আমার সেই বোনটি ক্লান্ত হয়ে গেল। আসলে পাহাড়ের এই খাড়া রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে স্বাভাবিক মানুষেরও অনেক বেশি কষ্ট হয়। কারণ পাহাড়ের রাস্তা সবসময় খাড়া অথবা ঢালু হয়। তাই খাড়া রাস্তায় উঠতে গেলে আমাদের অনেকটা সামনের দিকে ঝুঁকে গিয়ে উঠতে হয় এবং নামার সময়ও অনেকটা সাবধানে নামতে হয়। কারণ এই পাহাড়ি রাস্তায় একবার পা পিছলে পড়ে গেলে বড় ধরনের একটি দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। আসলে এভাবে আমরা বিশ্রাম নিতে নিতে অনেকটা পথ চলে এলাম।


ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 17/11/2022


তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।


সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 11 months ago 

বাংলাদেশ ভ্রমণের ৪২ তত পর্ব আজকে আপনি আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন ভাইজান। যেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের সুন্দর সুন্দর দৃশ্য আপনি আমাদের মাঝে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। খুবই ভালো লাগলো আপনার এই সুন্দর ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 60270.89
ETH 2383.52
USDT 1.00
SBD 2.57