এলোমেলো কিছু ফটোগ্রাফি। ফটোগ্রাফি পর্ব -৩১
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আবারও আমার তোলা কিছু এলোমেলো ফটোগ্রাফি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
তো আমি আবার কিছুদিন আগে বেরিয়েছিলাম ফটোগ্রাফি করার জন্য অন্য একটা জায়গায়। আসলে বর্ষাকালের ছবি তোলাটা খুবই রিক্স এর ব্যাপার। এখন যেকোনো সময় হঠাৎ করে বৃষ্টি আসে আবার একটানা রোদ ওঠে। এই রোদের সময় একটু বেশিই গরম লাগে। কারণ বৃষ্টির পরে যে রোদটা আসে সেই রোদের প্রখরতা অনেক বেশি থাকে এবং এই রোদের আলোয় চারিদিক যেন সোনালী বর্ণ ধারণ করে।
তো সবাই জানি যে, এই সময়টা হল পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর সময়। একসময় এই পাটকে সোনালী আঁশ বলা হতো। এই পাটকে সোনালী আঁশ বলার প্রধান কারণ হলো এই পাটের আঁশ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করা হতো এবং পাট দিয়ে তৈরি জিনিসপত্র খুব কম দামে বিক্রি হত বাজারে। এছাড়াও পাট জাত দ্রব্য পরিবেশের জন্য কখনোই ক্ষতি ছিল না। এছাড়াও পাটের আঁশ শিল্পক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পাঠের আঁশ দিয়ে এমন কি আমাদের জামাকাপড়ও তৈরি করা হতো। বর্তমানে পলিথিনের ব্যবহার এতই বেড়ে গেছে যে পাটের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা খুব কমে গেছে এই পলিথিন ব্যবহারের ফলে এবং এই পলিথিন পরিবেশের জন্য সব থেকে বেশি ক্ষতিকর। তাই পলিথিন ব্যবহারের ফলে পরিবেশ একদিকে যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি অন্যদিকে পাট শিল্পেরও অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
আসলে বর্তমান প্রজন্ম পাটের আঁশকে যে সোনালী আঁশ বলে তা অনেকেই জানে না। কারণ তারা এখন আর পাটের তৈরির দ্রব্যাদি বাজারে দেখতে পায় না। কিন্তু এক সময় আমরা বাজারে সচরাচর পাটের তৈরির দ্রব্যাদি দেখতে পেতাম। তাই আমাদের সবাইকে এই পলিথিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। নতুবা সারা পৃথিবী ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে।
যেহেতু বর্ষার দিনের রোদের প্রখরতা অনেক বেশি থাকে। তাই এই রোদের মাঝে একটু স্বস্তির জন্য মাথায় এ ধরনের ছাতা নিয়ে মহিলারা মাঠে কাজ করে বেড়াচ্ছে। আসলে এই ছাতার ভূমিকা কিন্তু দুই দিক থেকে। একদিকে যেমন প্রবল বৃষ্টির হাত থেকে তাদের সামান্য একটু হলেও রক্ষা করে। অন্যদিকে রোদের প্রখরতা থেকেও তাদের একটু স্বস্তি দেয়। আসলে এ ধরনের ছাতা কৃষকদের জন্য খুবই উপকারী।
ভদ্রমহিলাটি পাটগুলো মাঠের মাঝখান হতে আঁশ ছাড়িয়ে পাটের কাঠিগুলো শুকনো জায়গায় নিয়ে আসলেন। জলের ভিতর এই কাঠি বেশিদিন থাকলে এই পাট কাঠি গুলো নষ্ট হয়ে যায়। যদিও এই পাটকাঠির ব্যবহার পারটেক্স শিল্পে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এই পাটকাঠি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের বড় বড় প্লাই তৈরি হয়। এছাড়াও ঘরের ইন্টেরিয়রের কাজে যেসব প্লাই ব্যবহার করা হয় সেগুলোই পাটকাঠি দিয়েই তৈরি হয়।
যেহেতু মাঠের মাঝের দিকে জলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে এবং পচা পাটগুলো যেহেতু মাঠের মাঝখানের দিকে থাকে সেহেতু সেখানে চলাফেরা করার জন্য নৌকায় প্রধান যাতায়াত মাধ্যমে হিসেবে এসব কৃষকদের হয়ে থাকে। এসব নৌকার মাধ্যমে তারা খুব সহজেই মাঠের মাঝখানে গিয়ে সেখানে নৌকায় বসে বসে পাটের আঁশ ছাড়াতে পারে।
পাটকাঠি থেকে আঁশ আলাদা করার পর তারা এই আঁশগুলো একটা ছোট ছোট আঁটি করে বাঁধে এবং এই ছোট ছোট আঁটিগুলো তারা নৌকার উপরে সুন্দর করে জড়ো করে রাখে। যদিও তারা জলে নেমে পাট কাঠি থেকে আঁশ আলাদা করে। তাই তাদের নৌকা অপেক্ষা বেশিরভাগ জলেই থাকতে হয় এবং তারা জলের ভিতরে সুন্দর করে পাটের আঁশগুলোকে ধুয়ে নেয়।
পাটি থেকে আঁশ ছাড়ানোর পর তারা সেই আঁশগুলো নৌকার উপরে সুন্দর করে বোঝাই করে রাখে এবং নৌকা বোঝাই শেষ হয়ে গেলে তারা নৌকা নিয়ে পুনরায় পাড়ে এসে সেই আঁশগুলো নৌকা থেকে পারে একটা জায়গায় দলবদ্ধ করে রাখে এবং একজন ব্যক্তি ওই আঁশগুলো সুন্দর করে রোদে শুকানোর জন্য দড়ির উপরে টানিয়ে দেয়।
তো আমি একটু দূরে দেখতে পেলাম অল্প জলে একটা সাদা বক মাছ শিকার করছে। আসলে বকটি একটা নির্দিষ্ট জায়গায় চুপচাপ অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে রয়েছে। যখন সে তার কাছে কোন ছোট মাছকে দেখতে পায় তখন সে তার লম্বা ঠোঁট দিয়ে সেই মাছ শিকার করে নেয়। আসলে এখানে অনেকটা ধৈর্যের ব্যাপার আছে। কারণ পাখিটি যদি সামান্য নড়াচড়া করে তাহলে মাছগুলো দূরে পালিয়ে যায়।
ক্যামেরা পরিচিতি : CANON
ক্যামেরা মডেল : Canon EOS 7D
ক্যামেরা লেংথ : 600 mm
আশাকরি আজকের এই ফটোগ্রাফিক পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
ভাইয়া আপনি তো আন্তর্জাতিক মানের ফটোগ্রাফার সেটা অনেক আগে থেকেই জানি। আজকে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর সময়ের কিছু দারুন ছবি দেখলাম। আমাদের দিকে পানির উপরে তুলে পাট থেকে আঁশ ছাড়ায়। ছবিতে দেখলাম পানিতে পাট থেকে আঁশ ছড়াচ্ছে। পড়ে পাট কাঠি গুলো উপরে তুলছে। ধন্যবাদ।
আগে এ ধরনের দৃশ্য বেশ দেখা যেত। এখন পাটের আবাদ কমে যাওয়ায় এ দৃশ্য তেমন একটা চোখে পড়ে না। বর্তমানে পাটের জায়গা দখল করে নিয়েছে পলিথিন,যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। যাই হোক আপনার তোলা ফটোগ্রাফি সম্পর্কে বলা আমার পক্ষে সম্ভব না। আপনি একজন ভালো মানের ফটোগ্রাফার। আর আপনার তোলা ছবি সুন্দর হবে না,তা কি হয়!প্রতিটি ফটোগ্রাফি বেশ সুন্দর। সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার আজকের গ্রাম বাংলার সত্যিকারের সৌন্দর্যের ফটোগ্রাফি দেখে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা।আপনি সুন্দর বর্ননা তুলে ধরেছেন তা সত্যি আরো বেশী ভালো লেগেছে।এটা ঠিকই বলেছেন বক দাঁড়িয়ে থাকে চুপ করে যখনই কোন ছোট মাছ দেখে তখনই লম্বা ঠোঁটটি দিয়ে আটকে নেয়।খুব ভালো লাগলো আপনার তোলা ফটোগ্রাফিগুলো । এটা ঠিক ই বলেছেন পাটকে যে সোনালী আঁশ বলা হয় এটা হয়তো অনেকেই জানেনা।
জাস্ট অসাধারণ আমি সত্যি রীতিমত মুগ্ধ হয়ে গেলাম আপনার এই ফটোগ্রাফি গুলো দেখে। কোথাও ঘুরতে বের হলে আমরা সকলে চেষ্টা করে সুন্দর ফটোগ্রাফি করার যদিও প্রফেশনাল ভাবে ফটোগ্রাফার হওয়াটা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য একটা ব্যাপার। আপনার এই ফটোগ্রাফি গুলো যে দেখবে সেই মুগ্ধ হবে দারুন ভাবে আপনি ফটোগুলো ক্যাপচার করেছেন। সুন্দর ফটোগ্রাফির পাশাপাশি দারুণ বর্ণনা তুলে ধরেছেন, শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
জি দাদা বর্ষাকালীন সময়ে ফটোগ্রাফি করার একটু রিস্কি যেকোনো সময় বৃষ্টি হতে পারে। তারপর যে রোদ এবং রোদের প্রখরতা বেশি। বর্ষাকালীন সময়ে বিভিন্ন খাল বিল নদী নালায় সোনালী আঁশ পাটের কাজ নিয়ে কৃষকেরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সেই ব্যস্তময় মুহূর্তের দৃশ্য পটভূমি খুব সুন্দরভাবে ক্যাপচার করেছেন। তাদের জীবনযাত্রার বিষয়টি খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন ভালো লাগলো।
আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে এর আগেও অনেক মুগ্ধ হয়েছি। আজকেও আপনার এই ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আপনার প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি হয় দেখার মত। আপনি একজন আন্তর্জাতিক মানের ফটোগ্রাফার যা আপনার এই ফটোগ্রাফি গুলো দেখেই বোঝা যায়। আপনার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো।
পাট থেকে আঁশ তোলার দৃশ্যগুলো সত্যি দারুন হয়েছে। আসলে এই দৃশ্যগুলো গ্রামে গেলে দেখতে পাওয়া যায়। সত্যি দাদা আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে। আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। দারুন সব ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ফটোগ্রাফি করতে এবং ফটোগ্রাফি পোস্ট ঘুরে দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। আর আপনার ফটোগ্রাফি পোস্ট হলে তো কোন কথাই নেই। বর্ষাকালীন সময়ের প্রাকৃতিক দৃশ্যের সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। পানির মধ্যে পাট থেকে আশ ছাড়ানোর দৃশ্যগুলো দারুণভাবে ফুটেছে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে।
বর্ষাকাল মানেই ঘন ঘন বৃষ্টি আর এ সময় ফটোগ্রাফি করা একটু রিক্সই হয়ে যায়।
সব মিলিয়ে দারুন উপভোগ করলাম আপনার ফটোগ্রাফি গুলো।
আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। বর্তমানে পাটের দাম ভালই। তবে এটা আপনি ঠিকই বলেছেন যে পাঠকে সোনালী আঁশ বলা হয়। আপনার তোলা ছবিগুলো দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সত্যি আপনি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। এত সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।