ভেদাভেদ । কবিতা নং :- ৩৮
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা এবং আপনাদের আশীর্বাদে আমিও সুস্থ আছি। আজ আমি আমার লেখা একটা কবিতা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
সোর্স
আসলে আমাদের সবার জন্য এই পৃথিবী কিন্তু সমান নয়। কারো কাছে এই পৃথিবী স্বর্গের মতো আরামদায় হলেও সবার কাছে এই পৃথিবী কিন্তু স্বর্গের মত আরামদায়ক নয়। সবাই কিন্তু ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করার মত সৌভাগ্য নিয়েই এই পৃথিবীতে আসে না। কেউ কেউ আবার জন্ম নেয় খুব দারিদ্র পরিবারের। আর তাদের জন্মের পর থেকেই শুরু হয় তাদের জীবনের সংগ্রাম।
তাদেরকে বহু কষ্টের মধ্য দিয়ে তাদের জীবনের এই সময়টাকে অতিবাহিত করতে হয়। তাদের এই কষ্টের সময়কে অতিবাহিত করার জন্য তাদেরকে অনেক বেশি কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। কারণ তাদের সমাজের সবার মত তাদের অর্থ থাকে না। তাদের দিন যায় অনাহারে। তাদের দুবেলা দুমুঠো খাবার জন্য সমাজের প্রতিকূল পরিবেশের ভিতর কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।
আসলে তারা যদি এ পৃথিবীতে কর্ম না করে শুধুই বসে থাকে তাহলে তাদের ঘরে অন্ন কখনোই আসবেনা। তাই তাদের এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে সময় তাদের কর্ম ক্ষেত্রে জড়িয়ে থাকতে হয়। এমন অনেক পরিবার আছে যারা তাদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করার জন্য জীবনে একটুকু আনন্দ উপভোগ করতে পারে না। তাদের সারা জীবনটা পরিশ্রম করতে করতে কেটে যায়।
আর যারা এই পৃথিবীতে সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করে তাদের জন্য এই পৃথিবীর তেমন কঠিন হয় না। তাদের কাছে এই পৃথিবীর সবকিছুই সহজলভ্য হয়। তারা কোন কিছু চাওয়ার আগেই তাদের চাহিদার সব জিনিস পেয়ে যায় তাদের হাতের মুঠোয়। তারা কখনোই বোঝেনা অভাব জিনিসটা কি। এছাড়াও তাদের জীবনে অনাহারে থাকার কষ্টটা একদম নেই বললেই চলে।
আসলে আমাদের এই পৃথিবীতে বিভিন্ন শ্রেণীর লোক বসবাস করে। এদের ভিতর কেউ ধনী আবার কেউ মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক আবার কেউ খুব নিম্ন বৃত্ত পরিবারের লোক। কিন্তু আমাদের পৃথিবীতে এই গরীব শ্রেণীর লোকের সংখ্যা খুবই বেশি। তাদের সারা জীবন যতই পরিশ্রম করুক না কেন তাদের পরিবারের সামান্য উন্নতি তারা করতে পারে না।
তাদের কাছে এই পৃথিবীটা একরকম নরক এর সমান। কারণ দুঃখ দুর্দশার ভিতর দিয়ে তাদের সব সময় অতিবাহিত করতে হয়। আসলে বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় সব দেশ গণনা করলে দেখা যায় যে গরিব লোকের সংখ্যা তুলনামূলক হারে অনেক বেশি। আর এর ফলে পৃথিবী অনেক পিছিয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
আসলে আমাদের পৃথিবী থেকে এই ভেদাভেদ খুব তাড়াতাড়ি তুলে ফেলতে হবে। আর এই ভেদাভেদ এর কারণে আমাদের পৃথিবী কখনোই উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে পারবে না। যদি এই পৃথিবীতে ভেদাভেদে সৃষ্টি হয় তবে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য দেখা যায়। আর কর্মক্ষেত্রে এই ভেদাভেদের কারণে কোন কর্মই সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় না।
এছাড়াও আমরা সব সময় দেখতে পাই যে, এই পৃথিবীতে যারা ধনী তারা ক্রমশই ধনী হতে থাকে এবং যারা গরীব তারা সবসময়ই গরিব থেকে যায়। কারণ হলো ধনী লোক কখনোই চায়না যে গরিব লোক তাদের মত ধনী হয়ে যায়। এছাড়াও এই ধনী শ্রেণীর লোকরা এই গরিব লোকেদের দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করার। কিন্তু যতই কঠোর পরিশ্রম করুক না কেন তারা তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক কখনোই পায় না।
আর তাইতো এই ধনী-গরীব হবার ফলে পৃথিবী ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। আমাদের অবশ্যই উচিত এই ধনী গরীব পার্থক্যটাকে দূর করে একটা সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার। আর সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য আমাদের সবাইকেই একতাবদ্ধ হতে হবে। সবাইকে এক নতুন পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য শপথ নিতে হবে। এছাড়াও সবাইকে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে।
✠ ভেদাভেদ ✠
প্রতিনিয়ত আমরা পাই,
এই পৃথিবী হতে শিক্ষা।
বাঁচার জন্য আমরা মানুষ,
যুদ্ধ করছি সর্বদা।
কেউবা আবার মালিক,
কেউবা আবার শ্রমিক।
কেউবা আবার দিনমজুর,
কেউ আবার করছে ভিক্ষা।
নানান রঙের মানুষ,
এই পৃথিবীতে যায় দেখা।
কেউ থাকে অট্টালিকায়,
কারো মাথার উপর ছাদ ফাঁকা।
সোনার চামচ মুখে দিয়ে,
কেউ জন্ম নেয় পৃথিবীতে।
কেউবা আবার জন্ম নেয়,
দুর্ভিক্ষের মাঝে।
সবার জন্য এই পৃথিবী,
সমান কখনোই নয়।
কারো দুবেলা খাবার জোটাতে,
মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়।
খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য,
বেঁচে থাকা বড়ই কঠিন হয়।
সংগ্রাম করেই সারা জীবন,
পরিবারের দেখাশোনা করতে হয়।
শত আঘাত বুকে নিয়ে,
ক্লান্ত মস্তিষ্কে ভাবে।
সারা জীবন গরিব মানুষের,
এভাবেই কি দিন যাবে।
পৃথিবীকে সুন্দর করতে হলে,
ভেদাভেদ ভুলতে হবে আগে।
হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে,
মানুষকে ভালবাসতে হবে।
আশাকরি কবিতাটি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
তো দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
অসাধারণ লিখেছেন দাদা৷ বেশ বিদ্রোহী বিদ্রোহী ভাব আছে,আমার তো মনে হচ্ছিল নজরুল ইসলামের কবিতা পড়ছি বুঝি। আমার দারুন লেগেছে কবিতাটি। ধন্যবাদ দাদা কবিতাটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
দাদা আপনার কবিতা গুলো বরাবরই খুব চমৎকার হয়ে থাকে। আপনার কবিতাগুলো আমার পড়তে অনেক ভালো লাগে। অর্থের গভীরতা এবং ছন্দ সবকিছুই তাকে আপনার কবিতার মাঝে। অনেক অনেক ধন্যবাদ সব সময় সুন্দর সুন্দর কবিতা আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময় ফ্যামিলির সবাইকে নিয়ে এই কামনা করি ।
দাদা আপনার কবিতা সব সময় খুব সুন্দর হয়। বরাবরের মতোই খুব চমৎকার কবিতা উপহার দিয়েছেন। আর কবিতা লেখার জন্য খুব সুন্দর একটি বিষয় নির্ধারণ করেছেন এটি আমার অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে দাদা ভালো থাকবেন সর্বদায়।