বিশ্ব-উষ্ণায়ন।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাই। আশাকরি প্রতিবারের মতো এবার আপনারা অতটা ভালো নেই। কারণ গরম এতটাই বেড়ে গেছে যে এই গরমে ভালো থাকাটা খুবই কঠিন। তারপর আবার রোজা। যাইহোক সবাই এই গরমের সাবধান থাকার চেষ্টা করবেন।



thermometer-1917500_640.webp

সোর্স


আজকের টপিকটা পুরো ভিন্ন ধরনের। আজ কোন ভ্রমণের পোস্ট নয়, নয় কোন রেসিপি, নয় কোন কবিতা। আজকের প্রধান আলোচ্য বিষয় হলো বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে।

কিছুদিন যাবত দিনের বেলায় তাপমাত্রা প্রায় ঊনচল্লিশ ডিগ্রি হচ্ছে। ঘরের মধ্যে থাকা একদম অসয্যতর হয়ে উঠছে। এই গরমের কারণে রাতের বেলায় ঠিকঠাক ঘুম হচ্ছে না। দিনের বেলা রোদের প্রকরতা এত বেশি যে কাজ করতে যেতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আর রাস্তা দিয়ে বাইক চালানোর সময় মনে হচ্ছে রাস্তা দিয়ে লু বইছে।

বাইরে ছাতা ছাড়া হাঁটা একদম অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শরীরে যে অংশ বাইরের রোদের সংস্পর্শে আসছে সেই অংশ কালো হয়ে যাচ্ছে। বাইরে মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষদেরও বোরকার মতো ড্রেস পরে বের হতে হচ্ছে।

তারপর আবার মুসলমান ভাইদের রোজা। এই রোজায় এত গরমে প্রায় সকল মুসলমান ভাইদের খুবই কষ্ট হচ্ছে।



এখন আবহাওয়া অ্যাপসে দেখছি যে বিগত দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে কয়েক ডিগ্রি। বিভিন্ন রকমের পশু পাখি এই গরমে আশ্রয় নিচ্ছে বিভিন্ন গাছপালা নিচে। একই সাথে মানুষও কোন গাছ পেলে তার নিচে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।



এই গরমের ভিতর হিটে স্টক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েই চলেছে। আর এই গরম থেকে বাঁচতে হলে প্রতিনিয়ত আমাদের জল, ঠান্ডা খাবার খেতে হবে।


আমাদের পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। আর এই অধিক জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজন হয় অধিক বাসস্থানের। এই অধিক বাসস্থানের জন্য প্রয়োজন হয় জায়গার। মানুষ বিভিন্ন বন জঙ্গল কেটে মানুষের বসবাস উপযোগী করে তোলে। এর ফলে দিন দিন আমাদের পৃথিবী থেকে গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।

আমরা সবাই জানি, গাছ কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে। আর আমরা এই অক্সিজেন গ্রহণ করি এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করি। এই গাছপালা কমে যাওয়ার কারণে পৃথিবীতে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে পৃথিবীতে গ্রিনহাউস ইফেক্ট সৃষ্টি হচ্ছে।


আর আমরা সবাই এই গ্রীন হাউজ ইফেক্ট সম্পর্কে জানি। এর ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যত সময় যাচ্ছে তাপমাত্রা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রাচীনকালে পৃথিবীতে গাছ পালায় ভর্তি ছিল। তখন জনসংখ্যা ও কম ছিল। এর ফলে তখনকার আবহাওয়া খুবই সুন্দর ছিল। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়াচ্ছে যে আগামী কয়েক বছরে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে।


আমাদের সবাইকেই এখনই সচেতন হতে হবে। নতুবা এক সময় এই পৃথিবী বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে। আর অতিরিক্ত জনসংখ্যা দেশের জন্য বিপদ।

সবকিছুর মূলে সবাইকে সুশিক্ষিত হতে হবে। কারণ একজন সুশিক্ষিত ব্যক্তিই ভবিষ্যতের এই বিপদ সম্পর্কে জানতে পারে। সবাইকে এই বিশ্ব উষ্ণায়ন সম্পর্কে জানাতে হবে। আর বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধের সবচেয়ে বড় উপায় হল গাছ লাগানো।

আমাদের উচিত বেশি বেশি করে গাছ রোপন করা। আমরা যদি প্রয়োজন অনুযায়ী একটা কাজ কাটি, তাহলে আমাদের আরো দশটা গাছ লাগাতে হবে।



প্রতিবছর আমাদের এই পৃথিবীতে ঝড় খরা বন্যা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই আছে। আর এই দুর্যোগের মূল কারণ হলো এই বিশ্ব উষ্ণায়ন।

আমাদের পৃথিবীতে স্থলভাগের সংখ্যা খুবই কম। আর এই বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে মেরু এলাকার বরফ গলে জলে পরিণত হচ্ছে। ফলে দিন দিন জলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং একই সাথে বিভিন্ন এলাকাতে বন্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে আমাদের স্থলভাগের সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।



তাই আমাদের পৃথিবীর সবাইকেই সচেতন হতে হবে এবং কঠোরভাবে বিভিন্ন নিয়ম নীতি পালন করতে হবে। কথায় আছে না, গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান। তাই আমাদের পরিবেশ বাঁচাতে হলে বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে। আর প্রায় সবাইকেই আমাদের এই বিশ্ব উষ্ণায়ন সম্পর্কে জানাতে হবে এর বিপদ সম্পর্কে।

আসলে আজকের পোস্টটি করার মূল কারণ হলো কিছুদিন যাবত গরম এতটাই পড়েছে যে ঘরের বাইরে বেরোনো দুর্বিষহ হয়ে যাচ্ছে। আর ঘরের ভিতর এসি ছাড়া এক মিনিটও কাটানো সম্ভব হচ্ছে না। ফোনের ওয়েদার অ্যাপ খুলে দেখি বিগত কয়েকদিনে তাপমাত্রা আরও এক ডিগ্রি বৃদ্ধি পাবে। এই তাপমাত্রায় এই অবস্থা আর এরপর যদি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় তাহলে কি অবস্থা হবে।



আপনারা সবাই সাবধানে থাকবেন বিশেষ করে আমার মুসলমান ভাইয়েরা যারা রোজা রয়েছেন তারা একটু বেশি সাবধানে থাকবেন। কারণ এই গরমে হিট স্টক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। আর সারাদিন রোজা থাকার কারণে শরীর অনেকটা দুর্বল থাকে।


আপনারা সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 2 years ago 

একটি জনগুরুত্বপূর্ণ -সচেতনতা মূলক পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। আমাদের পৃথিবীকে আমরাই ধবংস করছি।নদী-নালা,-গাছ-পালা,বন- জঙ্গল দিন দিন উজার করছি। পৃথিবীর ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলেছি।তাইতো উষ্ণায়ন।উষ্ণায়নের কারুন দারুণ সহজ করে বর্ণনা করেছেন। অনেক ভাল লেগেছে আমার। শুভ কামনা আপনার জন্য।

 2 years ago 

আমাদের সবাইকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 79169.45
ETH 3182.99
USDT 1.00
SBD 2.63