দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি।
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আসলে আজ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে আমার কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
বর্তমান সময়ে আমরা বাজার করতে গেলে দেখতে পাই যে কোন একটা অনুষ্ঠান উপলক্ষে একদল অসাধু ব্যবসায়ীরা সামরিকের জন্য তাদের দ্রব্যাদির দাম প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। যদিও তারা সেই একই পয়সায় জিনিসপত্র ক্রয় করে কিন্তু তারা বাজারে সেইসব জিনিস একদম দ্বিগুণ দামে বিক্রি করে। এছাড়াও শুধু উৎসব মুখর দিনগুলোতে নয়, প্রায় সারা বছরই প্রতিটা জিনিসের দাম অনেক বেশি থাকে। আর যতদিন যেতে থাকে তত এইসব জিনিসের দাম ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। যদিও মানুষের উৎপাদন আগের থেকে বর্তমান সময়ে অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবুও সেই হারে জিনিসপত্রের দাম না কমে বরং আরো বৃদ্ধির দিকে এগিয়েছে। আসলে এইভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকলে একদিন আমাদের বস্তা ভর্তি টাকা নিয়ে বাজার করতে যেতে হবে।
আমরা সকলে জানি যে পূর্বের সময়ে প্রতিটা জিনিসের দাম যেমন কম ছিল তেমনি সেই সব জিনিসের উৎপাদনে অনেক বেশী কম ছিল। ধরুন ধানের কথাই ধরা যাক। পূর্বে এক বিঘা জমিতে প্রায় এক থেকে দুই মন ধান পাওয়া যেত। এছাড়াও তখনকার সময়ে জনসংখ্যা অনেক বেশি কম ছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে একদিকে যেমন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে তেমনি অন্যদিকে মানুষের খাবারের চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এছাড়াও আধুনিক বিজ্ঞানের সব নতুন আবিষ্কারের ফলে পূর্বের তুলনায় বর্তমানে এখন এক বিঘা জমিতে প্রায় ১০ থেকে ১২ মণ ধান হচ্ছে। আসলে ধানের এমন বিবর্তন বিজ্ঞানের অন্যতম একটি শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার। এছাড়াও প্রতিটা শাকসবজি বাজার থেকে যখন আমরা কিনতে যাই সেগুলোর দামও কিন্তু অনেক বেশি বেড়ে গেছে।
আসলে পূর্বে সবকিছুর উৎপাদন যেমন কম ছিল তেমনি মানুষের চাহিদাও তখন অনেক বেশি কম ছিল। কিন্তু বাজারে হাইব্রিড জাতের পণ্য আসার ফলে সবকিছুর উৎপাদন প্রায় ৫-৬ গুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এর ফলে আমাদের এই পৃথিবীতে খাদ্য সংকট প্রায় না থাকারই কথা। এছাড়াও প্রতিবছর সরকার এই কৃষকদেরকে বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের ফসলের বীজ দিয়ে থাকে। আর এর ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদনে আরো আগ্রহী হয়ে অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন করছে সবসময়। এছাড়াও কৃষি খাতে যেসব যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হচ্ছে তাও সরকার এসব গরীব কৃষকদেরকে বিনামূল্যে দান করছে।
যদিও এই কৃষকদের কাছ থেকে কিছু অসাধু ব্যক্তিরা কম দামে বিভিন্ন কাঁচামাল এবং পণ্য ক্রয় করে সেইসব কাঁচামাল বাজারে যখন বিক্রি করতে যাচ্ছে তখন সেই কাঁচামালের উপর দাম প্রায় তিনগুণ ধার্য করা হচ্ছে। আর এর ফলে সমাজের এই দুই শ্রেণীর লোকেরদের সব থেকে বেশি ক্ষতি হচ্ছে। একশ্রেনি হচ্ছে এই কৃষক শ্রেণি এবং অন্য শ্রেণী হচ্ছে আমরা। অর্থাৎ আমরা যারা বাজার থেকে এইসব কাঁচামাল ক্রয় করছি আমরাই সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আসলে শুধুমাত্র এক জায়গাতে নয়। সকল জায়গাতে এই অসাধু ব্যক্তিরা সিন্ডিকেট তৈরি করে সেখানে অতিরিক্ত দামে এইসব পণ্য বিক্রয় করছে।
আর এজন্য সমাজে যারা গরীব শ্রেণীর লোক রয়েছে তাদের পক্ষে বাজার থেকে এই অতিরিক্ত দাম দিয়ে জিনিসপত্র ক্রয় করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। কারণ তারা প্রতিদিন যা ইনকাম করে তার সিংহভাগই এইসব খাবার ক্রয় করতে ব্যয় হয়ে যায়। আসলে আমরা যদি এখনো সচেতন না হই তাহলে এইসব সিন্ডিকেট শ্রেণীর লোকের আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম আরো অনেক বেশি বাড়িয়ে দিবে। আসলে শুধুমাত্র একার পক্ষে এত বড় সিন্ডিকেটকে জব্দ করা সম্ভব নয়। দেশের সকল মানুষ যদি হাতে হাত রেখে এসব সিন্ডিকেটদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তাহলে এইসব সিন্ডিকেটরা দেশ থেকে তাদের এইসব অন্যায় অত্যাচারের প্রথা উঠে যাবে।
আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া উৎপাদন আগে থেকে বর্তমানে অনেক বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও দাম কমার পরিবর্তে দিন দিন বেড়েই চলেছে। সত্যিই একসময় বাজার করতে যেতে হলে বস্তা ভরে টাকা নিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। পুরোনো যুগের মানুষেরা এত কিছু বুঝতো না সেজন্য উৎপাদন কম হলেও তা টাটকা ছিল আর দামও কম ছিল। তাছাড়া মানুষ তখন সিজন অনুযায়ী ধান কিংবা সবজি চাষ করতো। তারপরেও সব কিছু ঠিক ছিল, কিন্তু বর্তমানে যত বেশি উৎপাদন বাড়ছে ততই দামের পরিমাণ বাড়ছে। হ্যাঁ ভাইয়া এই ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীর জন্যই কৃষকরা তাদের ন্যায্যমূল্য পায় না। অসাধু ব্যবসায়ীর কবলে পড়ে কৃষক ও আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সবাই মিলে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করলে অসাধু ব্যবসায়ীদের দমন করা যেতো। কিন্তু ভালো কাজ কেউ করতে চায় না, একজন হাত বাড়িয়ে দিলে দু'জন হাত পিছিয়ে নেয়। সময় উপযোগী খুব সুন্দর কথা আপনার ব্লগের মধ্যে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ।
আগে মানুষ কিভাবে চাষ করবে এসব ভালো করে জানতো না। এবং আগে ফসল কম উৎপাদন হতো। তবে বর্তমানে সব ধরনের ফসল অনেক বেশি চাষ হচ্ছে। এবং কৃষক শ্রমিকরা চাষ সম্পর্কে অনেক ধারনা পেয়েছে। সাধারণ কৃষক শ্রমিকরা তো ঠিক ভাবে তাদের ফসলের দাম পায় না। বরং বড় বড় ব্যবসায়িরা লাভবান হচ্ছে। চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
এটা সত্য যে আমাদের চাহিদা দ্বিগুন হয়েছে কিন্তু তার সাথে সাথে উৎপাদনও বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু পরিবর্তন হয়নি ব্যবসায়ী মানক মানুষগুলো মানসিকতা। কৃষক যেমন তার ন্যয়মূল্য হতে বঞ্চিত হচ্ছে ঠিক তেমনি সাধারণমানুষও সকল কিছু হতে বঞ্চিত হচ্ছে, পরিবর্তন আসুক এই ব্যবস্থার। অনেক ধন্যবাদ
অত্যন্ত সময়োপযোগী টপিক্স নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সত্যি বলতে দাদা, বর্তমান সময়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অতিরিক্ত দামের কারণে আমাদের সমাজের গরিব শ্রেণীর মানুষেরা সবথেকে বেশি অসহায় হয়ে পড়েছে। জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে সবথেকে বড় দায়ী আমাদের দেশের স্বার্থন্বেষী অসাধু ব্যবসায়ীদের দল। যাহোক অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কথাটা ঠিক দাদা কৃষকেরা যেমন দাম পাচ্ছে না অন্যদিকে ঐটা আমরা বেশি টাকা দিয়ে কিনছি। এবং পুরো টা ভোগ করছে লাভ করছে মাঝখানের দালাল একটা সংগঠন। যেটা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। আগের তুলনায় এখন উৎপাদন অনেক অনেক বেশি কিন্তু দামও কম হওয়ার পরিবর্তে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আর একটা ব্যাপার দেখবেন দাম কখনও কমে না কমলেও খুবই কম। দাম শুধু বৃদ্ধি পাই। অনেক সুন্দর লিখেছেন দাদা।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কথাটি শুনলেই গা হিমশিম খেয়ে যায়। বর্তমান সময়ে খাওয়া-দাওয়া খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে যারা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকজন আছে তারাই বেশি কষ্ট পাচ্ছে। আগে ১০০ টাকা কিংবা ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে গেলে বেশ ভালোই বাজার করা যেত। কিন্তু এখন হাজার টাকা নিয়েও বাজারে গেলে আপনার পলিথিনের নিচেই কিছু রাখা সম্ভব না। এটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক। যদিও কৃষি বিজ্ঞানের বিবর্তনের ফলে হাইব্রিড জাতীয় অনেক কিছু উৎপাদন হচ্ছে। কিন্তু এত জিনিস যায় কোথায় এবং এত দাম কেন নেই কিছু বোঝা যায় না। আমাদের দেশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছেন যারা অনর্থক দ্রব্য পণ্য রিজার্ভ করে রাখে এরপরে বেশি দাম দিয়ে বিক্রয় করে। প্রয়োজনে গুদামের র মধ্যে তারা জিনিস গুলো পচিয়ে ফেলে। তারপরও কিন্তু ছেড়ে দেয় না কম দামে। আজকের মানবতা কোথায়? যাক অবশেষে আমাদেরকেই বাঁচতে হবে। দ্রব্যমূল্য বেশি হলেও আমাদেরকে খেতে হচ্ছে। বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে এটা হচ্ছে সবচেয়ে দুঃখের বিষয়।