বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ২৬
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।
তো সেদিনকার মত আমরাও হোটেলে পৌঁছে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। ফ্রেশ হয়ে অল্প কিছু খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম কারণ আজকের দিনের জার্নিটা অনেক বেশি লম্বা ছিল। তাই বিছানায় মাথা রাখতেই ঘুম চলে আসলো। পরের দিন সকালে আমাদের একটু উঠতে দেরি হয়ে গেল। রাতের ঘুমটা বেশ ভালই হয়েছিল। সকাল বেলা উঠে আমরা হাত-মুখ ধুয়ে হোটেলে ব্রেকফাস্ট করার জন্য উপরের তলায় চলে এলাম।
আমরা যে হোটেলে উঠেছিলাম সেখানে সকালের ব্রেকফাস্ট হোটেল থেকেই আমাদের দিয়েছিল। তো ব্রেকফাস্টে গিয়ে দেখলাম তারা সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। আসার সাথে সাথেই তারা আমাদের মিনারেল ওয়াটার এবং এক প্লেটে একটা রুটি, ডিম ভাজা, বিভিন্ন সবজির তরকারি এবং ডাল দিল। খাবারটা সত্যিই খুব ভালো ছিল। কিন্তু রুটিটা একটু শক্ত হয়ে গিয়েছিল কারণ আমাদের আসতে একটু দেরি হওয়ায় রুটিটা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল।
যাইহোক আমাদের ব্রেকফাস্ট শেষে ১০ মিনিট পর আমাদের চা দেওয়া হল। আসলে চা খেতে খেতে আমরা কিছুক্ষণ গল্প করতে লাগলাম। এদিকে আমাদের বাইরে ঘোরার সময় চলে এলো। তাই আমরা দ্রুত চা খেয়ে নিচে স্নান করার জন্য চলে আসলাম। স্নান কমপ্লিট করে আমরা আবার বেরিয়ে পড়লাম সিলেট ঘোরার উদ্দেশ্যে।
তো আজ আমরা সিলেট গ্যাস ফিল্ড এই জায়গাটিতে ঘুরতে গেলাম। আসলে ওখানে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস রয়েছে ওই জায়গাটিতে। তো আমরা দেরি না করে সবাই মিলে গাড়িতে উঠে পড়লাম এবং ঘুরতে যাওয়ার জন্য সবাই মিলে রওনা দিলাম।
তো আমরা সেই সিলেট গ্যাস ফিল্ডে চলে এলাম। এসে সর্বপ্রথম আমরা একটি বড় পুকুর দেখতে পেলাম এবং পুকুরে নিচ দিয়ে বুদবুদ আকারে গ্যাস বের হচ্ছিল এবং এই প্রচুর গ্যাসের কারণে জল লাল হয়ে গিয়েছিল। এই পুকুরে কোন ধরনের কোন প্রাণী বসবাস করতে পারেনা। কারণ অনেক বছর ধরে এই পুকুরে একই হারে গ্যাস বাইরে নির্গত হচ্ছে।
তো স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে জানতে পারলাম যে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেছে এই গ্যাসকে সংগ্রহ করার জন্য। কিন্তু কোনভাবেই তারা এই গ্যাস সংগ্রহের কাজে সফল হতে পারেনি। কারণ তারা অনেক মেশিন এই পুকুরে বসিয়েছিল এবং সব মেশিন জলের নিচে ডুবে গেছে।
তখন একজন লোক আমাদের পুকুরের গ্যাস আছে কিনা তাই প্রমাণ করার জন্য পুকুরের একপাড়ে নামল। পুকুরের উপরে যে সব বুদবুদ ছিল সেই বুদবুদ একটা লাঠির সাহায্যে তিনি একপাশের জড়ো করলেন এবং এক পাশে জড়ো করে একটি ম্যাচের কাঠি দিয়ে ওই বুদবুদের উপর ধরতেই আগুন জ্বলে উঠলো।
আসলে জিনিসটি দেখতে যতটা ভালো লাগছিল কিন্তু ততটাই বিপদজনক ছিল। কারণ যদি এই আগুন ছড়িয়ে যায় চারিদিকে তাহলে বড়সড়ো একটা বিপদ ঘটতে পারে। এখানকার স্থানীয় লোকজন দক্ষতার সাথে জিনিসটি করে থাকেন এবং এই জিনিসটি করার বিনিময় তারা কিছু পারিশ্রমিকও পেয়ে থাকেন।
তখন আমি মাথায় একটা বুদ্ধি আঁকতে লাগলাম যে এই পুকুরের উপর একটা বড় পলিথিন দিয়ে ঢেকে সেই পলিথিনের এক সাইডে ছিদ্র করে পাইপ দিয়ে গ্যাসটি যদি সংগ্রহ করা যায় তাহলে বেশ ভালো হতো। তাই আমি ওই লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনারা তো এই পুকুরের উপরে পলিথিন দিয়ে ঢেকে গ্যাস সংগ্রহ করতে পারেন।
তখন ওই লোকটি আমার প্রতি উত্তর বললেন দাদা এইভাবে গ্যাস ধরা কখনোই সম্ভব নয়। কারণ অনেকেই এসে এখান থেকে হার মেনে চলে গেছেন। বাইরেরও নাকি অনেকগুলো কোম্পানি এসে চেষ্টা করেছিল এখান থেকে গ্যাস সংগ্রহ করার। আসলে সবাই ব্যর্থ হয়ে এখান থেকে চলে গেছে।
যাইহোক আমি পুকুরের চারিপাশটা একটু ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম। আসলে এখানে আমার অক্সিজেন নিতে একটু কষ্ট হচ্ছিল। কারণ এখানকার পরিবেশ এই মিথেন গ্যাসের ফলে অনেকটা দূষিত হয়ে গেছে এবং এই গ্যাস আমাদের শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। এখানকার স্থানীয় লোকদের বিভিন্ন ধরনের রোগ হয় এই গ্যাসের কারণে। যাইহোক আমরা পুকুরের সাইট থেকে একটু ভেতরের দিকে চলে আসলাম।
তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
বাংলাদেশ ভ্রমণের অনেকগুলো পর্ব একের পর এক আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করে চলেছেন। আপনার এই অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি পাশাপাশি বাংলাদেশ ভ্রমণের বিভিন্ন বিষয় পোস্টের মাঝে দেখতে পেরে আমি অনেক খুশি। আর আপনি এখানে এসে যে সমস্ত বিষয়গুলো করেছেন তার বিষয়ও খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন যেখানে আমি তো পূর্বেও দেখেছিলাম মাছ ধরার দৃশ্য। যাই হোক অনেক সুন্দর ছিল পোস্টগুলো।