মানুষের মন। কবিতা নং :- ৫১
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা এবং আপনাদের আশীর্বাদে আমিও সুস্থ আছি। দেখতে দেখতে আজ আপনি আপনাদের সাথে আমার পঞ্চসতম লেখা কবিতা পোস্ট করলাম । আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
সোর্স
আসলে এই পৃথিবীতে প্রায় সকল ধরনের মানুষই মুখোশ পরে ঘুরে বেড়ায়। আপনি কখনো কাউকে চিনতে পারবেন না যে কে আপনার উপকার করবে আর কে আপনার ক্ষতি করবে। আপনার কাছে সবাইকেই খুব ভালো মনে হবে। আপনি বিশ্বাস করে যদি আপনার মনের কথা কোন খারাপ ব্যক্তির কাছে শেয়ার করেন তাহলে আপনার সব থেকে বেশি ক্ষতি হবে। অবশ্য এটা আমাদের দোষ নয়। মানুষ কিন্তু খুব আবেগপ্রবণ। মানুষ মানুষের ভালোবাসা পেলে মানুষ সবকিছু ভুলে গিয়ে সেই মানুষকে আপন করে নেয়।
মানুষকে আপন করে নিয়ে সে তার মনের সব কথা সেই মানুষের কাছে উজাড় করে বলে দেয়। যদিও আপনি সেই মানুষটির মুখোশের আড়ালে ভালো মানুষ কিনা সেটি আপনি কখনোই জানতে পারেন না। যদি মানুষটি ভালো হয় আপনি তাহলে বেঁচে গেলেন। আর যদি মানুষটি খারাপ হয় তাহলে আপনার জীবনে সেই সময় থেকেই সমস্যার সৃষ্টি করলেন আপনি নিজেই। আসলে মানুষের মন বিভিন্নভাবে পরিবর্তন হচ্ছে সময়ে পরিপ্রেক্ষিতে। আপনি দেখছেন যে এই মানুষটা কিছুক্ষণ আগেও এই ধরনের ছিল না। কিন্তু সময় পরিবর্তনে সে নিজে পরিবর্তন হয়ে গেছে।
আসলে এটি মানুষের দোষ নয়। সময়ের সাথে সাথে মানুষ নিজেদের পরিবর্তন করে নেয়। আর নিজেদের পরিবর্তন না করলে মানুষ কখনো এই সমাজে টিকে থাকতে পারবেনা। আর আপনি কখনো বুঝতে পারবেন না যে কে কখন আপনাকে কিভাবে ক্ষতি করবে। আসলে মানুষ এই আগেরকার মতো এখন আর ভালো নেই। ঘাট প্রতিঘাত খেতে খেতে মানুষের মন আজ পাথরের থেকেও শক্ত হয়ে গেছে। মানুষ আর মানুষকে কখনোই বিশ্বাস করতে পারছে না। কারণ বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ধোঁকা খেতে খেতে সে এখন অনেক কঠোর হয়ে গেছে।
পূর্বের মানুষ একে অন্যের সাহায্যে সবসময় এগিয়ে আসতো। তারা একে অন্যের দুঃখ দুর্দশা দেখলে সব সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিত। কিন্তু বর্তমান সময়ে মানুষ আর মানুষের সাহায্যে কখনোই এগিয়ে আসে না। একে অন্যের সাহায্য তো দূরের কথা কোন মানুষ অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখলেও মানুষ সেই মানুষের পাশ দিয়ে হেঁটে চলে যায়। সেই মানুষের বিন্দুমাত্র উপকার করতে চেষ্টা করে না। যদি আপনি অন্য কারো উপকার করতে চান তাহলে বাকি লোক অথবা সেই লোক আপনাকে দেখে মনে করবে যে আপনার মনের ভিতর কোন খারাপ মতলব রয়েছে।
আসলে শেধে শেধে উপকার করাও বর্তমান সময়ে খুব একটা খারাপ বিষয়। আপনি ভাল মনে অন্য কাউকে সাহায্য করতে গেলে সে হয়তোবা আপনাকে দেখে ভাবতে পারে যে লোকটি কোন কিছুর বিনিময়ে আমাকে সাহায্য করতে এসেছে। এছাড়া কোনো মানুষ যদি ভাঙ্গা কুঁড়ে ঘরে বসবাস করে আর কোন মানুষ যদি অট্টালিকার উপরে বসবাস করে তাহলে সেই অট্টালিকার উপরে বসবাসকারী লোক সেই কুঁড়ে ঘরে থাকা লোককে একটুও সাহায্য করবে না। এছাড়াও এই পৃথিবীতে বহু লোক আছে যারা দুবেলা দুমুঠো খাবার পায় না। আসলে তাদেরও কেউ সাহায্য করে না কখনো।
তাইতো আমাদের সকল হিংসা বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে একে অপরের সাহায্য করতে হবে। নতুবা আমরা মানুষ জাতি পৃথিবী থেকে বিলীন হয়ে যাব। আর আমরা যদি একে অপরের সাহায্যে সবসময় এগিয়ে আসি তাহলে আমাদের দেখাদেখি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একে অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। আর এর ফলে সৃষ্টি হবে এক নতুন পৃথিবীর। যে পৃথিবীতে শুধু শান্তি বিরাজ করবে। আসলে মানুষকে ভালবাসলে ভগবানকে ভালোবাসা হয়। তাইতো সবকিছু ভুলে গিয়ে অন্যের দুঃখে দুঃখিত হওয়া উচিত।
✠ মানুষের মন ✠
মানুষের মন পরিবর্তন হচ্ছে,
বুঝতে না পারছি কেউ কাউকে।
কখন যে কে কার ক্ষতি করছে,
বোঝা যাচ্ছে না এখনে।
মানুষ তো আর মানুষ নেই,
পাথরের মত মন তাদের।
ওই পাথরের মনের ভিতর,
দয়ামায়া নেইকো তাদের।
একে অন্যের সাহায্যে,
কেউ তো বাড়ায় না আর হাত।
যদি কেউ কখনো হাত বাড়ায়,
সবাই দেয় তারে অভিশাপ।
নিজে কখনো উপকার করবেন,
লোকে তোমারে খারাপ ভাববে।
এই উপকারের পিছনে হয়তো,
তুমি তার ক্ষতি করবে।
মানবতা এখন উঠে গেছে,
মানুষের ভিতর থেকে।
কেউ তো ভাঙ্গা ঘরে থাকে,
কেউ থাকে অট্টালিকার পরে।
ক্ষুধার অভাবে ঘুরে বেড়ায়,
বহু মানুষ এই পৃথিবীতে।
কেউবা খাবার নষ্ট করে,
কি আজব এই দুনিয়ারে।
হিংসা বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে,
মানুষকে ভালোবাসো সবাই।
মানুষকে ভালোবাসার মতো,
এমন শান্তি এই দুনিয়াতে নাই।
সামান্য একটু সাহায্য দিয়ে,
মানুষের পাশে দাঁড়াও।
দুঃখ কষ্ট তাদের দূর করে দাও,
ভালবাসবে তারা তোমায়।
আশাকরি কবিতাটি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
তো দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
প্রিয় দাদা, আপনার লেখা মানুষের মন কবিতাটি পড়ে আমার বেশ ভালো লেগেছে। আসলে বর্তমান সময়ে মানুষের ভেতর থেকে সত্যিই মানবতা একেবারেই উঠে গেছে। যার কারনে দিন দিন আমাদের পৃথিবীর বুকে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাত্রাটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুন্দর একটি কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এমন একটা সময় ছিল যখন মানুষের বিপদে একে অপরের সহায়তা প্রদান করার জন্য দৌড়িয়ে আসতো এবং এভাবে অনেকে সহায়তা প্রদান করত কিন্তু এখন এমন একটা দিন চলে আসছে স্বচক্ষে সামনে যদি দেখা যায় কেউ বিপদে রয়েছে তখনই মানুষ মুখ ঘুরে ঘুরে হেঁটে যায়। আবার যদি কখনো ভুল করে একজন শহায়তান হাত এগিয়ে দেয় দেখা যায় অন্যরা বিভিন্নভাবে কটুক্ত কথা বলতে থাকে। আপনার কবিতাটা বর্তমান পরিস্থিতির বাস্তব রূপ।