বন্যা।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আসলে আজ বন্যা সম্পর্কে আমার কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


image.png



সোর্স

আমাদের দেশের সবথেকে অন্যতম একটি বড় সমস্যা হলো বন্যা। প্রতিবছর এই বন্যা আমরা দেখতে পাই। এই বন্যার ফলে প্রচুর মানুষের জীবন হারাতে হয়। এই বন্যার অন্যতম একটি কারণ হলো অতি বৃষ্টি। এই অতি বৃষ্টির কারণে প্রতিবছর বন্যা হয়। এই বন্যার ফলে প্রচুর কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে যায় সারা বছর। এছাড়াও প্রচুর পশুপাখি মারা যায় এই বন্যার কারণে।


আসলে এই বন্যার জন্য প্রধানত মানুষই দায়ী। কারণ মানুষ প্রকৃতিকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন দিক থেকে দূষিত করছে সব সময়। আসলে বর্তমান সময়ে ছয় ঋতুর মধ্যে আমরা তিন ঋতুকে দেখতে পাই। একটি হলো গ্রীষ্মকাল, একটি হলো শীতকাল এবং অন্যটি হল বর্ষাকাল। কিন্তু বর্তমান সময়ে শীতকাল এবং বর্ষাকাল খুব অল্প সময় ধরে থাকে। কিন্তু গ্রীষ্মকালের গরম প্রায় সারা বছরই থেকে থাকে।


আর এই অতিরিক্ত গরমের ফলে পৃথিবীর মেরু অঞ্চলের বরফ গলে জলে পরিণত হচ্ছে। আর এই বরফ গলা জলের ফলে পৃথিবীতে সমুদ্রের জলের উচ্চতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই জলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে স্থলে ভাগে জল প্রবেশ করছে। হলে পৃথিবীর অনেক স্থলভাগ জলের নিচে নিমজ্জিত হচ্ছে সারা বছর। বিশেষ করে সমুদ্র বা নদী পাড়ের লোকেরা প্রতিবছর তাদের বাড়িঘর জলের নিচে ডুবে যাচ্ছে।


এছাড়াও উষ্ণতা বৃদ্ধি হওয়ার প্রধান কারণ হলো মানুষ প্রকৃতিকে বিভিন্নভাবে দূষিত করছে এবং এ দূষিত হওয়ার ফলে পরিবেশের উষ্ণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আরে অতিরিক্ত উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে সারা বছর। আর পৃথিবীতে গ্রীন হাউস ইফেক্ট এর সৃষ্টি হচ্ছে। আর এই গ্রীন হাউজ ইফেক্টের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমশই বেড়ে চলেছে।


এছাড়াও বিভিন্ন কলকারখানা থেকে দূষিত গ্যাস এবং ধোয়া পরিবেশে নির্গত হওয়ার ফলে প্রকৃতি দূষিত হচ্ছে। আর এই প্রকৃতি দূষণের ফলে বিভিন্ন জীবজন্তুরও ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়াও মানুষ প্রতিদিন পলিথিনের ব্যবহার করছে। আর অতিরিক্ত পলিথিন আমাদের পৃথিবীর জন্য সবথেকে বেশি ক্ষতিকর। পলিথিনের মতো ক্ষতি অন্য কোন পদার্থ পৃথিবীকে করে না। এছাড়াও পলিথিনে আগুন জ্বালানোর ফলে যে গ্যাস উৎপন্ন হয় তা প্রকৃতির জন্য সবথেকে বেশি ক্ষতিকর।


আর এই পলিথিন ব্যবহারের ফলে প্রকৃতির মাটিও দূষিত হয়। এছাড়া এই পলিথিন ড্রেন, নদী, নালা, খাল, বিল ইত্যাদি জায়গায় ফেলার ফলে জলের গতিমুখ সর্বদাই পরিবর্তন হয়। আর এই নদীর গতিমুখ পরিবর্তন হলে সৃষ্টি হয় বন্যার। কারণ এসব পলিথিন বিভিন্ন ড্রেনকে ব্লক করে দেয়। এছাড়াও নদীর তলদেশে জমে জমে নদীর তলদেশের উচ্চতা অনেকটা কমিয়ে দেয়। আর এর ফলে সৃষ্টি হয় বন্যার।


এছাড়া আমরা প্রতিবছর দেখতে পাই শহর অঞ্চল গুলো বৃষ্টির সময় জলে থৈ থৈ করে। এর প্রধান কারণ হলো মানুষের ব্যবহৃত পলিথিন ড্রেনে ফেলার ফলে ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে যায়। আর এর ফলে বর্ষার জল ড্রেন দিয়ে বের হতে পারে না। ফলে প্রায় প্রতিবছর শহর অঞ্চল জলের নিচে চলে যায়। মাঝে মাঝে তো আবার যানবাহনের সাথে শহরাঞ্চলের নৌকার দেখা মেলে।


বন্যার আরেকটা বড় কারণ হলো দিন দিন জলের আঁধার কমে যাওয়া। অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজন হয় অতিরিক্ত জায়গা। এই অতিরিক্ত জায়গার জন্য মানুষ গাছ কেটে পুকুর ভরাট করে বসবাসযোগ্য জমি তৈরি করে। গাছ কাটার ফলে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষিত হয় তেমনি অন্যদিকে পুকুর, নদী, নালা ইত্যাদি ভরাটের ফলে জলের আঁধার কমে যায়। ফলে বন্যা সৃষ্টি হয়।


এছাড়াও কিছু কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলেও বন্যা সৃষ্টি হয়। যেমন ভূমিধসের ফলে নদীর গতিপথ বাঁধা পায় ফলে বন্যা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও পার্বত্য অঞ্চলে ধস নামার ফলে এই বন্যা সৃষ্টি হয়। আর প্রতিবছর তো ভূমিকম্প হয়ে থাকে আমাদের পৃথিবীতে। এই ভূ-আলোড়নের ফলেও নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়। ফলে বন্যা সৃষ্টি হয়।


আর বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বপ্রথম আমাদের যে কোন জায়গায় আবর্জনা নোংরা না ফেলে একটা নির্দিষ্ট জায়গা এসব মানুষের সৃষ্টি আবর্জনা ফেলতে হবে। এছাড়াও নদীর পাড়ে মজবুত বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। আর নদীর গভীরতা যাতে ঠিক থাকে এজন্য নদীতে কোন প্রকার আবর্জনা ফেলা যাবে না। এছাড়া সব সময় আমাদের উঁচু জায়গায় ঘর বাড়ি নির্মাণ করতে হবে। আর যেসব এলাকায় প্রতিবছর বন্যা হয় সেখানে উঁচু করে বাড়ি তৈরি করতে হবে।


এছাড়া বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে আমরা এই বন্যাকে প্রতিরোধ করতে পারি। বিশেষ করে মানুষকে এই বন্যা সম্পর্কে ধারণা জোগাতে হবে। বন্যা সৃষ্টি কারণ এবং এর ক্ষতি সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। তাই সরকারের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে আমাদের সবার উচিত এই বন্যা সৃষ্টির জন্য মনুষ্য যেসব কর্মকাণ্ড করে থাকে সেসব কর্মকাণ্ড আর করা যাবে না।



আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।



সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।



11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো বাংলা। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 last year 

সময়োপযোগী একটি জনসচেতনা মূলক লেখা বন্যা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা আপনাকে। আপনি এর আগেও এধরণের সচেতনা মূলক পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনি একদম যথার্থই বলেছেন,এই বন্যার জন্য প্রধানত মানুষই দায়ী।আমরা দিন দিন প্রাণ-প্রকৃতিকে ধবংস করে খরা-বন্যার মত দূর্যোগকে নিত্য সঙ্গী করে নিয়েছি।আপনার সাথে একমত,বন্যা সৃষ্টি কারণ এবং এর ক্ষতি সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। শুভ কামনা আপনার জন্য।

 last year 

আসলে ভাইয়া মানুষ যত দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তত সমস্যাগুলো ভিক্ষে পাচ্ছে কারন মানুষ এখন সচেতন কম। এই বন্যার সমস্যা ও প্রতিবছরই বাড়ছে। বিভিন্ন কলকারখানা যত বাড়ছে এগুলো থেকে দূষিত পদার্থ তত বেশি নির্গত হচ্ছে। এগুলো থেকে কিছুটা হলেও পরিত্রাণ পেতে পারি আমরা সচেতনতার মাধ্যমে।

 last year 

প্রথমে শুকরিয়া আদায় করি মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট আমাদের এই এলাকায় বন্যা বলে কোন শব্দ নেই। অনেক ভালো রেখেছেন আমাদের। তবে বর্তমান বন্যার কারণে অনেক স্থান ডুবে গেছে, অনেক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দোয়া করি যেন খুব দ্রুত সে সমস্ত মানুষের দিকে আল্লাহ মুখ ফিরে তাকান এবং বন্যার পানি দূর করে দেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 58077.92
ETH 2457.08
USDT 1.00
SBD 2.37