এলোমেলো কিছু ফটোগ্রাফি। ফটোগ্রাফি পর্ব -৩০

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আবারও আমার তোলা কিছু এলোমেলো ফটোগ্রাফি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


IMG_4919.jpg

আমরা সবাই জানি যে, বর্ষাকালের এই সময়টা হল পাট কাটার সময় এবং অনেকেই এই সময়ের আগে পাট কেটে জলে ভিজিয়ে রাখে যাতে পাট গুলো পচে যায়। তো আসলে রাস্তার দু'পাশে পাট কাঠিগুলো এভাবে সাজিয়ে রেখে তার মাঝ দিয়ে লোকজন হাঁটাচলা করে। এভাবে রাখার কারণ হলো রোদের প্রখর আলোতে এই পাটকাঠি গুলো শুকিয়ে তারা আবার বাড়িতে নিয়ে যায়। আসলে একজন মহিলা এই রাস্তার মাঝখান দিয়ে হেঁটে আসছিল। আমি তাই ওনার একটি ফটো তুলে নিলাম।


IMG_4839.jpg



দূর থেকে আমি দেখতে পেলাম যে একজন মহিলা ও একটি ছেলে মিলে তারা এই পাটের আঁটিগুলো বাঁধছিল। আসলে ছেলেটি হল এই মহিলার একটি সন্তান। আসলে তারা খুব দক্ষ সহকারে এই আঁটিগুলো বেঁধে খাড়া করে রাখছিল। যাতে এই বর্ষার সময় ঝড়ের হাওয়ায় এই পাটকাঠি গুলো কাত হয়ে না পড়ে যায়। তাই তারা খুব দক্ষ সহকারে এই পাটকাঠি গুলো এক জায়গায় বড় বড় আটি করে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখছিল।


IMG_4877.jpg



অনেকক্ষণ ধরে আমি দেখতে পাচ্ছিলাম যে, মহিলাটি যখন দূর থেকে পাটের আঁটিগুলো জলের উপরে ভাসিয়ে টেনে নিয়ে আসছিল তখন থেকে একটা শালিক পাখি এই পাটের আঁটির উপরে দাঁড়িয়ে ছিল। আসলে মহিলাটি পাখিটিকে কখনো দূরে তাড়িয়ে দিচ্ছিল না।



IMG_4878.jpg


মহিলাটিকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে ওনার অনেক বয়স হয়েছিল। কিন্তু উনার কর্মের কাছে তার বয়স হার মেনেছিল। যদিও উনি সকাল থেকে এই পাটের আঁটিগুলো টেনে টেনে রাস্তার পাশে নিয়ে আসছিল। আসলে উনার মত পরিশ্রম হয়তোবা আমরা করতে পারবো না।


IMG_4881.jpg


আসলে যখন পাটের আঁটিগুলো পচে যায় তখন এখানে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের জন্ম হয়। এই পাঠ পচানোর জায়গায় বিভিন্ন ধরনের পাখি আমরা সাধারণত দেখতে পাই। তাই আমি দূর থেকে একটা শালিক পাখিকে দেখতে পেলাম। এখানে অনেকগুলো পাখি ছিল।


IMG_4883.jpg


শালিক পাখিটির চোখ সব সময় পোকামাকড়ের দিকে ছিল। প্রথমে সেই একটা জায়গায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো কিছুক্ষণ। এরপর যখন দূর থেকে একটি পোকা দেখতে পেল তখন পাখিটি জোরে দৌড়ে গিয়ে পোকাটি খেয়ে নিল।

IMG_4885.jpg


আমি অনেকক্ষণ ধরে পাখিটির ছবি তুলছিলাম। আসলে পাখিটি আমাকে কখনোই ভয় পাচ্ছিল না। কারণ এখানকার মানুষেরা কখনোই পাখি শিকার করে না। আর এর ফলে পাখিগুলো মানুষের অনেক কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও তাদের একটুও ভয় লাগে না। যদিও বিষয়টি আমার খুব ভালো লাগলো। এরকম যদি সারা পৃথিবীর মানুষ হত তাহলে আমাদের পৃথিবী থেকে পাখি এত কমে যেত না।



IMG_4888.JPG


ওই আগেই বললাম যে বর্ষার এই সময়টা হল পাট কাটার সময়। তাই আমি দূর থেকে দেখতে পেলাম একজন ব্যক্তি এই বর্ষার সময়ে হাঁটু জলে নেমে পাট কাটছিল। পাট গুলো কেটে তিনি একটি জায়গায় জড়ো করে ছোট ছোট আঁটি বেঁধে গুছিয়ে রাখছিলেন। এর পরবর্তীতে তিনি আঁটিগুলো একটা জায়গায় রেখে তার উপরে কিছু জিনিস রেখে দিলেন। যাতে পাটের আঁটিগুলো সহজেই পচে যায়।


IMG_4902.jpg


এমনি আরেকজন মহিলাও দূর থেকে আঁশ ছাড়ানো পাটের কাঠিগুলো টেনে টেনে রাস্তার দিকে নিয়ে আসছিলেন। কারণ এই আঁটিগুলো বেশি দিন জলের ভিতর থাকলে পাটের কাঠিগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। তাই যত কষ্ট হোক না কেন তাকে অল্প সময়ের ভিতর এই কাঠিগুলোকে শুকনো জায়গা নিয়ে আসতে হবে।


IMG_4915.jpg


আরেকজন মহিলা বসে বসে পাটকাঠি থেকে আঁশ আলাদা করছিলেন। যদিও তিনি খুব দ্রুত আঁশগুলো পাটকাঠি থেকে আলাদা করছিলেন। আসলে পাটকাঠি থেকে আঁশ ছাড়ানোর জন্য অনেক দক্ষতার প্রয়োজন। কারণ এই আঁশগুলো সঠিকভাবে ছাড়ানো না হলে পুরো আঁশ নষ্ট হয়ে যাবে।


ক্যামেরা পরিচিতি : CANON
ক্যামেরা মডেল : Canon EOS 7D
ক্যামেরা লেংথ : 600 mm



আশাকরি আজকের এই ফটোগ্রাফিক পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।

সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 last year 

অসাধারণ ফটোগ্রাফি করেছেন ভাইয়া। আপনার ফটোগ্রাফার মাধ্যমে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলেছেন। আপনার প্রতিটি ফটোগ্রাফি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে

 last year 

প্রথম ফটোগ্রাফি পাট কাঠি দেখেই তো ভালো লেগে গেলো।ফটোগ্রাফি গুলো অনেক ভালো লাগলো। আপনার ফটোগ্রাফিতে বাংলার সৌন্দর্য দেখতে পাই বলে অনেক ভালো লাগে।অনেক ধন্যবাদ দাদা সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

গ্রাম বাংলার অপরূপ সৌন্দর্যময় প্রকৃতির ফটোগ্রাফি গুলো আপনি আজকে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এই দৃশ্যগুলো দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। সত্যিই দেখে যেন গ্রামের সেই পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল।

 last year 

গ্রামীণ ঐতিহ্যের দারুন কিছু ফটোগ্রাফি আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। বর্ষাকাল আসলেই গ্রামে গ্রামে এই ধরনের চিত্রগুলো দেখতে পাওয়া যায়। খুবই ভালো লাগলো আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে।

 last year 

অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার এই ফটোগ্রাফি গুলো দেখে। গ্রামের কিছু দৃশ্য আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে পাট কাটা ও তার যাবতীয় কার্যক্রম। অনেক ভালো লাগলো ভাই আপনার এই পোস্টটি পড়ে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

 last year 

অসাধারণ অসাধারণ এক কথায় ফটোগ্রাফিগুলো হয়েছে জাস্ট অসাধারণ। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি আমি।প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি ফার্স্ট ক্লাস হয়েছে।দক্ষ হাত ছাড়া এরকম ফটোগ্রাফি করা সম্ভব নয়। আমাদেরকে এত সুন্দর সুন্দর মনোমুগ্ধকর কিছু ফটোগ্রাফি দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 last year 

এলোমেলো ফটোগ্রাফি মানে অন্য একটি ব্যাপার। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো আমার ভীষণ ভালো লেগেছে প্রতিটা ফটোগ্রাফির দিকে আমি অনেক সময় তাকিয়ে ছিলাম। সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে প্রথম ফটোগ্রাফিটা। এভাবে এগিয়ে যান।

 last year 

কিছুদিন আগে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছি আপনি কতটা ভালো ফটোগ্রাফার। জাস্ট অসাধারণ কিছু গ্রামীণ ফটোগ্রাফি তুলে ধরেছেন। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমার ইচ্ছে করছে এত সুন্দর জায়গায় চলে যাই। পাখিটি কত বিচিত্রভাবে দাঁড়িয়েছে আর আপনি ছবি তুলেছেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65641.55
ETH 2676.11
USDT 1.00
SBD 2.91