শিক্ষক।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আসলে আজ শিক্ষক সম্পর্কে আমার কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


image.png

সোর্স



আসলে আমাদের জীবনে মা-বাবার পর শিক্ষকই হচ্ছেন তৃতীয় শিক্ষাগুরু। এখানে আমি মা-বাবাকে প্রথম এবং দ্বিতীয় শিক্ষাগুরু বলে মনে করি। আসলে শিক্ষক হচ্ছেন একজন মিস্ত্রি, যিনি গঠন করেন একজন প্রকৃত মানুষ। আসলে মা-বাবার পর আমাদের জীবনের শিক্ষকের গুরুত্ব অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন শিক্ষকই ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎকে সুন্দরভাবে গড়তে সাহায্য করেন।


আসলে একজন শিক্ষক তার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে ভগবানের মত সব সময় ছায়া হয়ে থাকেন। আসলে শিক্ষকের পরিবার বলতে কিছুই থাকেন না। এই পৃথিবীর সমগ্র ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়েই তার পরিবার। শিক্ষকের কাছে কোন ছাত্র বড় বা ছোট নয়। সব ছাত্রছাত্রী শিক্ষকের কাছে সমান মূল্যায়ন পেয়ে থাকেন।


ক্লাসে অনেক ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা পড়াশোনা তেমন একটা ভালো নয়। কিন্তু এই শিক্ষক এসব ছাত্রছাত্রীদের সবকিছু ঠিকঠাক বোঝানোর জন্য দিনরাত পরিশ্রম করেন। পৃথিবীতে অনেক শিক্ষক রয়েছেন যাদের জন্য এই পৃথিবীতে বিভিন্ন মহান মহান ব্যক্তিরা বিভিন্ন মহান কাজে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন।


আসলে শিক্ষকদের প্রতি আমাদের যথেষ্ট দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে। মা-বাবার মত শিক্ষককেও আমাদের সম্মান এবং ভালোবাসা উচিত। আসলে গ্রুপে সম্মান করার মাঝেই তার ছাত্রের পরিচয় ফুটে ওঠে। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমরা শিক্ষকদের সঠিক মর্যাদা দিতে পারি না। শিক্ষককে আমরা বিভিন্নভাবে তুচ্ছ করি।


আগেরকার যুগে শিক্ষকদের দেখলে ছাত্ররা সম্মান করতেন এবং তাদের সামনে থেকে হেঁটে চলে যেতেন মাথা নিচু করে। কিন্তু বর্তমান সময়ে শিক্ষকদের কোন ছাত্রই সম্মান করতে জানেন না। আসলে আমার মা-বাবার মুখে শোনা কথা যে, আগেরকার দিনে তারা শিক্ষকদের দূর থেকে দেখতে পেলে সাইকেল অথবা কোন যানবাহন থেকে নেমে যেতেন। শিক্ষকের কাছে গিয়ে তারা তাদের প্রণাম করতেন অথবা সালাম দিতেন এবং অনেক দূরে গিয়ে আবার পুনরায় যানবাহনে উঠতেন।


আসলে বর্তমান যুগে ছাত্ররা শিক্ষকদের সামনে দিয়ে মোটরসাইকেলে করে চলে যায় কিন্তু তার শিক্ষকদের দেখে বিন্দুমাত্র সম্মান করে না। বর্তমান সময়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় যে শিক্ষকরা তাদের ছাত্রদের দ্বারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। আসলে শিক্ষকদের অপমান করা মানে নিজের মা-বাবাকে অপমান করা। কারণ মা বাবার পরেই শিক্ষকের স্থান। যে ছাত্র বা ছাত্রী তার শিক্ষকদের সম্মান করতে জানেন না তারা কোনদিনই বড় হতে পারেন না। কোনক্রমে তারা বড় হলেও তারা একজন সুষ্ঠু মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে কখনোই পারেন না।


আসলে আমরা সবাই শিক্ষককে মানুষের কারিগর হিসেবে চিনে থাকি। বহু শিক্ষক রয়েছেন তার ছাত্র-ছাত্রীদের একটু শিক্ষাদানের জন্য বহু কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আসেন। এছাড়াও আমাদের সমাজে অনেক শিক্ষক রয়েছে যারা বিনা পারিশ্রমিকে ছাত্রছাত্রীদের এক্সট্রা ক্লাস করে থাকেন। আসলে তারা শিক্ষাকে কখনোই মূল্য দিয়ে বিচার করেন না।


কিন্তু বর্তমান সময়ে শিক্ষাক্ষেত্রেও দুর্নীতি প্রবেশের ফলে বিভিন্ন অসত ব্যক্তিরা এই বিদ্যালয়ে নামক মন্দিরের তারা প্রবেশ করছেন। আসলে এসব অসাধু ব্যক্তিদের শিক্ষা প্রাঙ্গণে প্রবেশের ফলে শিক্ষার মেরুদন্ড দিন দিন ভেঙ্গে পড়ছে। তারা নিজেরাই শিক্ষিত নয় তাই তারা একজন ছাত্র-ছাত্রীকে কি শিক্ষা দেবে সেটা ভাববার বিষয়। আসলে এসব অসাধু ব্যক্তিদের ফলে দেশের শিক্ষার হার দিন দিন কমে যাচ্ছে এবং ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন অসৎ দিকে ধাবিত হচ্ছে।


আমরা সচরাচর সংবাদপত্র বা টিভির মাধ্যমে দেখতে পাই যে শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি কতটা বেড়ে গেছে। বর্তমান ক্ষেত্রে শিক্ষক নির্ধারণ হচ্ছে টাকার বিনিময়ে। যার যত বেশি টাকা আছে সে তত ভালো শিক্ষক। আর এর ফলে প্রকৃত ব্যক্তিরা এই শিক্ষা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারছে না অর্থের অভাবে। আর তাই শিক্ষার কাঠামো দিনদিন ভেঙ্গে পড়ছে।


পৃথিবীতে অন্যান্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি হলেও শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির ফলে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ। কারণ শিক্ষাই মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। কিন্তু সেই শিক্ষা ক্ষেত্রে অসাধু ব্যক্তির প্রবেশের ফলে একজন ছাত্র ছাত্রী সুষ্ঠ রূপে বড় হতে পারছেন না। সবথেকে বড় কথা হল তারা প্রকৃত শিক্ষা পাচ্ছেন না। আর এর ফলে দেশে অরাজকতার সৃষ্টি হচ্ছে।


আসলে আমাদের দেশের সরকারকে অবশ্যই এই শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। নতুবা দেশ দিন দিন ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে। নিজের দেশকে পৃথিবীর মাঝে তুলে ধরার প্রধান মাধ্যম হল এই শিক্ষা। যদি শিক্ষাক্ষেত্রে এরকম দুর্নীতি হয় তাহলে দেশ দিন দিন খারাপের দিকে এগিয়ে যাবে।


সরকারের পাশাপাশি আমাদের অবশ্যই দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে যে এ শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতিকে তাদের সামনে উন্মোচন করা। আমাদেরও হাতে হাত লাগিয়ে এইসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আর আমরা যদি রুখে না দাঁড়ায় তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুষ্ঠু শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারবে না। আরে ফলে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমাদের সমাজ।


এছাড়াও দেখা যায় যে শিক্ষা প্রাঙ্গণে বিভিন্ন ধরনের নেশাজাত দ্রব্য বিক্রি ফলে ছাত্রছাত্রীরা সেই নেশার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের সবাই উচিত এইসব দ্রব্য বিক্রেতাকে আইনের হস্তক্ষেপে নিয়ে আসা। আর শিক্ষকদের যথেষ্ট সম্মান করা অবশ্যই আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। আমাদের সন্তানদের ও শেখাতে হবে শিক্ষকের মূল্য তাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।



আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।



সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।



11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 last year (edited)

নেশার জগতে যখন ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা প্রবেশ করে তখন সত্যিই ভীষণ খারাপ লাগে। তাদের মাঝে সম্মান নামক শব্দটাই কেন জানি ক্ষীণ হয়ে যায়। বাবা মায়ের পরে শিক্ষকদের স্থান। শিক্ষকরা আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন বলেই আমরা পড়াশোনা করতে পেরেছি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে শিক্ষকের প্রতি সম্মান দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। একটা সময় দেখা যেত শিক্ষককে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে দেখলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকতো সবাই। আর সালাম না দেওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতো। এখন তো শিক্ষককে দেখে কেউ কথাই বলতে চায় না। আপনার লেখাগুলো সত্যিই দারুণ ছিল দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 56784.71
ETH 2392.67
USDT 1.00
SBD 2.27