সোর্স


দূষণ বিভিন্ন রকম হতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম একটি দূষণ হলো পরিবেশ দূষণ। পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সাধারণত আমরা বলতে পারি প্রাকৃতিক বা মানুষ্য সৃষ্ট কোন কারণে বাতাসে অবাঞ্চিত কোন বস্তুর উপস্থিতির ফলে বায়ুর রহ স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং এই নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে জীবজগতের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিসাধন হয়। এছাড়াও পরিবেশ দূষণের ফলে বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর বিলুপ্তি ঘটে প্রতিবছর।


আসলে প্রাকৃতিকভাবে পরিবেশ দূষণ অপেক্ষা মানুষের সৃষ্টির ফলে পরিবেশ দূষণ সবথেকে বেশি সম্পন্ন হয়। এই কথা বলার প্রধান কারণ হলো মানুষই সবথেকে বেশি পরিবেশ দূষিত করে। এটা অস্বীকার করার মত কেউ নেই আমার মনে হয়। বর্তমান সময়ে মানুষ এত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে যে তার বসবাসের জন্য অতিরিক্ত জমির প্রয়োজন হয়। এই অতিরিক্ত জমির জন্য তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত গাছ কাটতে হয়। ফলে এই গাছ কাটার ফলে পরিবেশ দূষিত হয়।


আসলে সবার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে গাছ কাটার হলে কিভাবে পরিবেশ দূষিত হয়। আসলে গাছ কাটার ফলে এমন মনে হয় সব থেকে বেশি পরিবেশ দূষিত হয়। আমরা বাড়িতে যেমন জল ফিল্টার করে খাই তেমনি পরিবেশের বায়ু ফিল্টার করার প্রধান মাধ্যম হল এই গাছ। অর্থাৎ বায়ুতে যেসব অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড থাকে তা গাছ শোষণ করে আমাদের জন্য অক্সিজেন ত্যাগ করে।


এই গাছ কাটার ফলে প্রতিদিন কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সংখ্যা দ্রুত হলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে আমাদের শ্বাস নিতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। তাই বর্তমান সময়ে আরো লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বেশিরভাগ মানুষ শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে মারা যায়। এছাড়াও স্ট্রোকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রধান কারণ হলো পরিবেশ দূষণ। আদি পরিবেশ দূষণের ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগেরও সৃষ্টি হচ্ছে।


প্রতিবছর আমরা প্রায় দেখতে পাই বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়। যেসব রোগ পূর্বে কখনোই ছিল না এবং এইসব নতুন রোগের ওষুধ আবিষ্কারের পূর্বেই প্রচুর লোক মারা যাচ্ছে প্রতি বছর। পরিবেশ দূষিত হওয়ার ফলে পৃথিবীর গড় আয়ুও দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমরা সবাই জানি যে আমাদের পৃথিবীতে স্থলভাগ অপেক্ষার জলভাগের সংখ্যা অনেক বেশি। এছাড়াও মেরু অঞ্চলে রয়েছে বড় বড় বরফের পাহাড়। আসলে পরিবেশ দূষিত হলে পরিবেশের উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়। আর এই পরিবেশের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলতে শুরু করে।


এছাড়া বর্তমান সময় আমরা আরো লক্ষ্য করতে পারি যে পূর্বে যেমন ছয় ঋতু ছিল। কিন্তু বর্তমানে এই ছয় ঋতু থেকে আমরা শুধুমাত্র তিনটি ঋতু দেখতে পাই এবং এই রীতিগুলো তার নির্দিষ্ট সময়ে আমরা দেখতে পাই না। অর্থাৎ ঋতু পরিবর্তনও অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গেছে। এই ঋতু পরিবর্তনের ফলে বর্ষার সময়ে আমরা বর্ষা দেখতে পাই না এবং শীতকালে তো শীত নেই বললেই চলে।


এই পরিবেশ দূষিত হওয়ার ফলে জলভাগের স্তর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিভিন্ন বসবাস উপযোগী জমি দিন দিন সমুদ্রের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও পরিবেশ দূষিত হওয়ার আরেকটা বড় কারণ হলো বিভিন্ন ধরনের মনুষ্য সৃষ্টি কলকারখানা। মানুষের সৃষ্টি এই কলকারখানা চালাতে দরকার হয় প্রচুর পরিমাণ জ্বালানির। এই প্রচুর পরিমাণ জ্বালানোর জন্য মানুষ প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে গাছ কাটে।


এই প্রচুর পরিমাণে গাছ কাটার ফলে যেমন বায়ুতে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তেমনি এই জ্বালানি কলকারখানা ব্যবহারের ফলে যে ধোঁয়া বের হয় তার ফলেও প্রচুর পরিমাণে বায়ু অর্থাৎ পরিবেশ দূষিত হয়। এছাড়া আমার মনে হয় সব থেকে বেশি পরিবেশ দূষিত হয় আরেকটা কারণে। সেটি হলো পলিথিনের ব্যবহার।


এই পলিথিনের ব্যবহারের ফলে প্রকৃতি সবথেকে বেশি দূষিত হয়। একদিকে যেমন নদীর গতিপথের পরিবর্তন করে এই পলিথিন তেমনি অন্যদিকে এই পলিথিন মাটির ক্ষতিসাধন করে। আমরা সবাই জানি যে এই পলিথিন সহজে নষ্ট হয় না। হাজার হাজার বছর থাকলেও এই পলিটিনের কোন পরিবর্তন হয় না। তাই এই পলিথিনের ব্যবহার অতিরিক্ত ফলে পরিবেশ সবথেকে বেশি দূষিত হয়।


এছাড়াও পলিথিনে আগুন দেয়ার ফলে যে দূষিত গ্যাস উৎপন্ন হয় তার ফলেও পরিবেশ খুব বেশি দূষিত হয়। বর্তমান সময়ে আমরা তীব্র গরমের ফলে প্রচুর কষ্ট হয়। এই কষ্ট পাবার সবথেকে বেশি বড় কারণ হলো পরিবেশ দূষণ। পরিবেশ দূষিত হওয়ার ফলে গ্রিনহাউস ইফেক্ট দেখা দেয় এই পৃথিবীতে। আর এই গ্রীন হাউস ইফেক্ট এর ফলে পৃথিবীর উষ্ণতা প্রতিদিন অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে বৃদ্ধি পাচ্ছে।


এই পরিবেশ দূষণ থেকে আমাদের বাঁচতে হলে সর্ব প্রথমে আমাদের পরিবেশ দূষণের কারণ সম্পর্কে জানতে হবে এবং অন্যকে এই পরিবেশ দূষণের কারণ সম্পর্কে বুঝাতে হবে। সবাইকে হাতে হাত মিলিয়ে পরিবেশ যাতে দূষিত না হয় সেই ধরনের কর্মকাণ্ড হতে আমাদের পিছিয়ে আসতে হবে। নতুবা এই পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে।

আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।

সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

ধন্যবাদ সবাইকে।